somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দমের চর্চা খুব সোজা -১

০২ রা জুন, ২০১২ সকাল ১০:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দম চর্চার যে বিষয়গুলো আমাদের কনফিউশন তৈরি করছে সেগুলোকে আমরা প্রথমেই মোটা দাগে দুই ভাগে ভাগ করে নিই। এক, মেডিটেশনের মধ্যে দম চর্চা এবং দুই, মেডিটেশন ছাড়া অন্য সময়ের দম চর্চা।

মেডিটেশনের মধ্যে আমরা মূলত ৪ ধরনের দম চর্চা করে থাকি। মেডিটেশনের শুরুতে মনের বাড়িতে যাওয়ার আগে ৩ ধরনের এবং মেডিটেশন শেষে স্বাভাবিক অবস্থায় জেগে ওঠার সময় ১ ধরনের।
এবার আসা যাক মেডিটেশনের শুরুতে মনের বাড়িতে যাওয়ার আগে আমরা কী করি?

মেডিটেশনে দম চর্চা ১:
প্রথমে আমরা দম নিই নাক দিয়ে এবং ফুলবে পেটের ওপরের অংশ। ছাড়বো মুখ দিয়ে। মজার বিষয় হলো স্বাভাবিক ভাবে আমরা যে দম নিই এবং ছাড়ি তা কিন্তু এভাবেই নিই এবং ছাড়ি। এই স্বাভাবিকতা বোঝাতে কোর্সে গুরুজী যে গল্পটি বলেন- স্বাস্থ্যবান ভুড়িওয়ালা দুলাভাই পেটপুরে খাওয়া দাওয়া করার পর যখন নাক ডেকে ঘুমান, তখন নাক ডাকার সাথে সাথে তার ভুড়ি ওঠা নামা করে। তার মানে হলো স্বাভাবিক নিয়মেই আমরা সাধারণত দম নিই আসলে পেটে। মেডিটেশনের এ পর্যায়ে শুধু অতিরিক্ত সচেতনতা যেটা সেটা হলো দম নিতে হবে দীর্ঘ ভাবে। অর্থাৎ একবারে যত বেশি পারা যায় অক্সিজেন ধারণ করার ততটুকু নিতে হবে। আর ছাড়তে হবে মুখ দিয়ে এবং ধীরে ধীরে। নেয়ার চেয়ে ছাড়তে সময় বেশি লাগবে। দম নেয়ার এ পদ্ধতিকে বলা হয় আবেশন।

সুবিধে হলো এ পদ্ধতিতে আমাদের শরীর শিথিল হয়ে আসে। শরীরের কোষগুলো বিশ্রামে যেতে শুরু করে। মেডিটেশনে যেহেতু আমরা রিল্যাক্সড হতে চাই, তাই শুরুটিই করছি আমরা আবেশনের মাধ্যমে। অর্থাৎ শরীরকে রিল্যাক্স করার মাধ্যমে। টেকনিকটি হলো স্বাভাবিকভাবে আমরা যেভাবে দম নিই সেভাবেই দম নিবো- তবে, নেয়াটি হবে দীর্ঘ এবং দম ছাড়তে হবে মুখ দিয়ে- নেয়ার চেয়ে আরো দীর্ঘ । উদ্দেশ্য হচ্ছে শরীর মনের রিলাক্সেশন প্রক্রিয়া শুরু করা। দেহ কোষগুলোকে বিশ্রাম দেয়া এবং চিন্তার বিক্ষিপ্ততাকে ধীরে ধীরে গুছিয়ে আনা।

এবার মেডিটেশনে দম চর্চা ২:
আগের বারের চেয়ে এবারের দম-প্রক্রিয়ার পার্থক্য হলো আগের বার নাক দিয়ে দম নিয়েছিলাম এবং মুখ দিয়ে দম ছেড়েছিলাম। এবার আমরা নাক দিয়ে নিব এবং নাক দিয়েই ছাড়বো। পার্থক্যটা শুধুমাত্র এখানে। আর দম নেয়া এবং ছাড়া ২টিই হবে আগের চেয়ে ধীর লয়ে। অর্থাৎ আপনার শরীরকে আরো রিল্যাক্সড করার সুযোগ দিচ্ছেন। দম কোথায় নিচ্ছি তা খেয়াল না করলেও চলবে। কারণ আগের কথাটিই। স্বাভাবিকভাবে আপার এবডোমিনই ফুলবে। এভাবে ৮-১০ বার আমরা দম নিয়ে থাকি। সম্ভবত এটাকে বলে ধীরম।

মেডিটেশনে দম চর্চা ৩:
এবার আপনার দম নেয়া ও ছাড়ার প্রক্রিয়া হবে একেবারেই স্বাভাবিক। দিনের অন্যান্য কাজ করার সময় আপনার অজান্তেই আপনি যেভাবে দম নিয়ে থাকেন সেভাবে আপনি দম নিতে পারেন। তবে মনোযোগটা দিতে হবে নাকে দমের প্রবেশপথে, দুই ছিদ্রের কাছে। আপনি খেয়াল বা ভিজুয়ালাইজ করতে পারেন যে বাতাসের সাথে অক্সিজেন যাচ্ছে আপনি খেয়াল করতে পারছেন। আবার কার্বন ডাই অক্সাইড বের হয়ে যাচ্ছে সেটিও অনুভব করতে পারছেন। ব্যাস এভাবে কিছুটা সময় দম খেয়াল করেন। আপনার খুব তাড়া না থাকলে আরো একটু সময় নিতে পারেন। আপনার ভিজুয়ালাইজেশনকে আরো বর্ণাঢ্য ও ডিটেইল করতে পারেন। যেমন আপনি অনুভব করত পারেন- বাতাসের সাথে ফ্রেশ অক্সিজেন কণা ফুসফুসে যাচ্ছে। ফুসফুসের পাতলা ঝিল্লি ভেদ করে তা রক্তের সাথে মিশে যাচ্ছে। হার্ট এ রক্তকে পাম্প করে শরীরের প্রত্যেকটি দূরবর্তী দেহ কোষে পৌঁছে দিচ্ছে। রক্ত বহন করে নিয়ে যাচ্ছে ফ্রেশ অক্সিজেন কণা। সেটি কোষ রিসিভ করছে আবার সেখানে তৈরি হওয়া কার্বন-ডাই অক্সাইড কণা রক্তের সাথে ফেরত আসছে ফুসফুসে। দম ছাড়ার সময় শরীর থেকে বের করে দিচ্ছেন আপনি তা। এ সময়ে আপনি চাইলে মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের প্রতিটি অঙ্গে একবার মনোযোগ বুলিয়ে যেতে পারেন। আর দম প্রসঙ্গে স্রষ্টার কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপনের এ সুযোগটি গ্রহণ করে আপনি আপনার বিশ্বাস ও অস্তিত্বে এক চমৎকার অনূভুতি সৃষ্টি করতে পারেন।

তো এ পর্যায়ের দম চর্চা ও একদম স্বাভাবিক। কোনো জটিলতা নাই। মনের বাড়ীতে যাওয়ার পর থেকে শুন্য থেকে ৭ গণনা করার আগ পর্যন্ত পুরোটা সময়ই দম এভাবে নেয়া যেতে পারে, ইন ফ্যাক্ট আর কোনো নির্দেশনা না থাকলে এটাই নিয়ম। আর কোনো নির্দেশনা বলতে যেমন মেডিটেশনের মধ্যে যদি তন্দ্রাভাব আসে বা মনোযোগ অনেক বেশি বিক্ষিপ্ত হয় তাহলে একটা লম্বা দম নেয়ার কথা গুরুজী বলেন- সেই লম্বা দমটি কিন্তু আলাদা। এটা নিয়েই আমরা এবার আলাপ করবো।
কোয়ানটাম +৮৮০১৭১৪৯৭৪৩৩৩,+৮৮০১৭১১৬৭১৮৫৮।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×