somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেলীফুল ও ইরানী বলপেন ডেজ (ভালবাসার গল্প)

২৮ শে মে, ২০১২ দুপুর ২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
আমার নাম শাকিল ওরফে শ্যাক। আমার কোন ছেলে বন্ধু অবশ্য আমাকে শ্যাক নামে ডাকে না। আমাকে শ্যাক ডাকে বেলীফুল... ওরফে নাসরীন ফাতিমা নিশি... আমার মেয়ে বন্ধুদের মধ্যে আমার সবচে ঘনিষ্ঠ। ওকে বেলীফুল বললাম কেন? কাকতালীয়ভাবে ওর এবং আমার পছন্দের ফুল হচ্ছে বেলী। এবং আরও কাকতালীয়ভাবে নিশির মুখটা দেখতে ঠিক বেলীফুলের মতো। এটা অবশ্য আমার মতে... ওর পরিচিত কেউ অবশ্য ওকে এটা কখনো বলেনি যে ওর মুখটা বেলীফুলের মতো। বেলীফুল আমার প্রিয় ফুল, নিশি আমার প্রিয় বান্ধবী ওরফে আর একটু বেশী কিছু... আর একটু বেশী কিছু হওয়াতেই বোধকরি ওর গোলগাল মুখটা আমার কাছে বেলীফুলের মতই মনে হয়। ওকে আমার বন্ধুর চেয়ে একটু বেশি কিছু বললাম ঠিকই কিন্তু বাস্তবে সেটা একতরফা। নিশি এ ব্যাপারে খুবই কড়া। প্রায় প্রতিদিনই আমরা ল্যান্ডফোনে কথা বলি। রাত ১২:৩০ মিনিটে এই অধিবেশন শুরু হয়। পড়ালেখার কথার ফাঁকে কোন একসময় আমি টুক করে বলে ফেলি... “বেলী আমি তোমাকে বেলীবাসি থুক্কু ভালবাসি।” ব্যস এই ভালবাসি শব্দটা শুনলেই হল... সাথে লাইন কেটে দেবে অথবা বলবে আর কক্ষনো যেন এ কথাটা না বলি। লাইনই কাটে বেশি। তবু বেলীর জন্য আমি সুযোগ পেলেই বলি...“ভালবাসি” যেটা ও শুনতেই পারে না। আমরা দুজনই কলেজে পড়ি...ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে। মফস্বলের কলেজ তাই কলেজের পাশেই আছে একটা হাফ পুকুর+হাফ খাল = পুখাল! আমাদের অনেক বন্ধুদের মধ্যে তর্ক হয় এটা পুকুর না খাল এ বিষয়ে। তাই আমি একদিন এ সমাধানটা দিয়ে বললাম, এটা হল পুখাল। হাফ পুকুর+হাফ খাল! তবে পুখালটা দারুণ কাজের। এটার পাড়ে বসে আড্ডা দেয়ার সময় জীবন অনেক সুন্দর মনে হয় আর পাশে যদি নিশি থাকে তবে তো কথাই নেই...

২.
আমরা যখন এসএসসি পাশ করি তখন বলপেনটা বেরিয়েছিল। নাম ইরানী বলপেন। এই কলমের বৈশিষ্ট্য হল এটার কালি থেকে সুগন্ধ বের হয়। কলেজে দু একজনের কাছে দেখেছি কিন্তু আমি বা নিশি কখনো কলমটা বাজার থেকে কিনিনি। নিশি কেনেনি কারণ নিশির প্রিয় কলম ইকোনো ডি এক্স। সারাজীবন নাকী ঐ কলম দিয়ে লিখে যাবে। আমরা ইন্টার ফার্র্স্ট ইয়ারে ভর্তি হবার কিছুদিন পরে ইরানী বলপেনের এজেন্ট একদিন আমাদের ক্লাসে এল। সে অন্য ক্লাসগুলোও ঘুরে এসেছে। সে ডায়াসে মানে স্যাররা যেখানে দাঁড়ায় সেখানে উঠেই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করল। তারপর ইরানী সুগন্ধি বলপেনের বিষয়ে সু-বক্তৃতা দিল। তার বক্তৃতায় প্রায় সবাই কাত... কারণ যখন সে বিক্রি করা শুরু করল দেখা গেল কেউ চার পাঁচটার কমে কিনছে না। নিশি কিনল দুটা। আমি একটা।

ঐদিন অন্য ক্লাশগুলোতে স্যাররা যা লিখিয়েছে তার সবই বোধহয় সবাই ইরানী বলপেন দিয়ে লিখেছে। কারণ স্যার চলে যাওয়ার পর দেখা গেল এক অদ্ভূত দৃশ্য... সবাই খাতা শুঁকে শুঁকে দেখছে গন্ধটা কেমন! আমিও শুঁকে দেখলাম। শুঁকেই আমি থ! আরে এটার সুগন্ধ তো বেলীফুলের মতো!
আমি নিশির দিকে তাকালাম। স্যার ক্লাশে নেই। ও দেখি একটা অদ্ভূত কান্ড করছে। খাতায় একটা লম্বা টান দেয়... আর শুঁকে দেখে। আবার টান দেয় আবার শুঁকে দেখে। আমি ওর টেবিলের কাছে গেলাম।
- এভাবে এতবার শুঁকে দেখার কী হল?
- বুঝলি গন্ধটা যেন মাতাল করে দিচ্ছে!
- তোর নাম তো নিশি... নিশির নেশা হতে আর কতোক্ষণ!
- আচ্ছা তোর খাতাটা দে তো...
- কেন? খাতা দিয়ে কী করবি?
- আরে দে না!
বলে আমি খাতাটা দাঁড়ানো অবস্থায় হাতে নিয়ে সাদা একটা পেজে বড় করে একটা লাভ চিহ্ন এঁকে দিলাম।
- এবার নে... শুঁকে দ্যাখ
ও লাভ চিহ্ন দেখে একটু মুচকি হাসল। তারপর শুঁকল...এবং বলে উঠল
- গন্ধটা কেমন যেন অপরিচিত মনে হচ্ছে রে!
- আশ্চর্য! একই কলমের লেখা গন্ধ আলাদা হবে কেন?
- ব্যাখ্যা দিতে পারব না ... বলেই হনহন করে কমনরুমের দিকেই বোধহয় চলে গেল।

নামেই কমনরুম... ছেলেদেরটা আলাদা, মেয়েদেরটা আলাদা। ওখানে গিয়ে ব্যাখ্যা জানার তো কোন উপায় নেই। আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমার বেঞ্চে ফিরে এলাম। প্রায় সবাই কমনরুমে চলে গেছে। ক্লাশটা ফাঁকা বললেই চলে...
আমি উদাস হয়ে কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে গেলাম। নিশিকে কতো গিফট দিয়েছি! স্কুল লাইফ থেকে আমরা একসাথে পড়ছি। আমাদের বাসাও একই কলোনীতে। সরকারী কোয়ার্টারে। ওদের বাসার সামনে একটা বেলীফুল গাছ আছে। আমাদের বাসার সামনে ছিল না... আমি পরে নার্সারী থেকে টবসহ একটা আনিয়ে নিয়েছি। একবার ওকে গিফট দেয়ার জন্য আমার গাছ থেকে একটা বেলী ফুল ছিঁড়ে নিয়ে ব্যাগে রেখে কলেজে গেলাম। কিন্তু সেদিন অন্য ঝামেলায় বেলী ফুলটা দিতে ভুলে গেলাম।
এর পাঁচ ছয়দিন পর ও আমাকে বলল, শ্যাক তোর জন্য একটা গিফট আছে!

আমি মনে মনে খুশি হয়ে উঠলাম। কারণ ও আমাকে খুব বেশি গিফট দেয়নি... হাতে গোণা কয়েকটা বাদে। তাই আমিও উত্তেজনার বশে বলে ফেললাম, তোর জন্যও একটা গিফট আছে!
নিশি ওর ব্যাগ থেকে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশ বড় একটা বেলীফুল বের করল... “সকালে ব্রাশ করছিলাম। হঠাৎ চোখ গেল বেলীফুলটার দিকে। কী ব্যাপার! বেলীফুল গাছে সাদাগোলাপ কেন? কাছে গিয়ে দেখি ওটা বেলী ফুলই...অন্যগুলোর তুলনায় বেশ বড়। ভাবলাম ছিঁড়ে নিয়ে টেবিলে সাজিয়ে রাখি। পরে কলেজে আসার সময় মনে হল তুই তো আমাকে অনেক গিফট দিস... আমি তোকে এই ফুলটা গিফট করি না কেন? যেই ভাবা সেই কাজ... নিয়ে এলাম তোর জন্য। কী খুশিতো?”
ওর গিফটটা বেলীফুল দেখে আমি চুপসে রইলাম। ও আবার বলে উঠল..
- বেলীফুল গিফট করলাম দেখে এটা ভাবিস না যে আমি তোর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি! তুই প্রায়ই অনেক গিফট দিস তাই আমিও দিলাম। ভালবাসা-টালবাসার কোন ব্যাপার এখানে নেই।
আমি তো আরও চুপসে গেলাম।
- আচ্ছা এবার তোর গিফটটা দেখি। তোর গিফট চয়েস বরাবরই ভালো।
- না ইয়ে মানে ব্যাপার হয়েছে কী...
- তাড়াতাড়ি কর ক্লাশের সময় হয়ে যাচ্ছে...
আমি ব্যাগের সাইড পকেট থেকে নেতিয়ে পড়া ছোট্ট একটা বেলীফুল বের করি।
- কীরে তোর গিফট কী খুঁজে পাচ্ছিস না?
- না মানে ... এটাই আমার গিফট!
- কী? এই নেতিয়ে পড়া বেলীফুলের ভূতটা তোর গিফট? আশ্চর্য! বুচ্ছি আমার প্রতি তোর ইমোশন কমে আসছে। যখনই আমি তোকে তাজা ফুল গিফট দেয়া আরম্ভ করলাম তুই দিলি শুকনো পাতার মতো একটা বেলীফুল! ভাল... খুব ভাল... তুই বন্ধু থেকে আরোএকধাপ উপরে উঠে গিয়েছিলি... আস্তে আস্তে আবার বন্ধুর লেবেলে ফিরে আসছিস... এটা খুব ভাল লক্ষণ! আমরা বন্ধু থাকাই ভাল হবে! যাই ক্লাশের সময় হয়ে গেল।
এই বলে আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নিশি চলে গেল। আমি মনে মনে ভাবলাম আগে যে এতগুলো তাজা তাজা গিফট দিলাম তার কোন মূল্য নেই!

৩.
আজকের দিনটার নাম দিয়েছি “ইরানী বলপেন ডে”। কারণ এটা নয় যে আজ আমরা প্রথম ইরানী বলপেনটা কিনলাম। হ্যাঁ এটাও একটা ব্যাপার তবে এই ইরানী বলপেন আমার জীবন নিয়ে বা বলা যায় আমার নিশির সম্পর্ক নিয়ে যে খেলাটা খেলল তা আমার চিরজীবন মনে থাকবে। এজন্যই আজকের দিনটার নাম আমার কাছে “ইরানী বলপেন ডে”।
ইরানী বলপেন ডে’র এখন রাত্রিকালীন প্রহর শুরু হয়েছে। আগেই বলেছি নিশির সাথে আমার রাত ১২:৩০ মিনিটে রাত্রিকালীন অধিবেশন শুরু হয়। এই সময়টায় দুই পরিবারের সবাই ঘুমে অচেতন থাকে। আমি রাত সাড়ে বারোটা বাজতেই ল্যান্ডফোনের কাছে গিয়ে মুখস্থ নাম্বারটা ডায়াল করি।
- হ্যালো
- হ্যালো...(নিশির কন্ঠ আমার মুখস্থ। ওর মুখস্থ আমার কন্ঠ)
- আচ্ছা শ্যাক আমার প্রায়ই মনে হয় প্রতিদিন কী কথা না বললেই নয়? আমরা তো প্রেমিক-প্রেমিকা না যে প্রতিদিন টাইম ধরে কথা বলতে হবে।
- প্রেমিক প্রেমিকা হতে কতোক্ষণ!
- মানে?
- মানে আমাদের প্রেম তো অর্ধেক ঠিক হয়েই আছে। বাকী আর অর্ধেক।
- মানে কী?
- তুই ঐ পাগলের গল্পটা শুনিসনি?
- কোন গল্প?
- ঐ যে এক পাগল রাজপ্রাসাদের বাইরে দাঁড়িয়ে বলত, রাজকন্যার সাথে তার বিয়ে অর্ধেক ঠিক হয়ে গেছে! রাজ্যের উৎসুক জনতা জিজ্ঞেস করল, তোর মত পাগলের সাথে রাজকন্যার বিয়ে অর্ধেক ঠিক হলো কীভাবে?
পাগল উত্তর দিত, বিয়ে অর্ধেক ঠিক কারণ পাত্রপক্ষ তো রাজিই!

- হা হা হা হা । গল্পটা ভাল বলেছিস। তাহলে এই ব্যাপার। তুইও কী পাগল না কী?
- হুঁ। পাগল তোর জন্যরে পাগল এ মন... পাগল! (বি.দ্র. এটা ন্যান্সির গানের কথা থেকে ধার করে বলা নয়। যে সময়ের কথা লিখছি তখন ন্যান্সি সবে সারেগামা শেখা শুরু করেছে! ঐ মুহুর্তে আমিই ঐ লাইনটা বানিয়েছিলাম!)
- প্রেমের প্যাঁচাল বাদ দে। আজকে কী হয়েছে সেটা শোন... আজ ইরানী বলপেনটা দিয়ে অনেক লেখা লিখলাম। লিখলাম আর শুঁকলাম... শুঁকলাম আর লিখলাম! কী সুন্দর গন্ধ! তাও আবার বেলীফুলের! আমার সারা রুম ভরে গেছে বেলী ফুলের গন্ধে... কেমন যেন মন মাতাল করা গন্ধ! ( বলেই ও হাই তুলল) আজ কেন জানি আর পড়তে পারছি না। ঘুম ঘুম লাগছে।
- তুই তো দেড়টার আগে ঘুমাতে যাস না।
- হ্যাঁ... কিন্তু আজ কী যে হল! বিকেলে না ঘুমানোতে বোধহয়। আচ্ছা ১৭ নাম্বারের ব্যালেন্স শীট কী মিলছে?
- ওহ্ শীট! পড়ালেখার কথা বাদ দে! আয় অন্য কথা বলি!
- অন্য কী কথা?
- ভালবাসার কথা...
- হ্যাঁ কী বললি... ভালবাসার কথা... (হাই তুলল)। কী হয়েছে ভালবাসার?
- আমি তোকে ভালবাসি!
- হ্যাঁ শুনেছি তো। আগেও বলেছিস। (আবার হাই তুলল)
আমি ভাবলাম, আশ্চর্য! অন্যদিন এ কথা বললে তো লাইনই কেটে দিত! আজ কাটছে না কেন?
- আমি তোকে ভালবাসি!
- এককথা আর কয়বার বলবি...
- তুই আমাকে বাসিস না?
- হ্যাঁ বাসি তো!
- কীইই... সত্যি বলছিস!
- হ্যাঁ সত্যি... আমি তোকে ভালবাসি (হাই তুলতে তুলতে বলল)। খুব ঘুম পাচ্ছে আজ রাখি রে...
বলেই লাইন কেটে দিল। আমি ছোটখাট একটা চিৎকার দিলাম... “রাখলে রাখ! আমার যা পাওয়ার আমি পেয়ে গেছি! নিশি আমাকে ভালবাসে! হায় আল্লাহ্ এখন আমি কী করব? ... পাগল হয়ে যাব... না না না ... পুকুরে ঝাঁপ দেব...না না না ... গাছে উঠে যাব...না না রাত বেশি হয়ে গেছে! কী করব!কী করব! আমি জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছিলাম। আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে নিশি আমাকে ভালবাসে!
অনেক আনন্দ অথবা অনেক দুঃখ কোনটাতেই রাতে ঘুম আসা মুস্কিল! আমি অনেক আনন্দে রাতে ঘুমাতে পারলাম না! কত কী যে কল্পনা করলাম নিশি মানে আমার বেলীফুল কে নিয়ে!

৪.
নির্ঘুম রাত কাটাবার পর কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য যে কোন কাজে আপনি যান না কেন ঘুম না হওয়ার কারণে আপনার অসহ্য লাগবে সবকিছু।
কিন্তু গতকাল নির্ঘুম কাটিয়ে আজ লাল চোখ নিয়ে কলেজে আসায় আমার মোটেও অসহ্য লাগছে না! বরং আজ আমি পৃথিবীর সবচে সুখী মানুষদের একজন হয়েই কলেজে এসেছি! নিশি আমাকে বলেছে, সে আমাকে ভালবাসে! অবিশ্বাস্য! ভালবাসার কথা শুনলেই যে মানুষটি ফোনের লাইন কেটে দিত অথবা বলত এ ধরণের কথা যেন আর না বলি... সেই মানুষটি কত সহজে বলে ফেলল যে সে আমাকে ভালবাসে! আচ্ছা হঠাৎ কী এমন হল যে সে তার অবস্থান পাল্টে ফেলল!

সে মানা করত তবু আমি ক্রমাগত ভালবাসার কথা বলে গেছি এটাই কী তার অবস্থান পাল্টাবার মূল কারণ? রহস্য! রহস্য! এ রহস্য আমাকে জানতেই হবে... কী এমন ঘটল যে... আজ ছুটির পরে নিশি কে নিয়ে পুখালের পাড়ে গিয়ে বসতে হবে, জানতে হবে কী সেই কারণ যে কারণে সে আমাকে এতদিন প্রত্যাখ্যান করার পর অবশেষে মেনে নিয়েছে...
ক্লাশ শুরু হতে এখনো ২০/২৫ মিনিট বাকী...
আমি নিশির দিকে তাকালাম। সে অন্য মেয়েদের সঙ্গে আড্ডায় ব্যস্ত আছে। তাই আমিও ফারহানের সঙ্গে আড্ডায় মেতে উঠলাম। একটি জিনিস এখানে বলে রাখা দরকার আজ হচ্ছে ইরানী বলপেন ডে’ র পরের দিন। আমরা আড্ডা দিচ্ছিলাম হঠাৎ ডায়াস থেকে একটি কন্ঠ আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করল।
“আপনারা প্লিজ একটু কথা বলা বন্ধ করুন... আমার কিছু কথা আছে।
ক্লাশে নিরবতা নেমে এল। সবাই তাকাল ডায়াসে দাঁড়ানো লোকটির দিকে এবং আমার মতো সবাই লোকটিকে এক নজর দেখেই চিনে ফেলল বলেই আমার ধারণা। কারণ সে হচ্ছে ইরানী সুগন্ধি বলপেনের এজেন্ট যে গতকাল এসে আমাদের কাছে কলম বিক্রি করেছিল।
“আপনারা নিশ্চয়ই আমাকে চিনতে পারছেন। আমি গতকাল আপনাদের কাছে ইরানী সুগন্ধি বলপেন বিক্রি করেছি। গতকাল রাতে আমরা এজেন্টরা কোম্পানির কাছ থেকে খবর পেয়েছি যে আমাদের ইরানী বলপেনের সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি আমাদের কারখানার লোকদের ঘুষ দিয়ে এই কলমের কালিতে নেশাদ্রব্য ঢুকিয়ে দিয়েছে। তাই কোম্পানি এ প্রান্তিকে যত কলম উৎপাদন করেছে তার সব মার্কেট থেকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। আমি আশা করি আপনারা একদিনে এই কলম দিয়ে খুব বেশি লেখা লেখেননি... আমি যত জায়গায় এ কলম বিক্রি করতে গিয়েছি তার থেকে সবচে বেশি বিক্রি হয়েছে গতকাল আপনাদের কলেজে। তাই আমি আজই এখানে চলে এসেছি। আপনারা যারা কলম কিনেছেন তারা কলমটি ফেরত দিয়ে টাকা নিয়ে যান। তবে চিন্তার কিছু নেই। ইরানী বলপেন আবার বের হবে কিন্তু সুগন্ধিটা হয়ত আর রাখবে না। ”

নেশাদ্রব্য শুনে সবাই একটু আতঙ্কিতই হয়ে গেল। সবাই গতকাল শুধু লিখেছে আর শুঁকোশুঁকি করেছে! যারা কলম কিনেছিল তারা হুড়মুড় করে কলম ফেরত দিয়ে টাকা নিয়ে এল। নিশি গেল সবার শেষে। বেচারীর বোধহয় এ কলমের উপর মায়া পড়ে গেছিল। আমারও খুব খারাপ লাগল এজেন্টের কথা শুনে। কলমটা আমারও ভাল লেগেছিল... বেলীফুলের সুগন্ধ বলে কথা!
প্রতি ক্লাশের বিরতিতে সবার মধ্যে একটাই আলোচনা... ইরানী বলপেন ও এর কালিতে নেশাদ্রব্য। আর রহস্য অনুসন্ধান ... কোন কোম্পানি এ কাজ করতে পারে?
এসব আলোচনায় আমার অবশ্য খুব একটা উৎসাহ লাগল না। আমার চিন্তা হল কখন ক্লাশ শেষ হবে আর নিশিকে নিয়ে পুখালের পাড়ে যেতে পারব! ভালবাসার কথা ওর মুখ থেকে আরো কয়েকবার না শুনলে মন শান্তি পাচ্ছে না! আর কী কারণে নিশি অবস্থান বদলাল তাও জানা দরকার...

৫.
আমি নিশিকে নিয়ে পুখালের পাড়ে বসে আছি। ও খুব মনমরা হয়ে আছে... আমি বললাম...
- তোর কী কলমটার জন্য খারাপ লাগছে?
- হ্যাঁরে... কলমটার ঘ্রাণটা খুব ভাল ছিল। কিন্তু কলমের ভেতরে এমন একটা কান্ড ঘটবে এটা কে জানত! আমার বাসায় কিন্তু আর একটা কলম আছে। তুই কয়টা কিনেছিলি?
- ঐ একটাই... আচ্ছা বাদ দে কলমের কথা। আয় অন্য কথা বলি। তোর কেমন লাগছে?
- কেমন লাগছে মানে? বললাম না মন খারাপ...
- আহা কলমের বিষয়টা নয়...
- তাহলে?
- আমাদের বিষয়টা...
- আমাদের আবার কোন বিষয়?
- না মানে আমরা তো এখন আর শুধু বন্ধু নই ... আমরা তো জুটি।
- জুটি? মানে প্রেমিক-প্রেমিকা?
- হ্যাঁ... কাল রাতে তুই শেষে বললি না যে তুই আমাকে ভালবাসিস।
- ওহ্ এই কথা... আচ্ছা তুই আমাকে বল আগে তুই আমাকে ভালবাসার কথা বললে আমি কী করতাম?
- লাইন কেটে দিতি... কিন্তু কাল তো কাটিসনি... ভালবাসি বলেছিস!
- কালকের কাহিনি তুই এখনও বুঝতে পারিসনি?
- না...
- কালকের কাহিনি তো ইরানে!
- ইরানে মানে?
- ইরানে মানে ইরানী বলপেন!... কাল বললাম না ঐ কলম দিয়ে সন্ধ্যার পর থেকে শুধু লিখেছি আর শুঁকেছি ... শুঁকেছি আর লিখেছি! নেশাদ্রব্য শুঁকতে শুঁকতে নেশা হয়ে গেছিল বোধহয়... নেশার ঘোরে তোকে ভালবাসি বলে ফেলেছি! তুই সিরিয়াসলি নিস না!
আমার মাথায় যেন সমগ্র আকাশটা ভেঙ্গে পড়ল। চারদিকটা অন্ধকার হয়ে গেল মূহুর্তেই! আমি কিছু দেখতে পাচ্ছি না! আমার কান দুটো বন্ধ হয়ে আসছে! আমি অন্ধ বয়রা হয়ে যাচ্ছি বোধহয়! আমি অনেকক্ষণ রোবটের মত ঝিম মেরে বসে রইলাম... হঠাৎ বুঝলাম বয়রা হইনি... নিশি বলছে
- তোকে যদি কষ্ট দিয়ে থাকি আই এ্যাম সরি... আমরা ভাল বন্ধু ছিলাম আছি থাকব। এখন বাসায় যেতে হবে। পরে কথা হবে...

৬.
পরে আর কথা হয়নি। ১ দিন ২ দিন ৩ দিন এভাবে ১ সপ্তাহ।আমি কলেজে যাই আসি। নিশির সাথে হাই হ্যালো আর পড়ালেখা ছাড়া অন্যকোন কথা হয় না। নিশি কেমন যেন খুব স্বাভাবিক, আগের মতই প্রাণবন্ত! একদিন ও বলল,“কীরে তোর মুখ তো পাতিলের তলার মতো কালো হয়ে যাচ্ছে রে! খুব বেশি রোদে ঘুরিস মনে হচ্ছে!”
আমি মুখে কিছু বললাম না। আমি এখন বাসা টু কলেজ আর কলেজ টু বাসা করেই কাটিয়ে দিচ্ছি। বিকেলে খেলতে পর্যন্ত বের হই না। এক আকাশ দুঃখ নিয়ে নিজের নিঃসঙ্গতা যাপন করছি। নিজের দুঃখের কথা কাউকে বলতেও পারছি না সইতেও পারছি না... প্রায় রাতে থেকে থেকে কান্না আসে...

মাঝে মাঝে সব রাগ ঐ ইরানী বলপেনের উপর পড়ে। আগে ভালবাসত না সে এক ভাল ছিল, বলপেনের নেশার ধাক্কায় ভালবাসি বলে আবার ফিরিয়ে নেয়াতে কষ্ট আরো বেশি হচ্ছে... ইরানী বলপেন এখন আমার কাছে ভিলেন। আর ইরানী বলপেন ডেজ মানে বলপেন কেনার দিন আর তার পরের দিন এই দুইদিন অভিশপ্ত দিন মনে হয়।
এক সপ্তাহ পর একদিন ঠিক রাত ১২ঃ৩০ মিনিটে আমাদের ল্যান্ডফোন বেজে উঠল।
- হ্যালো
- হ্যালো শ্যাক (সেই চির পরিচিত কন্ঠ) কেমন আছিস? অনেকদিন ফোনে কল দিস না... কী ব্যাপার? খুব রাগ না কী?
- না! এম্নিই আর দেয়া হয়ে ওঠে না...
- আগে তো নিয়মিত কল দিতি।
- হ্যাঁ তা দিতাম...
- আমি জানি তুই আমার ওপর রাগ করেছিস। তবে তোর রাগ ভাঙানোর মেডিসিন আমার কাছে আছে!
- কী মেডিসিন?
- আমি তোকে ভালবাসি!
- ঠাট্টা করিস না নিশি... এম্নিতেই তুই অনেক... থাক। ঠাট্টা করিস না মন মেজাজ খারাপ আছে।
- আমি ঠাট্টা করছি না সত্যি বলছি!
আমি জানি ও ঠাট্টা করছে তবু কেমন যেন নড়েচড়ে বসলাম... কারণ ইরানী বলপেনের কালির নেশা তো ১ সপ্তাহ থাকার কথা না। তাছাড়া ও তো পরের দিনই আমার সাথে স্বাভাবিকভাবে কথা বলল! নাহ্! আমার সন্দেহ যায় না... “ছ্যাঁক খাওয়া ছাওয়াল তো... ঠাট্টা শুনলে ভয় পাই!” আমি বললাম...
- তুই ঠাট্টা করছিস!
- ওহ্ শ্যাক! কেমনে বুঝাই আমি ঠাট্টা করছি না। আমি সিরিয়াস!
হঠাৎ আমার মাথায় একটা চিন্তা আসল। ওর কাছে আরো একটা ইরানী সুগন্ধি বলপেন ছিল!
- আচ্ছা তোর কাছে যে আরো একটা ইরানী সুগন্ধি বলপেন ছিল ওটা দিয়ে লিখে আজ আবার শুঁকোশুঁকি করিসনি তো?
- পাগল! আমি কী নেশাখোর না কী?
- তাহলে সত্যি বলছিস!
- হ্যাঁ সত্যি সত্যি সত্যি... তিন সত্যি! আমি শ্যাক ওরফে শাকিল ও’নীল কে ভালবাসি!
- ওহ্ তার মানে আমেরিকার এল এ লেকার্সের শাকিল ও’নীলের কথা বলছিস? তার মানে আবারও আমার সাথে তুই প্রতারণা করলি?
- হা হা হা হা ... আরে না না। তোকে আদর করে শাকিল ও’নীল বললাম। জানিস এল এ লেকার্সের ঐ দৈত্য বাস্কেটবল প্লেয়ারটার ডাক নামও শ্যাক। আমিও তোকে শ্যাক ডাকি তো তাই ওর কথা বললাম। ঐ কালো দৈত্যটারে আমি ভালবাসতে যাব কোন দুঃখে?
- তাহলে ঠান্ডা মাথায় আমাকে পুরো নাম ধরে ভালবাসি বল।
- আমি আব্দুল্লাহ বিন শাকিল ওরফে শ্যাকি কে ভালবাসি। অনেক ভালবাসি।
- শ্যাক থেকে আবার শ্যাকি কেন?
- শ্যাক বললে তুই আবার শাকিল ও’নীলকে ভাববি তাই এ নতুন নাম! শুনতেও সুইট লাগছে। শ্যাকি...শ্যাকি।
- আচ্ছা হঠাৎ তোর এই পরিবর্তন কেন?
- কোন পরিবর্তন?
- এই যে ভালবাসার কথা শুনতে পারতি না, একবার বলেও বললি যে নেশার ঘোরে বলে ফেলেছিস... তারপর আজ আবার বলছিস ভালবাসি... মানে আমি খুব কনফিউজড।
- তাহলে শোন আসল কাহিনী। আমি তোকে স্কুল লাইফ থেকে ভালবাসি। তারপর যখন কলেজে উঠলাম তখন তোর প্রতি টান আরো বেড়ে গেল। কিন্তু জানিসইতো মেয়েদের বুক ফাটে তো মুখ ফাটে না। কলেজে ওঠার পর প্রায় প্রতিদিন তুই আমাকে কল দিতি। আমি মাঝে মাঝে বিরক্ত হবার ভাণ করতাম। কিন্তু আমার ভাল লাগত তোর সাথে কথা বলতে। কিন্তু তুই ভালবাসার কথা বললেই লাইন কেটে দিতাম কারণ তোর মুখ থেকে ঐ কথাটা শুনলে আমার ভেতরে কাঁপুনি শুরু হয়ে যেত। আমার চিন্তাধারা এলোমেলো হয়ে যেত... তার ফলে যেটা হত আমি পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারতাম না। তাই তোকে নিষেধ করতাম। আর মিথ্যে করে বলতাম আমরা বন্ধু থাকাই ভাল হবে।
- আচ্ছা ইরানী বলপেন ডে তে তুই কী সত্যিই নেশাগ্রস্থ হয়ে গিয়েছিলি? নেশার ঘোরে আমাকে বলেছিস ভালবাসি?
- পাগল! আমি তোর সাথে একটু ফান করলাম আর কী!
- তাহলে তুই কীভাবে জানতি ইরানী বলপেনের কালিতে নেশাদ্রব্য আছে?
- ধুর বোকা! আমি কীভাবে জানব! তুই অনেকদিন থেকেই ভালবাসি বলছিস। তাই সেদিন নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। বলে ফেললাম ভালবাসি! তারপর ফোন কেটে তো কাঁপা শুরু করলাম! ভাবলাম এই কথাটা এত তাড়াতাড়ি কেন বললাম? আমার বলার প্ল্যান ছিল আরো অনেক পরে। ইন্টার পাশ করে তারপর। তাই বুদ্ধি খুঁজতে লাগলাম যে পরদিন তোকে কী বলে পাশ কাটাব? বুদ্ধি বের করলাম... তোকে বলব ঘুমের ঘোরে বলে ফেলেছি... কিন্তু কলেজে আসার পর ইরানী বলপেনের এজেন্ট আমার কাজ সহজ করে দিল! আমি চিন্তা করলাম নেশার ঘোরের কথা বললে তুই তো আর অবিশ্বাস করতে পারবি না! কিন্তু তুই একটু বুদ্ধি খাটালে আমি ধরা পড়ে যেতাম। কালিতে যতই নেশাদ্রব্য দিক কিছু লিখে শুঁকলেই নেশা হবে না। তুই খেয়াল করিসনি সেদিন মানে তুই যেটাকে ইরানী বলপেন ডে বললি সেদিন আমি তোর সাথে শুরুতে স্বাভাবিকভাবেই কথা বলেছি! কোন নেশা হয় নি!
- তুই বলছিস ইন্টার পাশ করার পর ভালবাসার কথা বলার প্ল্যান তোর ছিল। তাহলে আজ বলেছিস কেন?
- এক সপ্তাহ তোর কল না পেয়ে আমি আর সহ্য করতে পারলাম না। প্রথমদিন কাটল স্বাভাবিকভাবেই। কিন্তু পরের দিন থেকে মনে হতে লাগল আজ কী যেন একটা হল না। এভাবে ৪ ৫ দিন কাটার পর আমি আমি অস্থির হয়ে উঠলাম। অনেক ভেবে সিন্ধান্ত নিলাম ভালবাসার কথা যখন বলবই তখন পরে আর আগে কী? বলেই ফেলি। আর আমিও কলেজে তোর মুখ দেখে বুঝতাম তুই খুব কষ্টে আছিস। তারপর আর সহ্য করতে পারলাম না। তাই আজ আমিই কল দিয়ে দিলাম।
- তুই অযথা এতদিন আমাকে কষ্ট দিলি।
- দুঃখিত জান। তবে একটা লাভ অবশ্য হয়েছে।
- কী?
- তুই আগুনে পুড়ে আরো খাঁটি হয়েছিস!
- যদি ছাই হয়ে যেতাম?
- তাহলে আমি সেই ছাই আকাশে উড়িয়ে দেখতাম!
- কেন?
- যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখ তাই... পাইলেও পাইতে পার অমূল্য রতন!
- হা হা হা হা ... যাক মনটা ভাল করে দিলি।
- মন তো ভাল করে দিলাম কিন্তু আজ থেকে পড়ায় ঠিকমতো মন বসাতে পারব কী না সেটাই আসল চিন্তা!
- এমনও হতে পারে আজ থেকে তুই আরো ভালভাবে পড়াশুনা করতে পারবি। একটা নিশ্চিন্ত অনুভূতি নিয়ে পড়া...
- হ্যাঁ ঠিক বলেছিস হতেও পারে।
- আমি মাঝের দুঃসহ সময়টাতে অনেক কেঁদেছি। তাই তোর জন্য একটা গান...
- ওয়াও! অনেকদিন পর তোর কন্ঠে গান! শুরু কর...
- “অশ্র“ দিয়ে লেখা এ গান, যেন ভুলে যেও না... একই বন্ধনে বাঁধা দুজনে... এ বাঁধন ছিঁড়ে যেও না!”
- আমার গানের গলা অত ভালো না ... তবু তোর জন্য একটা গাইছি
“তুমি মোর জীবনের ভাবনা, হৃদয়ে সুখের দোলা... নিজেকে আমি ভুলতে পারি, তোমাকে যাবে না ভোলা!
ওকে আজ রাখি রে... কাল ক্লাশের পর তোর পুখালের পাড়ে অনেক্ষণ আড্ডা দিব... ওকে বাই...
- বাই

৭.
(পুখালের পাড়ে)
- ন্যাশ তোর জন্য একটা গিফট আছে!
- তোর জন্যও একটা গিফট আছে শেকু!
- তোর গিফটটা বের কর...
- না আগে তোরটা...
- লেডিস ফার্স্ট
- ওকে... এই নে অরিজিনাল নেশাদ্রব্য সংবলিত একটি ইরানী বলপেন!
- হায়! হায়! আমার গিফটও তো তাই!
- তুই ইরানী বলপেন কই পেলি? তুই তো কিনেছিলি একটা...
- ফারহানের কাছ থেকে ওরটা নিয়ে এসেছি... আচ্ছা তোর খাতাটা বের কর।
- কেন?
- আহা বের করনা!
নিশি খাতা বের করে দেয়...
শাকিল খাতা হাতে নিয়ে সাদা পাতায় ইরানী বলপেন দিয়ে একটা বিশাল লাভ চিহ্ন এঁকে দেয়...
- নে এবার শুঁকে দ্যাখ!
নিশি শুঁকে দ্যাখে...
- কেমন লাগছে গন্ধটা?
- কেমন যেন অপরিচিত লাগছে রে...
- আবারও অপরিচিত? ব্যাপার কী?
- আরে না! মিথ্যা বলেছি... ভালবাসার গন্ধটা এবার বেশ পরিচিত মনে হচ্ছে! এবং আরো মনে হচ্ছে এই গন্ধ আমাকে এমন নেশাগ্রস্থ করেছে যার ঘোর সারাজীবনেও কাটবে না!
আমি মনে মনে বলি “লং লিভ বেলীফুল ও ইরানী বলপেন ডেজ...”
------------------------------------------------------


১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভুল শুধু ভুল নয়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৬

এক
লেখাটা একটি কৌতুক দিয়ে শুরু করি। ১৯৯৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে শফিপুর আনসার একাডেমিতে বিদ্রোহ হয়। ৪ ডিসেম্বর পুলিশ একাডেমিতে অভিযান চালায়। এতে চারজন আনসার সদস্য নিহত হয়েছিল। এটি ছিল... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। VF 3 Mini: মাত্র 60 মিনিটে 27 হাজার বুকিং!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২১ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:০৪



আমার ব্যাক্তিগত গাড়ি নেই কিন্তু কর্মসূত্রে বেঞ্জ , ক্যাডিলাক ইত্যাদি ব্যাবহার করার সুযোগ পেয়েছি । তাতেই আমার সুখ । আজ এই গাড়িটির ছবি দেখেই ভাল লাগলো তাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ময়লাপোতার কমলালেবুর কেচ্ছা!! (রম্য)

লিখেছেন শেরজা তপন, ২১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩


বাংলাদেশের বিশেষ এক বিভাগীয় শহরে ময়লাপোতা, গোবরচাকা, লবনচোরা, মাথাভাঙ্গা, সোনাডাঙ্গার মত চমৎকার সব নামের এলাকায় দারুণ সব সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাস।
আমার এক বন্ধুর আদিনিবাস এমনই এক সম্ভ্রান্ত এলাকায় যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িক পোস্ট: বন্ধ হয়ে গেল সচলায়তন

লিখেছেন করুণাধারা, ২১ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


বন্ধ হয়ে গেল সচলায়তন! view this link

সামহোয়্যারইনব্লগ থেকে কয়েকজন ব্লগার আলাদা হয়ে শুরু করেছিলেন সচলায়তন বা সংক্ষেপে সচল ব্লগ। এটি বন্ধ হবার মূল কারণ উল্লেখ করা হয়েছে দুটি:

১)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×