-দুনিয়ার স্বরূপ (ইমাম গাজ্জালী (রহ)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
একটা মানুষ গভীর জংগল ধরে হেঁটে যাচ্ছিল। হঠাৎ সে লক্ষ্য করল পেছন থেকে একটা সিংহ তার দিকে তেড়ে আসছে। তাড়া খেয়ে লোকটা ভয়ে দৌড় দেয়া শুরু করল এবং সামনে একটা কূয়া পেয়ে জীবন বাঁচাতে সেটায় ঝাঁপ দিলো। কূয়ার ভিতর পড়ে যেতে যেতে সে কোন রকমে একটা দড়ি ধরে রক্ষা পেল, গাছের শিকড় কূয়ার গায়ে বেড়ে উঠে এই দড়ির মত হয়েছে। দড়িটা ধরতে পেরে লোকটা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল, যাক! এ যাত্রা বোধহয় বাঁচা গেল। কিন্তু যখন মাথা উঁচু করে সে কূয়ার মুখটার দিকে নজর দিল, সে দেখতে পেল সিংহটা কূয়ার মুখ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, আর ঘাড় ঢুকিয়ে কূয়ার ভিতর উঁকি মারছে। সিংহের গর্জন শুনে লোকটা বুঝতে পারল সিংহটা তাকে খাওয়ার জন্য কতটা ব্যগ্র হয়ে আছে।
উপরের দিকে কোন আশা নাই দেখে লোকটা নিচের দিকে তাকালো –আর দেখতে পেল একটা বিষাক্ত কালকাউটে তার ক্ষুধার্ত মুখটা হাঁ করে লোকটার পতনের জন্যই প্রহর গুনছে। লোকটার শিরদাঁড়া শীতল হয়ে গেল, আর সে ভয়ে দড়িটাকে আরো শক্ত করে ধরলো। একটু পরেই কুট কুট শব্দ শুনে লোকটা চমকে উঠল, তাকিয়ে দেখল তার দড়িটা যেখান থেকে ঝুলছে সেখানে দুইটা ইঁদুর, একটা সাদা আরেকটা কালো, তাদের দাঁত দিয়ে কামড়ে দড়িটা কেটে ফেলছে।
উপরে সিংহ, নিচে কালকেউটে, একমাত্র ভরসা দড়ি আর সেটাও কেটে ফেলছে ইঁদুর – ঠিক এই সময়েই লোকটার চোখে পড়ল যে তার হাতের কাছেই একটা মধুর চাক। লোকটা হাত বাড়িয়ে তার আঙ্গুল এর ডগায় করে মধু নিল, তারপর আঙ্গুলটা মুখে নিয়ে চুষতে লাগল। এত্ত সুস্বাদু আর এত্ত মিষ্টি! মুহুর্তের জন্য খাঁটি মধুর মিষ্টি স্বাদ তাকে ভুলিয়ে দিল তার বাস্তবতা – সিংহ, সাপ, ইঁদুর, এমনকী প্রায় ছিড়ে যাওয়া দড়ির কথা।
ইমাম গাজ্জালী (রহ) বলেন, সিংহটা হচ্ছে মৃত্যু যা প্রত্যেকটা মানুষকে প্রতি মুহুর্তে তাড়া করছে; কালকেউটা সাপটা হলো কবর, যার মুখে পড়া থেকে কোন মানুষই বাঁচবে না, সে যদি ভালো মানুষ হয় তার কবরটা হবে বেহেশতের বাগান, আর সে যদি মন্দ মানুষ হয় তবে তার কবরটা হবে জাহান্নামের ভয়ংকর খাদ; দড়িটা হচ্ছে মানুষের জীবন; কালো ইঁদুরটা হলো রাত, সাদা ইঁদুরটা দিন, যারা প্রতি মুহুর্ত কেটে কেটে ছোট করছে আমাদের জীবনকে; মধুর চাকটাই হলো দুনিয়া, মানুষ দুনিয়ার কয়েক মুহুর্তের মিষ্টি স্বাদের ছলনায় ভুলে যায় তার মৃত্যুকে,
ভুলে যায় তার প্রকৃত ঠিকানা কবরকে। সে ভুলে যায় এমন এক দিন আসবে যেদিন কৃতকর্ম নিয়ে তাকে দাঁড়াতে হবে তার সৃষ্টিকর্তার সামনে। এভাবেই দুনিয়া আমাদের সাথে ছলনা করে চলেছে।
-দুনিয়ার স্বরূপ (ইমাম গাজ্জালী (রহ)একটা মানুষ গভীর জংগল ধরে হেঁটে যাচ্ছিল। হঠাৎ সে লক্ষ্য করল পেছন থেকে একটা সিংহ তার দিকে তেড়ে আসছে। তাড়া খেয়ে লোকটা ভয়ে দৌড় দেয়া শুরু করল এবং সামনে একটা কূয়া পেয়ে জীবন বাঁচাতে সেটায় ঝাঁপ দিলো। কূয়ার ভিতর পড়ে যেতে যেতে সে কোন রকমে একটা দড়ি ধরে রক্ষা পেল, গাছের শিকড় কূয়ার গায়ে বেড়ে উঠে এই দড়ির মত হয়েছে। দড়িটা ধরতে পেরে লোকটা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল, যাক! এ যাত্রা বোধহয় বাঁচা গেল। কিন্তু যখন মাথা উঁচু করে সে কূয়ার মুখটার দিকে নজর দিল, সে দেখতে পেল সিংহটা কূয়ার মুখ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, আর ঘাড় ঢুকিয়ে কূয়ার ভিতর উঁকি মারছে। সিংহের গর্জন শুনে লোকটা বুঝতে পারল সিংহটা তাকে খাওয়ার জন্য কতটা ব্যগ্র হয়ে আছে।
উপরের দিকে কোন আশা নাই দেখে লোকটা নিচের দিকে তাকালো –আর দেখতে পেল একটা বিষাক্ত কালকাউটে তার ক্ষুধার্ত মুখটা হাঁ করে লোকটার পতনের জন্যই প্রহর গুনছে। লোকটার শিরদাঁড়া শীতল হয়ে গেল, আর সে ভয়ে দড়িটাকে আরো শক্ত করে ধরলো। একটু পরেই কুট কুট শব্দ শুনে লোকটা চমকে উঠল, তাকিয়ে দেখল তার দড়িটা যেখান থেকে ঝুলছে সেখানে দুইটা ইঁদুর, একটা সাদা আরেকটা কালো, তাদের দাঁত দিয়ে কামড়ে দড়িটা কেটে ফেলছে।
উপরে সিংহ, নিচে কালকেউটে, একমাত্র ভরসা দড়ি আর সেটাও কেটে ফেলছে ইঁদুর – ঠিক এই সময়েই লোকটার চোখে পড়ল যে তার হাতের কাছেই একটা মধুর চাক। লোকটা হাত বাড়িয়ে তার আঙ্গুল এর ডগায় করে মধু নিল, তারপর আঙ্গুলটা মুখে নিয়ে চুষতে লাগল। এত্ত সুস্বাদু আর এত্ত মিষ্টি! মুহুর্তের জন্য খাঁটি মধুর মিষ্টি স্বাদ তাকে ভুলিয়ে দিল তার বাস্তবতা – সিংহ, সাপ, ইঁদুর, এমনকী প্রায় ছিড়ে যাওয়া দড়ির কথা।
ইমাম গাজ্জালী (রহ) বলেন, সিংহটা হচ্ছে মৃত্যু যা প্রত্যেকটা মানুষকে প্রতি মুহুর্তে তাড়া করছে; কালকেউটা সাপটা হলো কবর, যার মুখে পড়া থেকে কোন মানুষই বাঁচবে না, সে যদি ভালো মানুষ হয় তার কবরটা হবে বেহেশতের বাগান, আর সে যদি মন্দ মানুষ হয় তবে তার কবরটা হবে জাহান্নামের ভয়ংকর খাদ; দড়িটা হচ্ছে মানুষের জীবন; কালো ইঁদুরটা হলো রাত, সাদা ইঁদুরটা দিন, যারা প্রতি মুহুর্ত কেটে কেটে ছোট করছে আমাদের জীবনকে; মধুর চাকটাই হলো দুনিয়া, মানুষ দুনিয়ার কয়েক মুহুর্তের মিষ্টি স্বাদের ছলনায় ভুলে যায় তার মৃত্যুকে,
ভুলে যায় তার প্রকৃত ঠিকানা কবরকে। সে ভুলে যায় এমন এক দিন আসবে যেদিন কৃতকর্ম নিয়ে তাকে দাঁড়াতে হবে তার সৃষ্টিকর্তার সামনে। এভাবেই দুনিয়া আমাদের সাথে ছলনা করে চলেছে।
-দুনিয়ার স্বরূপ (ইমাম গাজ্জালী (রহ)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!
রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।
আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!
এই... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঁচতে হয় নিজের কাছে!
চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু। লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা
২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিউ ইয়র্কের পথে.... ২
Almost at half distance, on flight CX830.
পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১
হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন
সামুতে আপনার হিট কত?
প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন