আমি একজন সাধারণ অন্যায়কারী, খুন, ধর্ষন, রাহাজানি, ছিনতাই, জমি দখল, অন্যায় ব্যবসার কমিশন, চাঁদাবাজি, গোপন পলিটিক্স এ জাতীয় ছোটখাট অপরাধ করি। আমি একাই আমার এলাকা নিয়ন্ত্রণ করি। আমাদের এলাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে আমার খুবই সুনাম (?)
কি ভাবছেন পাঠক? এত অন্যায় করেও আমি পার পাই কিভাবে?
হ্যাঁ আমার একজন বিরোধী আছেন। যিনিও আন্ডারওয়ার্ল্ডে আমার মতই এক্সপার্ট। তার এলাকাও নির্ধারিত। কিন্তু মাঝে মাঝে একে অন্যের এলাকায় আমরা ঢুকে পড়ি। ফলাফল সংঘাত। এই সংঘাতের ফলে আমার এবং তার কিছু কর্মীর প্রাণ যায় কেবল। আমার এবং তার কিছুই হয় না। কারণ আমরা তো আর মাঠে নামি না। মাঠে থাকে আমাদের কর্মী বা প্রতিনিধি।
যাহোক একবার আমার বিরোধীপক্ষ আমাকে বলল নির্বাচনের মাধ্যমে এলাকা নির্ধারিত থাকবে। কেউ অন্যের এলাকায় প্রবেশ করব না। কারণ এতে শুধু শুধু নিজেদের মধ্যে মারামারি করে শক্তিক্ষয় আর মূল্যবান কর্মীদের প্রাণনাশ ছাড়া তেমন একটা উপকার হয় না। উভয়ে অনেক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে, যেহেতু আমরা সাধারণ জনগণের মধ্যে আমাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করি। তাই সাধারণ মানুষকে আমাদের সম্মান ও ভয় করতে হবে। আর এজন্য সম্ভাব্য সব ধরণের কর্মকান্ড পরিচালনা করব। কেউ কারও এলাকায় প্রবেশ করব না। একবার আমি অন্যবার সে এভাবে আমরা এলাকা পরিবর্তন করব। এভাবে আমাদের সুমহান (?) কর্মকান্ড পরিচালনা করব। আমরা জনগনের সেবক, জনগণের নিকট থেকে কিছু নেই বিনিময়ে তাদের নিরাপত্তা (?) দেই।
যাহোক প্রথমে কে থাকবে সবচেয়ে লাভবান এলাকায় এই নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্ক বেধে গেল। আমি বলি আমি থাকব সে বলে সে থাকবে। এই তর্ক আর থামে না। যাহোক শেষে সমঝোতা হল, তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় আমরা এলাকা নির্বাচন করব। প্রথমে তাতে সম্মত হয়েও পরে ভাবলাম, যদি তৃতীয় পক্ষ সমঝোতার নামে আমাদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে? তবে তো আমাদের অবস্থা কাহিল। সারা জীবন জেলের ঘানি টানতে টানতে মরতে হবে। আমাকেও আমার বিরোধী পক্ষকেও। তাই বিষয়টা নিয়ে আবারও আমরা আলোচনা করি। তাকে বুঝাই যে, যদি তৃতীয় পক্ষ সমোঝাতা করার নামে আমাদের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে আমাদের জেলে ঢোকায় তাহলে তো যত অন্যায় আমরা করেছি আর কোনদিন জেল থেকে বেরুতে পারব না। তাই কি দরকার এসব তৃতীয় পক্ষকে নির্বাচন করার ক্ষমতা দিয়ে। আসুন না আমরা একে অপরকে একটু ছাড় দেই, মাত্র তো কটা দিন। একবার আমি থাকব লাভজনক এলাকায় আরেকবার আপনি থাকবেন।
নইলে আমি জেলকে অনেক ভয় করি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত জেলেই আমার ও আপনার বাকি জীবন কাটাতে হবে। শেষ পর্যন্ত আমার বিরোধী পক্ষ এখনও কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে নি। আমাদের মধ্যে চলছে আলোচনা, পর্যালোচনা।
পাঠক গল্পটি শুধুই কাল্পনিক। কারও ব্যক্তিগত ঘটনার সঙ্গে এটা মিলে গেলে তা সম্পূর্ণ কাকতালমাত্র। কাউকে অপমান, ছোট বা হেয় করা উদ্দেশ্যে আমার এ গল্প রচনা নয়।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৩৪