somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাশ্চাত্য নারী ও বিবাহ :

১৯ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সম্মানীত পাঠক : শুরুতে আমি বলেছি, আমি একজন মানসিক চিকিৎসক। আমার এ পেশা আমাকে আমাদের সমাজের দ্বিতীয় আরেকটি চিত্র দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। আরো সুযোগ করে দিয়েছে বিভিন্ন পেশা ও স্বভাবের নারী-পুরুষ সম্পর্কে জানতে। এ পেশার লোকদের সাধারণ প্রকৃতি হল, মানুষের সমস্যা নিয়ে গবেষণা করা। তারা চলতে চলতে এমন কিছু জিনিস নিয়ে চিন্তা করে, যা সাধারণত অন্যান্য পথিকরা করে না। আমার অনেক ইচ্ছা ছিল, ইসলামের দায়ীগণ এ নিয়ে গবেষণা করুক এবং এর একটি সমাধান পেশ করুক। আশা করি, তাদের পদক্ষেপ চিকিৎসক ও নিরাপত্তাকর্মীদের চেয়েও বেশী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। কারণ, এসব ব্যাধি ছড়ানোর মূল কারণ হচ্ছে ইসলামী শিক্ষা ও আদব-শিষ্টাচারের বিরুধিতা করা।

আমার এ ভূমিকা পেশ করার উদ্দেশ্য হচ্ছে, যাতে পরবর্তী ঘটনার বিবরণ শুনে কেউ আশ্চর্য না হয়। বিশেষ করে নারীদের বেশী বেশী আমাদের শরণাপন্ন হওয়া ও তাদের সমস্যাগুলো শ্রবণ করা। কারণ, তাদের সমস্যা শ্রবণ করা ও তাদের সঙ্গে কথা বলা ব্যতীত এর সমাধানও সম্ভব নয়।

এ প্রসঙ্গের পর আমি পাশ্চাত্যের নারী ও তাদের মাঝে বিবাহ প্রথা নিয়ে কথা বলছি :
আমি বৃটেনে প্রথম প্রথম খুব আশ্চর্য বোধ করেছিলাম যে, নারীরা পুরুষের ব্যয়ভার বহন করে! আমি যখন রেলে ভ্রমণ করতাম বা কোন হোটেলে প্রবেশ করতান, তখন এ দৃশ্য খুব চোখে পরত। তাদের অভিধানে সম্মান বলে কিছু আছে আমার জানা নেই।

কিছু দিন পর আমার এ আশ্চর্যবোধ দূর হয়ে গেল। অনেক রোগী আমাকে এর কারণ সম্পর্কে অবহিত করল যে, সেখানে কোন পুরুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে আগ্রহী নয়। তারা নারী-পুরুষের মাঝে বন্ধু ও বান্ধবী সম্পর্ককে প্রধান্য দেয় বেশী। অথচ তাদের মাঝে বন্ধুত্বের কোন সংজ্ঞাই যেমন পারস্পরিক মহব্বত, সৌহার্দ্য, সম্মান ও ওয়াদা রক্ষার আলামত পাওয়া যায় না।

তাদের সমাজে পুরুষ বন্ধুটি একমাস বা দুই মাস মেয়ে বান্ধবীর সঙ্গে অবস্থান করে। এ সময় পুরুষ নারীর ব্যয়ভার বা খরচ বহন করে না বরং অধিকাংশ হালাতে নারীরাই পুরুষের ব্যয়ভার বহন করে। যখন ইচ্ছা সে বাড়ী ছেড়ে চলে যায় কিংবা তাকে বাড়ী থেকে বের করে দেয়, যদি নারী পুরুষের ঘরে অবস্থান করে। এ জন্য তাদের সমাজে নারীরা সব সময় মারাত্বক পেরেশানী ও চিন্তায় মগ্ন থাকে। কারণ, যে কোন সময় তার পুরুষ বন্ধুটি অন্য কোন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক করে তাকে বিদায় দিতে পারে। পরবর্তীতে সে হয়তো আর পুরুষ বন্ধু নাও পেতে পারে।

উদাহরণের মাধ্যমে যেহেতু অনেক বিষয় স্পষ্ট হয়, তাই তাদের সমাজের অগণিত উদাহরণ থেকে আমি একটি উদাহরণ পেশ করছি।

মানসিক হাসপাতালে আমি বিশ বছরের এক নারীকে দেখেছি, খুব বিষন্ন, ভারাক্রান্ত ও মর্মাহত। অনেক দিন সেখানে থাকার পর সে কিছুটা সুস্থতা বোধ করে নিজের থেকে কিছু বলা আরম্ভ করেছে। তার জীবন সম্পর্কে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম। সে চোখের পানি মুছতে মুছতে বলল : আমার সমস্যা একটাই, আমি সব সময় পেরেশানী ও চিন্তায় দিনাদিপাত করি। জানি না আমার বন্ধু কখন আমাকে ত্যাগ করে চলে যায়, আমি তাকে বিবাহের জন্য চাপও দিতে পারি না, সে আমার থেকে আলাদা হয়ে যাবে ভয়ে। আমি তাকে বারবার সন্তান নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি, হতে পারে সন্তানের কারণে সে বিবাহের প্রতি আগ্রহী হবে। সামনে বিদ্যমান এ সন্তান তারই ফসল। তুমি আরো লক্ষ্য করছো যে, আমার সৌন্দর্যের কোনও কমতি নেই। তদোপরি আমি তাকে সব ধরণের সেবা দিয়ে যাচ্ছি, তার জন্য সম্পদ ব্যয় করছি। তবুও আমি তাকে বিবাহতে রাজি করতে সক্ষম হয়নি। এটাই আমার অসুস্থতা ও অভিশপ্ত জীবনের মূল কারণ। এ সমাজে আমি আমাকে একাই জ্ঞান করি। আমার এমন কোন স্বামী নেই যে, আমার জীবন সংগ্রামে আমাকে সাহায্য করবে। আমার পরিবার রয়েছে, কিন্তু তাদের থাকা না-থাকা সব বরাবর। আমার যদি এ সন্তানও না থাকত, তবে আরো ভাল হত। আমি চাই না, আমার মত সেও এ অভিশপ্ত জীবন নিয়ে দুনিয়ায় বেচে থাকুক। এ অসুস্থ নারীর ন্যায় আরো নারীর সংখ্যা পাশ্চাত্য সমাজে কম নয়, বরং যারা স্বাচ্ছন্দময় ও নিরাপদ জীবন অতিবাহিত করছে তাদের সংখ্যা খুব কম। এদত সত্বেও পাশ্চাত্যের লোকজন আমাদের ইসলামী সমাজকে কটাক্য ও ব্যঙ্গ করে। তারা মনে করে যে, আমাদের সমাজে নারীরা অসুখী জীবন-যাপন করে। আমরা পাশ্চাত্যের প্রশংসা কুড়াতে চাই না এবং আমাদের ব্যাপারে তারা ভাল ধারণা পোষণ করুক, তাও চাই না। তবে আমরা আমাদের নারীদের বলব, তোমরা ইসলামের নেয়ামতের জন্য আল্লাহর প্রশংসা কর। ইসলাম পূর্ব যুগেও নারীরা খুব অসম্মানিত ছিল, ইসলাম এসে তাদের সম্মানিত করেছে। আল্লাহর মেহের বাণীতে পরিবেশ এমন সৃষ্টি হয়েছে যে, পুরুষরাই নারীদের তালাশ করছে, তাদের কাছে বিয়ের প্রস্তাব পেশ করছে। নারী তার পছন্দ মত কবুল করছে বা ত্যাগ করছে। আমাদের পরিবারও তার বিয়ের ব্যাপারে বিরাট ভূমিকা পালন করে। বাবার বাড়ি বা স্বামীর বাড়ি, যেখানেই সে থাকুক, সম্মানের সঙ্গে থাকে এবং পুরুষরাই তার ব্যয়ভার বহন করে। বরং আমাদের সমাজে উল্টো অভিযোগ যে, নারীর ক্ষেত্রে মোহর খুব বেশী ধার্য করা হয় এবং বিয়ের জন্য পুরুষকে অনেক খরচাদি বহন করতে হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন :
তারা মনে করে, তারা ইসলাম গ্রহন করে তোমাকে ধন্য করেছে। তুমি বল : তোমরা ইসলাম গ্রহণ করে আমাকে ধন্য করেছ মনে করো না। বরং আল্লাহই তোমাদেরকে ঈমানের দিকে পরিচালিত করে তোমাদেরকে ধন্য করেছেন, তোমরা যদি সত্যবাদী হয়ে থাক। (হুজুরাত : ১৭)

সুত্রঃ- আমার দেখা বৃটেন।
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×