somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কবর দেওয়ার জায়গা নেই রাজধানীতে!

১১ ই মে, ২০১২ বিকাল ৫:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





বসবাসের জায়গার সংকট রাজধানীতে এটি বেশ পুরনো কথা। কয়েক দশক ধরে নগর বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন। এবার নগরীতে তৈরি হয়েছে নতুন সংকট। মৃত মানুষ সমাধিস্থ করার জায়গার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এখন মৃত মানুষ দাফন করতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে প্রধান নগর সংস্থা ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি)।
জানা গেছে, কবরস্থানের জায়গা সংকটের কারণে চার বছর ধরে ডিসিসি কবরের জায়গা বরাদ্দ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। জায়গা সংকট এত তীব্র হয়েছে যে একটি কবর দুই বছর স্থায়ী করার কথা থাকলেও তা সর্বোচ্চ ছয় মাস থেকে এক বছর স্থায়ী হচ্ছে। এর মধ্যে ওই কবরে নতুন লাশ দাফন করা হচ্ছে। আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, এই স্বল্প সময়ে সমাধিস্থ লাশ মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে না। অক্ষত থাকছে মাথা, হাড়সহ অন্যান্য অঙ্গ-প্রতঙ্গ।
এ ব্যাপারে ডিসিসির প্রধান সমাজকল্যাণ ও সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বলেন, কবরস্থানের জায়গা সংকট সত্য। তবে কোনো মৃতদেহ মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়ার আগে আমরা ওই কবরে কাউকে দাফন করার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করি না।
জানা যায়, নগরীতে ডিসিসির পাঁচটি কবরস্থান রয়েছে। এর মোট আয়তন ১২০ একর। ইতোমধ্যে কবরের অর্ধেক জায়গার স্থায়ী বরাদ্দ হয়ে গেছে। নতুন কবরস্থান তৈরি না হওয়ায় মৃত মানুষ সমাহিত করা নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে উদ্বেগ লক্ষ করা যাচ্ছে। লাশ দাফন নিয়ে এখন নগরবাসীকে পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। ডিসিসি সূত্রে জানা যায়, তাদের বিভিন্ন কবরস্থানে প্রতিদিন ৯০টি লাশ দাফন করা হচ্ছে। এতে জনসাধারণ কবর দেওয়ার জায়গা ঠিতমতো না পাওয়ায় লাশ নিয়ে তাদের পড়তে হচ্ছে বিপাকে। দরিদ্র মানুষের এ ক্ষেত্রে ভোগান্তির অন্ত নেই।
জানতে চাইলে ডিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, কবর দেওয়ার জায়গার সংকট সমাধানে ডিসিসি ইতোমধ্যে নতুন কবর নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে কবরস্থানের জায়গার সংকট সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তবে তিনি বলেন, নগরীতে আয়তনের সঙ্গে জনসংখ্যার ভারসাম্য না হলে নতুন কবরস্থান সংকটের সমাধান হবে না।
৬২ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে আজিমপুর কবরস্থান। এটি রাজধানী ঢাকার সবচেয়ে কবরস্থান না হলেও বেশির ভাগ মানুষ এখানেই লাশ দাফনে মনস্থ করেন। এখানে জায়গার পরিমাণ হচ্ছে ৩৫ একর। এর মধ্যে সাধারণের জন্য রয়েছে মাত্র ১৬ একর জায়গা। আর বাকিটা সংরক্ষিত। ১০ নম্বর ওয়ার্ডে মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান। এটি ঢাকার সবচেয়ে বড় কবরস্থান। এর আয়তন ৬৫ একর। এর মধ্যে ৩৫ একর সাধারণের। বাকিটা সংরক্ষিত। ৯০ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত জুরাইন কবরস্থান। এর জায়গার পরিমাণ সাড়ে ১০ একর। এখানে সংরক্ষিত সাড়ে ৩ একর। আর সাধারণের জন্য ৭ একর। পরে এখানে আরও ৭ একর জায়গা বাড়ানো হয়েছে। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে বনানী কবরস্থান। এর আয়তন ৭ একর। সাধারণের জন্য সোয়া দুই একর। বাকিটা সংরক্ষিত অর্থাত্ অভিজাত শ্রেণীর জন্য। ১ নম্বর ওয়ার্ডে উত্তরা কবরস্থানের আয়তন পৌনে এক একর। পুরো জায়গা সাধারণের জন্য উন্মুক্ত। এ ছাড়া ধলপুর ও মুরাদপুরে অর্ধ একর করে দুটি কবরস্থান রয়েছে ডিসিসির।
ডিসিসির হিসাবমতে, নগরীর বর্তমান লোকসংখ্যা ১ কোটি ৬২ লাখ। তবে বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা ২ কোটির বেশি। এর মধ্যে ২০ লাখ বাদে সবাই মুসলমান। পরিসংখ্যান যা-ই হোক, এটি রাজধানীর ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি। আর প্রতিনিয়তই বাড়ছে জনসংখ্যা। ফলে সার্বিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এটি অশনিসংকেত। জনসংখ্যার তুলনায় বসবাসের জায়গা যেমন বাড়ছে না, বাড়ছে না কবরস্থানও। ফলে মানুষ সমাধিস্থ করা বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে।
সূত্র জানায়, নগরীতে প্রতিদিন যত মানুষ মারা যায়, তাদের সবাইকে যদি ডিসিসির কবরে শায়িত করা হতো, তাহলে অনেক আগেই জায়গা শেষ হয়ে যেত। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেককে দাফন করা হয় গ্রামে।
সূত্র জানায়, রাজধানীতে কবরের জায়গার সংকটের কারণে ডিসিসি ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে ভূমির স্থায়ী বরাদ্দ বন্ধ করে। একই সঙ্গে কবর স্থায়ী বরাদ্দের বিষয়ে নতুন নীতিমালা করা হয়। নীতিমালা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী. একুশে পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তি মারা গেলে তাদের জন্য কবরের জায়গা স্থায়ী বরাদ্দ নেওয়া যাবে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে দেখা - ১৩ মে

লিখেছেন জোবাইর, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:০৩

১৩ মে ২০০৬


দমননীতির অদ্ভুত কৌশল
সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের ওপর দমন নীতির আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্রুত বিচার আইন ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে দমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×