somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মা দিবসের প্রশ্নঃ “জন্মদিন না ভুমিষ্টদিন”

০৯ ই মে, ২০১২ সকাল ৮:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কবিতা-গল্পে-ছড়াতে
তোমায় নিয়ে লেখাতে
শতশত বার জানিয়েছে মা তোমাকে শুভেচ্ছা ।
প্রতিটি শুভেচ্ছাবাণী যেন আমার নিজের মাকে জানানো হয়েছে বলে মনে হয় । তুমি “মা” শাশ্বত, চিরায়ত জননী । আজকের বিশ্বে তোমার সন্তানেরা একটা দিন ধার্য করে দিয়েছে তোমাকে শুভেচ্ছা জানাতে । এটা একটা উপলক্ষ্য মাত্র, তবু সবার সেকি আগ্রহ এইদিনটিকে ঘিরে । এই দিনটা এতো মাধুর্যপূর্ণ যে যখন সন্তানেরা শুভেচ্ছা জানায়, যারা মা হয়েছে শুধু তারাই জানে । আমি সেসকল নারীদেরকেও শুভেচ্ছা জানাই যারা অদৃষ্টের অবহেলায় মা হতে পারেনি । যাদের সন্তান নেই, যারা বন্ধ্যা কিন্তু আমি বলবো তাদের সন্তানের অভাব নেই । আমার মায়ের তিন সন্তান কিন্তু তাঁর সন্তান অসংখ্য । আমি তাদের প্রতি জানাই অকৃত্রিম ভালবাসা।
সত্য কথা বলতে আমার ভয় নেই, আমি কোন “মা” দিবসেই তোমার কাছে থাকতে পারিনি । যোজন যোজন দুরত্ব ছিলেম কিন্তু তোমায় ভুলে যায়নি, একটি বারের জন্য হলেও কথা বলেছি, তোমাকে স্মরণ করেছি অসংখ্যবার, কতবার যে বলেছি “মা তোমাকে ভালবাসি” ।
মা তোমাকে আজ আমি একটা পুরাতন কিন্তু চিরন্তন সত্য একটা প্রশ্ন করবো।
তুমি প্রথম কবে “মা” হয়েছিলে??
তুমি উত্তর দিলে কেন আবার ১৪ই মে।
আমি বললাম সেটাতো আমার জন্মদিন।
তুমি বললে তুই আমার প্রথম সন্তান, তোর জন্মদিনটাইতো আমার প্রথম “মা” হওয়ার দিন তাই নয় কি?
কিন্তু আমি যে বিশ্বাস করি সেটা আমার “ভুমিষ্টদিন” । বিশ্বাস করি বলতে, আমি কিছুটা যুক্তিবাদী তাই আমার মতে ঐদিনটা জন্মদিন নয়, ঐদিনটা “ভুমিষ্টদিন” । যেদিন প্রতিটি শিশু তার মা-বাবার ভালবাসায় সিক্ত হয়ে এই পৃথিবীর আলোতে আসে ।
“মা” খুব রাগ করলেন, অনেকটা চটেও গেলেন, ক্ষেপে গিয়ে বাবাকে ডেকে বললেন তোমার ছেলে কি সব উল্টাপাল্টা কথা বলে শোন । বাবা প্রতি উত্তরে বললেন, ছেলে বড় হয়েছে কত কথায় এখন বলবে......।

যাই হোক, মাকে আমি আমার যুক্তির কথাটা বলতে পারিনি কারন মা চটে গিয়েছিল, আপনাদের বলতে আমার এতটুকু দ্বিধাবোধ নেই । আমরা সবাই জানি, প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারীর অসীম ভালবাসার ফসল এই আমরা সন্তানেরা । আমরা আমাদের বয়স গননা শুরু করি সেই দিন থেকে যেদিন আমরা প্রথম এই পৃথিবীর আলোতে আসি। সমস্ত ভর্তি ফরম, জন্মসনদ, বিবাহ রেজিস্ট্রি, পাসপোর্ট, যেখানেই জন্মদিনের কথা লেখা থাকে সেখানেই যেদিন আমরা পৃথিবীতে আলো দেখেছিলাম সেইদিনের কথা লেখে রাখি । আমরা সব জায়গাতেই “ভুমিষ্টদিনের” কথাই লিখি কিন্তু ”জন্মদিনের” কথা লিখিনা।

সত্যি বলতে আমরা নিজেরা তো বটেই আমাদের বাবা-মায়েরাও জানেনা আমাদের সঠিক “জন্মদিন” কবে??

সবাই ধাক্কা খেলেন মনে হচ্ছে, অনেকেই আমাকে মনে মনে গালাগালি দিতে পারেন। আমার এই কথাটা শোনা মাত্র সবাই নানা রকম কথা শোনাতে আমাকে বাকি রাখেনি। আমি পাগল, বেশি বুঝি, দুই কলম লেখাপড়া জেনে বেশি কপচাই আরো কত কথা। আমিও শুনেছি কিন্তু আমি আমার যুক্তির পথ থেকে এতটুকু সরে আসিনি।
আমরা যেদিন পৃথিবীর আলো দেখি সেদিন আমাদের “ভুমিষ্টদিন”। আর আমাদের বাবা-মায়েরা প্রথম যেদিন সফল মিলনের মাধ্যমে শুক্রানু-ডিম্বানুর সঠিক মিলন ঘটিয়েছিলেন সেদিনটাই প্রকৃতপক্ষে আমাদের “জন্মদিন”। শুক্রানু-ডিম্বানুর নিষিক্ত করনের ঐদিনটা কবে ছিল তা আমরাতো নয়ই আমাদের বাবা-মায়েরাও সঠিক ভাবে বলতে পারবেনা। কারন তাদের মনেতো এই প্রশ্ন কখনওতো আসেনি যে তাদের সন্তানেরা জিজ্ঞেস করতে পারে আসলে তাদের সঠিক জন্ম কবে??
এই হিসাব ভুমিষ্টদিন থেকে ১০ মাস ১০ দিন বাদ দিয়েও করা সম্ভব নয়, কেননা সবাইতো আর গর্ভে ১০ মাস ১০ দিন পূর্ণ করতে পারেনা। কেউ ১০ দিনে আগেই জন্মায়, কেউ ১ মাস আগেও জন্মায়, আবার দুই মাস আগেও জন্মায়।
গেল প্রজন্ম হয়তো জানতে পারেনি কিন্তু আগামী প্রজন্মকে এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানতে দিতে হবে।
আর কত আমরা ভুল দিনে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাবো? তাই আমার প্রত্যাশা চলুন আমরা সবাই ভুমিষ্টদিনের শুভেচ্ছা জানাই। অন্যকেউ উৎসাহিত করি যেন ভুমিষ্টদিন নয় জন্মদিন কোনটা জানার চেষ্টা করুন।
সকল মা-বাবাদের প্রতি অনুরোধ জানাই, আপনার সন্তানের সঠিক জন্মদিনটা জেনে রাখুন।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×