somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহাসমাবেশ থেকে কর্মীসভা - তত্ত্বাবধায়কের দাবী থেকে যুদ্ধাপরাধী মুক্তির দাবী ....

১২ ই জুন, ২০১২ ভোর ৪:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেগম খালেদা জিয়া আর উনার পরিষদবর্গ সামিয়ানা টাঙ্গানোর মঞ্চে বসেছিলেন - নীচে লাল কার্পেট পাতা আর কর্মীরা বসেছিলো কঠিন রৌদ্রে তপ্ত পিচের উপর। এইতো আর কিছু না একটা সামন্ততান্ত্রিক জোটবদ্ধতার ছবি।

সভার শুরু হয় শিবিরের "পলাতক" সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সাইদীর বক্তৃতার মাঝ দিয়ে - সেই মঞ্চে বসে ছিলো যে মামলায় বিএনপির নেতার জেলে সেই মামলার দুই পলাতক আসামী জামাতি নেতা। বেগম খালেদা জিয়া নিজের দলের নেতাদের জেলে রেখে জামায়াতের পলাতক নেতাদের নিয়ে সভা করে দেখালেন - উনি আসলে জামায়াতের উপর কতটা নির্ভরশীল।

জামায়াতের কর্মীরা সকাল থেকে আসা শুরু করে - দুপুর তাদের খাবার আর বিকেলে বিরানীর প্যাকেট দেওয়া হয় কেন্দ্রের থেকে।

এখানে প্রশ্ন - কোন জনসমাবেশে খাবারের ব্যবস্থা থাকে এমন কোন কথা আগে কখনও শুনিনি - তা থাকে কর্মী সন্মেলনে বা কাউন্সিলে - কারন কে আসবে - কতজন আসবে তা জানা যায়। রেজিষ্ট্রেশন করার কারনে এই ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব। জনসভায় কি সম্ভব?

আর কি দেখলাম - সভাস্থলে জামায়াতের নেতাদের মুক্তির দাবীতে ফেস্টুন আর বিশাল বেলুন।

অবশেষে মহাসমাবেশ পরিনত হলো - জামায়াত-শিবিরের কর্মী সন্মেলনের । আর মার্চের উত্তপ্ত আন্দোলন গিয়ে ঠেকলো হুমকী ধামকীতে।

এই সমাবেশ আসলে কার জন্যে - কিসের জন্যে - কি দাবী আদায়ের জন্যে।

গতকাল খালেদা জিয়ার কন্ঠেও ছিলো না তেমন কোন আত্নবিশ্বাসের ছাপ - শুধু সরকারে সমালোচনা ছাড়া নতুন কিছু শুনলাম না। যদিও আন্দালিব পার্থ ক্ষমতায় গেলে বিপক্ষদলকে জেলে পাঠানোর কথা বললেন আর জামায়াত নেতারা যথারীতি মুক্তিযুদ্ধকে আন্ডারমাইন করে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের কথা বলে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার গনহত্যার ( জেনোসাইড) কে আড়াল করতে চেযেছে। কি লাভ এতে - ইতিহাসতো তো রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে লেখা না।

যথারীতি শিবির কর্মীরা মঞ্চের সামনে বসা নিয়ে ছাত্রদলের সাথে পিটাপিটি করলো। এরা যদি সুযোগ পায় কোথা যাবে ছাত্র দল - সেই ভাবনার একটা ডেমো দেখলাম কাল।

সব মিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘূর্নিঝড় এখন লঘুচাপে পরিনত হয়েছে।

গতকাল ব্যারিষ্টার রফিকুল হক বিএনপিকে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন - তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো - সংসদে যাওয়া আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার মেনে নেওয়া। দেশের রাজনীতির আবহওয়া যদি বিএনপির নেত্রী ভাল ভাবে পড়তে পারেন - তাহলে আশা করি মহাসমাবেশেরে নামে জামায়াত শিবিরের কর্মী জমায়েত আয়োজন করে যে জনসম্র্পক্ততা পাওয়া যাবে না - এই সোজা সত্যটা বুঝতে পারবেন।

বিএনপি একটা বড় রাজনৈতি দল - শুধুমাত্র ভোটের পরিসংখ্যানে ভয় না পেয়ে বিএনপির উচিত তাদের রাজনীতিকে ডাইভার্স করা। সংসদ সদস্যদের সংসদে পাঠানো - যারা সংসদে না যাবে তারা সংগঠন গুছানো এবং জনগনের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে একটা সুনির্দিষ্ঠ লক্ষ্য নিয়ে দলকে চালানো।

এক দলের উপর রাগ করে আরেক দলকে ভোট দেওয়ার যে রীতি (নেতিবাচক ভোট) তা যদি আগামী নির্বাচনে কাজ না করে - তবে বিএনপির যে সংগঠনিক অবস্থা তা নিয়ে নির্বাচনে লড়াই করা কঠিন হবে। আর সব সময় দুই যোগ দুই চারই হবে তা অন্ধের মতো বিশ্বাস করা ঠিক না। বিশেষ করে জামায়াতের মতো একটা অতিধূর্ত দল - যারা জোটের নেতাদের দাবী অনুসারে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেই পলাতক আসামীরা সমাবেশে এসে বত্তৃতা করতে পারে - তাদের উপর নির্ভরশীল না হওয়া ভাল।

বিএনপির উচিত দ্রুত সংসদে যাওয়া আর জামায়াতের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়ে সুষ্পষ্ট বক্তব্য দিয়ে নির্ভার রাজনীতি শুরু করা। নুতবা জামায়াতের সম্পৃত্ততাই তাদের জন্যে সর্বনাশের কারন হতে পারে - যেমনটা হয়েছে বিগত নির্বাচনে।

সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১২ ভোর ৪:৫২
১১টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×