somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লেখালেখির ভুত

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্লাস ফোর কি ফাইভে পড়ি তখন। ঐ সময়টাতে খুব বেশি তিন গোয়েন্দার বই পড়া হত। ক্লাসের পড়া না পড়ে সারাদিন তিন গোয়েন্দার বই নিয়ে পড়ে থাকতাম। পড়তে পড়তে একটা সময় তিন গোয়েন্দার প্রতি নেশা ধরে গিয়েছিল। যেখানে সন্ধার সময় আমার আম্মা আমাকে পিটিয়েও পড়ার টেবিলে বসাতে পারতেন না সেখানে দেখা গেল আমি মাগরিবের পরপরই পড়তে বসে যাচ্ছি। আম্মা কিছুতেই ব্যাপারটা ধরতে পারলেন না। অনেক গবেষণার পর একদিন তিনি আবিষ্কার করলেন যে আমি পাঠ্য বইয়ের মাঝখানটায় তিন গোয়েন্দার বই রেখে পড়ছি। তারপরের ঘটনা আর নাই বা বললাম।

এরপর থেকে শুরু হল স্কুলে তিন গোয়েন্দার বই নিয়ে গিয়ে পড়া। স্যার যখন ব্ল্যাক বোর্ডে ব্যস্ত থাকতেন ঠিক তখনই কিছু নেশাগ্রস্থ বালক ব্যাগের ভেতর থেকে তিন গোয়েন্দার বই বের করে গোগ্রাসে গিলতে থাকত। আমিও তাদেরই একজন ছিলাম। এজন্য প্রায়ই স্যারের হাতে মার খেতে হত।

এই তিন গোয়েন্দার বই পড়তে পড়তেই একসময় মাথার মধ্যে গোয়েন্দা কাহিনী লিখার ভুত চেপেছিল। আমার একার না। আমার বন্ধু মিতুল আর আনন্দেরও। আমরা তিন জনেই প্রতিদিন বাসা থেকে কিছু না কিছু লিখে আনতাম। এনে একজন আরেকজনকে দেখাতাম। তারপর মন ভরে একজন আরেকজনের লেখার ভুল ধরতাম। তিন জনেই বুঝাতে চাইতাম যে নিজের লেখাটা বেশি ভাল হয়েছে। এভাবে চলত আমাদের লেখালেখি। একদিন মিতুলের লেখা গল্প পড়তে গিয়ে কেন যেন মনে হল গল্পটা আগেও কোথাও পড়েছি। ভাল করে পড়ে যা বুঝলাম, লেখাটা তিন গোয়েন্দার বই থেকে কপি করা। তখন আমি আর আনন্দ মিলে মিতুলের চৌদ্দ গুষ্ঠিকে উদ্ধার করলাম। সেসব ঘটনা মনে পড়লে আজও অনেক হাসি পায়।

আমার ঐ সময়কার লেখালেখির কিছু কিছু এখনো আমার কাছে আছে। সময় পেলে খাতার পাতা উল্টে পাল্টে দেখি আর আনমনে হাসি। সবই ছিল অর্থহীন লেখালেখি। কিন্তু ছেলেবেলায় এসব অর্থহীন কাজকর্মের মাঝেও কেমন যেন একটা অর্থ খুঁজে পেতাম। তখন দু'চারটা লাইন লিখতে পারলেই গর্বে বুকটা ফুলে উঠতো। এখন আর তেমন কিছু অনুভব করি না। তবে ছেলেবেলার সেই সময় গুলোকে খুব মিস করি। সেই সময় মাথায় লেখালেখির ভুত চেপেছিল বলেই আজ দু'চারটা লাইন গুছিয়ে লিখতে পারি। আমার অন্য দুই বন্ধু এখন লেখালেখি করে কিনা জানিনা। তবে আমি এখনো সমানে লেখালেখি করি। মাঝে মাঝে বুঝে, আবার মাঝে মাঝে না বুঝে। কখন যে কি লিখি নিজেও জানিনা। :D
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×