গৌড় রাজার দেশে-১ (সোনা মসজিদ)
গৌড় রাজার দেশে-২ (তহখানা ও মাজার)
মেজাজটা খুব খারাপ ,ৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎৎ ছবিসহ পুরো পোষ্ট শেষ করার পর নেট কানেকশন চলে গেল । ড্রাফট না করার ফলে কয়েকঘন্টার কষ্ট একটি ক্লিক এ শেষ হয়ে গেল।
যেভাবে লিখেছিলাম সেভাবে হবে বলে মনে হয়। লিখার কষ্ট খুব ভালভাবে অনুভব করছি। যেভাবে লিখেছিলাম সেভাবে হবে কিনা বুঝতে পারছি না।
ব্লগার বন্ধুরা কি বিরক্ত হচ্ছেন ?????
দেশের পশ্চিমের জেলাটা ঘুরে ভালো লেগেছিলো বলে আপনাদের বার সেখানে ফিরিয়ে নিচ্ছি।
আগের দুই পোষ্টে সোনা মসজিদ আর তহখানার বিবরণ দিয়েছিলাম এবার আরো দুটি প্রাচীন স্থাপত্যের সৌন্দর্য্য তুলে ধরবো আপনাদের কাছে।
নির্দেশনা এখানে দেয়া আছে ............ কোন পথে যাবেন আপনি....
স্থল বন্দরের দিকে অগ্রসর হলে রাস্তার পাশের সাইনবোর্ড দারাজবাড়ীর পথ দেখিয়ে দিলো। কিন্তু ইতিমধ্যে পাথর ধূলাবালিতে মোটামুটি একাকার হয়ে গিয়েছি আমরা সকলে । সাইনবোর্ডের কাছে বৃষ্টির পানিতে ভরপুর থাকায় বেশ কিছুটা ঘুরে কাদা পানি পেরিয়ে গিয়ে উঠলাম দারাসবাড়ি মসজিদের নিকটে।
প্রাচীন স্থাপত্যটি এখনো দাড়িয়ে আর শক্তি নিয়ে
আহ কি চমৎকার । পুকুর পাড়ে দাড়িয়ে আছে ৫০০ বছর পূর্বের প্রাচীন ইমারত। এর ইতিহাস জানার মতো কোন কিছু পেলাম না, পেলাম না কোন স্থানীয় মানুষ যার কাছে জানবো এর ঐতিহ্য ।
বেশ কিছু ছবি তুলে চলে আসার মূহুর্তে সেখানে এসে হাজির হলো স্থানীয় একজন মানুষ। যার নিকট কিছুটা জানলাম এর ইতিহাস। একসময় এ মসজিদ ছিলো এ এলাকার প্রানকেন্দ্র। সময়ের ব্যবধানে এক ভূমিকম্পে তা ধ্বংস হয়। তার কথা আমাদের একমাত্র ভরসা।ইতিহাস জানতে সার্চ দিলাম গুগলে কিন্তু গুগল কিছুই বললো না ফলে বিস্তারিত জানার সুযোগ পেলাম না।
মসজিদের ভিতরের দেয়ালে এরকম অনেকগুলো কারুকাজ রয়েছে
ধ্বংসপ্রাপ্ত ভেতরের পিলার দেখলে অনুমান করা যায় কতটা মজবুত ছিলো এর ইমারত
বিশাল মসজিদের এক পাশ খেকে আরেকপাশ পর্যন্ত কেমন লাগছে আপনারাই বলুন?
স্থানীয় লোকটির দেখানো পথ দিয়ে তার সাথে কথা বলতে বলতে হেটে চলে আসলাম দারাসবাড়ি মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে। ১৫০৪ সালে নির্মিত এ প্রতিষ্ঠানটি যে এ এলাকার জন্য জ্ঞানের ভান্ডার খুলে দিয়েছিলো তা এর আয়তন , স্থাপত্যগুলো দেখলেই অনুমান করা যে কারো পক্ষে সম্ভব।
দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে পুরাতন নিদর্শন বহন করছে এ পরিত্যক্ত প্রতিষ্ঠানটি
এরকম অসংখ্য কামরা রয়েছে পরিত্যক্ত মাদ্রাসা জুড়ে
প্রত্মতত্ত্ব বিভাগ থেকে দারাসবাড়ির সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হয়ে এখানে
বিবরণে যা বলা আছে.........................
দারাসবাড়ি মাদ্রাসা
দারাসবাড়ি মসজিদের ১৫০মি. পূর্বদিকে দারাসবাড়ি মাদ্রাসা অবস্থিত। এ ঐতিহাসিক স্থাপনার বর্গাকার(৫১-৫২) মি.) পরিকল্পনায় নির্মিত । এ স্থাপনার মাঝামাঝি অংশে ৩৭.৫০মি. পরিমাপের বর্গাকার চত্বরের পশ্চিম বাহু ব্যতীত অপর তিন বাহুতে এক সারি করে প্রকোষ্ঠ এবং তিন বাহুর মধ্যবতী স্থানে একটি করে প্রবেশ পথ রয়েছে। পশ্চিম বাহুর মধ্যবর্তী স্থানে পাশাপাশি তিনটি সালাতকোঠা আছে । সালাতকোঠার পশ্চিম দেওয়ালে তিনটি অবতল মেহরাব আছে।
শোভাবর্ধক পোড়ামাটির ফলক ও নকশা ট দ্বারা দেয়ালগুলো অংলকৃত । সম্ভবত এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন মাদ্রাসার নিদর্শন।
এখানে প্রাপ্ত একটি শিলালিপির পাঠোদ্ধার থেকে জানা যায় , এটি খ্রি: ১৫০৪ সালে সুলতাল আলাউদ্দীন হোসেন শাহ –এর শাসনামলে নির্মিত হয়।
দারাসবাড়ি মসজিদ ও মাদ্রাসা দর্শন শেষ করে আম বাগানের মাঝে পুকুর পাড়ে বানানো মাঁচার উপরে বসে কিছুক্ষনের জন্য বিশ্রাম নিয়ে রওয়ানা হলাম স্থল বন্দরের দিকে।
স্থল বন্দর নিয়ে আগামী পোস্ট দেয়ার চিন্তা রয়েছে সেজন্য রাস্তাটা একটু অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিলাম। স্থল বন্দরের পাশ দিয়ে গ্রামের দিকে চলে যাওয়া রাস্তা ধরে এগিয়ে গেলাম কিছুটা। সামনে পড়লো খানিয়া দীঘির মসজিদের সাইনবোর্ড। আর সামনে এগুতে হলো না ..................... ডান দিকে বাগানের ভিতর দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তায় নেমে গেল আমাদের মটর সাইকেল।
আর সামনে যাওয়া চলবে না , বন্দরের উচু দেয়ালের পাশে সাইনবোর্ড দেখে ডানে চলে যেতে হবে
সামনে গেলে পড়লো বিশাল খানিয়া দীঘি
দীঘিতে কিছু লোক গোসল করছে কেউ আবার মাছ ধরছে কেউ আবার দীঘির পাড়ে বসে আড্ডা দিচ্ছে
বিশাল খানিয়া দীঘি, কিন্তু তা কত বছর পুরানো তা জানাতে পারলাম না।
পুকুর থেকে গেলাম মসজিদের দিকে
বাংলাদেশে পুরাতন মসজিদগুলোর একটি সম্ভবত এটি। দীঘির নামে নামকরণ হয়ে মসজিদের । কিন্তু কেন হয়েছে তা জানার উপায় আমাদের ছিলো না।
মসজিদের একপাশের মজবুত মিম্বার বা পিলার। কয়েকশ বছরের যা পুরাতন হয়নি
মসজিদের বাহিরের দেয়ালে অসাধারণ কারুকার্য খচিত। এখনো তার সৌন্দর্য্য ধরে রেখেছে ।
অন্য পাশ থেকে খানিয়া দীঘি মসজিদ
আমরা যখন গেলাম তখন মসজিদের ইমাম বা মুয়াজ্জিন এবং একজন বয়স্ক খাদেম দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন মসজিদের বাহিরে বসে। তাদের নিকট থেকে যা শুনলাম তাতে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা হয় ১৪৮৫ সালে। জোহরের নামাজ শেষ করে ফেরার রাস্তা ধরলাম। তখনো মধ্যপ্রাচ্যে কোন কিছু দেয়া হয়নি অত:এব আর না।
যারা ইতিহাসকে জানতে ভালবাসেন বা যার ইতিহাস ও প্রত্মতত্ত্ব বিভাগে পড়াশুনা করেন তাদের এসব স্থানে যাওয়া উচিৎ। যারা যাবেন আমের দিনে যাবেন............. তাহলে আম খাওয়া হবে আবার ঘুড়াও হবে।
আজ আর না , আগামী পর্বে দেশের ২য় বৃহত্তম স্থল বন্দর সোনা মসজিদ বন্দর নিয়ে পোষ্ট দিবো । ভালো লাগলে মন্তব্য করবেন এবং ভাল লাগা দিয়ে উৎসাহিত করবেন।
সকলে ভালো থাকবেন। অনেক ধন্যবাদ।