somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্কুলে ধর্মশিক্ষা -

১২ ই জুন, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বেগম আসমা আব্বাসী সমীপে- স্কুলে ধর্মশিক্ষা প্রসঙ্গে
আপনি ইত্তেফাক পত্রিকার (শনিবার, ৯ জুন ২০১২, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৯) সোনালি আগামীর প্রত্যাশা নামে উপস্পাদকীয় তে লিখেছেন-
'স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগে বিভিন্ন সিলেবাস। অনেক বিষয় পড়তে হয় তাঁদের। ইংরেজি বাংলা অংক ভূগোল ইতিহাস বিজ্ঞান স্বাস্থ্যচর্চাসহ আরো অনেক কিছু পড়ানো হয় স্কুলে। অভাব একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের, দীনিয়াত বা ধর্মগ্রন্থ। বৌদ্ধ খ্রিষ্টান হিন্দু মুসলমান সবারই তো রয়েছে নিজ নিজ ধর্মশিক্ষা।
অনায়াসেই তাকে অন্তর্ভুক্ত করা যায় স্কুলের সিলেবাসে। শিশু-কিশোরদের জীবনে গৃহই প্রথম শিক্ষালয়, তবু তারা বেশি মান্য করে স্কুলের শিক্ষককে। স্কুলে যা শেখানো হয় আমাদের তা যেন পাহাড়ের বুকে খোদাই করার মতো আঁকা হয়ে যায় তাদের কচি মনে। ক্লাসের স্যার বা ম্যাডাম যা বলবেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে দিন এগোয় তাদের। চারটি ধর্ম পড়ানোর জন্য চারজন শিক্ষক অনায়াসেই নিয়োগ করা যায়। শরীরচর্চা সংগীতচর্চা ছবি আঁকার শিক্ষক আছেন, কেন ধর্মশিক্ষার শিক্ষক রাখা যাবে না। আমাদের আবেদন শিক্ষামন্ত্রীর সমীপে, আপনি একটু দৃষ্টি দিলেই সকল স্কুলে একই সিলেবাস পড়ানো হবে, জ্ঞানের দীপশিখা জ্বালানোর বিদ্যাপীঠগুলো সকল বিষয়ে শিক্ষা দেয়ার সাথে সাথে নৈতিক মূল্যবোধ যার গোড়ার কথা লেখা আছে ধর্মগ্রন্থে তার মেলবন্ধনে আমাদের আগামী প্রজন্মকে সত্য, সুন্দর, কল্যাণ, ন্যায় ও সততার কষ্টিপাথরে যাচাই করে গড়ে তুলবেন খাঁটি সোনার মানুষ।' ইত্তেফাক।


আমি আপনার মতের সাথে দ্বিমত পোষণ করে বলছি- ঈশ্বরকে ক্লাশরুম থেকে বাইরে রাখাই ভালো ।
বেশ কিছুদিন আগে নেট-এ পড়েছিলাম, ‘ঈশ্বরকে ক্লাশরুম থেকে বাইরে রাখুন’- হেডিংয়ে একটি আর্টিকেল । সংক্ষেপে বাংলা করলে এরকম-

পশ্চিমের এক ছোটদের স্কুল । রোববার বন্ধ থাকে । কোথাও কোথাও ক্রস ঝুলতো । প্রশ্ন করলে বলতো তারা ক্যথলিক। ইস্টারে ছুটি থাকে- কিন্তু বিদ্যার্থীদের অর্ধেকই কেন তা জানে না । অনেকের গলায় চেন-এ ক্রস ঝোলান,কিন্ত তেমন চোখে পড়তো না ।
একদিন কিছু মেয়েরা এলো পড়তে,-তাদের স্কুল ড্রেসের সাথে মাথায় স্কার্ফ জড়ানো। সবাই তাকায়-
এটা আবার কি । কৌতূহলী ছেলেমেয়েদের প্রশ্নে অনেকে বললো –
ওরা মুসলমান । ওরা আলাদা । তারপর আরেকদিন- ওই মেয়েগুলো বললো- ‘আমরা তোমাদের টিফিন খাব না-ওটা হালাল নয়।‘
তারপর বাসা থেকে টিফিন আনে , দুরে বসে আলাদা খায় ।
আরেকদিন বললো,-
‘দুপুর দেড়টায় ক্লাশ করবো না , কেননা তখন আমাদের নামাজের সময়।‘
একদিন দেখা গেল বারান্দার এক কোনে জায়নামাজ বিছিয়ে তারা নামাজ পড়ছে । কেউ কিছু বললোনা, ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দিতে হবে ।
একদিন এক ছেলে একটি মেয়ের মাথার স্কার্ফ ধরে টান দিল । মেয়েটা কমপ্লেন করলো । টীচার বললেন-, এরকম আর কখনো করবে না । এটা খুবই অন্যায় ।
-ওরা মাথায় কী দেয় ?
-ওদের ধর্মীয় পোষাক ।
-ওরা আলাদা ?
-ওরা মুসলিম ।
-মানুষ কি অনেক রকম ?
প্রধান শিক্ষক এরপর স্কার্ফ পরা নিষিদ্ধ করলেন ।এবার ওই মেয়েগুলো বললো-
'-তাহলে ওরা কেন ক্রস পরে ? ওরা কেন পাগড়ী পড়ে ?’
শিক্ষক এবার ক্লাশে সবরকম ধর্মীয় পোষাক পরিধান নিষিদ্ধ করলেন ।
এবার মুসলিম ,খৃষ্টান,শিখ সবাই একযোগে প্রতিবাদ করলো । কেউ কারও কথা শুনছে না । সবাই যে যার মত বচসায় লিপ্ত হলো ।
এভাবে একদল নিষ্পাপ সরল শিশুরা সব আলাদা আলাদা হয়ে গেল ।

এত গেল পাশ্চাত্তের কথা ।
এবার দেখা যাক প্রাচ্যের অবস্থা । এটি 'সংবাদ' পত্রিকায় লিখেছিলেন প্রয়াত সন্তোষ সেনগুপ্ত ।
যখন এরশাদ সাহেব ধর্ম স্কুলে পড়ানো বাধ্যতামুলক করলেন তখনকার কথা ।
'বাংলাদেশের একটি মেয়েদের স্কুল । একটি পিরিয়ড শেষ এর ঘন্টা পড়লো ।
একটু পর ধর্ম শিক্ষার ক্লাশ শুরু । যার যা ধর্ম তাই সে পড়বে । ক্লাসে প্রায় সবাই মুসলিম ।
একমাত্র হিন্দু মেয়েটি তখন ক্লাসের বাইরে করিডোরে দাঁড়িয়ে একা । তার হাতে হিন্দুধর্ম শিক্ষার বই। ও ক্লাশে যেহেতু একজনই , তাই ওর ধর্ম ক্লাশের জন্য কোন ক্লাশরুম নেই,টিচারও নেই । সারা স্কুলে জনা দশেক হিন্দু মেয়ে , কিন্ত হিন্দু ধর্ম পড়ানোর শিক্ষক নিয়োগই হয়নি । অতএব প্রতিটা ক্লাসের ধর্ম পিরিয়ডে হিন্দু (বৌদ্ধ,খৃস্টান)ছাত্রীদের করিডোরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ।
একসময় ধর্ম ক্লাস শেষ হলো । করিডোরে দাঁড়ানো মেয়েটা ধীর ভারী পায়ে মাথা নীচু করে আবার ক্লাসে ঢোকে । ওর সারা শরীরে উপচে পড়ে যেন এক অপরাধ বোধ – ও যে হিন্দু , ক্লাসের সবার থেকে আলাদা ।

আসমা আব্বাসী ,এবার আপনাকে বলি, আপনি নিশ্চয়ই মানবেন যে ধর্মের নৈতিকতা ইউনিভার্সাল নয় ।একধর্মের নৈতিকতা অন্য ধর্মে অনৈতিক , এটি আপনাকে বুঝিয়ে বলার কিছু নেই । হাজার উদাহরণ আছে।
যে মদ আমাদের ধর্মে নিষিদ্ধ ,হারাম- মনে হয় ছুঁলেও পাপ সেই মদ খেয়ে খৃষ্টানরা ব্যপ্টাইজড হয় । হিন্দু মেয়েদের ধর্মীয় নৈতিকতা হল স্ত্রী স্বামীর সহধর্মিনী, চিরকালের জন্য গাঁটছড়া বেঁধে দেয়া হয়। মুসলমানের কাছে বিয়ে একটা চুক্তিমাত্র, সহধর্মিনী হতেই হবে এমন কথাও নেই -শর্তভঙ্গের কারনে যা যে কোন মুহূর্তে বাতিল করা যায় । চিরকালীন থাকার কোন ধর্মীয় বাঁধা নেই ।
বৌদ্ধদের কাছে কোন ঈশ্বরই নেই ,মুসলমানের কাছে যা মনে আনাও অনৈতিক । তাদের পরকাল বলেও কিছু নেই । আছে নির্বাণ-মন্দ কাজ করলে বার বার এই দুঃখময় পৃথিবীতে আসতে হবে-আর যদি পূণ্য করে তাহলে মুক্তি ।
খৃষ্টানরা শুয়োর খায়,-ইহুদী মুসলিমদের কাছে তা হারাম, মুসলমান গরু খায়-সেই গরু হিন্দুদের কাছে দেবতা-সদৃশ । এরকম হাজার বিষয় আছে নৈতিকতা বিষয়ে-যা একেক ধর্মের একেক রকম । মুসলমানরা চোখের বদলা চোখ নেয়- আর খৃষ্টের বাণী হল -'এক গালে চড় খেলে আরেক গাল বাড়িয়ে দিও ।
আর-‘ সদা সত্য কথা বলিবে, পিতামাতাকে সম্মান করিবে’- ইত্যাদি শেখানোর জন্য ধর্ম পুস্তকের দরকার নেই । বরং তাতে ভুল বোঝার সম্ভাবনা বেশি ।
সত্য বলাও, ধর্মমতে শর্তসাপেক্ষ- অর্থাৎ আগে দেখতে হবে তাতে লাভ না ক্ষতি। মিথ্যা বলাও জায়েজ যদি তা কাজে লাগে । একটি হাদিস আছে-
‘ক্বাব বিন আশরাফ নামে এক কবি রসুলকে উপহাস করে কবিতা লিখতেন ।রসুল তাকে হত্যা করার আহ্বান জানালেন তার বিশ্বস্থ সাহাবাদের কাছে। ক্বাব এর এক সৎ ভাই হত্যা করতে রাজী হলেন –কিন্ত এক বিশেষ শর্তে ।
-কি সেই শর্ত?’ রসুল জিজ্ঞেস করলেন
-আমাকে মিথ্যা বলার অনুমতি দিতে হবে ।
-তথাস্তু ।মুহাম্মাদ রাজী হলেন । (সহি বুখারি)

হিন্দু ধর্মের ‘অশ্বথামা হত –ইতি গজ’ কাহিনি সবারই জানাই ।
কিন্তু রবীন্দ্রনাথে পড়ি-
‘যদি দুঃখ বহিতে হয় তবু মিথ্যা চিন্তানয়,
যদি দৈন্য বহিতে হয় তবু মিথ্যা কর্ম নয়,
যদি দন্ড সহিতে হয় তবু মিথ্যা বাক্য নয়
জয় সত্যের জয় ।। কোন অবস্থাতেই মিথ্যা চলবে না ।

এছাড়াও মানবতা ও ধর্মীয় আদর্শ নিয়েও আছে বিভেদ ।
সৌদি পুলিশ যখন মেয়েদের হোস্টেলে রাতের বেলা আগুন লাগলে পলায়নরত মেয়েদের বাঁধা দেয় এই অজুহাতে যে তারা প্রোপার ড্রেস কোড পরা অবস্থায় ছিলনা , নাইট গাউন পরা অবস্থায় ছিল । তারা শেষ পর্যন্ত আগুনে পুড়েই মারা যায় । এতে ধর্ম রক্ষা হয়তো হলো, কিন্তু মানবতা নয় । ধর্ম বহু ক্ষেত্রেই এমন অমানবিক,- যার নৈতিকতার মানদন্ড মানবিকতায় মেলে না ।

আবার একই ধর্মের মধ্যেও নৈতিকতা নিয়ে বিপরীত কথাবার্তা আছে , ফারাক আছে ।
স্যার আব্দুল্লাহ সুহরাওয়ার্দি’র সম্পাদিত ‘রাসুলুল্লাহ’র বাণী’ তে (বাংলা অনুবাদ- মুস্তফা জামান আব্বাসী) এক পরমতসহিষ্ণু, দয়ালু, উদার এক মহাপুরুষের পরিচয় পাই। রসুলুল্লাহর একটি বাণী এই প্রকার:-
‘ক্ষুধার্তকে অন্ন দাও, পীড়িতকে সেবা দিও, অন্যায়ভাবে অবরুদ্ধ বন্দিকে মুক্ত কর । যে কোন অত্যাচারিত ব্যক্তির সাহায্য করিবে –সে মুসলমান হোক বা অমুসলমান ।‘
কিন্তু তাঁর জীবনের সবর্ত্র এই ছবি মেলে না । সৌদি অর্থায়নে প্রকাশিত মাওলানা মুফতি ম শাফি’র ‘মারেফুল কোরানে’ বণর্না আছে - ‘একবার রসুলে করিম সমগ্র মক্কার জন্য দুর্ভিক্ষের আযাব সওয়ার হওয়ার দোয়া করেছিলেন –
-‘হে আল্লাহ্ এদের উপর ইউসুফের আমলের মত দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দিন। কেননা তারা তোমার পথে না এসে স্বীয় ধর্মপথেই চলতে আগ্রহী।’ -(মারেফুল কোরানে পৃ: ১২৩৫)অনুবাদ-ম মুহীউদ্দীন ।

এভাবে সাধারণ মানবিক মুল্যবোধ, নৈতিকতা ও শিক্ষার সাথে ধর্মীয় শিক্ষার সাথে বিরোধ। যেমন-
হুদায়বিয়া যুদ্ধের গোপন প্রস্তুতির কথা রসুলের এক সাহাবি কোরেশদের কাছে ফাঁস করে দেন এই আশায় যে ,মক্কায় থেকে যাওয়া তার স্ত্রী সন্তান, যাদের ফেলে তিনি মদিনায় হিজরত করেছিলেন- তারা তাদের হিফাজত করবে । মুহাম্মদ এই গোপন তথ্যটি জানতে পেরে তাকে তিরস্কৃত করেন এই বলে-
-‘যে সন্তান ও আত্মীয়দের জন্য তুমি এই কাজ করলে কিয়ামতের দিন তারা তোমার কোন কাজেই আসবে না ।‘ সিরাতে রসুলু্ল্লাহ- ইবনে ইসহাক ।
কিন্তু প্রিয়জন , সন্তানদের প্রতি স্নেহ ভালোবাসা কি কেবল কেয়ামতের ভয়ের কথা ভেবে হয় ? আমার তো মনে হয় এই ভালোবাসা নিঃস্বার্থ ,মানবিক –এই ভালোবাসা স্বার্থ দেখে না , রাজনীতি বোঝেনা। কিন্তু ধর্মের নৈতিকতার মাপ অন্যরকম- মানবিকতার স্থান সেখানে খুবই কম, সেখানে ধর্মই প্রধান -যেমনটা রসুল বলেছিলেন ।
নবীজির কথায় সেই সাহাবির উত্তরেও সেই কথাই প্রকাশ পায়। সাহাবি বলেন,- : আমি ইসলাম ও মুসলমানদের ক্ষতি করার জন্য এ কাজ করিনি। কেন না আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে মুসলমানরাই যুদ্ধে জিতবেন । আমি শুধু আমার পরিবারের হেফাজত চেয়েছিলাম । ( মারেফুল কোরান)
মনে হয় সেই সাহাবি তখন পর্যন্ত পরিপুর্ণ ভাবে মুসলমান হতে পারেন নাই-মানবিক মুল্যবোধগুলো অনেকটাই থেকে গিযেছিল । সব দূর করতে পারেন নাই।

তারপর সব ধর্মই নিজের টা শ্রেষ্ঠ-বাকীদের নিকৃষ্ট বলে । আমাদের ধর্মেও এমন অনেক আয়াত আছে - যেখানে পৌত্তলিক হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টানদের শুয়োর,বাদর,কুকুর প্রভৃতি নিকৃষ্ট পশুর সাথে তুলনা করা বা সম্বোধন করা হয়েছে । তখন তাদের প্রতিক্রিয়া কি হবে ? প্রাপ্ত বয়স্ক ছাড়া এসবের ‘শানে নযুল’ তো বুঝবে না ।
‘আহলে-কিতাব ও মুশরেকদের মধ্যে যারা সত্যত্যগী , তারা জাহান্নামের আগুনে স্থায়ীভাবে থাকবে। তারাই সৃষ্টির অধম। ৯৮:০৬
হে ঈমানদারগণ! মুশরিকরা তো অপবিত্র ( নাপাক –থানভী)। সুতরাং এ বছরের পর তারা যেন মসজিদুল-হারামের নিকট না আসে। ৯:২৮
তোমরা তাদেরকে ভালরূপে জেনেছ, যারা শনিবারের ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘণ করেছিল। আমি বলেছিলাম , তোমরা লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও।২:৬৪।৬৫
‘বলুন , আমি তোমাদেরকে বলি, তাদের মধ্যে কার মন্দ প্রতিফল রয়েছে আল্লাহর কাছে? যাদের প্রতি আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন, যাদের প্রতি তিনি ক্রোধাম্বিত হয়েছেন, যাদের কতককে বানর ও শুকরে রূপান্তরিত করে দিয়েছেন-----৫:৬০

যাদেরকে তওরাত দেয়া হয়েছিল, অতঃপর তারা তার অনুসরণ করেনি, তাদের দৃষ্টান্ত সেই গাধা, যে পুস্তক বহন করে, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে, তাদের দৃষ্টান্ত কত নিকৃষ্ট। ৬২:৫

তাদের মধ্যে কিছু তো রয়েছে ঈমানদার আর অধিকাংশই হলো পাপাচারী। ৩:১১০

সে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে, যে তার অপকার করতে পারে না এবং উপকারও করতে পারে না। এটাই চরম পথভ্রষ্টতা। -----
সে এমন কিছুকে ডাকে, যার অপকার উপকারের আগে পৌছে। কত মন্দ এই বন্ধু এবং কত মন্দ এই সঙ্গী। ২২:১২-১৩

যারা পরকাল বিশ্বাস করে না, তাদের উদাহরণ নিকৃষ্ট এবং আল্লাহর উদাহরণই মহান, তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ১৬:৬০

নিশ্চয়ই,আল্লার নিকট তারাই নিকৃষ্ট জীব তারাই ,যারা সত্য প্রত্যাখ্যান করে এবং অবিশ্বাস করে । ৮:৫৫ (অনু মোবারক করিম গওহর)

পরধর্ম সম্পর্ক এইরুপ মন্তব্য ও এর শব্দ চয়ন(বাংলা অনুবাদে ) শিশু মনে বিরূপ প্রভাবও ফেলতে পারে । তখন আপনাক নানা তফসির ইজতেহাদ , সময় ও কালের পরিপ্রেক্ষিত প্রভৃতির বলে বুঝাতে চাইবেন ।অই অতটুকু বয়সে ছাত্ররা কি বুঝতে কি বুঝবে তখন আবার উল্টা ফল হবে ।
আপনি লিখেছেন অনায়াসেই -চারধর্মের চারজন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া যায় । এরশাদের আমলে ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামুলক করলেও , শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই সব স্কুলে সব ধর্মের শিক্ষক দেয়া যায় নাই –সমগ্র বাংলাদেশ তো দুরের কথা ।
তার উপর শিক্ষক কোন টাইপের হবে তা নিয়েও নানা সমস্যা-
ধরেন বিএনপির টাইমে(হয়তো আগামীতেই আসছে) ধর্মশিক্ষক নিয়োগ হলে জামাতশিবির ঢুকে যাবে- তখন ওরা কচি বাচ্চা গুলোকে রগ কাটা শিখাবে- জেহাদি টাপের আয়াতগুলোর উপর জোর দিবে-ওসামার দল বেরুবে । দেওবন্ধিরাও ঢুকবে- ওরা বলবে ,সব অমুসলিমরাই কাফের এবং দোজখ অবশ্যম্ভাবি । শুধু কি তাই । আক্ষরিক অর্থে সব মানতে হবে ।বলবে,- ‘চাঁদ দু’টুকরা করেছিলেন রসুল, আর টুকরা করার পর দাগটা আল্লাহ ভালো মত মিলান নাই,কারন ওই দাগ নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে গিয়ে দেখে মুসলমান হয়ে যাবেন।’
আবার আপনার লেখাট পড়ে আলীগের এক্স-কমিউনিস্ট শিক্ষামন্ত্রী যদি এখনই শিক্ষক নিয়োগ দেয়া শুরু করেন– তাহলে কিছু সুফী টাইপের হুজুর দিয়ে সবাইকে মাজারমুখী করে দেবেন ,– নয়তো ধর্মনিরপেক্ষ মডারেট মুসলিম ঢুকিয়ে আবার আউল বাউলও বানাতে পারেন । অথবা প্রবাসী পাকি বৃটিশ নাগরিক তারিক আলী টাইপের ‘নন-মুসলিম মুসলিম’ নিয়োগ দিলে হয়তো সব ‘নন-প্রাকটিসিং’ মুসলিম হয়ে যাবে । তখন হয়তো মোস্তফা জামান আব্বাসীকে মডারেটর নিয়োগ করে তাদের প্রাকটিসিং মুসলিম বানাতে হবে ।অনেক ঝামেলা অছে ।
সমস্যা অন্য ধর্মগুলোরও হবে । বিজেপি টাইপের হিন্দু মাস্টার ঢুকলে কবে আবার গুজরাট বানায়-এমনি নানাভাবে ভারত যে ভাবে ঢুকছে । আবার চিরকালের শান্তশিষ্ট সুচি’র মায়ানমারকে এমন মারমুখী করলো কে জানে,-শুনছি মুসলমান ( মতান্তরে রোহিঙ্গা )মারছে । ওই টাইপের কোন বুদ্ধিষ্ট( মতান্তরে রাখাইন) বাংলাদেশে যদি ঢুকে ধর্ম মাস্টার হয় তবে মুশ্কিল ।
তাই, আমার মনে হয় আহমেদ শরীফ স্যারের কথাই ঠিক-
-‘অবোধ সন্তানদের শৈশবে ঈশ্বরানুগত্য ও শাস্ত্রীক সত্য শেখালে মানুষের মনুষ্ব ত্য বিকাশের পথ রুদ্ধ হয় ।দুনিয়ায় ঈশ্বরের ধারণা অভিন্ন নয়, সত্যও নয় অভিন্ন । মানুষ আজীবন তার আশপাশে যা দেখে , তাই নির্বিচারে খাটিঁ সত্য বলে গ্রহন করে ।ফলে স্বধর্ম সত্য ,বিধর্ম মিথ্যা হয় শত্রু হয় । এভাবেই বিবাদ বিভেদ ।ফলে মানুষ বিজ্ঞানমনস্ক যুক্তি বুদ্ধি ,বিবেকনিষ্ঠ না হয়ে হয় সংস্কারান্ধ ইহুদী, খৃষ্টান মানুষ । যান্ত্রিক ধর্ম বিশ্বাস মনুষ্যত্ব বিকাশের পথে বাঁধা । সে কারণে আঠার বছর বয়স অবধি সন্তানদের ধর্ম সম্বন্ধে জ্ঞানদান করা অবাঞ্ছিত ।‘ আহমেদ শরীফ
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×