এবারে প্রতারণার সমস্ত রেকর্ড ভেঙ্গে ফেললো ডাচ বাংলা ব্যাংক!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
এবারে প্রতারণার সমস্ত রেকর্ড ভেঙ্গে ফেললো ডাচ বাংলা ব্যাংক! এখন ভাবতে হবে, কারা বড় প্রতারক, ডেস্টিনি নাকি ডাচ বাংলা ব্যাংক। দিনের পর দিন ধরে গোপনে গোপনে এই ব্যাংকটি যে মানুষের জমানো অর্থ লুট করে নিচ্ছে, এবং তার কোন প্রমাণও থাকছে না, এর জবাব কে দেবে?
ভাবতে আশ্চর্য লাগে, জনগনের সাথে প্রতারণা করা এই রকম একটা ব্যাংক কিভাবে টিকে আছে? জনগনের পকেট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি হয়ে যাচ্ছে, অথচ কারো কোন বিকার নেই। এই ব্যাংকের মালিক কর্তৃপক্ষ কি জনগনকে ভোদাই মনে করে? তারা কি মনে করে তারা যা বোঝাবে ভোদাই জনগন তাই শুনবে?
এখন একটা প্রবাদই দাঁড়িয়ে গেছে, "যখনই টাকার দরকার হয়, ঠিক তখনই ডাচ-বাংলার বুথ বন্ধ পাওয়া যায়"; ঈদের আগেরদিন তো কখনই ডাচ বাংলা বুথ ঠিক পাওয়া যায় না। দিনের পর দিন এই ব্যাংকটির প্রতারণা মাত্রা ছাড়িয়ে সব রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলছে।
এই ব্যাংকটিতে সাধারণত যারা টাকা রাখে, তারা এই আশায় টাকা রাখে যে, এটিএম বুথ গুলো থেকে ১০০ টাকাও তোলা যাবে, খুব অল্প খরচে কার্ডের সুবিধা নেয়া যাবে। আর এই ব্যাংকটি যে মানব সেবার জন্য এই সুবিধা দিচ্ছে তাও না, এটা তাদেরই ব্যবসায়িক কৌশল, যত বেশি মানূষ একাউন্ট খুলবে, তাদের ব্যাংকে তত টাকা জমা থাকবে। ব্যাঙ্গের ছাতার মত তাদের এটিএম গুলোও তাদের বাপের টাকায় বানাচ্ছে না, জনগনের টাকাতেই বানাচ্ছে। কিন্তু এগুলোর সুবিধা গ্রাহক কতটা নিতে পারছে? সে প্রশ্নের কোন উত্তর এই ব্যাংকটি দেবে না।
এই ব্যাংকে কারা টাকা রাখে?
এই ব্যাংকে টাকা রাখে লক্ষ লক্ষ শ্রমজীবী মানুষ, ছাত্র, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অল্প বেতনের শিক্ষক, চা বিড়ির দোকানদার, গার্মেন্ট শ্রমিক থেকে শুরু করে একদম খেটে খাওয়া মানুষেরা। আর এই কারণে এই ব্যাংকের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের আচরণও অত্যন্ত অভদ্র, তারা গ্রাহকদের গ্রাহকই মনে করেন না। তারা মনে করেন সব চাষাভুষা, তারা দয়া করে তাদের ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে দিয়েছেন। কিন্তু তাদের ভাত কাপড়ের বেতনের টাকাটা যে এই চাষাভুষাদের ঘামের টাকা থেকেই আসে, সেটা তাদের কখনই মনে থাকে না।
এই ব্যাংকের এটিমএম গুলোতে মাঝে মাঝেই কার্ড আটকে যায়, এবং কার্ড আটকে থাকার পরে বেশ কিছু লোকের হাজার হাজার টাকা চুরি যাবার মত ঘটোনাও ঘটেছে, এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষও এই নিয়ে কোন সমাধান দেয় নি। গত কয়েকমাসে তারা বিভিন্ন বেসরকারী, সরকারী কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে রীতিমত ধর্ণা দিয়ে কয়েকলক্ষ মানুষকে তাদের ব্যাংকের গ্রাহক বানিয়েছে। কথা ছিল ব্যাংকে ৫০০ টাকা থাকলেই হবে। কিন্তু গত তিন চারমাসে লক্ষ লক্ষ গ্রাহক বানিয়েই তারা এখন বেমালুম ভোল পালটে ফেলছে, তারা এখন বলছে একাউন্টে আগামী ১ জুলাই হতে যাদের সঞ্চয়ি হিসাব তাদের অ্যাকাউন্টে সবসময় ৫০০ টাকার পরিবর্তে ২০০০ টাকা এবং চলতি হিসাবধারীদের ২০০০ টাকার পরিবর্তে ৫০০০ টাকা সবসময় জমা থাকতে হবে। মানে এই ২০০০ বা ৫০০০ টাকা অ্যাকাউন্টে ফিক্সড জমা রেখে তারপরের উপরিভাগ লেনদেন করা যাবে। উল্লেখ্য যে আগে সঞ্চয়ি হিসাবের জন্য ৫০০ টাকা এবং চলতি হিসাবের জন্য ২০০০ টাকা ফিক্সড রাখতে হত।
আমার পরিচিত এক ছোট ভাই, যার বাবা গ্রামে একটি মুদির দোকানদার, প্রতিমাসে ২৫০০ টাকা ছেলেকে পাঠান পড়ালেখার জন্য। ঐ ছেলেটি এই ব্যাংকটিতে টাকা রাখে, কারণ মেছে বা পকেটে টাকা রাখা খুবই বিপদজনক, যেকোন সময় চুরি হয়ে গেলে পুরো মাস না খেয়ে থাকতে হবে। ঐ ছেলেটি এখন এতগুলো টাকা কোথায় পাবে?
শুধু এই ছেলেটি নয়, যেই রিকশাওয়ালাটি গতমাসে একাউন্ট খুলেছে, সে এতটাকা কই পাবে? তাদের সাথে কেন এই প্রতারণা করা হলো, এর জবাব কে দেবে?
এমনিতেই অব্যবস্থাপনা, এটিএম নষ্ট, টাকা নাই, দীর্ঘ লাইন, ব্যাংকের কর্মচারীদের অভদ্র ব্যবহারের পরেও কোন রকমে চালিয়ে নেয়া যাচ্ছিল। কিন্তু এখন তো এরা রীতিমত গ্রাহকদের জিম্মি করে ফেলেছে। এর বিচারের দায়িত্ব জনগনকেই নিতে হবে। অনুগ্রহ করে আজই এই ব্যাংকে আপনার একাউন্ট ক্লোজ করে ফেলুন। এই রকম প্রতারক প্রতিষ্ঠানের জনগনের ক্ষমতা বোঝার সময় হয়ে গেছে। জনগন চাইলে সরকারও বসে যায়, আর এতো সামান্য একটি ব্যাংক।
১৯টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার
বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন
মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি
এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)
আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)
কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন
শৈল্পিক চুরি
বহুদিন ধরে ভেবেও বিষয়টা নিয়ে লিখব লিখব করে লিখা হচ্ছে না ভয়ে কিংবা সঙ্কোচে!
কিসের ভয়? নারীবাদী ব্লগারদের ভয়।
আর কিসের সঙ্কোচ? পাছে আমার এই রচনাটা গৃহিনী রমনীদের খাটো... ...বাকিটুকু পড়ুন