নুতন সংসার, নতুন নতুন মানুষ।একটু একটু করে নিজের মত করে বুঝে নেয়ার চেষ্টা। কখনও হোচট খেতে গিয়ে সামলে নেয়া। আবার কখনও বা এঁদো কাদামাটিতে পড়ে এককার হওয়া। এরপরও সুন্দর নিপাট একটা সংসারের স্বপ্ন দেখেছিল অপলা।সারাদিন অফিস শেষে শোভনের সাথে একান্ত কিছু মূহুর্ত কাটানো। সপ্তাহের একটা দিন সবুজের মাঝে ছেড়ে দেয়ার আকুতি অপলাকে টেনেছে সব সময়। কিন্তু তা অলীক কল্পনা ছাড়া আর কিছু ছিল কি! অফিসছুটির পর শোভনের সাথে দেখাও হয়েছে ঠিকই কিন্তু কি যেন নেই। নিজেকে ছাড়া শোভন আর কিছুই ভাবতে চায় নি কখনই। এমনকি যৌনসুখটাও নিজের মত করে লুটেপুটে নিয়েছে ও। কখনও জানতেও চায় নি ঐ পক্ষেরেও কিছু চাওয়ার থাকতে পারে। না, এরপরও রা করে নি অপলা। দিনের পর দিন বঞ্চিত হয়েছে কিন্তু বুঝতে দেয় নি শোভনকে।
হঠাৎই গরম পিচের রাস্তার আগুনে বাতাস জুলুনি ধরিয়ে দিল যেন ওর সারা শরীরে। রোদের তেজ সইতে না পেরে গাছের পাতাগুলোও কেমন নুয়ে পড়েছে। সবুজের সজীবতা দেখবে বলে পথ চেয়ে বসে থাকে অপলা। কিন্তু না, সবুজ রংয়ে পড়েছে ফিকে আভা। আজ সবুজের বড় অভাব! ভাবনার জগত মনে করিয়ে দিল অপলাকে, আদৌ কি সংসার ছিল ওর। শুরুতেই তো ঘুন পোকা বাসা বেধেছে এই সংসারে। দক্ষ খেলুড়ের মত খেলে গেছে শোভন। আলাভোলা অপলা বুঝতেও পারে নি খেলোয়াড়ের আনাড়ি গুটি হয়ে বসে আছে ও। শোভনের নামমাত্র সঙ্গী ছিল অপলা। সত্যি করে বললে বলা যায় আইনী রক্ষিতা। দিনের পর দিন বিভিন্নজনের সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগ রেখে গেছে ও। পাকা খেলুড়ের রেসে পিছিয়ে নেই ওর সঙ্গিরাও।অপলার সাথে পরিচয় হয় নি ঠিকই কিন্তু ওদেরই দেয়া কত উপহার না ঢুকেছে অপলার নতুন সংসারে। কেননা যোগাযোগ ধরে রাখার এই অভিনব কায়দায়ই যে দরকার সব চাইতে বেশী! খেলুড়েদের এই খেলা দেখতে দেখতে অপলা আজ বড় ক্লান্ত। তপ্ত প্রকৃতির মাঝে অপলা আজ পথ চেয়ে বসে থাকে একটু সজীবের আশায়। এ যেন সবুজের সঙ্গে নানান রঙে ছড়িয়ে দিয়ে স্রষ্টারই নতুন কিছু সৃষ্টির প্রাণান্তর চেষ্টা।