somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গরমের অসুখ-বিসুখ

৩০ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ২:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঋতু পরিবর্তনের সময় সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় সর্দি-কাশি বা কমন কোল্ড। বিশেষ করে শীত আর গরমের শুরুতে তাপমাত্রা পরিবর্তনের সময় এর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।

প্রায়ই দেখা যায়, দুই তিনদিন নাক বন্ধ থাকে বা নাক দিয়ে পানি ঝরে। গলা ব্যথা করে, শুকনো কাশি থাকে, জ্বরও থাকতে পারে। এগুলো বেশিরভাগই ভাইরাসজনিত এবং এন্টিবায়োটিক ছাড়াই ভালো হয়ে যায়, তবে শুকনো কাশিটা কয়েক সপ্তাহ ভোগাতে পারে। ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ, এন্টিহিস্টামিন খেতে হবে।
আর গরম পানিতে গড়গড়া করতে হবে। গরম গরম চা, বা গরম পানিতে আদা, মধু, লেবুর রস, তুলসীপাতার রস ইত্যাদি পান করলে উপকার পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে ভাইরাসের পর পরই ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে। এক্ষেত্রে কাশির সঙ্গে সঙ্গে হলুদ বা সবুজ রংয়ের কফ বের হয়, বুকে ব্যথা করে এবং জ্বর থাকে। এন্টিবায়োটিক প্রয়োজন হয়। আরেকটি ভাইরাস রোগ যাকে বলে সিজনাল ফ্লু, যার লক্ষণ কমন কোল্ডের মতোই। আলাদা কোনো চিকিত্সারও প্রয়োজন হয় না, উপরের কমন কোল্ডের মতোই।


গরম এলে পাতলা পায়খানাজনিত সমস্যাসহ অন্যান্য পেটের পীড়া দেখা দিতে পারে। প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে সঙ্গে পিপাসার কারণে রাস্তাঘাটে পানি বা শরবত খাওয়া আর দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়া খাদ্য গ্রহণ করার ফলে প্রায়ই ডায়রিয়া দেখা দেয়। এমনকি এসব গ্রহণ করার কারণে টাইফয়েড, প্যারাটাইফয়েড, জন্ডিস, সাধারণ আমাশয়, রক্ত আমাশয় ইত্যাদিও হতে পারে। ডায়রিয়ার পাশাপাশি গরমের কারণে পানিস্বল্পতাও এ সময় মারাত্মক হতে পারে।


এই সময়ে আরেকটি ভাইরাস রোগ হতে পারে, তা হল জলবসন্ত। প্রথমে একটু জ্বর-সর্দি, তারপর গায়ে ফোস্কার মতো ছোট ছোট দানা। সঙ্গে থাকে অস্বস্তিকর চুলকানি, ঢোক গিলতে অসুবিধা। গায়ে ব্যথা থাকতে পারে। এটাও কোনো মারাত্মক অসুখ নয়। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল, শরীর চুলকালে এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ, ক্যালামিন লোশন ইত্যাদি ব্যবহার করলেই রোগের প্রকোপ কমে আসবে। আর সংক্রমণ হলে চিকিত্সকের পরামর্শে এন্টিবায়োটিক লাগতে পারে। শিশু-কিশোরদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করতে হবে। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই রোগটি ভালো হয়ে যায়।

কী কী সতর্কতা নেওয়া জরুরি:

ঠাণ্ডাজনিত রোগ শীতেও লাগে, গরমেও লাগে। অতিরিক্ত কাপড়ে ঘেমে ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে, বয়স্ক ও বাচ্চাদের আরও বেশি হয়। ঠাণ্ডা বাতাস এড়িয়ে চলুন। আবার অতিরিক্ত গরমে যাওয়াও এড়িয়ে চলুন। ঘাম হলে মুছে ফেলুন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শীত অতিক্রান্ত হওয়ার পরপরই ঠাণ্ডা পানি বা খাবার খাওয়া, ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করা, ধুলাবালিতে যাওয়া ইত্যাদি পরিহার করলে এসব রোগ থেকে নিরাপদ থাকা সম্ভব। ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত অসুখে আক্রান্ত রোগী থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে হাঁপানি রোগীসহ যারা শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় ভোগেন তারা গরম বাতাস, বাতাসের সঙ্গে ধুলাবালি, শুষ্ক আবহাওয়া ইত্যাদি এড়িয়ে চললে উপকার পাবেন। বাইরে বেরোবেন, নাক ঢেকে ধুলা পরিহার করুন। খেয়াল রাখুন আবহাওয়ার। সে অনুযায়ী কাপড় নিন। খেলাধুলার সময় বিশেষ করে বাচ্চারা যারা স্কুল মাঠে বেশি খেলাধুলায় মত্ত হয় তাদেরকে আরও সতর্ক হতে হবে যাতে ধূলি-বাতাসের স্পর্শ কম হয়।

সবসময় পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে, যেখানে-সেখানে দূষিত পানি বা অন্যান্য পানীয় খাওয়া বর্জন করতে হবে। পানি ও অন্যান্য তরল পান করুন, অন্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি, শুধু যেন হয় বিশুদ্ধ। বিশেষ করে যারা অতিরিক্ত গরম পরিবেশে কাজকর্ম করেন তাদের বেলায় তরল পানীয়ের সঙ্গে লবণ মিশিয়ে নিবেন। এমনকি ওরস্যালাইনও খেতে পারেন। তরল-গরম-টাটকা খাবার সব সময়ই ভালো। গরম পানিতে মধু আর গরম লেবু-চা পান করতে পারেন।
মনে রাখতে হবে জ্বর যদি বেশিদিন থাকে, কাশি যদি দুই সপ্তাহের বেশি হয়, সর্দি যদি না-ই সারে, তবে চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে। অযথা অবহেলা করলে অসুখ জটিল হয়ে যেতে পারে, অথবা খারাপ রোগেও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
ঋতু পরিবর্তন চিরন্তন। শীত যাবে, বসন্ত আসবে। গাছে গাছে নতুন পাতা গজাবে, ফুলে ফুলে ভরে উঠবে শাখা-প্রশাখা। সময়ের সঙ্গে আসবে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরত্, হেমন্ত। প্রকৃতি সেজে উঠবে অপরূপ সাজে। আর এর সঙ্গে একেক সময় একেক রোগব্যাধির প্রকোপ হতে থাকবে। সেই অনুযায়ী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েই চলতে হবে। মনে রাখতে হবে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম।

কিছু সতর্কতা:

ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত অসুখে আক্রান্ত
রোগী থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে হাঁপানি রোগীসহ যারা শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় ভোগেন তারা গরম বাতাস, বাতাসের সঙ্গে ধুলাবালি, শুষ্ক আবহাওয়া ইত্যাদি এড়িয়ে চললে উপকার পাবেন। বাইরে বেরোলে, নাক ঢেকে ধুলা পরিহার করুন। খেয়াল রাখুন আবহাওয়ার। সে অনুযায়ী কাপড় নিন।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×