somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ট্রান্সশিপমেন্টে ২০ বিলিয়ন ডলার ভারত হতে বাস্তবতা না টোপ? ত্রিপুরার মন্ত্রীর আশ্বাসের বিপরীতে মসিউরের অসভ্যতার থিউরী!

৩১ শে মে, ২০১২ রাত ১১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সেই ২০০৩ সালেই শুনেছি যে কোলকাতা হতে শিলিগুড়ি হয়ে একটি ট্রাকের আসামে ও ত্রিপুরায় পৌছতে পরিবহন খরচ পড়ে যথাক্রমে ৩২ ও ৩৫ হাজার রুপি। আর যদি এটা বাংলাদেশের উপর দিয়ে যায় এই খরচ মাত্র ৭ হাজার রুপি। ভারত এখান থেকে ৭৫% লাভবান হবে। বিগত জোট সরকারকে ভারত প্রচন্ড চাপ দেয় স্থল ট্রানজিট চুক্তি করা এবং ১৯৭২এর নৌ-ট্রানজিট চুক্তি নবায়নের। শেষমেশ ৭২এর চুক্তি ৪ বছর বন্ধ রাখার পর ২০০৬ সালে নবায়ন করলেও স্থল ট্রানজিট বিষয়ে কোন নতুন চুক্তি করেনি। চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যাবহারের বিষয় প্রশ্নাতীত। জোট সরকারের সাফ কথা উজান হতে নদ-নদীর ন্যায্য পানি, স্থল-সমুদ্র সীমার সুষ্ঠ সমাধান, বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশী পণ্যের ভারতে শুল্ক মূক্ত প্রবেশাধিকার, নেপাল-ভুটান ও চীনকে ট্রানজিট এবং নেপাল-ভুটান হতে পানি বিদ্যুত আমদানীর সুবিধা। এগুলো ভারত পূরণ করলে তবেই তাকে ন্যায্য ফির বিনিময়ে বাংলাদেশের স্থল, নদী ও সুমুদ্র বন্দর ব্যাবহারের সুবিধা পাবে। কিন্তু ভারত এ গুলোর কোন কিছুই মানতে চায়নি। ফলাফল জোট সরকার দিল্লীকে বলে দেয় যে তুমি মূড়ি খেতে থাক :D

ভারত এতটাই মরিয়া ছিল যে ২০০৫ সালে ভারতীয় ডেপুটি HC সর্বজিত চক্রবর্তী বলেই ফেলেন "ভারত আর বেশীদিন ট্রানজিটের জন্য অপেক্ষা করতে পারবে না"। এটা আলীগের আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাধারণ সম্পাদক জলিলের উপস্থিতিতেই তিনি এ কথা বলেন। বস্তুত ২০০২ হতে জেএমবি, ইসলামী জঙ্গী সহ নানা বিষয়ে জোট সরকারকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণ-মাধ্যমে দোষারোপ করা হতে থাকে। এই সবই ছিল দিল্লীর তথাকথিত ট্রানজিট না পাওয়ার বেদনা। অবশেষে তারা ২০০৭ সালে ১/১১ ঘটাতে সমর্থ হয়। তারপর হাসিনা হতে মূচলেকা নিয়ে ও তার চামচা আবুল বরাকত, এই চটি ইমাম, মসিউর এদের দিয়ে বলানো হয় যে তারা দিন বদলের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে এবং তথাকথিত ট্রানজিটের মাধ্যমে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর হয়ে যাবে। ঐ ২০০৮ এর নির্বাচনের আগে বলা হয় যে শুধু ভারত নয় নেপাল, ভুটান ও চীনকেও অন্তর্ভূক্ত করা হবে। এখন চীন দূরে থাকুক নেপাল ও ভুটানকেও ভারত ট্রানজিট দিতে ইচ্ছুক নয়। আর হাসিনা ক্ষমতায় এসে ৭২এর নৌ-ট্রানজিট হতে যখন ভারত হতে ফি দাবী করে তখন দিল্লী অস্বীকৃতি জানায়। ভাবখানা এমন যে বাংলাদেশ ভারতের অঙ্গরাজ্য, তাই কিসের ফি? এই কারণেই হাসিনার উপদেষ্টা মসিউর বলে দেয় যে "ভারত হতে ফি চাওয়া অসভ্যতা"। হাসিনা এই বিষয়ে কোন কথাই বলেনি। বোঝাই যায় ভারতকে বিনা ফিতে ট্রানজিট হাসিনার সম্মতিতেই হয়েছে।

ইতিমধ্যে এখন বাংলাদেশের আশুগঞ্জ নৌ-বন্দরকে অবকাঠামোগত ভাবে শক্তিশালী করে ভারত তার ট্রানজিটকে জোরদার ও ব্যাপক করার বিষয়ে বদ্ধপরিকর। এই লক্ষ্যেই ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বাণিজ্য মন্ত্রী জিতেন্দ্র চৌধুরী ঢাকায় আয়োজিত ইন্দো-বাংলা ট্রেড ফেয়ারে আসেন। ট্রানজিট অবকাঠামোগত উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ করার জন্য মিঃ জিতেন্দ্র আখাউড়া স্থল বন্দর দিয়ে প্রবেশ করে ঢাকায় এসেছেন;

http://www.dailynayadiganta.com/details/49660

আশুগঞ্জ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতা জানান, শুধু নামেই আশুগঞ্জ আন্তর্জাতিক নৌবন্দর। কোনো অবকাঠামো উন্নয়ন ছাড়াই এই বন্দর দিয়ে পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রাংশ ও বিভিন্ন পণ্য ট্রানশিপমেন্ট করা হয়েছে। এই বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নকাজ দ্রুত শেষ করেই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আটটি রাজ্যে খাদ্যপণ্য ট্রানশিপমেন্ট করা হবে বলে জানা গেছে। বর্তমানে আশুগঞ্জ নৌবন্দরের সার্বিক অবস্থা দেখতে গতকাল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী জিতেন্দ্র চৌধুরী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

বোঝাই যায় দিল্লী কতটা উদগ্রীব। আর মিঃ জিতেন্দ্র বলেন;

এই বন্দর দিয়ে ট্রানশিপমেন্ট কার্যক্রম শুরু হলে নির্ধারিত হারে শুল্ক দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশের নৌপথ ও সড়কপথ ব্যবহার করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আটটি রাজ্যে গমনকারী পণ্যবাহী জাহাজ বা ট্রাক দিয়ে মালামাল পরিবহন করা সহজ হবে। এতে দুই দেশই লাভবান হবে। মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক একটি সংস্থার মাধ্যমে জরিপ করে দেখা গেছে শুধু ট্রানশিপমেন্টের মাধ্যমেই বাংলাদেশ শুল্ক, পরিবহন ও শ্রমিক কর্মসংস্থান মিলিয়ে অর্থনৈতিকভাবে বার্ষিক আয় প্রায় ২০ হাজার মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, গত বছর শুধু ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে বাংলাদেশ ৩০০ কোটি টাকা আমদানি-রফতানি করেছে।

২০ হাজার মিলিয়ন মানে ২০ বিলিয়ন ডলার। মিঃ জিতেন্দ্র যা বলেছেন তা মোটেও মিথ্যা ষ্টাডি নয়। বরং বাস্তব। কিন্তু কথা হচ্ছে ভারত অল্প কিছু নদীর জাহাজে যেখানে ন্যায্য ফি দিতে চরম অনীহা সেখানে বাংলাদেশ কি সত্যি সত্যিই বছরে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করতে পারবে? এটা আদায় করতে হলে হাসিনা ও তার উপদেষ্টা মসিউর, রিজভী গংদের আন্তরিকতা ছাড়া অসম্ভব! কারণ জানুয়ারী ২০১০ সালে দিল্লীতে যেয়ে হাসিনা ভারতের সাথে কি কি শর্তে চুক্তি করেছে তা আদৌ প্রকাশ করা হয়নি। দেশবাসী ও সংসদের অনুমোদনতো দূর সংসদে আলোচিতও হয়নি। তাই যতই উজ্জল সম্ভাবনা থাকুক বাস্তব বড় কঠিন। কারণ কথায় বলে কাজির গরু কেতাবে আছে কিন্তু গোয়ালে নেই। তাই রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারক যারা আদৌ সংসদে নিজ দলের এমপিদের সাথেই আলোচনা করতে চায় না তারা কিভাবে বাংলাদেশের মানুষের ন্যায্য হক আদায় করবে? হাসিনা ও তার আলীগ স্বাধীন বাংলাদেশের শুরু হতেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দিল্লীকে লাভবান ছাড়া দেশের জন্য কোন সুফল বয়ে আনেনি। তাই যতই ২০ বিলিয়ন ডলার বলা হৌক মসিউরদের তাবেদারীর কল্যাণে এটাকে টোপ এবং জাতির সাথে প্রতারণা ছাড়া এই মহুর্তে অন্য ভাল কিছু বলতে পারছি না।
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×