আমরা আমাদের চারপাশে চোখের ভুল হোক,মনের ভুল হোক,অন্যের ভুল হোক বা অন্যের ইচ্ছাকৃত ঘটনা হোক অনেক ঘটনাই দেখে থাকি যেটা পরে ভাবলে হয়ত মনে হবে আধা ভৌতিক।আবার কখনও মনে হবে কারসাজি।ভৌতিক ঘটনা যেমনটাই হোক,এটা বের করা কষ্টকর যে সেটা আসল ঘটনা না সাজানো।আমারও ইচ্ছা জাগল আপনাদের সাথে কিছু ঘটনা শেয়ার করার।বিশ্বাস করা আপনাদের ব্যাপার।
ঘটনা ১ ।
অবস্থানঃ মতিঝিলের বেশ জনপ্রিয় আবাসিক এলাকা
এলাকায় যে একটা বেল গাছ আছে সেটা আমি আমার বিশ বছরের জীবনে শুনিনি।এর অবস্থান একজন বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পীর বাড়ির ঠিক পিছনে একটা গলির ভিতরের দিকে।সেখানে থাকেন আমাদের বাসার কাজের মহিলা অনেকদিন ধরে।একদিন হঠাত উনার মেয়ে বাসায় গিয়ে বলে তার নাকি গলায় ব্যাথা করছে।ধুলাবালি ঢুকেছে ভেবে তারা কেউ পাত্তা দেয় না।এভাবে দুইদিন তিনদিন করে একমাস গেলে।ব্যাপারটা এখন তাদের চিন্তায় ফেললো।তারা মেয়েকে নিয়ে কমপক্ষে ১০-১৫ ডাক্তার দেখালেন,হোমিয়প্যাথি খাওয়ালেন,কেউ বলে শ্বাসনালি তে সমস্যা,কেউ বলে নাকে মাংস বেড়ে গেছে কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না।ঠিক তিন মাস পর তার সাথে যুক্ত হল আরও কিছু ঘটনা।মেয়ে নাকি কিছু খেতেই পারে না,বমি করে ফেলে দেয়।সবাই ভাবল মেয়েকে হাওয়া বদল করাই।তাকে পাঠানো হল গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে।সেখানে গিয়ে শুরু হল আসল ঘটনা
মেয়ে নাকি কথা নাই বার্তা নাই আপন মনে এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায়,চিল্লায়ে চিল্লায়ে গান গায়,মুখ দিয়ে অদ্ভুত অদ্ভুত আওয়াজ করে,পরক্ষনেই আবার হাদিসের বানী শোনায়,সবাইকে নামাজ পড়তে বলে।আবার মেয়েলি ভাষায় হিন্দুদের বিয়ে বাড়ির মত "উলুলুলুলু"আওয়াজ করে।শেষে একজন হুজুড় কে ডাকা হল।তিনি মেয়েকে দেখে তার গায়ে কিছু তাবিজ ঝুলিয়ে দিলেন।কিন্ত্য মেয়েটা তার সামনেই তাবিজ খুলে ছুরে মারে।যখন কিছুতেই কিছু হল না তখন মেয়েকে ঢাকায় আবার নিয়ে আসা হল।এবার ডাকা হল এক হিন্দু ওঝাকে।তিনি মেয়েকে দেখে মায়ের কাছে জানতে চাইলেন যে মেয়েটি কোন বেল গাছের আশেপাশে দিয়ে গেছে কিনা।তখন সবার মাথায় আসল যে হ্যা,মেয়েটি বেল গাছের নিচ দিয়েই যাতায়াত করত।তখন ওঝা বললেন যে এর উপর একটা জ্বীন আর একটা বেল গাছের পেত্নি ভর করেছে।জ্বীনটি তার দিকে দৃষ্টি দিয়েছে।এই কারনে মেয়েটি মাঝে মাঝে সবাইকে ধর্মীয় পরামর্শ দিত।আর পেত্নিটি মেয়েটাকে দিয়ে উলুলুলু আওয়াজ করাতো।তখন ওই ওঝা মেয়ের মাকে কিছু জিনিষ জোগাড় করতে বললেন।এর মধ্যে আছে সাতটা ঘাটের পানি,দুইটা কালো মোরগ,পাচ কেজি মিষ্টি,কিছু মোমবাতি,কালো জিরা,শলার ঝারু।এরপর কি হয়েছে সেটা আমাদের কাজের মহিলা আমাদের বলে নাই।আমার মা হয়ত জানেন কিন্তু আমাকে বলেন নাই
ঘটনা-২।
অবস্থানঃএকই (ডঃমোতালেব নামক একজন ডাক্তারের চেম্বারের ঠিক পিছনে তার বাড়ির সামনের গলিতে)
এটা একটা শোনা ঘটনা।আমাদের বাড়ির সামনের গলিতে এমন ঘটনা ঘটার কথা শোনা গেছে,গলিটা এমন যে রাস্তা থেকে দেখলে গলির শেষ মাথায় শিড়ি,গলির দুইদিকে দুইটা বাড়ি।ঘটনা প্রত্যক্ষ করে ডান পাশের বাড়ির নিচতলার মেয়েটা আজ থেকে প্রায় ১৪-১৫ বছর আগে।একদিন রাতে ওই মেয়েটা ঘুমাচ্ছিল।রাত্রে প্রায় ৪ টার দিকে মেয়েটা একটা মহিলার পায়ের নূপুরের আওয়াজ পায়।নাচিয়েরা পায়ে যে নূপুর পড়ে সেটা।তো সে তা পাত্তা দেয় নাই,ভেবেছে ঘুমের মধ্যে কি না কি শুনেছে।এসব ভেবে ঘুমিয়ে পড়ে।পরেরদিন একই সময় সে আবারো একই আওয়াজ পায়।এবার সে একটু আগ্রহী হয়।তার রুমের একটা জানালা ওই গলির দিকে মুখ করে ছিল।জানালা খুলে তাকালে গলির অনেকখানি দেখা যায়।সে জানালা খুলতেই তার রুম আলোতে ভরে যায়।আলো সয়ে এলে সে দেখতে পায় গলিতে একটা মহিলা সাদা নাচের কাপড় পরে নূপুর পায়ে হাটছে।ওই কাপড়ের উজ্জ্বলতায় পুরো গলি আলোতে প্রায় ভরে গেছে।মহিলাটা গলির এ মাথা থে একবার ওমাথায় যাচ্ছে আর আসছে।আর তার মুখে ছিল এক অদ্ভূত হাসি।তবে তার চোখ ছিল ভয়ানক,ঠিক গোলাকার,মনি হালকা সাদা এবং লম্বাটে।মেয়েটা হঠাত করে মহিলাটার চোখের দিকে তাকাতেই সম্মোহিত হয়ে যায়।যেন ওই চোখ তাকে এখনি গিলে খাবে।এভাবে মহিলা এবং মেয়েটা পরস্পরের দিকে তাকিয়ে থাকে।এভাবে কিছু সময় পর ওই মেয়েটার মা ঘুম থেকে জেগে ওঠে।আর মেয়েকে ওভাবে জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকতে দেখেডাক দেয় কিন্তু মেয়েটা সে সম্মোহিত হয়ে থাকে।তখন তার মা তাকে একটা ধাক্কা দেয়।এবার মেয়েটা হকচকিয়ে ওঠে।আবার যখন সে জানালার বাইরে তাকায় তখন মহিলাটা নাই।ফজরের আযান শুরু হয়ে গেছে
মেয়েটা পরেরদিন তার মাকে সব কথা বলে।কিন্তু তার মা পাত্তা দেয় না।সেদিন রাতে তার মা একই ঘটনার শিকার হয়।কিন্তু সেদিন তার মেয়ে আগে থেকেই জেগে ছিল বলে তার মা বেচে যায়।তারা চলে যাওয়ার পর যখন নতুন ভাড়াটিয়া আসে তারাও একই ঘটনা দেখে।কিন্তু যেভাবে ঘটনাটা শুরু ঠিক সেভাবেই শেষ হয়ে যায়।ওই মহিলাকে আর দেখা যায় না তবে প্রায় রাতে সেই নূপুরের আওয়াজ ঠিকই পাওয়া যায়।
ঘটনা-৩।
অবস্থানঃ আমার নিজের বাসা (আমি আর আমার ভাই এর শিকার)
এটা আসলে ভৌতিক না স্বপ্ন সেটা বলতে পারব না কারন তখন আমার বয়স ছিল তিন বছর আর আমার ভাই এর ছয় বছর।তিন বছরের একটা বাচ্চা যদি স্বপ্ন দেখে তাহলে হয়ত দেখবে যে সে অনেকগুলো খেলনা নিয়ে খেলছে,ঘুরছে।কিন্তু আমার সাথে কি হয়েছে জানি না,আমি প্রায় রাতে অদ্ভুত অদ্ভুত প্রানীর শুধুমাত্র চোখ দেখতে পারতাম।ঘুম থেকে উঠে যখন তাকাতাম তখনও মনে হত যে রুমে সেই প্রানীটি বসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।সাধারনত কেউ যদি চোখ বড় করে অন্ধকারের দিকে তাকায় তাহলে এমনটা হয়।কিন্তু ভয়ের ব্যাপার ছিল যে আমার বড় ভাই একই স্বপ্ন দেখত এবং ঘুম থেকে উঠার পর একই চেহারা দেখতে পেত।প্রথমদিনেই মাকে ঘটনাটা জানিয়ে দেই।তিনি পাত্তা দেন না।বেশ কয়েকবার ঘটার পর তারা একজন হুজুরের সাথে দেখা করেন।হুজুর আমাকে একটা তাবিজ দিয়ে বলেন যাতে এটা এসব ঘটনা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত হাত থেকে না খুলি।অদ্ভুত ব্যাপার হল তিনি আমাদেরকে আরবিতে কালিমা লেখা সাতটি কাচের প্লেট দেন আর বলেন যাতে প্রতিদিন একটা একটা করে কাচের প্লে্ট এর ঐ লেখাটা ধুয়ে সেই ধোয়া পানিটা খাই।অদ্ভুত লাগলেও কাজগুলা করা হয় এবং সমস্যাটা কেটে যায়।
হুজুর বলেছিলেন যে ছোটরা অনেক সময় খেলার ছলে রাস্তায় অনেককিছুই দেখে যা আসলে কি এটা তাদের পক্ষে বোঝা সম্ভব হয় না।হতে পারে সেটা অশরীরী কোন আত্মা যা হয়ত ক্ষতি করে না তবে স্বপ্নে দেখা দিয়ে নানান রূপ ধারন করে।এরকমই কিছু আমার স্বপ্নে এসে দেখা দিয়েছিল।
ঘটনা-৪।
অবস্থানঃচাদপুর,মতলবের শাহাতুলি গ্রাম
এটা আমার চাচির মুখে শোনা আমার দাদাকে নিয়ে একটা ঘটনা।আজ থেকে প্রায় ৪০-৪৫ বছর আগের ঘটনা।আমার দাদা একজন পরহেজগার মানুষ ছিলেন।প্রত্যেক ওয়াক্ত নামায সময়মত আদায় করতেন।এক রাতে তিনি ঠিক করলেন মসজিদে সারারাত থেকে আল্লাহর ইভাদাত বন্দেগী করবেন।এই জন্য তিনি সকাল সকাল মসজিদে চলে আসেন।তার ইচ্ছা ছিল পরেরদিন ফজরের নামাজ পরেই আবার বাড়ী ফিরে আসবেন।ঘটনা ঘটে সেখানে।মসজিদে যাওয়ার পথে একটা পুকুর পরে আত তার পাশে বেশ কিছু নারিকেল গাছ।রাতের বেলা গাছ গুলো দেখতে বেশ ভূতুরে দেখায়।দাদা যখন মসজিদে যাচ্ছিলেন তখন পুকুরের পানি বেশ ভালই ছিল।গাছগুলোও স্বাভাবিক ছিল।তিনি মসজিদে গেলেন এবং ভোরে ফজরের নামাজ পরে তিনি মসজিদ থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হন।ওই পুকুরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি তার টর্চ লাইটের আলো পুকুরে ফেলে দেখেন সেখানে পানি নেই,লাল লাল কি যেন।তিনি আলো ঘুরিয়ে কিনারার দিকে ফেলেই ভয়ে আতকে উঠেন.সেখানে পড়ে ছিল বেশ কিছু মানুষের লাশ,আধ খাওয়া লাশ,কারো মাথা অর্ধেক খাওয়া,কারো হাত নেই,কারও কোমরের নিচের অংশ নেই।দেখে বোঝা যাচ্ছিল সেগুলো খেয়ে ফেলে রাখা হয়েছে আর তাতেই পানি লাল হয়ে গেছে।তিনি ভাবছিলেন যে সকালে তো সব ঠিক ছিল,তাহলে এত মানুষের লাশ সবার চোখের আড়ালে এল কিভাবে।হঠাত পানিতে ধপাস করে একটা শব্দ হল।তিনি আলো সেখানে ফেলে দেখলেন পানিতে আরেকটা লাশ এসে পড়েছে।তিনি উপরের দিকে আলো ফেলে দেখেন তাল গাছের ডগায় মানুষের আকৃতির বেটে আকারের কি যেন একটা মৃতদেহ খাচ্ছে,তাদের পাশে ডালে আরও কিছু মৃতদেহ রাখা।দাদা যা বুঝার বুঝে গেলেন।এটা জ্বীনেরকারবার।পরহেজগার ছিলেন বলে জ্বীন তাড়াবার কিছু উপায় তিনি জানতেন।
তিনি পাশ থেকে একটা কাঠি নিলেন আর তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন,"এবার দেখবো তোদের কে বাচায়" এই বলে তিনি সূরা পরতে পরতে কাঠি দিয়ে মাটিতে একটা বৃত্ত আকতে শুরু করলেন।অর্ধেক আকা হয়েছে এমন সময় সেই জ্বীনদুইটা হঠাত একটা বিকট আর্তনাদ করে ওঠে।তারা নিচের দিকে তাকিতে দেখে দাদার বৃত্ত আকা প্রায় হয়ে গেছে।তারা ততক্ষনাত লাশটা ফেলে খুব জোড়ে একটা দৌড় দেয়।লাশটা সরাসরি দাদার কাধে এসে পড়ে।দৌড় দেওয়ার সময় গাছের ডাল ভাঙ্গার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল।দাদার উদ্দেশ্য ছিল ওই জ্বীন দুটোকে বৃত্তে বন্দী করে পরে বৃত্ত মুছে ফেলবেন।
লিখে মানুষকে ভয় পাওয়ানো কঠিন।তবে কার সাথে কখন কিভাবে কি ঘটতে পারে সেটাই হচ্ছে এই ঘটনাগুলো লেখার উদ্দেশ্য।এর দ্বিতীয় অংশটা পরে কোন একদিন প্রকাশ কর।এর চাক্ষুশ প্রমান আমি নিজে।
আলোচিত ব্লগ
অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি
অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?
যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন
রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।
ছবি - সংগৃহীত।
ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি
শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রফেসদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন
পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?
ছবি সূত্র: গুগল
বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন
বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন