আমাদের গ্রামটা চলনবিলের কোন এক ধারে অবস্থিত। আমাদের গ্রামের নাম চরকুশাবাড়ি সবুজ পাড়া। আমাদের গ্রামটা অনেক বড়। আমাদের গ্রামে অনেক পাড়া আছে। আমাদের পাড়ার নাম ভূত পাড়া। আমাদের পাশের পাড়ার নাম সবুজ পাড়া। আমাদের পাড়ার নাম ভূত পাড়া হওয়ার কারন, আমাদের গ্রামে ভূত নিয়ে অনেক ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে থেকে একটি ঘটনা আজ আমি লিখব। আমাদের ভূত পাড়াটি পূর্ব পশ্চিম লম্বা। আমাদের পাড়াটির দৈর্ঘ্য এক কিলোমিটার থেকে একটু বেশি।
আমাদের এই ভূত পাড়াটি একটি রাস্তার দুধারে এপাশ ওপাশ অনেক বাড়ি নিয়ে গঠিত। পাড়াটির সর্ব পশ্চিমে একটি বড় বাগান আছে। বাগানটির নাম মুজোকাজির বাগান। আমাদের গ্রামের দুপাশে দুটি বাজার আছে। একটি বাজারের নাম ধামাইচ বাজার এবং অপরটির নাম নাদোসৈয়দপুর বাজার। সবুজ পাড়া এবং আমাদের পাড়ার লোকজন যদি ধামাইচ বাজারে যেতে চায় তাহলে তাদেরকে এই মুজোকাজির বাগানের কাছ দিয়ে যেতে হয়। অনেক বড় এই মুজোকাজির বাগানে একটা বিশাল শিমুল গাছ ছিল। অনেক গুলো খরের গাছও ছিল এই বাগানে। বাগানের দুপাশে রাস্তায় দুইটা নালা ছিল। এই নালা একপাশের মাঠ থেকে অন্য পাশের মাঠে পানি যেত। এই বাগানে নাকি অনেক গুলো ভূত থাকত। আমাদের গ্রামে মানূষ একটা ভূতকে মুজোকাজি বলে ডাকত। এই ভূতটাই নাকি সবাইকে ভয় দেখাতো। যদি এই ভূত কাউকে ধরত তাহলে আর ছাড়তো না। আমাদের গ্রামে এমন মানুষ নাই যে মুজোকাজি ভূতকে ভয় পায় না। একদিন রাতে আমাদের পাড়ার আছের ধামাইচ হাট থেকে বাঁশ কিনে ফিরছিল। সেদিন খুব বেশি রাত হয় নাই। তারপরও পিছন থেকে আছেরের বাঁশ টেনে ধরছে সেই মুজোকাজি ভূতটি। আছের নাকি অনেক বার বলছে এই আমার বাঁশ ছেরে দে। কিন্তু ভূত তার কথা না শুনে আরো জোরে টেনে ধরে। আছের ছিল অনেক সাহসী। তাই ভূত তার বাঁশ টেনে ধরা সত্তেও, বাঁশ ফেলে দৌড় না দিয়ে সে ভুত সহ টেনে নিয়ে আসতে থাকে। যখন আছের একটা বাড়ির কাছাকাছি আসে তখন নাকি ভূত তার বাঁশ ছেড়ে দেয়। আর অনেক বল দিয়ে টেনে রাখার পর ভূত যখন তার বাঁশ ছেড়ে দেয় তখন আছের দৌড়ে গিয়ে ওই রাস্তার নালার মধ্যে পড়ে যায়। তারপর আছের কোন মতে দৌড় দিয়ে পাশের এক বাড়িতে উঠে তার জীবন বাচাঁয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩৮