somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এটিএম বুথ যথন ভূতের আছরে বুদ!!!

১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ১১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মামুন। কুস্টিয়া মেডিকেল কলেজে পড়তে এসেছে বরিশাল থেকে। বাবা প্রতিমাসে টাকা পাঠান। ডাচ বাংলা ব্যাংকে মামুনের এ্যাকাউন্ট নম্বরে। এটিএম কার্ডের সাহায্যে তিনি টাকা উত্তোলন করে থাকেন। পরীক্ষার ফরম ফিল আপের আছে মাত্র ০৭ দিন। বাবা যথারীতি টাকা পাঠিয়েছে । আগেভাগে সে ধরণা দেয় এটিএম বুথে। কারণ সে জানে প্রায়শই বুথগুলো অকেজো থাকে। কিন্তু বিধি বাম। কাছাকাছি বুথে নেটওয়ার্ক নেই। ছুটল আরেকটির দিকে। প্রহরী জানাল কিছুক্ষণ আগে বন্ধ হয়ে গেছে। ফিরে আসল সে। এভাবে তিন দিন চলে গেল। ও জানে বড় বাজারের একটা বুথে সবসময় টাকা পাওয়া যায়। পরের দিন গেল সরাসরি ঐ বুথে। যথারীতি নষ্ট। শেষ পর্যন্ত বুথের উপরে ব্যাংকের ব্রাঞ্চ থেকে চেকের মাধ্যমে সে টাকা উত্তোলন করল।

রায়হান। কুষ্টিয়ায একটি সরকারি অফিসে চাকরি করে।বাড়ি খুলনায়।বাড়ি যাবে। পকেটে বেশী টাকা নেই। যশোর পালবাড়ি এক ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করে তারপর সে বাড়ি যাবে।পালবাড়ি নামল। বন্ধুকে বিদায় দিয়ে ঐ মোড়ের একমাত্র বুথে গিয়ে শুনল কিছুক্ষণ আগেই নেটওয়ার্ক চলে গেছে।

মামুন আর রায়হানের মত প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হাজার হাজার মানুষ এই এটিএম বিড়ম্বনর শিকার।যা নিয়ে আঞ্চলিক ও জাতিয় পত্র-পত্রিকায়ও লেখালেখি হচ্ছে।অর্থনৈতিক লেনদেন সহজে নিরাপদে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্যই মানুষ এ পন্থা ব্যাবহার করে থাকে। কিম্তু এই যদি হয় অবস্থা তাহলে কে কারে কি করবে।সম্প্রতি এ নিয়ে জেলা পর্যায়ের এক ব্যাংক ম্যানেজারের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান যে ইদানিং তার জেলায় মোট ২০ টি বুথের মধ্যে মাত্র একটা সবসময় ভালো থাকে। অন্যগুলো বিভিন্ন সময়ে কোন না কোনভাবে ত্রুটিপূর্ণ থাকে। তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়- সারাদেশের এটিএম ব্যাবস্থা কি এভাবেই চলছে?

প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের জিবনকে সাবলীল-স্বাচ্ছন্দময় করে।কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা ভিন্ন পরিস্থিতি লক্ষ্য করছি। যদি ঠিকঠাক মত সার্ভিস দিতে না পারে তাহলে কেন প্রতি মোড়ে মোড়ে বুথ বসিয়ে পাবলিককে হয়রানি করা হচ্ছে। ২০ টা বুথের মধ্যে যদি ১০ টা বুথে মেটওয়ার্ক না থাকে তাহলে ব্যাংকের ঐসব এটিএম এক্সপার্টরা বসে বমে হিন্দি সিরিয়াল কিংবা বাংল সিনেমা দেখে বলে আমজনতা ধরে নেবে।তাদের যোগ্যতা নিয়েও সন্দেহের অবকাশ থেকে যাবে। আমার যদি ১০০ মেশিন চালানোর মত লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকে আমি কেন তা করতে যাব। ভালোমতে ১০ টা চালালেই তো সেখান থেকে মানুষ অন্ততপক্ষে হয়রানির শিকার হয়না। কার্ড জালিয়াতি যদি সাইবার ক্রাইম হয়ে থাকে তবে এধরনের কার্ড বিড়ম্বনাও একটি অপরাধ। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকি ও গাইডলাইন প্রদানের বিকল্প নেই। আর ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে বলি দেশের অশিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত প্রযুক্তি-জ্ঞানে কাঁচা মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নেবেন না। গ্রাহক বৃদ্ধির প্রচেষ্টা তাহলে বুমেরাং হতে বাধ্য। সঠিক ব্যাবস্থাপনা নিশ্চিত করেই আরেকটি বুথ স্থাপনে প্রয়াসী হবেন। প্লিজ এদেশের পাবলিকরে আর বলির পাঠা বানায়েন না। কার্ডের চার্জ তো আর একটি পয়সাও কম নেন না। কোয়ান্টিটিতে নয় কোয়ালিটির দিকে ঝুঁকুন। দেশ-জনগণ দুটোই তা থেকে সুফল পাবে।

হঠাৎ ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। বাংলা সিনেমাকে গ্রামে বলত ছবি। আর ভিলেনকে বলত হারামি। ঐ সময় দেখতাম মানুষ হারামি হিসেবে এটিএম শামসুজ্জামানের খুব ভত্ত ছিল। সংক্ষেপে তিনি এটিএম নামে পরিচিত ছিলেন। বলাবলি হত ঐ ছবির হারামি কেরে- এটিএম।আমি ব্যাক্তিগতভাবে এ অভিনেতার একজন ভক্ত । তার প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। সিনেমায় তিনি জাঁদরেল হারামি।হারামি এটিএম। হারামি হিসেবে তাকে ঘৃণা করবে না এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। ডাচ বাংলা তথা কার্ড বিড়ম্বনার সাথে জড়িতদের বলি 'এটিএম' কে 'হারামি' বানাবেন না। তাহলে গ্রাহকরা হবে ঐ নতুন বউয়ের মত। প্রখ্যাত জনপ্রিয় প্রয়াত অভিনেতা ফরীদি দীর্ঘকাল চিত্রজগতে ভিলেন হিসেবে অভিনয় করেছেন।একবার এক বিয়ের অনুষ্ঠানে তিনি বউ দেখতে গেলে নতুন বউ 'বাচাও' বলে চিৎকার দিয়ে ওঠেন। যদিও সেটা সিনেমা ছিল না।

এটিএম বুথের ভূত ছাড়ানোর যাবতীয় ব্যাবস্থা করা হোক। নাহলে পাবলিক বাঁচাও বলে ভয়ে পালাবে।ওদিকে আর ঘেষবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ১১:০৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×