somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফ্রিল্যান্স কনফিডেন্সিয়াল-১

১৭ ই জুন, ২০১২ বিকাল ৫:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফ্রিল্যান্সিং এখন একটি বাস্তবতা। শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতে এখন ফ্রিল্যান্সিং-এর জয়জয়কার। নিন্দুকেরা বলেন কর্পোরেটরা এখন এমপ্লয়ী নিতে ভয় পায় (পাবারই কথা। গত কদিনের আশুলিয়ার কথা ভাবেন!) এবং তারা কম টাকাতে বেশি কাজ করাতে চায় (মার্কসের কথা মনে আছে? এটি পূঁজিরই ধর্ম)।
কারণটা যায় হোক। ফ্রিল্যান্সিং-এর কাজ বাড়ছে এবং বাড়ছে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যাও। বিভিন্ন পেশাতে ফ্রিল্যান্সিং অনেক পুরোনো ব্যাপার (আমাদের দেশের কাজের বুয়া!!!) হলেও ঘুরে ফিরে এখন আসছে আইটি ভিত্তিক ফ্রিল্যান্সিং-এর কথা। আর এর সঙ্গে যোগ হয়েছে উন্নত বিশ্বের অফশো’র আউটসোর্সিং। কাজে সামনে এই সুযোগ বাড়বে বৈ কমবে না।
আমাদের দেশেও বাড়ছে এর ব্যপ্তি (সুযোগ পেয়ে নেমে পড়েছে প্রতারকরাও)। দেশের নানান স্থানে অন্য অনেকের মত আমরা এই নিয়ে নানান কথামালা, প্রশিক্ষণ, কর্মশালার আয়োজন করছি। সেখানে যোগ দিচ্ছে আমাদের সেরা ফ্রিল্যান্সাররা। তারা তাদের জানা টিপস, কৌশল সবই বলে দিচ্ছেন নতুনদের। কেও কেও তাদের অভিজ্ঞতা ব্লগে শেয়ার করছেন, ফেসবুকের গ্রুপে বলছেন, মেইনটেইন করছেন ই-মেইল গ্রুপ। জাকারিয়া চৌধুরী লিখেছেন এই বিষয়ের একটি বাল্যশিক্ষা – ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং। আবার পার্থ সারথির সঙ্গে মিলে লিখেছেন এসইও নিয়ে একটি বই। আরো অনেকে হয়তো লিখেছেন। আমার জানা নেই।
জাকারিয়া খুব মেথডিক্যালি আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্স কমিউনিটি নিয়ে জরিপ ইত্যাদি করে এই শিল্প বিকাশের পথে কিছু সলিড স্ট্যাটিস্টিক যোগাড় করেন নিয়মিত। অন্যরাও করেন। সবার চেষ্টায় আমাদের যুবা পেশাজীবীরা এগিয়ে যাবেন।
আমার ইদানিং মনে হচ্ছে আমরা হয়তো একটি বই কম্পাইল করতে পারি। সেখানে এক মলাটে ১০-১২ জন সেরা ফ্রিল্যান্সার থাকবেন। তাদের অভিজ্ঞতা, কৌশল আর টিপস নিয়ে বইটা সংকলন করা হবে। এবং সেখানে ক্রসকাটিং ইস্যুগুলো থাকবে।
কেও করছে না দেখে মনে হয় কাজটা আমাকে শুরু করতে হবে (মনে আশা যে, কেও না কেও এটির হাল ধরবে এবং আমার আলসেমি নিষ্কন্টক করবে)। সে চিন্তা থেকে আমি কিছু হোমওয়ার্ক করতে শুরু করি। আমার হোমওয়ার্ক মানে পড়া। এমন কোন বই আছে কিনা সেটা খুঁজতে গিয়ে দেখলাম ঠিক এরকম একটা বই লিখেছেন আমান্দা হ্যাকউয়িথ। আমান্দার বইটা প্রকাশ করেছে রকেবল প্রেস। (ফ্রিল্যান্স কনফিডেন্সিয়াল নামের বইটি আগ্রহীরা খুঁজে পেতে পারেন।) সেখানে ১০ জন ফ্রিল্যান্সারের সঙ্গে আলাপ করে নানান বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। বইটি অবশ্য কোনভাবে হাউ-টু বই নয়! অর্থাৎ কেমন করে ফ্রিল্যান্সিং করতে হবে তার কোন ধারণা সেখান থেকে পাওয়া যাবে না। বরং এখানে রয়েছে ফ্রিল্যান্সের মিথ এর ডিমিস্টিফাইং! বিশেশ করে সেরা ফ্রিল্যান্সার কেন সেরা? সে প্রশ্নের জবাব খোজা হয়েছে। সাকসেসের রহস্য কী সেটাও জানার চেষ্টা হয়েছে। আমি ভাবছি দেমের ১০ জনের সঙ্গে আলাপের আগে এই ১০জনের আলাপের একটা সার-সংক্ষেপ করে ফেলি, বরাবরের মত। অবশ্য আলসেমির রিসক তো আছে। দেখা যাবে পড়াটা হবে, লেখাটা নয়!
সে যাহগে। আমি এখন বইটি পড়তে শুরু করেছি।
২০০৭ সাল থেকে একটি প্রতিষ্ঠান একটি গ্লোবাল সার্ভে করে। প্রতি তিন বছর পর পর। তাদের সার্ভের রেজাল্ট দিয়ে বইটি শুরু হয়েছে। ৩২০০ এই সার্ভেতে রেসপন্স করেছেন। তিন বছরের ব্যবধানে সেখানে বেশ কিছু চমৎকার তথ্য এসেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল (আমি কয়েকটি উল্লেখ করছি, বিস্তারিত অন্য কোন সময় শেয়ার করা যাবে। আমাদের জাকারিয়াও এরকম একটি সার।বে করেছে। তার সার্ভেটি এখানে পাওয়া যাবে হয়তো )-
ফ্রিল্যান্সিং-এ মেয়েদের সংখ্যা খুবই কম। ২০০৭ এর ১৯% থেকে ২০১০ এ হয়েছে ২৩.৪%। মেয়েদের মধ্যে ভার্চুয়াল সহকারি আর গ্রাফিকসের আগ্রহ বেশি। জানা কথা তরুনদের মধ্যেই এর ব্যপ্তি বেশি। গড় বয়স হল ৩০। যারা ফুলটাইমার তাদের গড় ৩২ আর যারা পার্ট টাইমার তাদের গড় বয়স ২৮! তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে সবাই কমবেশি তাদের আয়ে খুশী।
অন্যদিকে ইন্টারনেটের সম্প্রসারণের কারণে ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে এশিয়ানদের সংখ্যা বাড়ছে। ২০০৭ সালের ৮.৭% থেকে ২০১০ এ এটি ১১.৪% হয়েছে। আমেরিকানরা ৫২ থেকে কমে হয়েছে ৫০%। আগের মতো সবাই আর বড় শহর থেকে আসছে না। আসছে ছোটখাটো এবং প্রান্তিক শহর থেকেও। তবে, গ্রামের উপস্থিতি এখনো ধর্তব্যের মধ্যে নয়।
কেন ফ্রিল্যান্সিং করে তার জবাবে মাত্র ১০% বলেছেন তারা চাকরি পাননি বলে একাজে এসেছেন! বেশিরভাগ বলেছেন স্বাধীনতা আর বাসা থেকে কাজ করার কথা। অনেকে অন্যদের জন্য কাজ করতে চায়না বলেছে। প্রায় সবাই নিজের সৃজনশীলতাকে বাড়ানোর কথাও বলেছেন।
২০০৭ সালে ৪০% ফুলটাইমার আর এখন প্রায় ৫০% !!!
আয়ের একটা চিত্র থেকে দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার ৭-১০ বছরের মধ্যে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ ডলার আয় করতে পারেন। এদের ঘন্টায় গড় আয় ৫৫ ডলার!!!
তারা কেমন করে শিখেছেন? অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেসিক স্কিল নিয়ে এসেছেন তবে ৫০% এর বেশি কিন্তু নিজে নিজে শিখেছেন!
কেথায় তারা কাজ পান? জবাবটা ইন্টেরেস্টিং- ৬০% এর বেশি কাজ পান রেফারেন্সে, অনেকে পান নিজের ওয়েবসাইট আর স্যোসাল মিডিয়া থেকে। মজার একটা তথ্য হল বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার যত সময় ধরে কোন একটি প্রজেক্টে কাজ করেন তার ৪০% বিল করেন।
আগে সবাই বাসা থেকেই সব কাজ করতো। এখন শেয়ারড অফিস এমনকি ক্যাফেতে বসেও কাজ করা হচ্ছে। এদের মধ্যে ৫১% নিজেকে বিশেষজ্হ মনে করেন (রেট দেখলে বোঝা যায়)।
নিয়ারশো’র থেকে অফশো’রের মাত্রা বাড়ছে। আগে লোকাল কাজ ছিল ৫৪% এখন ৪৯%!
আয়ের মাত্রা
Industry Average Hourly Rate
3D Production $107.32
Photography $83.87
Business Consultant $81.44
Other $66.85
Project Manager $59.54
Web Designer $59.86
Video Production $57.33
Software Designer $54.88
Musician $49.86
Writer $48.00
Web Developer $47.98
Graphic Designer $45.71
Illustrator $44.91
Virtual Assistant $23.84

এর পরের অধ্যায়ে রয়েছে বড় প্রশ্নগুলোর উত্তর। লিখতে পারলে শেয়ার করবো।


সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১২ বিকাল ৫:৫২
১২টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×