somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুকুর, শিবির ও পুলিশ হতে দুরে থাকুন

৩০ শে মে, ২০১২ বিকাল ৪:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকা শহরের বিভিন্ন অভিজাত বাড়ির গেইটে " কুকুর হতে সাবধান" লেখা সম্বলিত সাইনবোর্ডটি দেখা যায়। সম্ভবতো বাড়ির পোষ্য কুকুরটির আক্রমণ হতে পথচারী বা অন্যান্যদের সাবধান রাখার প্রচেষ্টা হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়। অবশ্য সাবধান থাকার দায়িত্বটা কি পথচারীদের নাকি কুকুরের মালিকের নিজের সেটা নিয়ে একটা প্রশ্ন ওঠতেই পারে। বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালেও " কুকুর ও শিবির হতে সাবধান" লেখা সম্বলিত চিকা মারা দেখা যায়। এর দ্বারা এটাই বলার চেষ্টা করা হয় এবং অতীত আচরণে এটা প্রমাণীতও যে, কুকুর ও শিবির দুটো সম্প্রদায়ই সাধারণ মানুষের জন্য ক্ষতিকর। এ দুয়ের সংস্পর্শ, প্রভাব বা আক্রমণে মানুষের শারীরিক ও মানসিক বৈকল্য দেখা দিতে পারে।

কুকুর ও শিবিরের মতো আজকাল পুলিশ নামের আরেকটি সম্প্রদায় থেকে সাবধান বা দুরে থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সম্প্রদায়টির অভিভাবকেরাই এ পরামর্শ দিচ্ছেন।গতকাল (২৯/০৫/২০১২) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে ডিজিটাল বাংলাদেশ ফোরাম আয়োজিত “জঙ্গিবাদ ও হরতাল দেশ গড়ার অন্তরায়” শীর্ষক এক সেমিনারে দেয়া এক বক্তব্যে মাননীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শামসুল হক টুকু সাংবাদিকদের দায়িত্বপালনের সময় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে নিরাপদ দুরত্বে থেকে সংবাদ সংগ্রহের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, নিরাপদ দুরত্ব থেকে সংবাদ সংগ্রহ করলে এ ধরণের দুর্ঘটনা এড়ানো যেতে পারে।

এ বক্তব্যের মাধ্যমে সম্প্রদায়টির অভিভাবক সম্ভবতো দুটো বিষয় প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। প্রথমত তিনি বুঝাতে চাচ্ছেন, সাংবাদিক নির্যাতনে কথিত সম্প্রদায়ের কিছু সদস্যের কোন দোষ নেই, দোষটা আসলে নির্যাতিতদেরই।নির্যাতিত সাংবাদিকরা পুলিশের দায়িত্বপালনের সময় তাদের কাছাকাছি ছিলেন বলেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয় যে বিষয়টি তিনি প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছেন তাহলো পুলিশ যা ইচ্ছে তা করবে, যাকে ইচ্ছা তাকে পেটাবে। সাংবাদিকরা দুরে থাকলে, নিরাপদে থাকলে সম্প্রদায়টির বাড়াবড়ির চিত্র কখনই জাতির সামনে আসবে না। দেশে ও বিদেশে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি একেবারে ফকফকা বলে প্রচার চালানো যাবে।

তবে মাননীয় অভিভাবক যে বিশেষ উদ্দেশ্যেই এ বক্তব্য রেখে থাকুন না কেন তার উদ্দেশ্য যে সফল হবেনা সে বিষয়ে আমি শতভাগ নিশ্চিত। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আমরা শুধুমাত্র যে একটি ক্ষেত্রে ক্রমাগত উন্নয়ন ঘটাতে পেরেছি বা আন্তর্জাতিক মানের কাছাকাছি যেতে পেরেছি সেটি হল আমাদের গণমাধ্যম। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া আমাদের গণমাধ্যম সবসময়ে সামরিক ও তথাকথিত গণতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলেছে, রুখে দাড়িয়েছে। মাননীয় অভিভাবকের বেলায়ও নিশ্চিতভাবে এর ব্যতিক্রম হবেনা। মাননীয় অভিভাবক যে সময়ে সাংবাদিকদের ওনার চেলাদের দায়িত্বপালনের সময়ে তাদের থেকে নিরাপদ দুরত্বে থাকার পরামর্শ দিচ্ছিলেন প্রায় সে সময়েই ওনারা ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের চত্বরে বিচারপ্রার্থী এক তরুণী ও তাঁর মা-বাবাকে প্রকাশ্যে নির্যাতন ও হয়রানি করে। আমাদের সাংবাদিক সমাজ কিন্তু মাননীয় অভিভাবকের পরামর্শ অনুযায়ী ওনার চেলাদের কাছ থেকে নিরাপদ দুরত্বে থাকেনি। অসীম সাহস নিয়ে ওনার মাস্তান চেলাদের নিকটে অবস্থান করেই তাদের মাস্তানির চিত্র জাতির সামনে তুলে ধরেছেন।

মাননীয় অভিভাবক নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, ওনার কোন পরামর্শই সাংবাদিকদের তাদের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখতে পারবেনা। এদেশের মানুষ কুকুর বা শিবির-কে যেমন কোনকালেই ভয় পায়নি তেমনি সাংবাদিক সমাজও মাননীয় অভিভাবকের এই মাস্তান সম্প্রদায়কে ভয় পাবেনা।বরঞ্চ বলা যায় মাননীয় অভিভাবকেরই তার চেলাদের কাছ থেকে নিরাপদ দুরত্বে থাকার সময় খুব নিকটে চলে এসছে। নিজেদের প্রাক্তন অভিভাবকদের সাথে এই মাস্তান সম্প্রদায় ক্যামন ব্যবহার তা জানার জন্য বর্তমানের অভিভাবক মহোদয়কে খুব বেশি কষ্ট করার বা বিজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন হবেনা। বাংলাদেশের নিকট রাজনৈতিক ইতিহাসের পাতাটা একটু উল্টালেই চলবে।
১০টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×