somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘটনাটি সত্য নয় (একটি ছোটগল্প)

১৬ ই মে, ২০১২ রাত ১২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

#
মুখের উপর আরো দু'টো বাড়ি মারতে পারলে ভাল হত। কিন্তু অনেক আগেই তা থেতলে গিয়েছে। শামসু টর্চ লাইটের আলোয় আরো একবার দেখে নিল জায়গাটা। নিজেকে বোঝালো। ঘাম মুছে নিল কোমরে বেঁধে রাখা গামছাটা দিয়ে। গামছাটাতে রক্তের দাগ লেগে গেল দেখে খানিকটা আশ্চর্য হল। নিজের ঠোঁটে রক্ত এল কিভাবে ! গা’টা কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে। কিছু একটা মনে পড়তেই টর্চটা দিয়ে আরেকটা কষে বাড়ি মারতে উদ্যত হল আর তখনই ইনসেটে ওস্তাদের মুখ, “বুচ্ছিস শামসু, এইটা হচ্ছে পাঁচ ব্যাটারীর টর্চ, যে সে ব্যবহার কইরবের পারে না, নাইসেন্স নাগে, যতদিন এই নাইনে আছিস, ডিউটি শুরুর আগে এইকেঢ একবার স্যালুট কইরে নিবি..”
“শালা’ক মনে হচ্ছে মাইরে মাটির তলে গাইরে রাইখে দিই” নিজেকে সামলায় সে।
“ও ভাই, আমাক আর মাইরেন না ”, আড়তের এক কোনায় পড়ে থাকা রহিম বাদশা কাতরাতে কাতরাতে অস্ফুট স্বরে বলে ওঠে, “ এই শীতের রাইতে ফারা খড়ি দিয়ে মার্ইলে কী মানুষ বাঁচে ক’ন?”
রহিম বাদশার ফিসফিসানি কথাগুলোও কী ভয়ংকর শোনা যায় এই কনকনে শীতে। বাইরের প্রচন্ড কুয়াশা হু হু করে ঢুকে পড়ছে খয়ের মিঞার আড়তে। শামসু নিজের লুঙ্গিটা একটু ঝেড়ে ঘুরিয়ে পূনরায় পড়ে নেয়, কারণ সে টের পায় ছেঁড়া অংশটা বেরিয়ে পড়েছে হয়ত অনেক আগেই। রহিম বাদশা যদি দেখে ফেলে তাহলে মান সম্মান যাবে ওর। রহিম বাদশা এই গল্প গিয়ে লাভলি বেগমের কাছে করবে। লাভলি বেগম যদি জেনে ফেলে যে শামসু এখনও ছেঁড়া লুঙ্গি পড়ে ডিউটি করে তাহলে মানসম্মান একদম ধূলোয় লুটিয়ে পড়বে নির্ঘাত। লাভলি বেগমের কথা মনে পড়তেই শামসু’র শরীরটা জ্বলে ওঠে। ইছামতি নদীর ধার থেকে তুলে আনা নিজের হাতে বানানো স্পেশাল বেত যা ইতিমধ্যেই সরিষার তেল খেতে খেতে মোটা, পেলব আর সরস হয়েছে, তা আরেকবার রহিম বাদশার দু’পায়ের তালুতে চালান করে দেয়। রহিম বাদশা চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে। তারপর নিজে নিজেই থেমে যায়। বোধহয় জ্ঞান হারিয়েছে। শামসু নির্দয়ের মত ঘাপটি মেরে বসে থাকে। পাশের দোতলা ঝুপড়ি থেকে ছড়ছড় করে মুতে দেয় সালাহউদ্দিনের ঢ্যামনা ছেলেটা। সেই মুত গায়ে পড়ায় কাদের মুন্সীর পোয়াতি কুত্তাটা অনেক দুর থেকে ঘেউউউউ করে ব্রেকিং নিউজ পাঠ করতে থাকে। ২৪ ঘন্টার নিউজ। বাজারের উত্তর দিকে কেউ কেউ মেয়েমানুষ নিয়ে মত্ত। দুর থেকে সেই হাসি বা গোঙানী সবই কেমন কান্নার মত ভেসে আসে। লাভলি বেগম থাকলে ওরও একটা ঘর থাকতো। বাজারের মেয়ে মানুষ শামসু‘র ভাল লাগে না।
“মিঞে ভাই”, রহিম বাদশার কন্ঠস্বরে বোঝা যায় যে সে এখনও বেঁচে আছে।
“কী?”
“কচ্ছিলাম কী, যদি অনুমতি দেন তাইলে কই” বিনয়ের সাথে বলতে গিয়ে মুখে ব্যথা পায় রহিম, তাই শেষ শব্দে “আহ্” শব্দটি যোগ করে ফেলে অকস্মাৎ আর ছেলেবেলায় পড়া “হুজুরের নিকট বিনীত নিবেদন এই যে”- জাতীয় আবেদন মুখস্ত করার কথা মনে পড়ে যায়।
“এত্ত মাইর খালু, তাও তোর এখনও কথা বাইরই হচ্ছে !” একটা বিড়ি ধরাতে গিয়ে শামসু বুঝতে পারে ভুল করে বিড়ির পাছায় আগুন ধরিয়ে ফেলেছে, তাই ওটা নিভিয়ে আরেকটা ঠিকঠাক করে ধরায়।
“মিঞে ভাই, কচ্ছিলাম কী, আপনে আমাক ক্রসফায়ারে দিয়ে দেন, না হয় লোকজন ডাইকে থানায় সোপর্দ করেন, এইভাবে মাইরলে আমি বাঁচপোনানে, আর আপনের মত একটা ভাল মানুষ হয়ে যাবিনি খুনি, মানুষ একটা কুত্তেক্ও এইভাবে মারে না” বলতে বলতে খুকখুক করে কাশে রহিম বাদশা, তারপর একদলা কাশি ফেললে তাজা রক্ত দেখা যায়।
ব্যাপারটা যে শামসু বিবেচনা করেনি তা নয়। বেশ কয়েকবার ভেবেছে। বাজারের আর সব নাইটগার্ডদের ডাক পাঠাতে পারতো সে। টহল পুলিশকে স্যালুট দিয়ে একটা জানান দেওয়া যেত, “খয়ের মিঞার আড়তের নাইটগার্ড শামসুদ্দিন মালিথা রিপোর্টিং স্যার !”। অথবা পাশের দোকানের সালেককে ঘুম থেকে তুলে খয়ের মিঞাকে মোবাইলে একটা কল দেওয়া যেত। কিন্তু কিছুই করা হল না। খয়ের মিঞা এই মধ্যরাতে তার সতের বছরের পঞ্চম স্ত্রীকে আদর-সোহাগ করতে ব্যস্ত, এই সময় কল করলে উল্টো শামসু’র জান চলে যেতে পারে। আর পুলিশ-নাইটগার্ডদের সে ডাকতে পারতো ঠিকই, কিন্তু রহিম বাদশার সাথে পুরনো হিসাব চুকানো যেত কী?
এ সব হিসাব-নিকাষের মাঝখানে শামসু টের পায় যে রহিম বাদশা আবার অজ্ঞান হয়ে গেছে বা ভান করছে। পাঁচ ব্যাটারীর টর্চ লাইটটা ওর দিকে তাক করতেই কিছু একটা ল্য করে সে। আরেকবার লাইটের আলো ফেলে। পাঁচ ব্যাটারীর আলোতে চকচক করছে রহিম বাদশার পুরুষাঙ্গের মুন্ডিটা। যদিও তা উত্থিত নয়, ভয়ে-বেদনায় কুঁকড়ে চিৎ হয়ে পড়ে আছে। লাভলি বেগমের মুখ মনে পড়ে যায় আবার। বিদায়-বেলায় কাঁদতে নিষেধ করেছিল লাভলি বেগম, “তুমি না পুরুষ মানুষ, তুমি কাঁদো ক্যান শামসু ?”
শামসু সুর করে কাঁদতে শুরু করলে কাদের মুন্সীর পোয়াতি কুত্তাটা ছোট্ট একটা ব্রেক নেয়। যতসম্ভব বিজ্ঞাপন বিরতির পরে আবার ফিরে আসবে। সেই সুযোগে মন ভরে কেঁদে নেয় শামসু। দোতলার চাতাল থেকে আবার কেউ একজন মুতছে। মুতের শব্দ শুনেই মনে হচ্ছে এটা সালাহউদ্দিনের ভীতু ছেলেটা নয়, বেহায়া সালাহউদ্দিন স্বয়ং। ভাগ্যিস কুত্তাটা ব্রেক এর নামে অনেক আগেই নিরাপদ দূরত্বে সরে গিয়েছিল। সেই স্বস্তিতে একটা মোরগ “কুক্কুরক্কু” ডাকতে গিয়ে বুঝতে পারলো যে সে অনেক আগেই উঠে পড়েছে, সূর্য উঠতে এখনও বেশ দেরী। সোনাপট্টি থেকে প্রতি ঘন্টার হাঁক দেয় রাতপাহারাদারেরা, শামসুও অনডিউটি “ও হো..হে..এ..এ..এ ” করে তার প্রতিউত্তর দেয়। মাছবাজারের পাঁড়বেশ্যাটা একটা খদ্দেরের সাথে ঘোট পাকিয়েছে আজও। কেউ একজন মীমাংসা করছে। হয়ত সে‘ও একটু ওর সাথে শুয়ে নেবে ফোকটে, সেই পাঁয়তারা করছে।
লাভলি বেগম কাঁদতে মানা করেছিল। লাভলি বেগম শেষ বিদায়ের দিনে আর কী কী বলেছিল, তাও স্পষ্ট মনে আছে শামসু’র, “আমার যার সাথে বিয়ে হচ্ছে তার নাম রহিম বাদশা। দেইখ্তে যেমন বাদশা, যোইগ্যতাও সেই রকম। কিলাস এইট পাস। এনজিও’র পিয়ন। সরকারি না কিন্তুক বিদেশী ট্যাকা।”
লাভলির কথায় নিজের অবস্থান তখনই আরেকবার বুঝে নিয়েছিল শামসু। তখন সে বেকার। টো টো কোম্পানির মত এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ায় আর চান্স পেলে পাবনা শহরে গিয়ে বানী সিনেমা হলে এক টিকিটে দুই ছবি দেখে। শেষ সময়ে প্রেম উত্থলে উঠলে লাভলিকে জড়িয়ে ধরে প্রশ্ন করেছিল সে, “তাইলে তুমার আমার এতদিনের সম্পর্কের কী হবি ?”
“ এতদিন আমরা ছিলেম প্রেমিক-প্রেমিকা, এখন শুধুই বন্ধু..”
লাভলি বেগমের বিয়েতে ভাঙ্গুড়া থেকে এক বাস ভর্তি বরযাত্রী এসেছিল। পঁচিশ আসন বিশিষ্ট। সামনে লেখা “ভলভো সার্ভিস”। রহিম বাদশা বরের বেশে এসেছিল একটা সুদৃশ্য গাড়িতে। বরযাত্রী আর কনেপরে ছেলেরা স্ব-উৎসাহে বেশ কয়েকবার ঠেলে চালু করেছিল গাড়িটা। রহিম বাদশার হাতে সিকো ফাইভ ঘড়ি। গলায় একটা ক্যামেরা ঝোলানো। নিজেই সব ছবি তুলছিল, সাদা ফাশে ঝলসে যাচ্ছিল অতিথিদের চোখ। লাভলি বধূবেশে কাঁদতে কাঁদতে সেই গাড়িতেই উঠে পড়েছিল মনে আছে। নিজেকে ধরে না রাখতে পেরে শামসু শেষবারের মত একবার লাভলি বেগমের মাথায় হাত রাখতে চেয়েছিল, কিন্তু গাড়িতে লেখা সাইনবোর্ডটা চোখে পড়তেই সেই সাহস হারিয়ে ফেলেছিল অকস্মাৎ, বানান করে পড়েছিল ও, “সাবধান, ট্রেনিং কার ”।
বন্ধুরা দল বেঁধে বোঝাতে এল। লাভ হল না। শামসু গ্রাম ছেড়ে ভাগলো একদিন ।
তারপর বনওয়ারী নগর ফরিদপুর হয়ে পাবনা শহর। বড়বাজারের খয়ের মিঞার আড়তে নাইটগার্ডের চাকুরী পাওয়াটাও এক বিশাল ঘটনা, এই মুহুর্তে তা আর ভাবতে চাইলো না শামসু। ঘুরে রহিম বাদশার দিকে তাকালো, “লাভলি বেগম কেমন আছে?”
কোন উত্তর এল না। রহিম বোধহয় ব্রেকে আছে। লাঠি দিয়ে গুতো মারতে উদ্যত হল সে। আর সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে উঠল ও, “ ওই মাগির কথা আমাক্ জিজ্ঞেস কইরেন না মিঞে ভাই, ওই মাগিই তো আমাক্ এইখেনে পাঠাইছে”
“মুখ খারাপ করবি না হারামজাদা, মুখ খারাপ করা আমার পছন্দ না”
“জ্বী মিঞা ভাই”
কি মনে হয়, আল্লাহ্ জানে, শামসু বিড়ির শেষ অংশটা ওর দিকে বাড়িয়ে দেয়। রহিম বাদশা সেই বিড়িতে “উশশশশশশ্” করে দুইটা সুখটান দেয়। তারপরে আবার গুঁটিশুটি মেরে শুয়ে থাকে, না হলে আবারও মাইর খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
“তুই না এনজিও’র চাক্রী করতি, সেইটা রাইখে চুরি করতে আইছিস ক্যা?”
“ওই চাক্রীতো গেছে দশ বছর আগেই”
“ক্যা? পার্মানেন্ট ছিল না?”
“ছিল মিঞে ভাই। কয়েকটা উন্নয়ন প্রকল্প ছিল। বিদেশী ফান্ড। দেশের উন্নয়নের জন্য জান দিয়ে দিত বড় সাহেবরা। আর চান্স পাইলে মহিলা-কর্মীদের বিছানায় নিয়ে যাইতো জোর কইরে। ঢাকা থিকেন যারা অডিটে আইস্তো তাগোরেও দেইখতাম একই প্রবলেম। এরা যে হোটেলে অবস্থান কইরতো, সেইখানে মিয়েলোক পাঠানো লাইগ্তো। যে বুইড়াগুলি ছিল, যাগোরে দুই পা কব্বরে চইলে গেছে, তাগরেও লাইগ্তো। আমি ছিলাম পিয়ন, দিনে দিনে মাগির দালাল হয়ে যাচ্ছিলাম। আর ভাল লাগতিছিল না কো ভাই। আমারওতো মিয়ে আছে ।”
“তোর মিয়ে আছে মানে?”
“আমার আর লাভলি বেগমের বিবাহের পরের বছর কন্যা সন্তান হয়। বিউটি বেগম। তার বয়স এখন ধরেন মিনিমাম ষোল বছর। ম্যাট্টিক দিবি। তার ছোটডা করিম বাদশা। আগে স্কুলে পইড়তো, এখন ওয়ার্কশপে কামে দিছি। তারপরেরটা সুইটি বেগম। কিলাস থিরিতে পড়ে। মাথা ভাল। আর ” বলতে গিয়ে খানিকটা লজ্জা পায় যেন রহিম বাদশা, “আর ধরেন, লাভলি বেগম সখ কর্ইলো, তার বলে কোল খালি লাগে, তাই... এখন ছয় মাস চলতেছে..” দীর্ঘ একটা দীর্ঘশ্বাস নেয় সে, “এই অভাবের সংসারে আরেক আপদ হইল ভাই। ডাক্তার দেখাতি গেছিলাম বিউটির মা’ক। ডাক্তার কইল কী একটা সমেস্যা দেখা দিছে। বাচ্চার মা’র ঠিক মত কেয়ার নিয়া লাগপি। না হলি লাভলি বেগম মারাও যাতি পারে।”
নিজেকে সামলে নেয় শামসু। লাভলি বেগমের এতগুলো সন্তান হওয়াকে প্রথমবারের মত মেনে নেয় সে। একবার ভাবে, মাছ কাঁটার বটি দিয়ে রহিম বাদশার পুরষাঙ্গটা কেটে নেবে । তারপর লাভলি বেগমের বর্তমান দুরাবস্থার কথা শুনে খুব আনন্দ পায়। যেন এমনই হওয়ার কথা ছিল। ভালবেসে ধোকা দিয়েছিল লাভলি, আল্লাহ্’র মাইর দুনিয়ার বাইর। খুব আনন্দ হয় শামসু’র। সবকিছু কেমন ফুরফুরে লাগে। যে নারীটির জন্য সে সারাজীবন চিরকুমার থেকে গেল তার পরিণতির কথা শুনে আনন্দে নাচতে ইচ্ছে হয়। বাজারের সামনের মহাসড়ক দিয়ে একটা অ্যাম্বুলেন্স প্যাঁ পুঁ করতে করতে চলে যায় বাতাসের গতিতে। ভাঙ্গা-কালীমন্দিরে পুরোহিত জ্বেগে ওঠে, দুই-একটা মন্দিরার ঠুং-ঠাং শব্দে তাইতো মনে হয়। বাতাস কাটতে কাটতে ইয়াকুবের আড়তের নাইটগার্ড জসিমের ভয়েস ওভার ভেসে এসে একদম কানের কাছে বাড়ি মারে, “ও শামসুদ্দি ভাই, আগুনডা দেওগো, শীতে মইরে গিলাম”
শামসু রহিম বাদশাকে ইশারায় চুপ থাকতে বলে বাইরে আসে, “ক্যা? তুমার কাছে আগুন নাই?”
“আছেতো, কুয়াশায় ভিজে গেছে”
“কুয়াশায় ভিজবি ক্যা? লুঙ্গির গাঁটে রাইখ্পের পারো না?” বলে ম্যাচবাক্সটা এগিয়ে দেয় শামসু। ফিক করে হেসে ফেলে জসিম, “লুঙ্গির গাঁটে ছিল বলেই তো এই অবস্থা, লুঙ্গি কী আর আমার পরনে ছিল নাকি?”
“মিয়েমানুষ, জসিম ভাই, মিয়েমানুষ। এই মিয়েমানুষই তুমাক খাইলো। গিরামে বউ-বাচ্চা আছে। তাও তুমার ডিউটি টাইমে মিয়েমানুষ লাগে। ছিঃ। আমাক দেখো, মিথ্যা কথা বলি না, নেশা-ভাং করি না, আমার কোন মিয়েমানুষও লাগে না।” নিজের কলার ঝাঁকায় শামসু। গলায় এত জোর আসে কোথা থেকে বুঝতে পারে না, যতসম্ভব কিছু একটা লুকানোর চেষ্টায় এ রকম হতে পারে।
“হ, তুমি তো নীতিবান সাব-ইন্সপেক্টর। সৎ, যোগ্য ও চরিত্রবান পদপ্রার্থী। আমাদের নয়নের মনি। মিয়েমানুষের সাথে শুতি যোগ্যতা লাগে, বুইচ্ছেও ? তোমার আছে নাকি সেই যোগ্যতা?” একটা বিড়ি জ্বালিয়ে ম্যাচবাক্সটা ফেরত দেয় জসিম। তারপর হাঁটতে থাকে। মেয়েমানুষের পাশাপাশি আজ একটু তাড়ি গিলেছে বলে মনে হয়। কেমন টলতে টলতে হাঁটে। অবশ্য টানা কয়েকদিন না ঘুমিয়ে রাত পাহারা দিলে এমন হয়। শামসু ঝাঁপ নামিয়ে দিয়ে ভেতরে আসে।
নিঃস্তব্ধতা।
এবং তা ভেদ করে হঠাৎ মদ্যপ জসিমের খিস্তি শুরু হয়। যতসম্ভব দোতলা থেকে আবার কেউ পেশাব করে দিয়েছে। জসিমের গালিগালাজে খানিকটা ধারণা পাওয়া যায়, “শালা, জিন্দেগিতে শুনি নাই যে মিয়েমানুষ দুইতালা থিকেন পুরুষ মাইনষের গায়ে মুতবি। ছিঃ ছিঃ। ওই সালাহউদ্দিন শুয়োরের বাচ্চা, তোর ঘরে মিয়েমানুষ আইস্লো কৌন থিকেন..”
জসিমের কন্ঠও ধীরে ধীরে ীণ হয়ে আসে। বেচারাকে জ্বীনে-টিনে ধরল নাকি আল্লাহ্ই জানে। বহির্বিশ্বের এইসব ঘটনা এই মুহুর্তে শামসুকে আর আলোড়িত করতে পারে না। শামসু নিজেই নিজের সংবাদ পাঠ করে, “লাভলি বেগম, তুমি যদি দেইখত্যা, তুমার রহিম বাদশা চুরির দায়ে আমার হাতে গেরেফ্তার! তুমার দম্ভ, অহংকার কৌনে যাইতো! আমি শামসুদ্দিন নাইটগার্ড। আমি সৎ। আমি কারো এক পয়সাও চুরি করি না। আমি তুমার মত বেঈমান না ! ”, নিজে একটু শুয়ে থাকার আয়োজন করে । হাই তোলে। ভাবে সকাল হলে রহিম বাদশাকে বাজার কমিটির কাছে তুলে দেবে, তার আগে একটু আয়েশ করে ঘুমিয়ে নেওয়া দরকার।
#
ঘুমের ভেতরে শামসু স্বপ্নের লাষ্ট ট্রেন ধরে। সেই ট্রেন ধরে সোজা উল্লাপাড়া। তারপর ট্রেন থেকে নেমে ভাঙ্গুড়া। রহিম বাদশার দোচালা ঘর চিনে নিতে কষ্ট হয় না। স্ফিত পেটের লাভলি বেগম ওকে দেখে বের হয়ে আসে। একে একে বিউটি, করিম বাদশা, সুইটি। ওরা “মামা-মামা” করে চিৎকার করে। ঘুমের ভেতরেও তা স্পষ্ট শুনতে পায় সে। স্বপ্নের ভেতরেও বুঝতে পারে যে সে স্বপ্ন দেখছে কিন্তু বের হয়ে আসতে পারে না। লাভলি বেগম ওর জন্য ভাত আর আলু ভর্তা চড়ায়। উঠোনের মরিচ গাছ থেকে কয়েকটা কাঁচা মরিচ ছিঁড়ে আনে ছোট মেয়েটা। সেটা চটকিয়ে সরিষার তেল দিয়ে দারুন একটা ভর্তা তৈরি হয়। গরম ভাতে মৌ মৌ গন্ধ করে। লজ্জার মাথা খেয়ে গোগ্রাসে গিলে চলে শামসু। স্বপ্নগুলো ছোটগল্পের মত। দৈর্ঘ্যে ছোট। স্বপ্নের ভেতরেও তা বোঝে সে, বোঝে খুব জোরে ইউনুস হলওয়ালা রিল টানছে, সাই সাই করে বানী সিনেমা হলের পর্দায় ছবি দৌড় দেয়। তিন ঘন্টার ছবি বোধহয় দুই/তিন মিনিটে শেষ হয়ে যায়। ইউনুস হলওয়ালা ঘামতে ঘামতে বিহারে চলে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় আবার। ছবির কিছুই বোঝা যায় না। শেষ সিনে নায়িকা নায়কের কোলে উঠল নাকি নায়ক নায়িকার কোলে উঠে পড়ল তা বুঝে উঠতে উঠতে স্বপ্নটা দ্রুত শেষ হয়ে যেতে থাকে। লাভলি বেগম শামসু’র হাত জাপটে ধরে, আর বলতে থাকে, “যে আসতেছে, সে কিন্তু তুমার সন্তান, বুচ্ছেও? না বোঝ নাই? ”। বানী হলের লাইট অফ্। কোন সিটে কেউ বসে নেই। শামসু এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে। হলের গেটে গেটম্যান দাঁড়িয়ে চিৎকার দেয়, “ও মিঞে ভাই, ওঠেন”

“ও মিঞে ভাই, ওঠেন” চোখ ডলতে ডলতে হালকা ঘুমের দৃশ্যাবলী থেকে আহত রহিম বাদশার ভূবনে যেন দুম করে হাজির হয় আধোজাগ্রত শামসুদ্দিন, “কী হয়ছে?”
“লাভলি বেগমের বড় কষ্ট মিঞে ভাই। ডাক্তার এখন কচ্ছে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা কম। প্যাটে টিউমার দেখা দেছে। অপারেশন না করলি সে মারা যাবি ভাইজান। ”
শরীরটা গুলায় শামসু’র। বমি বমি ভাব হয়। কাঁচা ঘুম ভেঙ্গে দেওয়ার জন্যে রহিম বাদশার দুই/চারটা দাঁত ঘুষি দিয়ে ভেঙ্গে দিতে ইচ্ছে করে।
“মিয়েটা ধরেন ম্যাট্টিক দিবি। দুইবার ফরম ফিলাপের লাষ্ট ডেট চইলে গেছে।”
শামসু একটু চোখে মুখে পানি দেয়।
“ছাওয়ালডাক স্কুল বন্ধ কইরে ওয়ার্কশপে দিছিলাম। টিইক্লো না। এখন বেকার বইসে আছে।”
শামসু মেঝেতে পড়ে থাকা লাঠিটা তুলে নেয়। আর সহ্য করা যায় না। তারপর রাগে-ক্রোধে রহিম বাদশার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে।
“লাভলি বেগম খালি কাঁদে আর কাঁদে। ছোট মিয়েটা আজকেও কয়ছে, আব্বা, কতদিন ইলিশ মাছ খাই না” বলতে গিয়ে গলা শুকিয়ে আসে রহিম বাদশার। মারমুখী শামসুকে দেখে ভয়ে-আতংকে তার দম বন্ধ হয়ে আসে, “ও ভাই, আমাক্ আর মাইরেন না। ক্রসফায়ারে দেন না হয় পুলিশে দেন।”
তারপর হঠাৎ কিছুণের জন্য পুরো শহর নিঃস্তব্ধ হয়ে যায়। এক মিনিট নীরবতার শেষে কাচারী মসজিদের মুয়াজ্জিন ফজরের আযান দেয়। তাই দেখে অন্য মসজিদগুলোও আযান দেওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু করে। গুটিকয়েক মুসল্লি কোরাম পূরণ করতে এই ঘন কুয়াশায় আল্লাহ্’র রাস্তায় নেমে পড়ে। অপুর নানাভাই চিৎকার করে সারাপাড়া মাথায় তোলে, “আল্লাহ্’র বান্দারা ওঠো রে,আযান হয়ে গেছে, নামায পড়তে হবে”। সেই চিৎকারে ময়েনুদ্দীর দশবছরের ধিঙ্গি মেয়েটা ঘুমের ভেতরে বিছানা ভাসিয়ে দেয় আজকেও। দায়িত্ববান মোরগটি বিরক্ত হয়ে “কুক্কু” টাইপের একটা সংপ্তি শব্দ করে যতসম্ভব আবারও নিদ্রা যায়। আর বাজারের সামনের মহাসড়ক দিয়ে ছুঁটে চলা একটা ট্রাক কাদের মুন্সীর পোয়াতি কুত্তাটাকে ভোরের প্রথম আলোয় হেডলাইন নিউজ বানিয়ে নগরবাড়ির দিকে ছুটে যেতে থাকে।
#
জসিম যখন শেষ বাড়িটা মারলো তখন অনেকটাই নেতিয়ে পড়েছে সে। লুঙ্গিটা প্রায় ছিঁড়ে গেছে। খয়ের মিঞা পানে খয়ের খান না জেনেও কে একটা পান এনে দিল খয়ের আর জর্দায় ভর্তি। সেটা চিবুতে চিবুতে লাল রস গড়িয়ে পড়ল তার গাল বেয়ে। চোখে আগুন। এই চোখে মাঝরাতেও কত ভালবাসা ছিল। কিশোরী বউটাকে বুকে নিয়ে শুয়ে ছিল সে। অথচ সকালে উঠেই দুঃসংবাদ। কে যেন একটা চেয়ার এনে দিল তাকে। সেটাতে বসেই রাগে গজগজ করতে থাকলো খয়ের। সালাহউদ্দিনের ঢ্যামনা ছেলেটা যে কাল রাতেও নির্লজ্জের মত দোতলা থেকে ছড়ছড় করে মূত্রত্যাগ করেছে, ভয়ে কিছুদুর হেঁটে গিয়ে পায়খানায় যাওয়ার সাহস করেনি, সে’ও আহত মানুষটার মুখে এক দলা থুতু ছিটিয়ে দিল। মাছবাজারের পাঁড়বেশ্যাটা কোমরে কাপড় বেঁধে কেমন ঘৃণা ভরে তাকিয়ে আছে, যেন চুরি করার চেয়ে দেহ-বিক্রি উত্তম। কয়েকজন মুসল্লী মসজিদ থেকে ফেরার পথে এই জটলায় যোগ দিয়েছে। লোকটাকে যেভাবে মারা হয়েছে, সে যে কোন সময় ইন্তেকাল করতে পারে, সে েেত্র পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত ও দাফন-কাফনের পবিত্র দায়িত্ব পাওয়া যেতে পারে। স্থানীয় একজন সাংবাদিক কাদের মুন্সীর পোয়াতি কুত্তাটার মৃত্যু নাকি খয়ের মিঞার আড়তে চুরি কোন নিউজটাকে কাভার করবে তা নিয়ে দোটানায় পড়ে যায়। সে’ও যতসম্ভব আহত মানুষটার মৃত্যুর জন্য অপো করছে। তাহলে নিউজ ভ্যালু বাড়বে। ঢাকার দৈনিকগুলো বিজ্ঞাপন ছাপাতে গিয়ে নিউজ ছাপানোর জায়গা পায় না। চৌষট্টি জেলার চারশ’ আশিটা থানার সাথে পাল্লা দিতে হয় একটা নিউজ ছাপা হওয়ার জন্য। তাই লোকটা না মরলে সংবাদটা কিছুটা ফুলিয়ে ফাপিয়ে “খয়ের মিঞার আড়তে ডাকাতি, একজন ডাকাত গ্রেফতার” - এ রকম একটা নিউজ মনে মনে ঠিক করে ফেলে সে। কিন্তু খয়ের মিঞা কিছুতেই চুরি যাওয়া টাকার অংক বলতে চায় না। এই পরিমাণ টাকা ব্যাংকে না রেখে আড়তে রাখা হয়েছিল কেন - এমন প্রশ্নও সুশীল সমাজের দুই-একজন করতে থাকে। খয়ের মিঞা তাদের মার্ক করে আর মনে মনে ঠিক করে যে সামনের মাস থেকে এই দুই হারামজাদার মাসোহারা পাঠানো সে বন্ধ করে দেবে। খয়ের মিঞার সামনে নির্বাচন, এই সময় উত্তেজিত হওয়া যাবে না, চোর-চুট্টা-নির্বাচন কমিশন সবার এই একই পরামর্শ। মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত, তেমনি নির্বাচন কমিশনের দৌড় নির্বাচন পর্যন্ত, নির্বাচনের পর কে কী করল তা দেখার দায়িত্ব তাদের না। খয়ের মিঞার পানের রস গড়িয়ে সদ্য কেনা পাঞ্জাবীতে আজিজ মার্কেটের বহুরঙা স্ক্রিণপ্রিন্টের ছাপ দেয়। পুলিশের গাড়ি থেকে নেমে ওসমান দারোগা সরেজমিন পর্যবেণ করে খয়েরের কানে ফিসফিস করে বলে ওঠে, “ এ কী করিছেন স্যার, এর দায়িত্ব কিডা নিবি? এ তো স্পট ডেড!”
ইয়াকুবের আড়তের নাইটগার্ড জসিমই বোধ হয় সবচেয়ে বেশী আঘাত করেছিল ওকে। কী করবে, ডিউটি ইজ ডিউটি। কিন্তু রক্তাক্ত মানুষটার শেষ নিঃশ্বাস যখন বের হয়ে গেল তখন সেই জসিমই চিৎকার করে ঠাস হয়ে পড়ে গেল, “শামসুদ্দি ভাই গো” বলে।
খয়ের মিঞা এইবার শোকে বিহ্বল হয়ে ওঠে। এই শোক টাকার না মৃত মানুষটির জন্য তা বোঝা যায় না, “আহারে ! আমিও তো উয়েক অবিশ্বাস করি নাই। আমি খালি কইছি, তুই এতটা বছর আমার এখানে কাম করলি, কোনদিন মিথ্যা কথা কইস্ নাই, আইজও কইস্ না, আমি জানি তুই ট্যাকাডা নিস নাই, তাইলে নেছে কিডা সেইডে ক’। কিন্তু একটা রা শব্দও কর্ইলো না। ধ্যান-মাইরে বইসে থাইক্লো যে ! আফসুস !! ”
#
সেইদিন ভোর বেলা ঘরে ফিরে এসেছিল রহিম বাদশা। রক্তাক্ত। কিন্তু বিজয়ীর বেশে। লাভলি বেগমকে জড়িয়ে ধরে সে বলেছিল, “বউগো, অল্পের জন্যি বাঁইচে গেছি। ট্রাক চইলে গেছে গায়ের উপর দিয়ে, সমগ্র বাংলাদেশ পাঁচ টন ! খালি তুমার ভালবাসায় বাঁইচে আছি।”
তারপর ব্যাগ থেকে যখন পাঁচশ’ টাকার কয়েকটা বান্ডিল বের করল সে, তখন লাভলি বেগম কপালে প্রশ্নবোধক চিহ্ন আঁকার আগেই সানন্দে জানিয়ে দিল, “পেনশনের টাকাগো বউ। ঢাকায় হেড অফিস থিকেন দিল।”
লাভলির চোখে তখন জল। সেই জল লুকিয়ে সে বাইরে এসে দাঁড়িয়েছিল। বাচ্চাগুলো যে যার আবদার নিয়ে রহিম বাদশাকে ঘিরে ধরেছে। তার সেবা-শুশ্র“ষা শুরু হয়েছে। চুলায় গরম ভাত টগবগিয়ে ফুটছে। দু‘টো আলু ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ভর্তায় দেওয়ার জন্য উঠোনে গাছ থেকে কয়েকটা গাঢ় সবুজ কাঁচামরিচ ছিঁড়তে গিয়ে কেন জানি তার পুরনো প্রেমিক শামসু’র কথা মনে পড়ে গেল। তারপর মিলিয়েও গেল ষোল বছর আগের দেখা মুখটি। আল্লাহ্’র কাছে মনে মনে শোকর করল লাভলি বেগম এই ভেবে যে, ভাগ্যিস, শামসু’র মত চালচুলোহীন বাউন্ডুলে নয়, রহিম বাদশার মত একজন যোগ্য পুরুষের সাথে তার বিয়ে হয়েছিল। এই জন্যে আজ একবার শুকরিয়া নামায পড়ে নেবে বলে নিয়ত করল সে।আর কেউ না জানুক, উঠোনের সেই কাঁচা মরিচ গাছটি জানতো , রহিম বাদশা সেই রাতের পর থেকে আর কোনদিনও লাভলি বেগমকে ভালবাসতে পারেনি...

(গল্পটি ২০১২ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত "ঘটনাটি সত্য নয়" গ্রন্থে প্রকাশিত)

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×