somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিরাপদ সড়কের জন্যে নিরাপদ মানুষ চাই......!

২৩ শে জুন, ২০১২ রাত ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক সময় দেশে মহামারী আকার ধারন করেছিল কলেরা,টাইফয়েডের মত রোগ গুলো।এলাকায় একজনকে ধরলেই যেন সমস্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ত।মারা যেত একের পর এক।এখন সড়ক দুর্ঘটনা ও যেন তেমন এক মহামারী আকার ধারন করেছে।কোন মতেই পিছু ছাড়ছেনা।ভয়াবহ থেকে ক্রমশই আরো ভয়াবহ রুপের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া যেন নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে,দৈনিক খবরের তালিকায় যোগ হয়ে গেছে,-‘সরকারি দল এটা বলেছে,বিরোধীদল ওটা বলেছে আর সড়ক দুর্ঘটনায় দশজন মারা গিয়েছে’।ঘর থেকে বের হতে হয় জীবন শংকা নিয়ে।কখন যে কোথায় চাপা পড়তে হয়?সেই ভয়ই সারাক্ষন তাড়িয়ে বেড়ায়।বাস থেকে না নামা পর্যন্ত যেন স্বস্তি নেই।শুধু বাস থেকে নামা নয় রাস্তা কেটে বাসায় ফেরার আগ পর্যন্ত যেন স্বস্তি নেই।বড় যাত্রার সময়তো চিন্তার কোন ক্লান্তি থাকেনা।যাত্রার আগের দিন থেকেই চিন্তা শুরু হয় যায়।কেমন করে?কতক্ষনে? আমি আমার গন্তব্যে পৌছাবো বা পৌছাতে পারবো তো ঠিকমত? ইত্যাদি।সেদিন ঢাকা-সিলেট রোডে ব্রীজ ভেঙ্গে গাড়ি নিচে পড়ে গেল।এতদিন সবার ভয় ছিলো চালকদের নিয়ে।এখন নতুন ভয় শুরু হয়ে গেলো ব্রীজগূলো নিয়ে।তারপর থেকে নতুন চিন্তা আমাকেও কুড়ে খেতে লাগলো।কেননা আমিও যে কোন গন্তব্যে যাওয়ার উদ্দেশ্যে অপেক্ষমান।তাই রীতিমত আমাকেও চিন্তা করতে হচ্ছে।যেহেতু আমাকেও গন্তব্যে পৌছাতে লম্বাব্রীজ পার হতে হবে।তাই যদি সেদিনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে,তবে আমার কী হবে?আমি কী ফিরবো নাকি না ফেরার দেশে চলে যাবো? না এসব নেতিবাচক ভাবনা না ভাবাই উত্তম।রাস্তা,ঘাট,ব্রীজ,কালভার্ট সংস্কারের কথা কী আর বলবো?এসব মহাজনদের মর্জি।তাদের মন চাইলে তারা সংস্কার করবেন।তারা তো ঢাকায়ই পড়ে থাকেন নির্বাচনের পরে, নিজেদের এলাকায় যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননা।তাই রাস্তা,ঘাটও সংস্কার হয়না।কেননা তাদের আগমনের প্রাক্কালেই কেবল্ রাস্তাঘাট সংস্কার করা হয়।সবচেয়ে ভালো হতো যদি জনপ্রতিনিধিদের অফিস তাদের নির্বাচনী এলাকায় দেয়া হত।তাদের জন্য গাড়ি বাড়ি বরাদ্ধ তো থাকেই।সংসদের কার্যক্রম চলা পর্যন্ত ঢাকায় থাকবেন,নতুবা নিজ এলাকায়ই থাকবেন।যেহেতু নিজেদের গাড়ি আছে,তাই সপ্তাহে দু একদিনের জন্য ঢাকায় এসে মিটিং্যে অংশগ্রহন করে আবার নিজ এলাকায় চলে আসবেন।তাহলে অন্তত সড়ক গুলোর বেহাল দশা কিছুটা হলেও রোধ হবে।চালকদের নিয়ে কিছু বলে লাভ নেই।ড্রাইভিং লাইসেন্সতো মহাজনরাই দিয়ে থাকেন।কোন কিছু যাছাই বাছাই না করে স্বজন প্রীতি আর অর্থ প্রীতিতে কাজ সমাধা করে দেন,মানুষ মারার লাইসেন্স হাতে তুলে দেন।তার চেয়ে বরং অনিরাপদ মানুষগুলো নিয়ে একটু বলি।ওভার ব্রীজের উপর দাঁড়িয়ে রাস্তায় যানচলাচলের দৃশ্য প্রত্যেকেই নিশ্চয়ই একবার হলেও অবলোকন করেছেন।উপর থেকে রাস্তার যান চলাচলের দৃশ্য সত্যি সুন্দরই দেখায়।কিন্তু এ সুন্দরকে ম্লান করে দিচ্ছি আমরাই।একটু কষ্ট করে ফুটওভার ব্রীজে না উঠে সময় বাচানোর জন্য রাস্তার মাঝখান দিয়ে পার হয়ে যাই জীবনের ঝুকি নিয়ে,নিজেরাই সিগন্যাল নামিয়ে দিই,ট্রাফিক পুলিশ বা বাতি জ্বলা নেভার প্রয়োজন মনে করিনা।আর এমন ঝুকিপুর্ন পারাপারের জন্য ব্যাহত হয় স্বাভাবিক যান চলাচল, দুর্ঘটনায় মৃত্যুর শিকার হতে হয় অনেককে।নিরাপদ সড়ক,ড্রাইভার এদের কথা হয় বাদই দিলাম!আমরা যদি একটু সচেতন হই,তাতে কি দুর্ঘটনা অনেক কমে আসবেনা?নিশ্চয়ই আসবে।একদিন যদি সমস্ত ঢাকা শহরে আমরা সবাই ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করি,একজন মানুষও যদি রাস্তার মাঝখান দিয়ে পার না হই,দেখবেন যানযট অনান্য দিনের তুলনায় সেদিন অনেক কমে গেছে এবং ঢাকার রাস্তায় এক আশ্চর্য সুন্দরের উদয় হয়েছে।যানযট নেই এমন শহর কমই আছে,হয়ত কম বা বেশি।আমাদের দেশে যানযট হয়ত অতিমাত্রিক,তাই বলে এতটা অসভ্য হতে হবে কেন?এ যানযটতো আমাদের সয়েই গেছে।এক ঘন্টা দু ঘন্টা জ্যামে বসে থাকা আমাদের নিত্য ব্যাপার!ইদানীং একটা ব্যাপার দেখা যায়,-যারা মোটর সাইকেল নিয়ে রাস্তায় বের হন অফিস বা অন্য কোন কাজে তাদের অধিকাংশই রাস্তা থেকে উঠে ফুটফাতের উপর মানুষের হাটার জায়গা দখল করে তাদের মাঝ দিয়ে চলাচল করছেন।কিন্তু কেন?আমাদের রাস্তায় তীব্র যানযট আপনি ভালো করেই জানেন,আপনি হাতে সময় নিয়ে বের হতে পারেন,কিন্তু আপনি তা করছেন না।রাস্তা ফাকা ফেলে আপনি রাস্তায় নামেন,রাস্তা ঢাকা থাকলে আপনি ফুটফাতে সাধারন মানুষদের যাত্রা ব্যাহত করে ফুটফাতে উঠে পড়েন।এতটা সুযোগ লুফে নেওয়া কি আদৌ ঠিক?রাস্তার পাশে ওভারব্রীজ ছাড়া পারাপারের অধিকাংশই শিক্ষিত মানুশজন।একটা জ্বলন্ত উদাহরন হচ্ছে বনানী মুল সড়ক।এয়ারপোর্ট বনানী মুল সড়কের পাশে পাচ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকলে এমন দৃশ্যের দেখা পাবেন।এখানে বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থাকায় সাপ্তাহিক দিনগুলো মুখর করে রাখে ছাত্রছাত্রীরাই।আর এরাই দলবদ্ধ হয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছে,নিজেরাই ট্রাফিক সিগন্যাল নামিয়ে দিচ্ছে।তাদের দেখে তাদের পিছু সারি বেধে কিছু সাধারন মানুষও পার হচ্ছে। অথচ পাশে ওভারব্রীজ দিয়েও কিন্তু অনেক খেটে খাওয়া মানুষ পার হচ্ছে। এরকম আরো অনেক জায়গায়ই হয়ে থাকে। আমরা অশিক্ষিত আমাদের শিক্ষার হার কম এই অজুহাত দিয়ে আর কতদিন?শিক্ষিতরাই যখন অশিক্ষিতের মত কাজ করছে,তখন শিক্ষিত আর অশিক্ষিতদের মাঝে পার্থক্যই বা কতটুকু,আর শিক্ষার মানই বা কতটুকু অক্ষত থাকে।তাহলে কার থেকে কে শিখবে???
২১/০৬/২০১২,ঢাকা।

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×