somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হ্যামিলনের মাষ্টার মাইন্ড

৩০ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সে প্রায় অনেক বছর আগের কথা।বিশ্বের বুকে জন্ম নিয়েছিল হ্যামিলন নামের একটি রাষ্ট্র।যদিও এর নাম আগে হ্যামিলন ছিল না , এটি ছিল ইষ্ট এবং ওয়েষ্ট হ্যামিলন নামের দুটি একত্রিত রাষ্ট্র যেখানে ওয়েষ্ট ইষ্টের উপর কর্তৃত্ব দেখাতো।একদিন ইষ্ট হ্যামিলনের শান্তিপ্রিয় মানুষ তাদের দাবি আদায়ের জন্য ওয়েষ্ট হ্যামিলনের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়।দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর ইষ্ট হ্যামিলন শুধু হ্যামিলন নামে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়ায়।এরপর কিছুদিন এখানকার জনগন বেশ সুখে শান্তিতে ছিল।অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার চাকা প্রতিটি পরিবারের বাড়ির সামনে দিয়ে গড়িয়ে যেতে লাগল।দেশ চালানোর জন্য সেখানে গনতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করা হল।জনগনের মধ্যে প্রভাবশালীরা বিভিন্ন প্রতুশ্রুতি দিয়ে জনগনের ভোট কিনে হ্যামিলনের শাসন ব্যবস্থা নিজেদের দখলে নিয়ে নিল।

কিন্তু আস্তে আস্তে সরকারের কতিপয় নেতাদের মধ্যে দূর্নীতি রোগ ছড়িয়ে পরল।চারিদিকে খুন,ছিনতাই,রাহাজানী ইত্যাদি ছড়িয়ে পরতে লাগল।আজ এ মরে তো কাল সে।নির্বাচনের সময় দেওয়া বিভিন্ন প্রতিশ্রুতির কথা সরকার বেমালুম ভুলে গেল।কিন্তু জনগন নিরুপায়,চোখের সামনে দিয়ে তাদের টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে,লুটেপুটে খাওয়া হচ্ছে।বিরোধীদল চেষ্টা চালিয়ে গেলেও সরকারের ক্ষমতার কাছে মাথা নত করে ফেলেছে সকল চেষ্টা।

ইতোমধ্যে সরকারের বিভিন্ন অপকর্মের কথা জনগনের কাছে জানাতে সোচ্চার হয়ে ওঠে সে দেশের সাংবাদিক মহল।সরকারের একের পর এক অভ্যন্তরিন খবর ফাস হতে থাকে।ওদিকে সরকারও সাংবাদিকদের ঠেকাতে উঠে পড়ে লাগে।শুরু করে গুপ্ত হত্যা।প্রান দিতে হয় দুইজন সাংবাদিককে।
ফুসে ওঠে মিডিয়া।খুনিদের খুজে বের করতে চাপ দিতে থাকে সরকারের উপর।খুনিদের খুজে বের করার আশ্বাস দিয়েও ব্যর্থ হয় সরকার।অতঃপর একদিন-

পত্রিকায় সরকারের একের পর এক অভ্যন্তরিন খবরের ফাস হওয়া দেখে রাগে ক্ষোভে মাটিতে পত্রিকা ছুড়ে ফেললেন প্রধানমন্ত্রি।রিমোট নিয়ে টিভি ওপেন করলেন।টিভিতে খবর হচ্ছে।খবরে বলছে," সাংবাদিক দম্পতির খুনিদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খুজে বের করতে না পারায় কাল সারা হ্যামিলনে হরতালের ডাক দিয়েছে বিরোধীদল।" আরেকটা চ্যানেলে বলছে," শহরে একের পর এক গুপ্ত হত্যায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে জনগন।সেই সাথে শহরে বেড়ে যাচ্ছে চুরি ডাকাতি,গুম হবার মত নানান ঘটনা।এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে দেখা করা হলে তিনি বলেছেন যে দেশের আইন শৃঙ্খলার অবস্থা নাকি আগের যেকোন সময়ের চেয়ে ভাল।" রাগের মাথায় হিন্দি সিরিয়ালের চ্যানেল ধরলেন প্রধানমন্ত্রী এবং মনে মনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে গাল পারলেন।কি দরকার ছিল এই কথাটা বলার।নাহ,এইভাবে আর বসে থাকা যায় না।জনগনের নজর সরাতে হবে।ততক্ষনাত জরুরি মিটিং ডাকলেন প্রধানমন্ত্রী এবং সকল মন্ত্রীদের বলে দিলেন তাদের দলের মাষ্টারমাইন্ডকে ধরে নিয়ে আসতে।অতঃপর-

প্রধানমন্ত্রীঃ মিষ্টার মাষ্টার মাইন্ড,আপনি হয়ত বুঝতে পারছেন আপনাকে এখানে কি জন্য ডাকা হয়েছে।কোন উপায় বের করুন কিভাবে বিরধীদল ও জনগনকে চুপ রাখা যায় তার পাশাপাশি আমাদের একটু সুনামও হয়।

মাষ্টার মাইন্ডঃ নজর সরানো যাবে তবে হারানো সুনাম ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা একটু কঠিন তবে অসম্ভব নয়।কিন্তু ম্যাডাম,এর জন্য আমি কি পাবো?

প্রধানমন্ত্রীঃ শুনলাম তোমার নাকি মন্ত্রী হবার শখ।আমি আবার সবার প্রতিশ্রুতি পূরন করি।যাও,তোমাকে মন্ত্রী করে দিব তোমার পছন্দের কোন মন্ত্রনালয়ে

মাষ্টার মাইন্ড উঠে চলে গেল।পরেরদিন সব টিভি চ্যানেলে খবর বের হল," কোন এক মন্ত্রীর গাড়িতে টাকার বস্তা পাওয়া গেছে কিন্তু মন্ত্রীর অস্বীকার"
খবরটা পরে প্রধানমন্ত্রী তো রাগে ফায়ার।মাষ্টার মাইন্ড এটা কি করল? ডেকে পাঠানো হল তাকে।
প্রধানমন্ত্রীঃ তুমি এটা কি করলা?

মাষ্টার মাইন্ডঃ আরেহ ম্যাডাম একটু ঠান্ডা মাথায় ভাবেন।যে দুইজন সাংবাদিকরে হত্যা করা হয়েছে তাদের খুনিদের ধরা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সবার নজর ওই মন্ত্রীর উপর দিলাম।মন্ত্রী সাহেব তো মাত্র কয়দিন হলেন এসেছেন।তাই তাকে যদি এবার বলে কয়ে কোন ভাবে মন্ত্রীত্ব থেকে সরানো যায় আর তদন্তের নামে পদত্যাদ করানো যায় তাহলে বিরোধীদল যতই চ্যাচাক না কেন সবাই আপনাদেরি ভাল বলবে

প্রধানমন্ত্রীঃ কিন্তু মন্ত্রী যদি শুনতে না চায়?
মাষ্টার মাইন্ডঃ অবশ্যি শুনবে।তাকে না হয় দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হবে ।তারপরও না শুনলে তার ঘাড়েই দোষটা চাপাইয়া দিবেন।
প্রধানমন্ত্রীঃ সাবাস ব্যাটা।খুব ভাল কাজ করেছ।
মাষ্টার মাইন্ডঃ তাহলে এবার ম্যাডাম আমার উপহারটা যেটা আপনি কথা দিয়েছিলেন?
প্রধানমন্ত্রীঃ উপহার দিব বলে কথা দিয়েছিলাম? হেহ,এতগুলা জনগনকে দেওয়া কথাই ভুলে যাই আর তোমার কথা মনে রাখব? যাও যাও,কিছুই পাবে না।তোমাকে যে দলে রেখেছি এটাই অনেক বড় উপহার

মাষ্টার মাইন্ডঃ ঠিক আছে যাচ্ছি আমি।তবে একটা কথা,আমাকে আবার আপনার দরকার হবে কিন্তু তখন আমাকে আর পাবেন না।

পরেরদিনে সকল পত্রিকায় বেরোল," ১৭ এপ্রিল বিরোধীদলের জনৈক নেতাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।এটা সরকারিই করিয়েছে বলে দাব সাধারন মানুষ আর বিরোধীদলের।কঠোর কর্মসূচির ঘোষনা বিরোধীদলের"

মাষ্টার মাইন্ড কিন্তু যে কোন দলের হতে পারে।রাজনীতিবিদদের থেকে বড় মাষ্টার মাইন্ড আর কেউ নেই।ইনিই বা কোন দলের নুন আসলে খান সেটাও কিন্তু তিনি বলে যাননি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×