ব্লগে লেখার ইচ্ছা ছিল, ডোমেইন এক্সপায়র করেছে, তাই এই ব্যবস্থা। যাই হোক, কাজের কথায় আসি, মজিলা বাংলাদেশের সাথে চিটাগাং গিয়েছিলাম গত ১৮ তারিখে। রাত ১১ টার ট্রেন স্বভাবতই আসল ১২ টায়, পৌছালাম পরদিন সকাল ৮ টায়, কোন হোটেলে সিট পাইলামনা, উঠলাম রিলাক্স ইন নামক এক হোটেলে . আমি আশিকুর রহমান নুর ভাই আর শরীফ আহমেদ ভাই। প্রথমেই সবাই ব্যপক ঘুম দিলাম। ঘুম থেকে উঠে চোখ মুছতে মুছতে গেলাম IIUC তে, রাস্তায় ম্যক ভাই আর বাকী দুইজনের সাথে দেখা হল, রাহিদ ভাইয়ের বাসা চিটাগাং এ , সে ট্রেন থেকে নেমে বাসায় গিয়েছিল, সেখান থেকে আসল, IIUC তে লিফট নাই, :'( তবে সিড়িগুলো বেশ ইউজার ফ্রেন্ডলি, আমার সমস্যা হলনা ৬ তলা উঠতে কিন্তু ম্যক ভাইয়ের জন্য খারাপ লাগছিল, অসুস্থ মানুষটা এমনিতেই ঢাকা থেকে জার্নি করে এসেছে, তবে উনিও দেখি আমার আগে উঠে গেল, । অনুষ্ঠানে উপস্থিতি আমাদের ধারনার চেয়ে অনেক বেশী, বেশ আনন্দ লাগছিল, সবার মজিলা আর ফায়ারফক্স ও এস নিয়ে ব্যপক আগ্রহ লক্ষ করলাম। আমি বললাম ওয়েবএপ নিয়ে, আর সবচেয়ে মজা হল, যখন ম্যক ভাই রাস্পবেরী পাই দিয়ে বানানো এফ এম ট্রান্সমিটার দেখালেন, সবাই ১০৩ দশমিক ৩ ফ্রিকুয়েন্সিতে টিউন করার সাথে সাথেই গান বেজে উঠল । অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে ফায়ারফক্সের স্টিকার আর বাটন দেয়া হল, যায়গাটার নাম চকবাজার, পুরান ঢাকারটা না হোক, অন্তত নামের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমরা কিছু ভুরিভোজ করলাম, তারপর হোটেলে ফিরলাম,।
পরদিন অনুষ্ঠান ইস্ট ডেল্টা ইউনিভারসিটিতে, সকালে উঠে নাস্তা করলাম, একটা স্যন্ডেল কিনলাম কত শখ করে, আর নুর ভাই আর শরীফ ভাই ঐটাকে ঔয়াশরুমের স্যন্ডেল বানায়ে ফেলল । দুপুরে গেলাম ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিতে, প্রথমেই কিছু ফ্যকাল্টি মেম্বারের সাথে মিটিং হল, দাইয়ান স্যার, আর তার স্ত্রী, দুইজনই সেখানকার শিক্ষক, তারা অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই আপন করে নিল আমাদের, প্রকৃত সম্মানী মানুষ যে অন্যকেও সম্মান দেয় আবারও সেটার প্রমান পেলাম। তাদের সাথে দুপুরে খেলাম, তারপর কিয়ন ডেমনস্ট্রেশন বুথ বানালাম সবাই মিলে। ৩ টার দিকে মুল অনুষ্ঠান শুরু হল, এই প্রথম কোন পাব্লিক ইভেন্টে পুরুষের চেয়ে মেয়ে পার্টিসিপেন্ট বেশী, তাও আবার IIUC এর, কারন, EDU এর সি এস ই ডিপার্রমেন্টটা একটু বেশীই নতুন। যাইহোক ইহার নাম মেকার পার্টি, (টিভি ঠিক করার মেকার না কিন্তু! ওয়েবমেকার), মেকার পার্টি শেষ হল, ম্যক ভাই এখানেও ১০৩ দশমিক ৩ এফ এম এ গান শুনাইলেন , যদিও বরাবরের মত ঠিক কাজের সময় ইন্টারনেট কই যেন গায়েব হয়ে যাচ্ছিলো। এই ইভেন্টটা বেশী সাকসেসফুল। সবাই বিদায় নিলাম, আমার নুর ভাই আর শরীফ ভাইয়ের কক্সবাজার যাওয়ার কথা ছিল, সেটা সেই রাতের জন্য ক্যনসেল করতে হল, আবার উঠলাম রিলাক্স ইন এ। গুলিস্তানে (হোটেল গুলিস্তানে) ডিনার করলাম, পরদিন সকালে বাসে উঠে কক্সবাজারে দৌড় দিলাম, বাস থেকে নামার পর সি এন জি চালকরা ঘিরে ধরল, একজন অন্যজনের চেয়ে কম দাম বলতে লাগল, আমরা ভাবলাম, বাহ! ভালোতো, এক চাচামিয়া ২০ টাকায় রাজী হল আমাদের বিচে রেখে আসতে!!!! যাই হোক টার্মিনাল থেকে বের হতেই সে বলল মামা, আপনারা যেখানে যাবেন সেখানে হাটু পর্যন্ত কাদা, আমরা বললাম, চলেন, কাদার মধ্যে নামার জন্য আসছি, যেখানে যাচ্ছি তারা পরিচিত। এইবার চাচামিয়া বলে, তাইলে ১০০ টাকা লাগবে। শালার ধান্দাবাজ। কপাল ভালো যে আমার মাথা তখন ফুরফুরা, কিছ না বলে তাকে ছেড়ে দেয়া হল, অন্য একটা সি এন জি ধরে ৫০ টাকায় গেলাম হোটেলে। এইটার নাম এবি গার্ডেন। এখানে ব্যপক অবস্থা চিটাগাং এর হোটেলের চেয়ে ১০০ গুন ভালো, অথচ ঐটার থেকেও সস্তা, অফ সিজনে এসে ভালোই হয়েছে। এখানে আবার কিউবি কাজ করেনা আর বিলাই তো মৃত কয়দিন যাবত, সবার পকেটেই টাকা কম,সাগরের জলে লাফালাফি করে, খাওয়াদাওয়া করে বের হলাম, কক্সবাজার অনলাইন প্রফেশনাল কমিউনিটির সদস্যদের সাথে দেখা করতে। ব্যপারটা হল, মানুষগুলো অনেক ভালো, আড্ডা দিলাম, পরদিন একটা ইভেন্টের দাওয়াড নিলাম, আর সানসেট দেখা মিস করে বাসায় ফিরলাম এবং নুর ভাই আর শরীফ ভাইকে রেখেই ঘুমিয়ে গেলাম, পরদিন সকালে উঠে আবার কিছুক্ষন ভাটির নোনাজলে লাফাইলাম। তারপর সাকিল ভাই আসলেন, আমরা হোটেল থেকে বের হয়ে বিচে গেলাম, আমি সাকিল ভাইয়ের ক্যমেরা দিয়ে অনেকগুলো ছবি তুললাম, আর আমার ওয়াটারপ্রুফ ক্যমেরাতে ওয়াটার ঢুকে মরে গেছে। তারপর মুরগীর ঝোল খেয়ে আমরা গেলাম কক্সবাজার পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে। সেখানে গিয়ে গেস্টের আসনে বসতে হল আমাদের, খুবই অদ্ভুত লাগছিল, আমি মনেভুলে নাক খোচাতে লেগেছিলাম, পরে যখন দেখলাম সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে, আস্তে করে হাতটা সরিয়ে নিলাম। যাইহোক, আইরিন আপু প্রথমে কিছু কথা বলল, সেদিন বলা হয়নি, শারী পড়ে আপুকে বেশ সুন্দর লাগছিল, তারপর সাকিল ভাইয়া কিছু কথা বলল, আর তারপর আমি ওপেনসোর্স নিয়ে কথা বললাম, জানালাকে ওয়াশিং পাউডার দিয়ে ধুইলাম,পাইরেসির ব্যপারে সবাইকে বুঝালাম, বেশ ভালো লাগলো, নুর ভাই মজিলা নিয়ে কথা বললো, তারপর দৌড়ে আসলাম বাস কাউন্টারে বাসের টিকিট কাটাই ছিল, লাফ দিয়ে বাসে উঠলাম এবং দীর্ঘ ১৪ ঘন্টা জার্নি করে ঢাকায় পৌছালাম।
পরিশেষে যাদের নাম না বললেই নয়, ইফতেখার ভাই, EDU এর ভাইয়ার কথা মনে নাই, দাইয়ান স্যার, তার স্ত্রী, সাকিল ভাই, আইরিন আপু, লিটন ভাই, পুরবী ভাবী, ম্যক ভাইয়ের ভাতিজা.....
এবং আরো কিছু মানুষ, হোটেল গুলিস্তানের চা বানায় যেই মামা, এবি গার্ডেনের ভাইয়া, সি বিচ এর লাইফগার্ড, ঝাউবন রেস্তোরার কুক এবং নাম না জানা আরো অনেকে....
Mozilla Rocks
কিছু ছবির লিংক,
Click This Link