অনেক অনেক দিন আগের কথা । আরব দেশে এক রাজা ছিলো । খুব প্রভাবশালী রাজা। তার নাম বাদশা দাউদ (আঃ)।অনেক গুন ছিলো তার ।সে যেমন ছিলো সৎ তেমনি ন্যায় পরায়ন।তার রাজ্যে কোনো অন্যায় অবিচার হওয়ার উপায় ছিলো না।
এই জন্য দুষ্টু প্রকৃতির লোকেরা সব সময় ভয়ে জড় সড় হয়ে থাকতো । সহজে কেউ খারাপ কাজ করতে পারত না।আর করলেও ধরা পড়লে তার কঠিন শাস্তি হতো।
অথচ তখন মানুষ এত শিক্ষিত ছিলো না।এত ঘন ঘন স্কুল ছিলো না। মক্তব মাদরাসা ছিলো না। ট্রেন ছিলো না, ট্রাক ছিলো না । এমনকি এমনকি এ্যারোপ্লেনও ছিলো না। এক স্হান থেকে অন্য স্হানে যেতে হলে গরুর গাড়ি,ঘোড়ার গাড়ি,মোষের গাড়িতে চেপে যেতো । আর না হলে ঘোড়ার পিঠে, উটের পিঠে চড়টে হোতো । রাজা বাদশারা হাতির পিঠেও চড়তো।
এমনি সময়েও বাদশা দাউদের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিলো সারা পৃথিবীতে।তার মহত্বের কথা, ন্যায়পরায়নতার কথা,দানশীলতার কথা মানুষের মুখে মুখে প্রচারিত হতো গল্প গাঁথার মতো।
বাদশা দাউদের অনেক গুলো ছেলে ছিল ।সব চেয়ে ছোট ছেলের নাম ছিলো সোলায়মান।সোলায়মান দেখতে যেমন সুন্দর ছিলো, তেমনি সুন্দর ছিল তার আচার ব্যবহার। সে কাউকে কখনো কষ্ট দিতে পারতো না। বরং যদি কেউ তাকে তাদের দু্ঃখ কষ্টের কথা জানাতো তাহলে সে তাদের উপকার করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তো ।চেষ্টা করতো তাকে সাহায্য করার জন্য ।
এই সব কারণে বাদশা দাউদের সঙ্গে তার ছেলে সোলায়মানের ও খুব নাম-খ্যাতি হয়েছিলো।সোলায়মান ছোট বেলা থেকেই জ্ঞান সাধনায় নিজেকে নিয়োগ করেছিলো।ফলে সে অল্প বয়সেই অনেক কিছু শিখেছিলো।
বাদশা দাউদ বুড়ো হয়ে গেছে।তার মাথার চুল পেকে শনপাটের আঁশের মতো সাদা হয়ে গেছে। গায়ের চামড়া ঝুলে গেছে ।গায়ের শক্তিও কমে গেছে ।মানুষ বুড়ো হয়ে গেলে যা হয়।তখন তার কেবল মৃত্যুর কথা মনে হতে থাকে।বাদশা দাউদের সেই অবস্থা হলো।কেবলই তার মনে হতে লাগলো ,আর কদিন পরেই তো সে মারা যাবে। আর মরে যাওয়ার পর তার এই বিশাল সাম্রাজ্যের কি অবস্থা কি হবে।কে বসবে সিংহাসনে ?
উত্তরাধিকারী নিয়ম অনুযায়ী তার বড় ছেলেই সিংহাসনে বসবে।কিন্তু বাদশা দাউদের বড় ছেলের উপর একটু ও ভরসা নেই। দেশ শাসন করতে গেলে ,রাজকার্য পরিচালনা করতে গেলে যে সব গুন থাকার দরকার হয় ,বড় ছেলের মধ্যে তার কিছুই নেই। শুধু বড় ছেলে কেনো, মেজো, সেজো, নোয়া, ফুল কোনো ছেলেই তার দৃষ্টিতে সিংহাসনে বসার উপযুক্ত নয়, একমাত্র সোলায়মান ছাড়া।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১:৩৫