রাখে হরি মারে কে । মারে হরি রাখে কে ।
কথাটা সত্য । আজ আমি মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ছিলাম । আমি পাকা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম । হঠাৎ দেখি সামনে কিছু লোক হাতে বাঁশ নিয়ে ছুটে আসছে । মানুষ ছুটাছুটি করছে । আমার খালি হাত । আমার সামনে আসতেই বললাম মানুষকে মেরো না । লম্বা বাঁশ দিয়ে আমার বাম পায়ে গোড়ালির কাছে আঘাত করলো । আমি চেঁচিয়ে বললাম মারছো কেন ? আমার পায়ের দিকে তাকিয়ে পেছন ফিরতেই আমার পিঠে বাঁশের মার । লোকগুলো চলে গেলো । যদি আমি মাথা নীচু করে না রাখতাম তাহলে বাঁশের মার মাথায় পড়তো আর আমার মৃত্যু অবধারিত ছিলো । বেঁচে গেলাম । পাশের বাড়িতে গেলাম । দরজা তালা বন্ধ । বারান্দায় চেয়ারে বসলাম । পা ফুলে গেছে । ব্যথা করছে । একজন মহিলা এসে বললো গণ্ডগোল একটু থেমেছে । কয়েকটা গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে । আমি হেঁটে বাজারের দিকে যেতে থাকলাম । আমার পরিচয় পেয়ে চিত্তরঞ্জন ঘোষ আমাকে তার দোকানে ডাকলেন । তিনি এবং তার ছেলে আমাকে সাহায্য করলেন । তার ছেলের সেবায় আমি মুগ্ধ হলাম । আমার পা সে তার হাতে তুলে নিলো । পরম যত্নে বরফ লাগালো । আমি আমার জামা ,গেঞ্জি খুলে ফেললাম । পিঠে আর একজন বরফ লাগালো । এক ঘণ্টা তারা বরফ লাগালো । ডাক্তার ডেকে আনলো । হাতে এবং কোমরে সূচ ফুটালো । বললো পা ভাঙে নি । ওষুধ দিলো । এক প্যাকেট সন্দেশ এনে আমাকে খাওয়ালো । ঠাণ্ডা জল খেলাম । খুশি হলাম । চিত্তরঞ্জন বাবুকে নিয়ে অবরোধের জায়গায় গেলাম। লরিতে একটা বাচ্চা ছেলে চাপা পড়ে মারা গেছে।আর তাতেই রণক্ষেত্র । আমাকে আর বেশী কথা বলতে হয় নি । বাচ্চাটাকে মাটি দেওয়ার জন্য লরির মালিকের কাছে থেকে দশ হাজার টাকা বাচ্চাটার পরিবারকে দেওয়া হলো । মারধরের জন্য সবাই হাত জড়ো করে আমার কাছে ক্ষমা চাইলো । আমি কিছুই বললাম না । সবার সাহায্য নিয়ে আমার পিঠ এবং পায়ের এক্সরে করানো হলো । রিপোর্ট ভালো । ঈশ্বর আমাকে বাঁচিয়েছে । তাই বাঁশের আঘাতে আমার কিছুই হয় নি । কিন্তু যারা এমনভাবে হাতে বাঁশ তুলে নেয় , তাদের শাস্তি আমি দেবো কিভাবে? জীবিত অবস্থায় আমি কাউকে আঘাত করবো না । মৃত্যুর পরে আমি হবো ভয়ঙ্কর থেকে ভয়ঙ্করতম ভূত । সেদিনই অন্যায়ের প্রতিবিধান করবো ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:১১