স্টার জলসা আর স্টার প্লাস এখন ডায়গনেষ্টিক সেন্টারেও
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
সেই সকাল ১১.৩০ টায় ভাগনীর ই.ই.জি করানোর জন্য যেতে হলো পপুলার ডায়গনেষ্টিক সেন্টারে(নার্সদের চাকরী আর অপমানিত না করার জন্য শাখার নামটি উহ্য রাখলাম)। সিরিয়াল বেশী না মাত্র ১০ জনের কিন্তু একজনের জন্য প্রায় ৪৫ মিনিট সময় লাগে আবার বাচ্চাদের ঘুমানো শর্ত তাই সিরিয়াল কম হলেও সময় চলে যায় অনেক।
আমাদের সিরিয়াল ৮ নাম্বারে।একবার ফিরে আসতে চেয়েছিলাম কিন্তু আসা যাওয়ায় সময় চলে যাবে আর এ গরমে রাস্তায় নামার চেয়ে এসির বাতাস খাওয়া ভালো।কিন্তু অপেক্ষার সময় তো আর শেষ হয় না, তাই ওয়েটিং রুমে বসে বসে ইচ্ছা না থাকলেও সময় টেলিভিশনের একই বিজ্ঞাপন আর নিউজ দেখছিলাম একটু পর পর।কোন উপায় নেই অতঃএব অপেক্ষা করা।
সময় তখন ৩.৩০ টা। দুপুর গড়িয়ে গেছে, রোগীর সংখ্যাও ধীরে ধীরে কমে আসলেও একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। ওয়েটিং রুমে তখনো রোগীর সংখ্যা কমপক্ষে পাঁচ জন।সময় টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন আর কতক্ষন….? তাই ব্যাগে থাকা একটা ম্যাগাজিনের বানান ভুল ধরার কাজে লিপ্ত হলাম আর লাল কালিতে দাঁগ দিচ্ছিলাম। এবং সঙ্গে থাকা প্রিয় লেপুটাকে অপেক্ষার সঙ্গী বানিয়ে সময় কাটাচ্ছিলাম।
এমন সময় সময় টেলিভিশনের আওয়াজ চেঞ্জ হয়ে গেলো। সেখান থেকে আর সময় টিভির পানিতে সময় টিভি ভেজার আওয়াজ পাওয়া গেলো না বরং সেখান থেকে ঠা….ঠা….ঠা.…ঠা…. ৪ বার করে আরো কত রকমের আওয়াজ।…………. চোখ চলে গেলো সেদিকে ।আরে একি সময় টেলিভিশনের বদলে এখন চলছে স্টার জলসা। ……. সামনের দর্শক সাড়িতে উপস্থিত ডায়গনেষ্টিক সেন্টারের ৩ জন নার্স আর আরো দুই জন কর্মচারী আর রোগী ও তার আত্মীয় স্বজনরা তো আছেই।
নার্স সহ দর্শকবৃন্দের চেহারার দিকে তাকিয়ে আমিতো তাজ্জব………. সবাই তম্ময় হয়ে তাকিয়ে আছে স্টার সিরিজের কোন এক চ্যানেলে, যেখানে ক্রন্দনরাতা নারী দুঃখ ভারক্রান্ত হৃদয়ে সুন্দর করে সেজে সংসারের হালহাকিত বর্ননা করছেন।দর্শক মন্ডলীর চেহারায় সুন্দরী সাজুগুজ রমনীর ক্রন্দন দেখে কাঁন্না ভাব চলে আসলো। আমি এক সাইডে থাকায় আর মাঝখানে একটি সুদৃশ্য পিলারের আড়ালে পরায় তেমন মনযোগী হতে পারলাম না টিভির প্রতি, আর টিভি দেখার অভ্যাসটা তো বাদ গেছে অনেক দিনে আগেই।
খুব বেশী অবাক হওয়ার কিছু নাই বিষয়টাতে কারণ এখন ঘর বাড়ী সব জায়গাতেই বিশেষ করে নারী অঙ্গনে স্টার জলসা আর স্টার প্লাসের জয়জয়কার। অতঃএব এখানেও চলতে সমস্যা কি ?
কিন্তু তাই বলে ব্যস্ত ডায়েগনেষ্টিক সেন্টারের ওয়েটিং রুমে বসে নার্সবৃন্দ সমাবেশের সহিত দেখবেন এটা মেনে নিতে পারলাম না। রোগীরা সকাল থেকে অপেক্ষামান আর এদিকে নার্সরা স্টার সিরিজ দেখায় মগ্ন। হয়তো তাদের কর্তব্য পালন শেষ হয়েছে তাই বলে রোগীদের ওয়েটিং রুমে বসে স্টার সিরিজ দেখতে হবে??????????? আবার যেখানে বাচ্চাদের ঘুমানো জরুরী সেখানে সাউন্ড দিয়ে তারা দেখছেন স্টার সিরিজ।
তারা যে নিয়মিত এ কাজে মগ্ন থাকেন তার প্রমান পেলাম আরেকজন কর্তব্যরত কর্মচারীর মুখের কথায়। হয়তো যথাযথ কর্তব্য না করায় তিনি একজন নার্সের উদ্দেশ্য করে বলছেন……… কাজকর্ম নাই শুধু টিভি দেখা?
প্রথমে কিছু না বললেও একজন রোগীর বাবা এবার হলেন একটু গরম……… কি আপা……. বাচ্চাদের ঘুম পড়াবো না নাকি ? টিভির সাউন্ডটা একটু কমান তো………….. কাজ হলো তাতে… বন্ধ হয়ে গেলো টিভি।
বাসা বাড়ীতে এখন থাকি না বলে স্টার জলসা আর স্টার প্লাসের নির্যাতন ভোগ করতে হয় না তেমন কিন্তু এর প্রভাব যে হাসপাতাল, ডায়গনেষ্টিক সেন্টারেও পড়েছে তাই দেখে কিঞ্চিত ভাবিত হলাম……………….
স্টার এর সৌজন্যেঃ
.............................
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।
আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?
সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন
মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.
গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন
=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=
©কাজী ফাতেমা ছবি
বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।
ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন