somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাজীর গরু কাগজে আছে গোয়ালে নাই। মশা মারার জন্য ১৭ কোটি টাকার ওষুধ কিনলেও কোথাও চোখে পড়ে না ওষুধ ছিটানোর দৃশ্য !! দুর্নীতি আজ চরমে, দেশটাকে যেন চুষে খাওয়া হচ্ছে!!

২২ শে এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাজধানীতে মশা নিধনের পিছনে খরচ ঠিকই বাড়ছে। কিন্তু উত্পাত কমছে না। বরং দিন দিন পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে। আবদ্ধ ডোবানালা ও ড্রেনগুলোয় মশার বিস্তার বেড়েই চলেছে। অথচ ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিসিসি) বিপুল বাজেট থাকলেও মশা নিধনে নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয়ের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে না। নগরীর কোথাও ঠিকমতো ছিটানো হচ্ছে না মশা মারার ওষুধ। ডিসিসি দুই ভাগ হওয়ায় নিধন কার্যক্রম এলোমেলো হয়ে গেছে বলে স্বীকার করেছেন এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।

অভিযোগ রয়েছে, মশা নিয়ন্ত্রণে প্রতি বছর যে পরিমাণ বাজেট থাকে তার যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। মশা নিধনের নামে চলছে লুটপাট। মশার ওষুধে পাওয়া যাচ্ছে ভেজাল। আবার যে পরিমাণ ওষুধ কেনা হয়, তার যত্সামান্যই ছিটানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন ইত্তেফাককে বলেন, ‘ওষুধ ছিটানো হচ্ছে না—তা ঠিক নয়। মশা নিয়ন্ত্রণ করতে ডিসিসির কাছে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ রয়েছে। এসব ওষুধ প্রতিদিনই রুটিনমাফিক ছিটানো হচ্ছে।’ এ বিষয়ে চেষ্টা করেও ডিসিসি উত্তরের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নূরুন্নবীর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, খাতা-কলমে মশা নিধনের ওষুধ ছিটানোর কথা বলা হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে মশা নিধক কার্যক্রমে। তার বিপরীতে ফলাফল একেবারেই শূন্য।

ডিসিসির হিসাব শাখা থেকে জানা গেছে, ২০১১-১২ অর্থ বছরে রাজধানীর মশক নিধনে বাজেট ধরা হয়েছে ১৭ কোটি টাকা। ২০১০-১১ অর্থ বছরে বাজেট ছিল ১৪ কোটি টাকা। ২০০৭-০৮ অর্থ বছরে ১৩ কোটি, ২০০৬-০৭ অর্থ বছরে ১৩ কোটি, ২০০৫-০৬ অর্থ বছরে ১৩ কোটি, ২০০৪-০৫ অর্থ বছরে ১২ কোটি, ২০০৩-০৪ অর্থ বছরে ১৩ কোটি এবং ২০০০-২০০২ অর্থ বছরে বাজেট ছিল ১২ কোটি টাকার বেশি। ওষুধ কেনার ব্যয় বিবরণীতে উল্লেখ রয়েছে গত ২০১০-১১ এবং ২০০৯-১০ অর্থ বছরে মশার ওষুধ কেনার জন্য সিটি করপোরেশন মোট ব্যয় করেছে ১১ কোটি ৬০ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

গত দুই অর্থ বছরে উড়ন্ত বা বয়স্ক মশা নিধনের (অ্যাডাল্টিসাইড) ওষুধ কিনতে ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) অতিরিক্ত ৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয় করে। সিটি করপোরেশন দীর্ঘ সময় ধরে অ্যাডাল্টিসাইড কিনছে। এতে মূল কীটনাশকের সঙ্গে প্রয়োজন অনুসারে ডিজেল কিংবা কেরোসিন মেশানো থাকে। ডিজেল কিংবা কেরোসিন মেশানোসহ এ কীটনাশকের বাজারমূল্য ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। বর্তমানে ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৬১ টাকা। প্রতি লিটার মূল কীটনাশকের বাজারমূল্য ২ হাজার টাকা। ২০ লিটার ডিজেলের সঙ্গে ১ লিটার কীটনাশক মিশিয়ে ২১ লিটার ওষুধ তৈরি করলে প্রতি লিটারের মূল্য দাঁড়ায় ১ থেকে দেড়শ টাকা। অর্থাত্ দেড়শ টাকা দরে যে ওষুধ কেনা সম্ভব ঢাকা সিটি করপোরেশন ‘রেডি ফর ইউজ’ কীটনাশক ক্রয় করে প্রতি লিটার ৩৪৫ থেকে ৩৪৯ টাকা লিটার দরে। ফলে দুই বছরে মশার ওষুধ কিনতে ব্যয় হওয়ার কথা ৫ কোটি টাকা। সেখানে ঢাকা সিটি করপোরেশন ব্যয় করেছে ১১ কোটি ৬০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এভাবে প্রতি বছরই কোটি কোটি টাকা কীটনাশক ক্রয়ের নামে অপচয় করছে ডিসিসি।

বিশেষজ্ঞ কমিটি বরাবরই ‘সংরক্ষণের জটিলতা’ দেখিয়ে রেডি ফর ইউজ কেনার সুপারিশ করে আসছে। সেই সুযোগে সিটি করপোরেশনের ভাণ্ডার বিভাগ এই ব্যয়বহুল ওষুধ ক্রয় করে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে কীটনাশকগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগানো গেলে নগরবাসীকে মশার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়া সম্ভব। এজন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তিদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

ভাগের ফাঁদে মশক নিধন কার্যক্রম

মশা নিধনে ক্রয় করা পুরনো ৫০ হাজার লিটার ওষুধ দুই সিটি করপোরেশনকে ভাগ করে দেয়া হয়েছে। তা দিয়ে বর্তমানে দুই ডিসিসির কাজ চলছে। ডিসিসি দক্ষিণের এক কর্মকর্তা ইত্তেফাককে বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার মশার উত্পাত বেশি। কারণ সময়মত ওষুধ ছিটানো হয়নি। কারণ হিসেবে ডিসিসির দুই ভাগে ভাগ হওয়াকে উল্লেখ করেন তিনি। তার মতে বিভক্তির কারণে সবকিছু একটু এলোমেলো হয়ে গেছে।

মশার উত্পাতে অতিষ্ঠ নগরবাসী

মশার উত্পাতে রাজধানীবাসী অতিষ্ঠ। ঘিঞ্জি পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে অভিজাত এলাকার বাসাবাড়ি, অফিস, স্কুল-কলেজ, দোকানপাট সবখানে মশারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। যদিও ডিসিসি কর্তৃপক্ষ বলছে, নগরীতে উড়ন্ত মশা মারতে বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু হয়েছে।

ধানমণ্ডি, গুলশান, বারিধারা, বনানী, সায়েদাবাদ, শাহজাহানপুর, আজিমপুর, লালবাগ ও বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকা, যাত্রাবাড়ী, ওয়াপদা কলোনি, বিবির বাগিচা, জুরাইন, গেণ্ডারিয়ার ডিআইটি প্লট, ধুপখোলা, ধলপুর, মানিকনগর, বাসাবো, গোড়ান, রামপুরা, আফতাবনগর, আনন্দনগর, মধ্যবাড্ডা, মিরপুর, মিরপুর পাইকপাড়া, রূপনগর, গুলশান লেক সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ। পল্টন, মতিঝিল, গোপীবাগ, পুরান ঢাকা, লক্ষ্মীবাজার, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, সদরঘাট, এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও মশার উপদ্রব আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।

আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও উত্পাত

ভিআইপি জোনখ্যাত হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও মশার একই রকম উপদ্রব চলছে। বিমানবন্দরের ভেতরে মশার উত্পাতের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। তারা বলেন, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশার এ রকম উত্পাত কল্পনা করা যায় না।

দাম বেড়েছে নিধন সামগ্রীর

এদিকে মশার উত্পাত বেড়ে যাওয়ায় কয়েল, স্প্রে, মশক নিধন ইলেকট্রনিক র্যাকেটের দামও আগের তুলনায় বেড়েছে। ৫ টাকার কয়েল বিক্রি হচ্ছে ৮ টাকায়। ২৫০ টাকার র্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়।

সূত্র: ইত্তেফাক

১‍২‍‍-১৩ বছর আগের কথা, চোখের সামনে দেখা যেত মশার ওষুধ ছিটাতে, আনাচে কানাচে ফট ফট করে মেশিনের শব্দ, মাঝে মাঝে ৫ টাকা ধরিয়ে দিয়ে ঘরের মধ্যেও ছিটিয়ে নিতাম। আজ সেই দৃ্শ্য চোখে পড়ে না অথচ দুর্নীতি বাজদের পকেটে চলে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। আমাদেরকি কিছু করার নাই!!

১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×