মিয়ানমারে বাংলাদেশ সীমান্ত অঞ্চলে দাঙ্গা
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
মিয়ানমারে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে দাঙ্গায় কয়েকজন নিহত হয়েছে।
রাখাইন প্রদেশের মংডু জেলায় ইসলাম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গা এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইনদের মধ্যে শুক্রবার এই দাঙ্গার সূত্রপাত ঘটে।
সরকারি সূত্র বলেছে, নিহত হয়েছে চারজন এবং তারা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের দাবি, নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে তাদের পাঁচজন নিহত হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এমআরটিভি জানিয়েছে, দাঙ্গার পর মংডু ও গুথিডং জেলায় সান্ধ্য আইন জারি করা হয়েছে।
তবে কী কারণে দাঙ্গা বেঁধেছে বা কারা আক্রান্ত হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু টেলিভিশনের খবরে বলা হয়নি বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট থেন সেইনের কার্যালয়ের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা মু জাও তার ফেইসবুক পাতায় লিখেছেন, দাঙ্গায় চারজন বৌদ্ধ নিহত হয়েছেন। এদের একজন চিকিৎসক এবং একজন বৃদ্ধ, যাদের ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
রোহিঙ্গাদের রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান আবু তাহা টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেছেন, শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাখাইনদের একটি দল মসজিদে ইট ছুড়লে দাঙ্গার সূত্রপাত ঘটে।
তিনি দাবি করেছেন, দাঙ্গা বাঁধলে নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে পাঁচ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।
তবে তার এই দাবির সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
“বড় ধরনের দাঙ্গা এখনো শুরু হয়নি। তবে পরিস্থিতি খুবই জটিলতার দিকে যাচ্ছে,” বলেছেন আবু তাহা।
পাঁচ দিন আগে রাখাইন প্রদেশের তাংগোকে শহরে বৌদ্ধদের হামলায় ১০ মুসলিম নিহত হয়। তারপর থেকে উত্তেজনা চলছিল।
নিহত ১০ জন রোহিঙ্গা না হলেও ওই হত্যাকাণ্ডে মুসলিম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে। এর প্রতিবাদে রাজধানী ইয়াঙ্গুনেও বিক্ষোভ হয়।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মংডু জেলায় জুমার নামাজের পর মুসলিমরা মিছিল বের করলে সংঘর্ষ বাঁধে।
১০ মুসলিম নিহত হওয়ার আগে এক বৌদ্ধ নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটে রাখাইন প্রদেশে। এই ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সবাই রোহিঙ্গা।
ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রতিশোধ নিতে একটি প্রচারপত্র বিলি করা হয়, যা রাখাইন ও রোহিঙ্গাদের দাঙ্গায় উস্কানি হিসেবে কাজ করে বলে স্থানীয়দের অভিমত।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাষ্ট্র মিয়ানমারে মুসলিমরা সংখ্যালঘিষ্ঠ। ’৯০ এর দশকের শুরুতেই সেখানে মুসলিমদের ওপর দমন-পীড়ন শুরু হলে প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলে বাংলাদেশ সীমান্তে বসবাসরতরা বর্হিবিশ্বে রোহিঙ্গা হিসেবে পরিচিত হলেও দেশটির সরকার তাদের আদিবাসী কিংবা রোহিঙ্গা পরিচয় মানতে নারাজ। তাদের দাবি, এরা ‘বাঙালি’।
কক্সবাজার সীমান্তে সতর্কতা
মিয়ানমারে দাঙ্গার খবর পাওয়ার পর বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদার করেছে সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিজিবি।
এছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের একদিনের ট্রানজিট পাস বন্ধ রাখা হয়েছে। শুক্রবার বাংলাদেশের ছয় জন ব্যবসায়ী মিয়ানমারের মংডু যেতে চাইলেও তাদের ফেরত পাঠায় সে দেশের সীমান্ত রক্ষা নাসাকা বাহিনী।
দাঙ্গার জের যেন বাংলাদেশে না ছড়ায় সে জন্য টেকনাফের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা রাখাইনপল্লী পরিদর্শন করেছেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কক্সবাজার প্রতিনিধি জানিয়েছেন।
মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগই রয়েছে কক্সবাজার জেলায়। সেখানে রাখাইনদেরও বসবাস রয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এইচ এম ইউনুছ বাঙ্গালী সাংবাদিকদের বলেন, “মিয়ানমারে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার খবর পেয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাখাইন পল্লীগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য রাখাইন ও মুসলমানদের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।”
বিজিবির টেকনাফের ৪২ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর মো. সফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “মিয়ানমারে সা¤প্রদায়িক দাঙ্গার সংবাদে সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে। রাখাইন পল্লীগুলোতে বিশেষ নজরদারি এবং শরণার্থী শিবিরে বিশেষ টহল রয়েছে।”
প্রায় দুই দশক আগে থেকে বাংলাদেশে ঢুকে পড়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় ২৫ হাজার রয়েছে টেকনাফে শরণার্থী শিবিরে। বাকিরা রয়েছে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি বারবার জানানো হলেও তাতে সাড়া মিলছে না। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে বলেও প্রমাণ মিলেছে।
সূত্র
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।
আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
এই হোটেল এর নাম বাংলা রেস্তেরা।
অনেক দিন পর আমি আজ এই হোটেলে নাস্তা করেছি। খুব তৃপ্তি করে নাস্তা করেছি। এই হোটেল এর নাম বাংলা রেস্তেরা। ঠিকনা: ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডম ভবেরচর, গজারিয়া, মন্সীগঞ্জ। দুইটি তুন্দুল রুটি আর... ...বাকিটুকু পড়ুন
আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?
অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন
জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?
জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন
মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়
১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷
চলুন গল্পটা শুনে আসি৷
বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন