somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহাশূন্যে আদৌ কী কোথাও অন্য কোন প্রাণী আছে?

১৪ ই জুন, ২০১২ বিকাল ৪:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মহাশূন্যে আদৌ কী কোথাও অন্য কোন প্রাণী আছে? ভিনগ্রহের জীব নিয়ে মানুষের আগ্রহের তো শেষ নেই৷ সে আগ্রহে খানিকটা জল ঢেলে দিল অস্ট্রেলিয়ার এক গবেষণা৷

মহাশূন্যের প্রাণী৷ এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল বা ইটি৷ স্টিভেন স্পিলবার্গের সেই অসামান্য ছবি, ইটি যে পরিমাণ সাড়া ফেলেছিল আশির দশকে, তা আজও অনেকে ভোলেনি৷ কল্পনার সেই প্রাণীর ক্ষমতা অনেক বেশি, তারা যা খুশি করতে পারে৷ দেখতে অদ্ভুত হয়, তাদের কারও শিং আছে, যেটা আসলে অ্যান্টেনা, কারও বা চারটে হাত, কিংবা কারও মাথায় শুধুই একটাই চোখ৷

এরকম কল্পনার গরুকে গাছে ওঠাতে দেখে আসছি আমরা সেই কবে থেকে৷ মাঝে মধ্যেই এমন অনেক গল্পগাছাও শোনা যায়, যাতে বলা হয়, অমুক জায়গায় দেখা গেছে ফ্লাইং সসার বা উড়ন্ত চাকি৷ এই উড়ন্ত চাকি আসলে হল ভিনগ্রহের মহাকাশযান৷ যার মধ্যে মানুষের থেকে হাজারগুণ বেশি বুদ্ধি ধরে এমন সব জীবেরা রয়েছে৷ তারা কখনো মানুষের বন্ধু, কখনো বা পৃথিবীর দখল নিতে আসে তারা৷ আর শেষ পর্যন্ত মানুষের সঙ্গে লড়াইতে হয় মারা পড়ে, নাহলে পালিয়ে যায়৷

ভিনগ্রহের জীবেদের নিয়ে এই যে কষ্টকল্পনা বা রোমাঞ্চ কল্পনা এ রয়েছে বহুকাল ধরেই৷ নানা ধরণের কল্পবিজ্ঞানের কাহিনী গোটা বিশ্বেই পাওয়া যায়৷ এ কোন নতুন তথ্য নয়৷ কিন্তু আদৌ তারা আছে নাকি এসবকিছুই গাঁজাখুরি, সেটা জানতে গবেষণাও কম হচ্ছে না৷

তেমনই একটা বিশেষ গবেষণা বেশ অনেকদিন ধরেই চালিয়ে আসছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মহাকাশচারীরা৷ এই গবেষণার জন্য তাঁরা ব্যবহার করছিলেন একেবারে অত্যাধুনিকতম প্রযুক্তি৷ কিন্তু বিস্তর চেষ্টা চরিত্র করেও কোনকিছু খুঁজে পাওয়া যায় নি৷ বিশেষ করে যেদিকটিতে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছিল এই গবেষণার ক্ষেত্রে, তাহল রেডিও সিগন্যাল বা রেডিও বার্তা৷

ধারণা করা হচ্ছিল, এই মহাকাশের জীবেরা কোন না কোন রেডিও সিগন্যাল তো অবশ্যই ব্যবহার করে থাকে৷ সুতরাং তেমন কিছু থাকলে যাতে সেই অতি নাজুক রেডিও সিগন্যালটাকেও ধরা যায়, তার জন্য বিশেষ ধরণের ক্ষমতাশালী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে৷ কিন্তু এত চেষ্টা করেও লাভের লাভ তেমন কিছু হয়নি৷

কীভাবে এগিয়েছিল এই গবেষণা? অস্ট্রেলিয়ার গবেষক মহাকাশচারীরা বলছেন, আমাদের চেনাজানা সৌরজগতের যে সমস্ত গ্রহ এবং নক্ষত্র রয়েছে, তাদের মধ্যে সংযোগসাধনের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেখলে দেখা যাবে, মহাকাশে গিলিয়েসে ৫৮১ নামের একটি নক্ষত্রের অবস্থান বেশ গুরুত্বপূর্ণ৷ এই নক্ষত্রটি পৃথিবী থেকে ২০ আলোকবর্ষ দূরে মহাশূন্যের এমন এক অবস্থানে রয়েছে, যেখানে তার আশেপাশে, অর্থাৎ তাকে ঘিরে রয়েছে ছয়টি গ্রহ৷ সেই ছয়টার মধ্যে দুটোর আকার আমাদের এই পৃথিবীর থেকেও অনেক বড়মাপের৷ আর মহাশূন্যের কোথাও অন্য গ্রহের প্রাণী থেকে থাকলে তাদের সবচেয়ে বেশি থাকার সম্ভাবনা এই গিলিয়েসে ৫৮১-র কোন গ্রহেই৷

সুতরাং, নক্ষত্র গিলিয়েসে আর তার গ্রহদেরকে নিয়েই শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর রেডিও অ্যাস্ট্রোনমির গবেষণা৷ যাতে ভিএলবিআই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল৷ যে পদ্ধতিতে আসলে একাধিক টেলিস্কোপকে একসঙ্গে জুড়ে নিয়ে তাদের ক্ষমতাকে বহুগুণ বাড়ানোর পাশাপাশি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম এবং বহুদূরের রেডিও সিগন্যালকে ধরা যাবে৷ সে চেষ্টায় দেখা গেল প্রাথমিক ভাবে কোন ফলাফল মেলেনি৷

অবশ্যি, তার মানে আদৌ এরকম নয় যে ভবিষ্যতে কিছু পাওয়া যাবে না৷ এই দাবি অন্য কারও নয়, বলছেন সেথ সোস্টাক নামের এই গবেষকদলের নেতা৷ তাঁর যুক্তি খুব স্বচ্ছ৷ জানিয়েছেন, অসীম মহাশূন্যের একটা ছোট্ট অংশকে বেছে নিয়ে সেখানে ভিনগ্রহের প্রাণীদের উপস্থিতির সম্ভাবনা আছে ধারণা করে নিয়ে একটা গবেষণা শুরু হয়েছে৷ তাতে কোন ফলাফল না পাওয়ার অর্থ এমন মোটেই নয় যে ভবিষ্যতের গবেষণায় বা চেষ্টায় কোন সুফল ফলবে না৷ কারণ, মহাশূন্যের একদিক থেকে অন্যদিকের যে বিশাল দূরত্ব, তাকে সহজে পেরোনোর পন্থা এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি৷ সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে এটা বোঝা মোটেই সহজ কাজ নয় কী রয়ে গেছে সেই অজানা অদেখা গ্রহগুলোতে৷ কারণ সেখানে না পৌঁছতে পারলে সংযোগ কীভাবেই বা সাধিত হবে?

এ যুক্তি অকাট্য৷ তাই গবেষণা চলুক৷ কোন না কোনদিন হয়তো বা সেই ই টি-র সন্ধান সত্যি সত্যিই পেয়ে যাবে মানুষ৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায় (এপি, এএফপি)

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম
dw.de
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমার ড্রোন ছবি।

লিখেছেন হাশেম, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩

বৃহত্তর প্যারিস তুষারপাত।

ফ্রান্সের তুলুজ শহরে বাংলাদেশের প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার।

হ্যাসল্ট, বেলজিয়াম।

ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী ফ্রান্সের ফ্রিওল আইল্যান্ড।


রোডেসিয়াম এম রেইন, জার্মানি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×