somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃটেনের শিক্ষাব্যবস্থা -৪: বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

১৮ ই জুন, ২০১২ বিকাল ৩:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বৃটেনের বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
বৃটেনে শিক্ষাগ্রহণকে অত্যন্ত সহজলভ্য এবং প্রত্যেকের জন্য উপযোগী করা হয়েছে। এ জন্য সে দেশে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা শিক্ষা প্রদানের বিভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে। বৃটেনের শিক্ষা কর্তৃপক্ষের লক্ষ্যই হলো প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য বয়স অনুযায়ী নির্দিষ্ট মান ও মাত্রার শিক্ষা নিশ্চিত করা, এটা যে কোন ভাবেই আদায় হোক না কেন। নিচে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্ণনা প্রদত্ত হলো।

ক. গৃহশিক্ষা
যুক্তরাজ্যে আইনত ৫-১৮ বছর বয়সীদের জন্য শিক্ষা বাধ্যতামূলক। তবে, তা প্রথাগত স্কুলে গিয়ে হতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই। যদি কোন পিতা-মাতা/অভিভাবক সন্তানদেরকে নিজের বাসায় অথবা অন্য কোন হোম টিউটোরিয়ালে পড়াতে চান, তাহলে পড়াতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে লোকাল এডুকেশন অথরিটিকে অবহিত করে রাখতে হয়। প্রয়োজন মনে করলে কর্তৃপক্ষ ঘরোয়া শিক্ষার ব্যবস্থাপনা পরিদর্শনে আসতে পারেন। তারা যদি কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশ নিতে চায় তাহলে কোন কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করে সরাসরি বোর্ডের সাথে রেজিস্ট্রেশন করতে হয় এবং তাদের পরীক্ষার ফলাফল পোস্টের মাধ্যমে সরাসরি বাসায় চলে যায়।

খ. বিভিন্ন ধরনের স্কুল
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাকে সুচারুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সরকার ১৯৯৮ সালের স্কুল স্ট্যানডারডস এন্ড ফ্রেম ওয়ার্ক এ্যাক্টের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষালয় পরিচালনা ও অনুমোদন দিয়েছে। এগুলো প্রধানত: তিন প্রকার -
১. কমিউনিটি স্কুল। যা সরাসরি সরকার তথা স্থানীয় এডুকেশন অথরিটি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত। বিভিন্ন বিষয়ে স্কুলের নিজস্ব স্বাধীনতা এখানে আছে, তবে তা সীমিত আকারে।
২. ফাউন্ডেশন স্কুল। গভর্নিং বডি বা এর সাথে সংশ্লিষ্ট দাতব্য প্রতিষ্ঠান বা স্কুলের জমির মালিক দ্বারা এ ধরনের স্কুল নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়ে থাকে। তারা স্টাফ নিয়োগ দেন এবং ছাত্র ভর্তিসহ অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করেন।
৩. ভলানটারী এইডেড স্কুল। বিভিন্ন ধর্মীয় ও দাতব্য সংস্থা, বিশেষত খৃস্টানদের পরিচালিত স্কুলগুলোকে এ নামে পরিচিত। এসব প্রতিষ্ঠানে সরকার বিশেষ সহায়তামূলক অর্থ দিয়ে থাকে। তবে এসব স্কুলগুলো যথেষ্ট স্বাধীনতা ভোগ করে থাকে।

গ. অন্যান্য বিশেষ স্কুল
১. বিশেষায়িত স্কুল (Specialist Schools)
ইংল্যান্ডের যে কোন মাধ্যমিক স্কুল নিজেদের যোগ্যতা অনুসারে স্পেশিয়ালিস্ট স্কুল হবার জন্য আবেদন করতে পারে। যেসব বিষয়ের জন্য তারা মনোনিত হতে পারে, তা হলো- প্রযুক্তি (বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়, গণিত, টেকনোলোজি), আধুনিক বিদেশী ভাষা, খেলাধুলা ও কলা। এসব প্রতিষ্ঠানে যথারীতি ন্যাশনাল কারিকুলামের বিষয়গুলোও পড়ানো হয়। তবে ঐসব বিশেষ বিষয়ে আলাদাভাবে জোর দেয়া হয়। এ জন্য তারা সরকার থেকে অতিরিক্ত বরাদ্দ পেয়ে থাকে।
২. সিটি কারিগরি কলেজ (CTCs)
বেশ কিছু বেসরকারী স্কুল/কলেজ বিজ্ঞান, গণিত ও টেকনোলোজিতে বিশেষ পারদর্শিতার জন্য এই নামের মর্যাদা লাভ করে এবং বিশেষ সরকারী অনুদান পায়। এখানে ন্যাশনাল কারিকুলাম সাবজেক্টও পড়ানো হয়। তাদের কলেজের রুটিন দীর্ঘ। বিভিন্ন কোম্পানির সাথে তাদের বিশেষ সম্পর্ক আছে।
৩. সিটি একাডেমি (City Academy)
যে সমস্ত শহর এলাকার সরকারী স্কুলগুলোয় ভর্তি চাপ বেশী, সে সমস্ত শহরে সিটি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের সুযোগ-সুবিধা সাধারণ সরকারী স্কুলের চেয়ে একটু বেশী।

ঘ. বেসরকারী স্কুল/কলেজ
ইংল্যান্ডে যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান স্কুল/কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে পূর্বেই সরকারী অনুমোদন নিতে হয়। সরকারী ন্যাশনাল কারিকুলামের বিষয়গুলো পড়াতে হয়। এখানে সরকার কোন প্রকার অনুদান দেয় না। তবে তাদেরকে সরকারী ইন্সপেকশনের মুখোমুখী হতে হয়। এখানে শিক্ষার্থীরা ফিস প্রদান করে। এখানকার শিক্ষার্থীরা সরকারী স্কুলের শিক্ষার্থীদের মতই কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এরা এখান থেকে পাস করে পরবর্তীতে অন্যান্য কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারে। বেসরকারী স্কুলের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ও আচার-ব্যবহারের মান সাধারণ স্কুলের শিক্ষার্থীদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে ভাল। বৃটেনের ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষাব্যবস্থায় ধার্মিকেরা খুব বেশী সাচ্ছন্দ অনুভব করেন না। তাই তারা নিজেদের কৃষ্টি-কালচার বজায় রাখার জন্য এসব স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। খৃস্টান ও ইহুদীরা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের চেয়ে এ ব্যাপারে অনেক বেশী অগ্রসর।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০১২ বিকাল ৩:৫৫
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পথ হারিয়ে-খুঁজে ফিরি

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৩


মনটা ভালো নেই। কার সাথে কথা বলবো বুঝে পাচ্ছি না। বন্ধু সার্কেল কেও বিদেশে আবার কেও বা চাকুরির সুবাদে অনেক দুরে। ছাত্র থাকা কালে মন খারাপ বা সমস্যায় পড়লে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×