মাগী শব্দটির আভিধানিক অর্থ যাই হোক আমরা কিন্তু খারাপ ভাবেই ব্যবহার করি। কাউকে অন্তত কেউ আদর করে মাগী ডাকেনা। এক বন্ধুর ফেসবুক স্ট্যাটাস এ কোন এক অমানুষের comment দেখে কথাটা মাথাই আসলো।শেখ সাদি(রহঃ) একটা কথা বলেছিলেন ‘বন্ধুদের সাথে মদের আসরে নাউজুবিল্লাহ বলা যত সহজ,একাকি সময় পাপ থেকে বেঁচে থাকা তার চেয়ে অনেক কঠিন।”আমাদের স্বভাবের সাথেই পুরাই মিলে যায়। দিনের আলোয় সবাই ভাল মানুষ,রাত হলেই পতিতালয়ে।আবার ভোরের আলো ফুটলেই ওই মেয়ে গুলা মাগী হয়ে যায়।ভাই যে মেয়েটা দু মুঠো ভাতের জন্য নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দিচ্ছে তাকে মাগী বলে sunny leone এর মত porn star এর পুজা করা কেমন মানসিকতা রে???আমাকে কেউ কি খুলে বলবেন।আমার ক্ষুদ্র মাথাই ধরেনারে ভাই।একটা বাক্তিগত অভিজ্ঞতা
থেকে কাহিনী বলছি।আমার চাচাত ভাইয়ের বিয়ে থেকে রাত ১২ টাই বাসায় ফিরছিলাম।স্থান মিরপুর ১ মুক্তিযোদ্ধা সুপার মার্কেট এর অইখানে।দেখি একটা বাচ্চা মেয়ে বয়স খুব হলে ১২ কি ১৩।দেখেই বুঝলাম রূপবজীবীনি(পতিতা শব্দটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হইনা) কারন সে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে। বাচ্চাটাকে ডাক দিলাম।বললাম কি নাম তোমার।ধরি নামটা আশা।
আমিঃআশা তুমি কি কর?এত রাতে এখানে কেন?
আশাঃsir আমিতো দেহ বেইচা খায়।এক বার ২০ টাকা।
আমিঃsir bola lagbena vaia bolo.তোমার সাথে কিছুক্ষন গল্প করা যাবে।
আশাঃvai গল্প করলে পেট চলব কেমনে।customer না পাইলে কাইলকা না খাইয়া থাকতে হইব।
আমিঃসারা রাত এ তুমি কয়বার এমন কর।
আশাঃ৬-৭ বার।
আমিঃঠিক আছে ১০০ টাকা রাখ তুমি কিছুক্ষন গল্প করবো তোমার সাথে।তুমি এতো কিছু থাকতে কেন এ সবে আসলে। তোমার ঘরে কে কে আছে?
আশাঃকেউ নায়। ছোট থেকেই রাস্তাই বড় হইছি।কেও ভাল কোন কাজ দেইনায়।অনেক চেষ্টা করছি ভাল কিছু করার পারি নাই।খিদার জ্বালা বড় জ্বালা ভাই।একটা মেয়ে ভাইয়া খুব ঠেকাই না পড়লে এই রাস্তাই আসেনা।এই রাস্তাই অনেক কষ্ট।
আমিঃতোমার কাস্টমার কারা?তারা তোমার সাথে কেমন আচরণ করে?
আশাঃভাই মোটামুটি সবাই।গাড়িতে করে অনেক বড় লোকও আসে।তবে ভাই মানুষ খুবি খারাপ।খুব খারাপ।কেউ কেউ কইরা টাকা দেয়,আবার কেউ কেউ দেয় না।আমার খুব কষ্ট হয়।ছোট্ট শরীরে সহজে সইতে পারিনা।কিন্তু কি করমু কন কিছুত করার নাই।বাঁচতে তো হইব।
(অনেক কষ্টে অশ্রু সংবরন করতে হল।আরে নরপশুর দল দেখ এরা বাঁচার জন্য এমন করে।তোরা কেমনে এদের মাগী বইলা গালি দেস।পারলে এদেরকে সম্মান কর। না পারলে ঘৃণা করিস না।)
আরও অনেক কথা হইছিল আশার সাথে।কিন্তু লেখার জন্য ছোট করে লেখলাম।ও শেষ যে কথাটা বলেছিল ভাবলেই ছোখে জল চলে আসে।“ভাই জান আমারে দুই বেলা ভাত খাওয়ার বেবস্থা কইরা দিতে পারবেন।আমি সব ছাইড়া দিমু।আমি সব ছাইড়া দিমু”তার অশ্রু সিক্ত কথা গুলো আজও কানে বাজে।আমি পারিনাই।আসার আগে আরেকটা ১০০ টাকার নোট হাতে দিয়া কইছিলাম আমারে মাফ কইরা দিস বইন আমারতো এতো ক্ষমতা নাই।কিন্তু যাদের আছে তাদের মনে যেন একটু ভালবাসার উদ্রেক হয়।আসার আগে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলাম ভাল থাকিস বইন।বুঝেছিলাম তার ফুঁপিয়ে উঠা দেখে জীবনে এই প্রথম সে মানুষের ভালবাসা পাইছে।
সমাজের চোখে আজ সে পতিতা,নষ্টা।কিন্তু যাদের জন্য আজ এই অবস্থা তাদের দিকে যেদিন মানুষ আঙ্গুল তুলে বলবে পতিত,নষ্ট।সেদিন হইত আশার মত আশাহত মেয়েরা আশান্বিত হবে সুন্দর একটা জীবনের আশায়।
(ওই অমানুষটা comment e ওদের মাগী বলে আদর করে ডেকেছিল)
লেখাটা আমার না। আমার এক কুমিল্লা মেডিক্যাল পরুয়া বন্ধু আসিফুর রাহমান আসিফএর লেখা জীবন থেকে নেউয়া গল্পটা হুবুহু কপি পেস্ট মেরে দিলাম..
তার ফেবু Click This Link