somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোরাস গাওয়ার শখ

২০ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কি নিয়ে লিখবো? হত্যা, গুম, নিখোঁজ, সন্ত্রাস নাকি সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে? ঘুষ, দুর্নীতি, নাকি অনিয়ম নিয়ে? সফলতা, ব্যর্থতা নাকি জবাবদিহি প্রসঙ্গে? টেন্ডারবাজি, দলবাজি, চাপাবাজি নাকি ধান্দাবাজি নিয়ে? সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মন্ত্রিত্ব যাওয়া, আবার ফিরে পাওয়া নাকি, ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ নিয়ে? বাংলাদেশে সমুদ্রবিজয়ে প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া হচ্ছে গণসংবর্ধনা, অন্যদিকে মিয়ানমারে হচ্ছে সমুদ্রবিজয়ের ৭ দিনব্যাপী বিজয় উৎসব। কোনটি ঠিক? কোরাসবাজিও তো এখন চরম আকার ধারণ করেছে। কোরাস হচ্ছে নেতাকে নিয়ে, নেত্রীকে নিয়ে। দলকে নিয়ে, দলের কর্মসূচি নিয়ে। আসলে বিভক্তি সবখানে। স্বামী-স্ত্রী, পিতা-পুত্র থেকে শুরু করে সমাজ, রাজনীতিÑ কোথায় নেই বিভক্তি? যুক্তি-পাল্টা যুক্তি তো মুখে মুখে। ঝগড়া, ফ্যাসাদ লেগেই আছে। তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে কথায় কথায়। আসলে কি হতে যাচ্ছে দেশে? পৃথিবীতে? পরিবেশ বদলে যাওয়ার পাশাপাশি বদলে যাচ্ছে মানুষের মনও। প্রেম, ভালবাসা মানুষের জন্য নেই। আছে যতটুকু তা প্রেমিকের জন্য, স্ত্রী-সন্তানের জন্য। পিতা মাতার ঠাঁইও নেই সেখানে। এ কোন বিশ্ব আজ দেখছে পৃথিবী। জগৎ-সংসার মুখ্য না হয়ে মুখ্য হয়ে উঠেছে অন্য কিছু। এখানেও স্বার্থ। লোভ, লালসা মানুষকে ধ্বংস করে জানার পরও সবাই ছুটছে সেদিকে। চোখের সামনে দেখছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ রেখে মানুষকে কবরে যেতে হচ্ছে শূন্য হাতে। তারপরও কেন অর্থের লোভ ছাড়তে পারছে না মানুষ। এর পেছনে কাজ করছে কে? শয়তান? হয়তো তাই। কিন্তু এই শয়তানের হাত থেকে বাঁচার উপায়ও তো আছে। তারপরও কেন আমরা ছুটছি শয়তানের পেছনেই? কেন বিবেককে জিজ্ঞেস করে পথ চলি না? পৃথিবী সৃষ্টির পেছনেও নাকি শয়তান কাজ করেছে? বেহেস্তে আদম আর হাওয়া তো সুখেই ছিল। মহাসুখে। এটা শয়তানের ভাল লাগেনি। তাই সৃষ্টিকর্তার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তারা শয়তানের পাল্লায় পড়ে গন্ধম খেয়েছিল। যার পরিণতিতে তাদের বেহেস্ত-ছাড়া হতে হয়েছিল। এই শয়তান এখনও মানুষের পেছনে লেগে আছে। যে মানুষের মাধ্যমে শয়তানি কাজ করায়। এ সময় বিবেক মজবুত হলে শয়তান পরাস্ত হয়। না হলে শয়তানের জয় হয়। আবার ক্ষমতা মানুষকে অন্ধ করে দেয়। এ অন্ধত্বের সুযোগও নেয় শয়তান। সে গ্রাম্য মোড়ল হোক আর বাহিনী প্রধান হোকÑ সবার একই অবস্থা। সবচেয়ে বড় কথাÑ যুগে যুগে ক্ষমতাবানদের কাছে পছন্দের ছিল কোরাসবাজরা। যারা ক্ষমতাবানদের সব কাজের কোরাস গাইতেন। এখনও গাইছেন। জি হুজুর নামের এ কোরাসবাজদের দাপট সবখানে। ভাল করলেও ভাল, চরম খারাপ হলেও তারা কোরাস ধরেনÑ ভাল হয়েছে সব ভাল। আর ক্ষমতাবানরাও কোরাসদের এ কোরাস শুনতে ভালবাসেন। সবার আগে তাই কোরাসবাজদের থেকে সাবধান থাকতে হবে সবাইকে। তাহলেই হয়তো অনেকটা নিরাপদে থাকতে পারবে সবাই। দেশ, জাতিও মুক্ত হবে শয়তানের কবল থেকে। সেদিন কি কখনও আসবে এই বাংলাদেশে?
গ্রামের কিছু লোক গেছেন বাজারে। গ্রাম থেকে বেশ ক’মাইল দূরে বাজার। যেতে হয় নৌকায় করে। সেদিন বাজার করতে করতে তাদের সন্ধ্যা হয়ে গেছে। নৌকায় করে একসঙ্গে রওনা দিয়েছেন তারা। মাঝনদীতে যাওয়ার পর নৌকাতে ডাকাত দল আক্রমণ করেছে। ডাকাতরা বলে, এই নৌকা থামাও। এ নৌকায় গ্রামের এক বয়স্ক লোক ছিলেন। তিনি মনে মনে বললেন, আমাদের সব শেষ। এখন কি করা? তিনি দাঁড়ালেন। ডাকাতদের উদ্দেশ্য করে বললেন, ভাইয়েরা আমার, তোমরা আমাদের কাছে যা আছে সবই নিয়ে যাও। কিন্তু এর আগে আমার একটা কথা শুনতে হবে তোমাদের। ডাকাত সর্দার বললোÑ তোমার আবার কি কথা? লোকটি বললেন, আমার বড় শখ হয়েছে একটি কোরাস গাওয়ার। ডাকাত সর্দার বললো, তাহলে শোনাও তোমার কোরাস। এ ফাঁকে গ্রামের লোকটি ডাকাত ক’জন আছে গুনে নিয়েছে। দেখে ডাকাতের চেয়ে তারা সংখ্যায় একজন বেশি। তবে ডাকাত দলে একজন মোটা আছে। বৃদ্ধ কোরাস ধরলেন, এই জনকা জন ধর, মোটকারে দুই জনে ধর।
কোরাস যদি এমন হয়, তাহলে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। আর যদি হয়, তালমেলানো তাহলে যা হওয়ার তা-ই হবে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×