somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপুর সাথে ফেসবুকে বিতর্ক

১০ ই জুন, ২০১২ ভোর ৬:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি খুবই শান্তশিষ্ট টাইপ কিন্তু কারও অভিমতের সাথে মত না মিললে আর্গু করে মজা পাই। ফেসবুকে আমার কিছু গুরুজন আছেন যাদের সাথে আর্গু করে বেশি মজা পাই কারন কিছু শিখতে পারি।

আজ এক আপু বললেন জর্মানী বা ইতালী সহ সকল পশ্চিমা দেশগুলোর সাম্প্রতিক আর্থিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার তুলনায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থিক ও অর্থনৈতিক সমস্যাগুলি কিছুই নয়। বাংলাদেশ যে সমস্যাগুলোর সম্মুখিন হয় সেগুলো হল - শতকরা জিডিপি প্রবৃদ্ধি বিতর্ক, মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির হার এবং ঘাটতি বাজেটের পরিমান নিয়ে বিতর্ক। আর পশ্চিমা বিশ্বের অধুনা সমস্যা হচ্ছে তাদের সরকারগুলোর, এমনকি ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির দেউলিয়া হবার সম্ভাবনায়, যার সাথে জড়িয়ে আছে তাদের জরুরী জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলির টিকে থাকার প্রশ্ন। এমতাবস্হায় আপুর কথা হলো বাংলাদেশ এ বিষয়ে অনেক সৌভাগ্যবান কারন তুচ্ছ কিছু ক্ষুদ্র ও বৃহৎ অর্থনীতির বিষয়ে বিতর্ক ছাড়া পশ্চিমাদের মত আমাদের বড় কোন সমস্যা এখন নেই।
জীবিকার প্রয়োজনে ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় কাটানো সাম্প্রতিক বৎসরগুলোতে আমার চর্মচক্ষুতে দেখা ইউরোপীয়ানদের বিলাস ব্যসন এর সাথে আমার দেশের মানুষের অবস্হা তুলনা করে আমি একমত হতে পারলাম না। বললাম বাংলাদেশের সাথে পশ্চিমা বিশ্বের জীবন যাত্রার মানে এত ফারাক যে এদের মধ্যে কোন তুলনাই চলেনা। এবং আরো বললাম যে আমার মনে হ্য় না সাম্প্রতিক এইসব সমস্যায় ইউরোপীয়ানদের খুব বেশি কিছু হারাবার আছে বা তাদেরকে খুব শীঘ্রই তাদের পানশালা কেন্দ্রিক আয়েস ত্যাগ করতে হবে।
আপু আমার মন্তব্যে ''লাইক''দিলেন।
কিন্তু তিনি আমার কথা মানতে রাজি নন।বললেন যে তিনি জীবন যাত্রার মান নিয়ে বলছেন না, বলছেন পশ্চিমা বিশ্বের সাম্প্রতিক সমস্যাগুলো নিয়ে।আরো বললেন যে "মুদ্রিত টাকা"(প্রিন্টিং মানি) নিয়ে টিকে থাকা ইউরোপের কিছু দেশের চাইতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বুনিয়াদের শিকড় অনেক গভীরে রোপিত।
এবং আপু নিজের এই কথাগুলি "লাইক" করলেন।
আমি ভাবলাম, ইশ্‌!! কবে যে পুরো ইউরোপের চেয়ে সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ।
কিন্তু একটি দেশের জীবন যাত্রার মান অনেক নিচে থাকার মানেতো সেটাই সে দেশের প্রধান ও গুরুতর আর্থিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা যার সাথে ধনী ও কৌশলী পশ্চিমাদের শিরনাম স্বর্বস্ব আর্থিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার কোন তুলনাই চলেনা। তাই মানতে না পেরে বললাম -
বেশ, যদি প্রশ্ন পশ্চিমাদের সাম্প্রতিক সমস্যা এবং অর্থনৈতিক বুনিয়াদ নিয়ে হ্য়, তাহলেও সেই নতুন বোতলে পুরান মদের তুলনাই দিতে হবে, কারন জীবন যাত্রার মান অথবা অর্থনৈতিক সমস্যার কোনই তুলনাই বাংলাদেশের সাথে পশ্চিমা দেশগুলির হয় না কারন বাংলাদেশের সমস্যা অনেক অনেক গুণ বেশী, যা পশ্চিমারা বেশ কয়েকটি শতাব্দী পূর্বেই সমাধান করে এসেছে।আমরা সামর্থ্য না থাকায় আমাদের সেই সব সমস্যার ও সমাধানের কথা না ভেবে যদি পশ্চিমাদের বর্তমান সমস্যাগুলি আমাদের নেই বলে আত্মতৃপ্তি পেতে চাই, তা হবে পা নেই বলে জুতোরও প্রয়োজন নেই বলে আত্মতৃপ্তি পাবার সমান। তাই কি হয়। পা না থাকার জ্বালা যে বহুগুণ বেশি। তাই পা ও জুতো ছাড়া মানুষের সাথে পা ওয়ালা জুতোহীনের জুতো না থাকার সমস্যার কোন তুলনা হতে পারে না। আমাদের অবস্হান যে তৃতীয় বিশ্বের দেশ, যে দেশগুলোকে বলতে হয় করুণ দেশ, সে তো অর্থনীতির উপর নির্ভর করেই নিরুপন করা।সৌভাগ্যক্রমে এর চেয়ে নীচে অর্থনৈতিক অবস্হান হতে পারেনা বলে তৃপ্তি পাওয়া যেন "ল্যাংটার নেই বাটপারের ভয়'' -এর মত উলঙ্গর কিছু হারাবার নেই বলে তৃপ্তি পাওয়া।
এই কথাগুলিতে আপু বা কেউ "লাইক" দ্যান নি।
পরবর্তীতে আপুর এক বন্ধু মন্তব্য করেন যে, যেহেতু বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশগুলির কাতারে রয়েছে তাই স্বল্পোন্নত দেশের সাথেই কোন তুলনাতে যাওয়া শ্রেয়।আর এই কাতার থেকে বেরিয়ে আসার জন্য উন্নয়ন প্রয়োজন বলে মতপ্রকাশ করেন তিনি।
মন্তব্যটিতে আমি "লাইক" দিয়েছি।
আপুর আরও এক বন্ধু পশ্চিমাদের সাথে তুলনায় যেতে আমাদের হাজার বছর লাগবে বললেন।বললেন আমরা আসলে দুটি আলাদা জগৎে বাস করি। কোন বর্বর জাতির পক্ষে একটি শিক্ষিত জাতির অর্থনীতিকে ছাড়িয়ে যাওয়া কখনও সম্ভব নয় বললেন তিনি।
তার মন্তব্যেও "লাইক" দিতে হল।
এবারে আপু বললেন - দয়া করে উন্নত দেশগুলির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাসের দিকে দৃষ্টিপাত করার জন্য। অর্থনৈতিক বুনিয়াদগুলি সকল দেশের জন্য সমান বললেন তিনি। উনি আবারো বললেন যে বাংলাদেশের মানুষের জীবন যাত্রার মানের সাথে উনি সেগুলোর তুলনা করছেন না।আপু ভারতের দক্ষিন ও পূর্ব অংশ এবং চীনের শহরগুলি ও শিল্পান্চলগুলিতে গিয়ে দেখতে বললেন কিভাবে উন্নয়ন হয় ও হচ্ছে।মাত্র কয়েকটি দশকের ব্যবধানে এসব স্হানের পরিবর্তনের কথা বললেন উনি।পরিশেষে,অবশ্যই, ঐ দেশগুলির দূরদৃষ্টি সম্পন্ন রাজনৈতিক নেতাগণ, যারা ছিলেন এবং আছেন, তাদের কথা উল্লেখ করলেন এবং আমাদের এ ব্যাপারে কমতি আছে বলেও মন্তব্য করলেন আপু।
আমি ভাবলাম- কবি এখানেই নীরব।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্যামুয়েল ব্যাকেট এর ‘এন্ডগেম’ | Endgame By Samuel Beckett নিয়ে বাংলা ভাষায় আলোচনা

লিখেছেন জাহিদ অনিক, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮



এন্ডগেম/ইন্ডগেইম/এন্ডগেইম- যে নামেই ডাকা হোক না কেনও, মূলত একটাই নাটক স্যামুয়েল ব্যাকেটের Endgame. একদম আক্ষরিক অনুবাদ করলে বাংলা অর্থ হয়- শেষ খেলা। এটি একটা এক অঙ্কের নাটক; অর্থাৎ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাঙ দমনের নেপথ্যে এবং রাষ্ট্রীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয়

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭


ব্যাঙ দমনের বাংলায় একটা ইতিহাস আছে,খুবই মর্মান্তিক। বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানির কোন সার কেনা হতো না। প্রাচীন সনাতনী কৃষি পদ্ধতিতেই ভাটি বাংলা ফসল উৎপাদন করতো। পশ্চিমবঙ্গ কালক্রমে ব্রিটিশদের তথা এ অঞ্চলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×