somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিরোধী জোটের রাজনীতি ও বাংলাদেশের ভবিষ্যত

১২ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি লেখক নই। রাজনীতি ও সাহিত্য জ্ঞান আমার তেমন নেই বা এতে খুব একটা আগ্রহ নেই। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে দেশকে ভালবাসি। দেশের জন্য কিছু করার মত কোন যোগ্যতা অর্জন করতে না পারলেও দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যত চিন্তা করে খুব কষ্ট পাই।
আমি প্রবাসে থাকি। দেশে অবস্থান করে পুরো দেশের দুরাবস্থা সম্পর্কে অনুমান করা যতটা কঠিন প্রবাসে থেকে ততটাই সহজ। বিমান থেকে নিচের দিকে তাকালে বিশাল এলাকাকে পর্যবেক্ষণ করা যেমন সহজ ঠিক তেমনি। প্রযুক্তির কল্যানে দেশের অনেক খবর আমরা আগে পাই এবং উন্নত এসব দেশের সাথে দেশকে তুলনা করতে পারি যা দেশে থাকলে তেমন সম্ভব না।
দেশের সাম্প্রতিক কিছু খবর দেখলে মনে হয় বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে অসভ্য,বর্বর,উশৃংখল ও অনিরাপদ একটি দেশ। সভ্য দুনিয়ায় যা কল্পনা করা যায় না এই দেশে তাই হয়। এখানে নারীর ইজ্জতের গ্যারান্টি নেই, নারীকে ধর্ষণের পর অত্যন্ত পাশবিক কায়দায় হত্যা করা হয়। এমপি হোষ্টেল থেকে যুবতী নারীর গলিত লাশ পাওয়া যায়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশ অথচ দাঁড়ি-টুপি পরা নাগরিকদের জঙ্গি বলা হয়, হিজাব/নিকাব পরিধান করলে স্কুল কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়। যে দেশে হত্যার কোন বিচার নেই, যদি তাতে সরকারী দলের লোক জড়িত থাকে। ফাঁসির আসামিকে রাস্ট্রপতি ক্ষমা করে দেয়। সত্য সংবাদ প্রকাশের অপরাধে সাংবাদিকদের গ্রেফতার, নির্যাতন ও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়; অন্যদিকে সরকারের দালালি করে সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্য বলে যেইসব হলুদ সাংবাদিক (সাংবাদিক নামের কলংক) তাদের পৃষ্টপোষকতা করা হয়। বিচারকরা সরকারের নির্দেশের আলোকে রায় দেয়। যে দেশে সবকিছুকে রাজনীতিকরন করা হয়। শিক্ষিত মানুষগুলো বিবেকবোধ বিসর্জন দিয়ে নীতিহীন রাজনৈতিক দলগুলোর গোলামী করে। দেশের তেল গ্যাস ও খনিজ সম্পদ বিদেশী কোম্পানির হাতে তুলে দেয় দেশপ্রেমিক(?) সরকার। জনগনের সরকার ভিনদেশীদের গোলামী করে। বাংলাদেশের নেই কোন স্থায়ী, স্বাধীন ও শক্তিশালী পররাস্ট্রনীতি। অন্যদেশগুলো যখন দিন দিন উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন আমরা বিদ্যুতের অভাবে স্বাভাবিক কাজগুলো করতে পারছি না। দেশের সড়কগুলো যেন মৃত্যু ফাঁদ। সীমান্তবর্তী মানুষদের প্রায়ই বিনাকারনে হত্যা করছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী, আর হাসিনা সরকার হত্যাকারিদের পক্ষে সাফাই গাইছে। তাহলে এই দেশের ভবিষ্যত কি?
সর্বশেষ যে ঘটনা আমাকে কাদিয়েছে তা হলো ২৮ ফ্রেব্রুয়ারি হাসিনা ও মখার নির্দেশে নির্মম গনহত্যা এবং আমাদের প্রতিবেশি দেশ বার্মা সীমান্তে নীরিহ রোহিঙ্গা মুসলিমদের গনহত্যা এবং আশ্রয়প্রার্থী মজলুম মানুষগুলোর সাথে আমাদের দেশপ্রেমিক(!?) সরকারের আচরণ।
এত সব সমস্যা আক্রান্ত দেশে সরকারী দলের যেমন বিরোধী দলকে দমনের কৌশল ছাড়া আর কোন কর্মসূচী নেই তেমনি বিরোধী দলেরও যে কোন মূল্যে ক্ষমতায় যাওয়ার কর্মসূচী ছাড়া আর কোন কাজ নেই। আর জনগণ নিরব দর্শক। তারা হাত পা গুটিয়ে এই দুই দল/জোটের উপর দেশের ভাগ্য ছেড়ে দিয়েছে। ক্ষমতায় যাওয়া বা থাকার জন্য হাসিনা সরকার যেমন ভারতের কথায় উঠে বসে তেমনি বিরোধী জোট আমেরিকা সহ পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদি দেশগুলোর সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচী প্রণয়ন করে। বিরোধি জোটের শরিক জামায়াত একধাপ এগিয়ে আমেরিকা থেকে মডারেট ইসলামি দলের সার্টিফিকেট পেয়ে মহাখুশি(!)।

এ পরিস্থিতিতে দেশপ্রেমিক যে কোন নাগরিকেরই হতাশ হওয়ার কথা। আমিও হতাশাবাদিদের দলে ছিলাম কিন্তু ট্রানেলের শেষ প্রান্তে আলো দেখতে পেয়ে আমি এখন অনেকটা আশাবাদী। এই আলো হলো দেশপ্রেমিক, স্বাধীনচেতা, ইসলামী অনুশাসনে বেড়ে উঠা, মেধাবী ও নেতৃত্বের যোগ্যতা সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম। দুঃসাহসী, আপোষহীন এই প্রজন্ম ইতিমধ্যে তাদের যোগ্যতার প্রমান রেখেছে এবং রাখছে। সীমান্তে হত্যা বন্ধে বন্ধু(?) রাস্ট্র ভারতকে বাধ্য করতে তারা ভারতের বিরুদ্ধে সাইবার যুদ্ধ শুরু করেছিল এবং বিষয়টি আন্তর্জাতিক মিডিয়ার নজরে এনে সফল হয়েছিলো। এভাবে বিভিন্ন জাতীয় গুরুত্তপূর্ন বিষয়ে তারা সাহসী ভুমিকা রাখার চেষ্টা করছে। বিরোধী রাজনৈতিক জোট যদি তাদের ক্ষমতালোভী সুবিধাবাদি রাজনীতি থেকে সরে এসে গনমূখী কর্মসূচী না দেয় তবে নতুন প্রজন্ম তাদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করবে।
একটি সমৃদ্ধ, স্থিতিশীল, নিরাপদ ও শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়তে প্রয়োজন----
শিক্ষাঙ্গনে, অফিস- আদালতে এবং পেশাগত সকল ক্ষেত্রে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।
রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারি নিয়োগ বন্ধ করে সত্যিকার মেধাবী ও যোগ্যদের নিয়োগ দেয়া।
পুলিশ/র‍্যাবকে দলীয় কাজে ব্যবহার না করে তাদের পেশাগত দক্ষতার জন্য ব্যবস্থা নেয়া, মানবিক আচরন শিখানো এবং অন্যায় করলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা।
অশ্লীল ও চরিত্র হনন মূলক সকল ক্ষেত্র বন্ধ করা- ভারতীয় চ্যানেল, অশ্লীল সিনেমা, পতিতালয়, আবাসিক হোটেলের নামে দেহ ব্যবসা, ইভটিজিং, ১৮ বছরের নীচে ছেলে মেয়েদের মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করা।
ধনীদের থেকে রাস্ট্রীয়ভাবে যাকাত সংগ্রহ করে দারিদ্য বিমোচন কর্মসূচী নেয়া।
সকলের জন্য চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত ও সহজলভ্য করা।
বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করে দেয়া।
সাঁড়াশী অভিযান চালিয়ে সকল সন্ত্রাসীকে বিচারের আওতায় আনা।
প্রত্যেক নাগরিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চতর শিক্ষার জন্য সরকারীভাবে বৃত্তির ব্যবস্থা করা।
১৮-৪০ বছর বয়সের সকল নাগরিকের সামরিক প্রশিক্ষন বাধ্যতামূলক করা।
শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন এবং সেনা সদস্যদের শান্তিরক্ষী মিশনের নামে সাম্রাজ্যবাদীদের ভাড়াটে বাহিনী হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করা।
দেশবিরোধি সকল গোপন তৎপরতা বন্ধের জন্য ভিনদেশী দালালদের চিহ্নিত করে প্রকাশ্য বিচারের কাঠগড়ায় দাড়করানো।
স্বাধীন ও শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতি তৈরি করা—মুসলিম দেশগুলোর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন, আমেরিকা ও ভারতের বিপরীতে চায়না ও পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক বাড়ানো, প্রয়োজনে সামরিক চুক্তি করা। রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা সমাধানে বার্মাকে বাধ্য করা, প্রয়োজনে সামরিক হস্তক্ষেপ ও রোহিঙ্গা মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সরবরাহ করা।
ভারতের সাথে বানিজ্য ভারসাম্য, সীমান্ত সমস্যা, তিস্তা, ফারাক্কা সহ অভিন্ন সকল নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করা।
বিরোধী জোট এই ধরনের গণমুখী ও দেশের উন্নয়নমূলক কর্মসূচির ভিত্তিতে আন্দোলন/ গনবিপ্লবের ডাক দিলে জনগণ ও নতুন প্রজন্ম তাদের সাথে থাকবে অন্যথায় নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে গনবিপ্লবের ডাক দেয়া হতে পারে, সেদিন বেশি দূরে নয়...................................................।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:৪৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×