somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রমাণ মিলেছে ট্রয় যুদ্ধের

২৩ শে মে, ২০১২ দুপুর ২:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গবেষকরা পলিমাটি খুঁড়ে দু'হাজার বছর আগের শহরটি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছেন। ধারণা করা হয়, দশ বছর ধরে চলা এই ঐতিহাসিক যুদ্ধই ট্রয় শহরকে ধ্বংস করে ফেলে



ধ্রুপদী মহাকাব্য ইলিয়ডে হোমার ট্রোজান যুদ্ধক্ষেত্রের যে বিবরণ দিয়েছেন, তা কাল্পনিক না হয়ে সত্যি হতে পারে! ১০ বছর স্থায়ী গ্রিক ও ট্রয়ের মধ্যের এ যুদ্ধের ইতি টানা হয়েছিল কাঠের ঘোড়া ব্যবহারের পর। মহাকাব্যের এ বিষয়গুলো হতে পারে কাল্পনিক; কিন্তু গবেষকরা বলছেন, মহাকাব্যে বর্ণিত ভৌগোলিক স্থানগুলো কাল্পনিক নয়। গবেষকরা তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পলিমাটি খুঁড়ে জানার চেষ্টা করেছেন তিন হাজার বছর আগে হোমারের বর্ণিত শহরের উপকূলরেখা কেমন ছিল। তারা গবেষণালব্ধ তথ্যাদির সঙ্গে ট্রয় যুদ্ধের বিবরণের মিল খুঁজে পেয়েছেন


গ্রিক মহাকবি হোমার বর্ণিত ট্রোজান যুদ্ধক্ষেত্রের প্রত্নতাত্তি্বক গবেষণার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেছেন ধ্রুপদী সাহিত্যের বিশেষজ্ঞ ড. জন লিউস। ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজের এই অধ্যাপক বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসকে জানান, 'ভূ-তাত্তি্বক গবেষণার সঙ্গে ট্রয় যুদ্ধের হোমারীয় চিত্রের যে ঘনিষ্ঠ মিল পাওয়া গেছে তা গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে।' ট্রয় দীর্ঘ সময় ধরে একটি ধাঁধা হয়েছিল গবেষকদের কাছে। প্রাচীন গ্রিক আমলে বলা হতো ট্রয়ের অবস্থান ছিল সাগরের খুব কাছাকাছি। এরপর ১৮৭০ সালে জার্মান পুরাতত্ত্ববিদ হেনরিক স্কিলম্যান আবিষ্কার করেন প্রাচীন শহরটি, মনে করা হয়েছিল আজকের তুরস্কই সেই জায়গা। হোমারের গল্পে এজিয়ান সাগরের প্রবেশমূখে এক টুকরো খাঁড়ি হয়ে ঢুকে পড়েছিল ট্রয় পর্যন্ত। বিজ্ঞানীরা এখন বিশ্বাস করেন যে, শত শত বছরের ব্যবধানে এ প্রবেশমুখে নদী থেকে প্রবাহিত পলি জমা হয়ে বর্তমান সময়ের উপকূলরেখায় পরিণত হয়েছে।
ড. জন লিউস বলেন যে, 'স্কিলম্যানের গবেষণার পথ ধরে বর্তমান সমুদ্রসৈকতের জায়গায় ছিল হোমারের উলি্লখিত ক্যাম্পের অবস্থান; কিন্তু তিন হাজার বছর সময়ের মধ্যে দুটি বড় নদী স্ক্যামান্ডার ও সিমোয়া প্রচুর পরিমাণ পলি জমা করে উপকূলের সীমানা কয়েক মাইল পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যায়।'
১৯৭৭ সাল থেকে ড. লিউস আন্তর্জাতিক এক গবেষক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এদের কাজ ছিল ভূমি পরিবর্তনের হার লিপিবদ্ধ করার জন্য খনন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করা। অন্যদিকে আমেরিকার ডেলাওয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. জন ক্রাফট তার তুর্কি সহকর্মীদের সঙ্গে মিলে ভূ-তাত্তি্বক অনুসন্ধান চালান। তারা ভূপৃষ্ঠের বেশ নিচ থেকে পলির নমুনা খনন করে তুলে আনেন। 'আমরা সমতল হয়ে যাওয়া ভূ-পৃষ্ঠের ৭০ মিটার গভীর পর্যন্ত খনন করেছি এবং ওই পর্যন্ত গভীরতায় পেয়েছি সামুদ্রিক প্রাণীর ধ্বংসাবশেষ'_ জানালেন তিনি। দক্ষিণের সমতলে আরও খনন কাজ চালানোর পর শেষ পর্যন্ত গবেষকদের বিশ্বাস সত্য বলে প্রমাণিত হলো। তাদের বিশ্বাস, এখানে আগে সমুদ্রের অবস্থ্থান ছিল। ক্রমাগত পলি জমার ফলে সমুদ্র এখন তার আগের অবস্থান থেকে পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। ড. ক্রাফটের বিবরণে, 'আমরা ট্রয়ের ঠিক সম্মুখভাগের সমতলে খনন কাজ চালিয়েছি এবং সামুদ্রিক প্রাণীর ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছি।'
ডাবলিনে ফিরে ড. লিউস ইলিয়ডে লিখিত হোমারের পঙ্ক্তির সঙ্গে স্কিলম্যানের গবেষকদের লব্ধ বিষয়ের তুলনা করলেন। হোমার গ্রিক জাহাজের কথা লিখেছিলেন। এই গ্রিক জাহাজ বহর সমুদ্রের উপকূলবর্তী শহর ট্রয়ের দিকে যাত্রা শুরু করেছিল। শুরু হয়েছিল ১০ বছরব্যাপী যুদ্ধ। ড. লিউস যখন স্কিলম্যানের ধারণার সঙ্গে যুদ্ধের ঘটনা মেলাতে চেষ্টা করলেন তিনি দেখলেন সেখানে বিশাল সমস্যার উদ্ভব হচ্ছে_ 'একটা সমস্যা হলো, ট্রয় থেকে সে অবস্থায় খাঁড়ি পার হওয়া অসম্ভব ছিল; কিন্তু হোমার বারবার এমন আক্রমণ দৃশ্যের বর্ণনা দিয়েছেন, যাতে খাঁড়ি অতিক্রম করে সম্মুুখে অগ্রসর হওয়া ও পিছিয়ে পড়ার কথা বলা হয়েছিল।' হোমারের এ বর্ণনা ড. লিউসকে যুদ্ধক্ষেত্রটি ট্রয়ের পশ্চিমে সরিয়ে নিতে বাধ্য করে। এমনটি করার পরপরই ড. লিউস এবং তার সহকর্মীরা স্কিলম্যানের অবস্থান আর হোমারের যুদ্ধক্ষেত্রের অবস্থান চিহ্নিত করে একমত হতে পারলেন। গবেষণাপত্রটি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে 'জার্নাল জিওলজি' থেকে।
অডিসি পর্ব : 'আমি অডিসি। বিশ্বখ্যাত লারটেসের পুত্র, যুদ্ধকৌশলের জন্য আমার খ্যাতি স্বর্গে পেঁৗছেছে। উজ্জ্বল ইথাকায় আমার বাড়ি। এখানে পাহাড় আছে, আছে পত্রশোভিত নেরিটন, যা অনেক দূর থেকে দেখা যায়। চারদিকে অনেক দ্বীপ, একটার সঙ্গে আরেকটা লাগোয়া।... ইথাকা কিছুটা নিচু, সাগর থেকে দূরে...।' মারের রচিত 'অডিসি'তে ইথাকার ভূ-তাত্তি্বক বিবরণ এভাবেই পাওয়া যায়। ভূ-তাত্তি্বক গবেষণায় সম্প্রতি ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, ভূ-মধ্যসাগরীয় দ্বীপ ক্যাফালোর্নিয়া এক সময় দুটি আলাদা দ্বীপ ছিল। এক ব্রিটিশ নেতৃত্বাধীন গবেষক দল তথ্যপ্রমাণ জড়ো করেছেন। এতে বলা হয়েছে, ক্যাফালোর্নিয়ার পশ্চিমপ্রান্ত পালিকি, মূল ভূ-খণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে কালের বিবর্তনে। দলটির বিশ্বাস, তিন হাজার বছর আগে প্রকাণ্ড ভূমিধসের ফলে দুটি ভূখণ্ডের মধ্যে সেতু তৈরি হয়। গবেষকদের মতে, এ ঘটনা যদি সত্যি হয় তা হলে এটি তাদের এই বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠিত করবে যে পালিকি হচ্ছে হোমারের ইথাকার জন্য নির্দিষ্ট স্থান। স্থানটিকে ধরা হয় অডিসির বাসভূমি হিসেবে। হোমারের মহাকাব্য 'অডিসি'তে বর্ণিত হয়েছে ট্রয়ের যুদ্ধ শেষে ১০ বছরের এক ভ্রমণ কাহিনীর।
অনেকের মতে আধুনিক দিনের ইথাকা, আয়োনিয়ান দ্বীপপুঞ্জের পূর্বপ্রান্ত ইথাকার প্রকৃত ভৌগোলিক স্থান; কিন্তু ভূ-তাত্তি্বক, ধ্রুপদী বিশেষজ্ঞ এবং প্রত্নতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে গঠিত গবেষক দলটি অবশ্য ভিন্নমত পোষণ করে। তাদের মতে, 'ইথাকা হোমারের নিজের বর্ণিত অন্যান্য ভূমির চেয়ে অপেক্ষাকৃত পূর্বে ও নিচু স্থানে অবস্থিত। বিটলস্টোন এবং তার সহকর্মী ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রিক ও লাতিন অধ্যাপক জেমস ডিগল এবং এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্বের অধ্যাপক জন আন্ডারহিল খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন পালিকি গ্রিস থেকে কতটা দূরে অবস্থিত। তাদের উপস্থাপনায় দেখা যায়, প্রকাণ্ড ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট ভূমিধস বিপর্যয় সংকীর্ণ সাগর পথ ঢেকে দিয়েছে এবং ব্রোঞ্জযুগের সময় ক্যাফালোর্নিয়াকে তার উপদ্বীপ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। প্রথম দিকে প্রফেসর আন্ডারহিল এ ধারণার ব্যাপারে অনেকটা সন্দিহান ছিলেন।
সম্প্রতি এ ভূমির দক্ষিণ অংশের জোড়া লাগা স্থানে ১২২ মিটার পর্যন্ত ছিদ্র করে দেখা হয়েছে। আর এতে আবিষ্কৃত হয়েছে যে, খসেপড়া পাথর এ স্থানে জমে ভূমিকে বর্তমান সামুদ্রিক উচ্চতা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। 'গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, আমরা চুনাপাথরের স্তরটিকে আঘাত করিনি। তার মানে তত্ত্বটি এখন শুধু প্রমাণের অপেক্ষায় আছে'_ ব্যাখ্যা করেন প্রফেসর আন্ডারহিল।
খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতকে 'অডিসি' রচিত হয়। মহাকাব্যটিতে অনেক কাল্পনিক ব্যাপার থাকা সত্ত্বেও গবেষকরা মনে করে আসছিলেন এর ভৌগোলিক পটভূমিকা ছিল বাস্তব। ১৮৫০-৬০ সালের দিকে জার্মান পুরাতত্ত্ববিদ স্কিলম্যান যখন ট্রয় নগরী আবিষ্কার করলেন, মানুষ তখনও ভাবত_ 'ইলিয়ড' শুধুই একটি গাল-গপ্প, 'এখন তারা এত নিশ্চিতভাবে তা বলতে পারবে না। কারণ সত্যিকারের স্থানের বিবরণ পেয়ে গেছি আমরা এতে। আর তা আবিষ্কৃত হচ্ছে'_ বলেন বিটলস্টোন। চ্যানেল ফোর নিউজকে দেওয়া এক ইন্টারভিউতে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, 'অডিসির বাড়ি ফেরার পথটা অবশ্যই বাস্তব পটভূমি থেকে নেওয়া আর এর তাৎপর্য এতই যে, আমরা এখন বুঝতে পারব এবং জানব কোথা থেকে আমাদের সংস্কৃতির শুরু আর এর পথটাইবা কোথায় গিয়ে মিলেছে।' আর পালিকি তত্ত্ব যদি পুরোপুরি প্রমাণ করা সম্ভব হয়, তবে প্রত্নতাত্তি্বক দিক থেকে এই দ্বীপের গুরুত্ব অনেক বেড়ে যাবে।

উৎসঃ সমকাল।

আমার ট্রয় বিষয়ক আগের পোস্ট,
ট্রয় – ইতিহাসের সেই বিখ্যাত নগরী পড়ুন এখানে (Click This Link)

ভাল লাগলে পোস্টে লাইক্ক মাস্ট
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১২ দুপুর ২:২০
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×