somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খুলনা সদর থানা অ্যাকশন, দশ বছরের শিশুকে থানার ভেতরে বৈদ্যুতিক শক দিয়েছিলেন খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে মামলা হয়। এবার তিনি থানার ভেতরে ছাত্রনেতাকে ঝুলিয়ে পিটিয়েছেন। রোববার বিএনপির ডাকা হরতাল চলাকালে খুলনা সদর থানায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
ওসির এ ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ডের ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সংবাদকর্মীদের সঙ্গেও তিনি ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। পরে ব্যস্ত হয়ে পড়েন অপকর্মের ঘটনা ধামাচাপা দিতে।

শুধু তাই নয়; ওসি কামরুজ্জামানের অতি উৎসাহে হরতাল চলাকালে বেপরোয়া হয়ে ওঠে পুলিশের অন্য সদস্যরাও। সকাল থেকেই নগরীতে বিএনপি নেতাকর্মীদের রাস্তায় নামতে না দেওয়া, দলীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখা, ফুটপাত থেকে নারী কর্মীদের পোশাক ছিড়ে লাঞ্ছিত করে গ্রেফতারসহ মারমুখী ভূমিকায় ছিল পুলিশ। এসময় ১৭ জনকে আটকও করা হয়।

হরতালের সময় কাফনের কাপড় পরে বিএনপি মিছিল বের করে। এসময় ওসি কামরুজ্জামান সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুর কাফনের কাপড় খুলে নেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্র জানায়, নগরীর টুটপাড়া এলাকার বাসিন্দা এসএম ইমদাদুল হকের ছেলে সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএম মাহামুদুল হক টিটো রোববার সকাল ১০টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে পিটিআই মোড়ে আসেন।

এসময় টিটো ও সরকারি আযম খান কমার্স কলেজের ছাত্র ফেরদাউসুর রহমান মুন্নাকে সদর থানা পুলিশ আটক করে। থানায় নিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় তলায় ছাদের হুকের সঙ্গে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে টিটোকে অমানুষিক নির্যাতন করেন ওসি কামরুজ্জামান। এসময় মুন্নাকেও চোখ বেঁধে মারপিট করা হয়।

ঘটনার সময় থানায় উপস্থিত সংবাদকর্মীরা জানান, নির্যাতনের ফলে টিটো কয়েকবার অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তার চিৎকারে সাংবাদিকরা সেখানে জড়ো হলে ওসি তাদের ধমক দিয়ে বের করে দেন। সংবাদ কর্মীদের দায়িত্ব পালনে বাধা দেন।

ওই নির্যাতনের ছবি সাংবাদিকরা তুললে তিনি তা প্রকাশ না করার জন্য থানার একাধিক এসআইকে বিষয়টি ম্যানেজের দায়িত্ব দেন। কিন্তু ঘটনার কিছু সময় পরই ওসির ওই জঘন্য কর্মকাণ্ডের ছবি ও প্রতিবেদন ‘অ্যাকশন, ওসি স্টাইল’ শিরোনামে বাংলানিউজে প্রকাশ হয়। কিছু সময়ের মধ্যেই সারাবিশ্বের মানুষ এ অমানবিক আচরণের বিষয়টি দেখতে পায়।

এ ব্যাপারে ওসি এসএম কামরুজ্জামান নিজের পক্ষে সাফাই গেয়ে বাংলানিউজকে জানান, থানার মধ্যে ঝুলিয়ে কোনো ছাত্রকে নির্যাতন করা হয়নি। ঘটনার ছবি আছে মনে করিয়ে দিলে তিনি বলেন, ‘ছবি থাকতে পারে। তবে আমি এ ঘটনা ঘটাইনি’।

পরে তিনি একাধিক সাংবাদিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ছবি ও ফুটেজ যাতে কোনো মিডিয়ায় না আসে সে ব্যাপারে তদবির করেন।

এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সফিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনা শুনে বাংলানিউজকে বলেন, ‘থানার ভেতরে কোনো ব্যক্তিকে ঝুলিয়ে পেটানোর এখতিয়ার পুলিশের নেই। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরো খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ দিদারুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘থানায় আটক করে মাহামুদুল হক টিটোকে ওসি যে নির্যাতন করেছেন, তাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায় বিচারের দাবি জানান।’

এই সেই ওসি
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১২ এপ্রিল খুলনা মহানগরীর নিরালা এলাকার ১০ বছরের শিশু বেলালকে রড চুরির অভিযোগে থানায় বৈদ্যুতিক শক দেন ওসি কামরুজ্জামান। এতে শিশুটি অজ্ঞান হয়ে যায়।

কামরুজ্জামানের পৈশাচিক আচরণের খবর সারাদেশের সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তাবয়ন সংস্থার মহাসচিব সিগমা হুদা ওসির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করেন।

ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে এসআই মনিরুজ্জামানকে খুলনার অপর একটি থানায় বদলি করা হলেও খুঁটির জোরে এখনও সদর থানায় বহাল তবিয়নে আছেন ওসি কামরুজ্জামান। তার খুঁটির জোর কোথায় সেটি নিয়েই নগরীতে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১২
প্রতিবেদন: মাহবুবুর রহমান
সম্পাদনা: রোকনুল ইসলাম কাফী, নিউজরুম এডিটর
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১:৫০
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×