somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন কল গার্ল যা পারে আমরা তাও পারিনা!! কতটা নিচে নেমেছি আমরা??

২১ শে মে, ২০১২ ভোর ৫:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতকাল রাতের ঘটনা। শ্যামলী থেকে মিরপুরে বাসায় ফিরব কিন্তু কোন বাস পাচ্ছি না। হঠাৎ করেই একটা মিরপুর সুপার লোকাল বাস পেয়ে গেলাম একদম ফাকা। অনেকেই দৌড় দিল উঠতে দেখে আমিও দৌড় দিলাম, কিন্তু বাস এ উঠে দেখি মাত্র ৮/৯ জন উঠেছে।

যাত্রীদের মধ্যে ১ জন ছিল মহিলা আর ১ জন একটা মেয়ে। তাদের দুজনকে দেখেই তেমন সুবিধার মনে হচ্ছিলনা। বাকি সবাই সেটা লক্ষ করল খেয়াল করলাম। যাইহোক, আমার কি! যা মন চায় সে তা হোক!

মেয়েটা প্রথমে মহিলার সাথে মহিলা সিট (ড্রাইভার এর ডান দিকে যে বরাদ্দকৃত) তাতে বসলেও কল্যাণপুর এসে অন্য একটা সিটে এক ভদ্রলোকের সাথে বসলো (যেখানে অনেক ডাবল সিট ফাঁকা ছিল)। আর সে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশীই চেপে বসেছিল। ওই লোক কিছু না বল্লেও বেশ বোঝা যাচ্ছিলো ছাইরা দে মা কাইন্দা বাঁচি অবস্থা!

দারুস সালাম থেকে এক লোক উঠলো। কন্ট্রাক্টর ভাড়া চাইলে তিনি ১০ টাকার একটা নোট দিলে কন্ট্রাক্টর ৫ টাকা রেখে বাকি ৫ টাকা ফেরত দিল। এরপরেই ঘটনা শুরু-

লোকটাঃ ওই বেটা ৩ টাকা ভাড়া ৫ টাকা রাকসস ক্যান?
কন্ট্রাক্টরঃ ৫ টাকাই ভাড়া।

লোকটাঃ এই রোডের ভাড়া ৩ টাকা। তুই চাইলেই হইব?
কন্ট্রাক্টরঃ আমি চাইলে ক্যান। ভাড়া ৫ টাকাই।

মাঝে মেয়েটি বললঃ ভাইয়া উনি, সবার কাছ থেকেই ৫ টাকা করে ভাড়া নিয়েছে।
লোকটাঃ আমার কাছ থাইকা মাদারছদ নিতে পারবনা।

লোকটাঃ খাড়া তোর বাপেরে ফোন দিতাসি। স্পিকার দিয়া শুনামু তোরে কত ভাড়া।
কন্ট্রাক্টরঃ শুনানগা আপনে।

লোকটাঃ তোর বাপ (একটা নাম বলল) ফোন দিতাসি।
কন্ট্রাক্টরঃ কোন বাপ?

লোকটাঃ তুই রোডে গাড়ী চালাস তোর বাপেরে চিনস না? (আবারো সেই নাম বলল) তুই চিনস না!
কন্ট্রাক্টরঃ হে কি আমারে খাওয়ায় নাকি?

এর মধ্যেই কাওকে ফোনে ট্রাই করছে। ওপাশ থেকে ধরছে না। কয়েকবার করার পর ধরল মনে হল। কাওকে জিজ্ঞেস করল “ওই দারুস সালাম থাইকা আমাগো এক নম্বরের ভাড়া কত মিরপুর সুপার লোকাল বাসে?” ওপাশ থেকে কিছু একটা বলল, এরপর আবার-

লোকটাঃ ওই হন খানকির পোলা। ভাড়া কত তোর।
কন্ট্রাক্টরঃ আমার হুইনা কাম নাই।

লোকটাঃ তোরে হূনতে অইব। হুনবি না ক্যান মাদারচদ।
কন্ট্রাক্টরঃ কে ফোন দিসে।
লোকটাঃ তুমার আব্বায়!!

[এ পর্যায়ে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি প্রচণ্ড খারাপ ভাষা ব্যবহার করার জন্য]

এবার মেয়েটি আবার বলে উঠলোঃ ভাইয়া আপনি কিন্তু এবার বেশি বলছেন!
লোকটাঃ ওই তোর কি, তুই চুপ থাক!

মেয়েটিঃ আশ্চর্য!! আপনি ইচ্ছামত ভাড়া দিবেন আবার যাকে তাকে ইচ্ছামত গালি দিবেন এটা কোন ধরনের ভদ্রতা!
লোকটাঃ তুই আবার কথা কস! তুই কি কল গার্ল!

মেয়েটিঃ আপনার ভদ্রতা তো বোঝা হয়ে গেছে। আপনি বাপ-মা তুলে যা ইচ্ছা বলছেন।
লোকটিঃ তুই কি? তুই তো কল গার্ল! তোরেই তো রাস্তায় ফেইলা চুদা উচিৎ!!

মেয়েতিঃ ওই মুখ সামলাইয়া কথা বলেন।
লোকটিঃ ওই মাগি! তোর লগে কি মুখ সামলাইয়া কথা কমু?? এসি রুমে নিয়ে চুদি তোরে চল!!

মেয়েটিঃ ওই তোর মায়েরে নিয়া যা তোর এসি রুমে!
লোকটিঃ মাগির ঘরের মাগি তোরে নিয়া যামু আমি! ওই তুই চিনস কে আমি??

মেয়েতিঃ তোরে চিনা লাগবনা আমার। তুই হইলি আরেক মাগির ঘরের পোলা! তোর মারে চুদস না তুই??
লোকটিঃ খানকি মাগি!

মেয়েটিঃ তোর যা খুশি তাই বলবি। বাসের একটা লোকও একটা কথা বলে নাই খানকির পোলা!
লোকটাঃ কইব ক্যান? পুরা বাসে তুই একমাত্র মাগি! ওই কয় টাকা নেস তুই লাগাইতে!!

এই রকম আরও নানা কথা বলতে বলতে খুব স্বভাবতই ওই দুজনের হাতাহাতির উপক্রম হয়। এই অবস্থায় বাসের বাকি দর্শক! তথা যাত্রীরা তাদের সরিয়ে নিতে চেষ্টা করে। বাসটি ততক্ষণে চাইনিজ এ এসে থেমে আছে। তাদের বাক্য বিনিময় চলছেই……......

লোকটাঃ কল গার্ল! আজকে তোরে যদি আমি না চুদসি!
মেয়েটাঃ যা মাদারচদ তোর মায়েরে গিয়া চদ!

আরও বেশ কিছু উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় শেষে এবারে বাসের যাত্রীরা বাসের ড্রাইভার কে বলতে লাগলো বাস ছাড়ার জন্য। অবশেষে বাস ছাড়ল।

মেয়েটি তার সিটে গিয়ে বসে বললঃ সব শালা বাইনচদ। আমি একলা প্রতিবাদ! করলাম, একটা লোকও কিছু বললনা। মেয়েটির চোখের কোণে পানির ফোঁটা! একটা ফোন এলো তার। ওপাশ থেকে কিছু বলতেই সে উত্তর দিল- এইতো আম্মু এক নম্বরের কাছাকাছি আর ১০ মিনিট লাগবে বাসায় আসতে।


আচ্ছা, বলুন তো? আমরা কি একজন কল গার্লের চেয়েও খারাপ!! যে খুব সাধারণ প্রতিবাদটাও করতে পারিনা?? নিজের প্রতিই লজ্জা হচ্ছে :(
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১২ রাত ১২:২৬
৩৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙালী মেয়েরা বোরখা পড়ছে আল্লাহর ভয়ে নাকি পুরুষের এটেনশান পেতে?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:২০


সকলে লক্ষ্য করেছেন যে,বেশ কিছু বছর যাবৎ বাঙালী মেয়েরা বোরখা হিজাব ইত্যাদি বেশি পড়ছে। কেউ জোর করে চাপিয়ে না দিলে অর্থাৎ মেয়েরা যদি নিজ নিজ ইচ্ছায় বোরখা পড়ে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×