লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বহুল আলোচিত দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার তিস্তা নদী থেকে পাথর তোলার সময় কয়লাসদৃশ বস্তু উঠে এসেছে। এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, এগুলো কয়লা। ওই স্থানে কয়লার বিশাল মজুদ রয়েছে বলে তাঁরা ধারণা করছেন।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) স্থানীয় ক্যাম্পের কমান্ডার ও জনপ্রতিনিধিরা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ ব্যাপারে শিগগির জরিপ চালানোর কথা বলেছে স্থানীয় প্রশাসন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দহগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর সর্দারপাড়া এলাকায় চরে অবৈধভাবে বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। ২৩ এপ্রিল পাথর উত্তোলনের সময় দুই ব্যক্তির মেশিনে পাথরের সঙ্গে ছোট-বড় কয়লার টুকরা উঠে আসে। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক মানুষ সেখানে ভিড় জমায়। দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমিও কয়লা ওঠার খবর শুনে মেশিনের কাছে গিয়ে দেখি, সত্যিই পাথরের সঙ্গে কয়লাসদৃশ বস্তু উঠে আসছে। টুকরাগুলো ভাঙলে চিকচিক করছিল। আমার কাছে মনে হয়েছে, এটি খুব উন্নতমানের কয়লা।’
২৪ এপ্রিল সরেজমিনে দেখা যায়, তিস্তা নদীর তীরে যে দুটি মেশিনের সাহায্যে কয়লাগুলো উঠছিল, এর একটি ইতিমধ্যে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে গেছেন মালিক। অপরটি বসিয়ে রাখা হয়েছে। মেশিন শ্রমিক হামিদুল ইসলাম জানান, বিজিবি এসে মেশিন চালানো বন্ধ করে দেওয়ায় তাঁরা তা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রত্যক্ষদর্শী তিস্তাপারের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন জানান, প্রায় এক কেজি ওজনের একটি কয়লার টুকরা তিনি নিজের কাছে রেখেছেন। সেটি দেখিয়ে তিনি বলেন, পাথর তোলার সময় মাত্র ২০-২৫ ফুট নিচ থেকে এটি উঠে এসেছে। এ রকম আরও অনেক টুকরা পাওয়া গেছে।
দহগ্রাম ইউপির চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’ লালমনিরহাট ৩১ ব্যাটালিয়নের দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েক সুবেদার শাহ আলম জানান, খবর পেয়ে সেখানে তাঁদের লোক গিয়েছিলেন। তাঁরা কয়লার কয়েকটি টুকরা নিয়ে এসেছেন।
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হায়াত মো. রহমতুল্লা বলেন, ‘আমাকে দহগ্রাম ইউপির চেয়ারম্যান বিষয়টি জানিয়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব এ ব্যাপারে তদন্ত করে সার্বিক বিষয় খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে। যাতে তারা জরিপ করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারে।’
সূত্র: প্রথম-আলো.কম