somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুভ নববর্ষ।।১৪১৯.।।

১৪ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুভ নববর্ষ।।

দেখতে দেখতে আরো
একটি বছর কেটে গেল।বিদায় নিয়ে গেল বাংলা ১৪১৮ সাল। স্বাগতম ১৪১৯। বিপ্লবের হাওয়া আমাদের দেশে পুরোপুরি না লাগলেও,আমাদের জনগন পাশ্চাত্য
সংস্কৃতিকে বেশ ভালো ভাবেই আকড়ে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে। যে কারনে আমাদের কাছে বাংলা সালের চেয়ে ইংরেজী সাল বেশি গুরত্ব পাচ্ছে। ডিসেম্বর মাস এলেই চারিদিকে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে…এক,নতুন বছরকে ঘিরে,দুই,বিদায়ী বছরকে ঘিরে। মিডিয়াগুলো ব্যস্ত হয়ে পড়ে নানা অনুষ্ঠানমালা নিয়ে। বর্ষবরনের উৎসবে মেতে উঠে নাইট ক্লাবগুলো। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে মাঝ বয়সীরা পর্যন্ত মিষ্টি সুরে বলে উঠে ‘হ্যাপী নিউ ইয়ার’ । সেদিক থেকে আমার কেন যেন মনে হয় বাংলা বর্ষবরন অসহায়। বাঙালি জাতি হিসেবে আমরা যেন আমাদের ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছি। আমাদের বেশিরভাগই আজ বাংলা বর্ষের ধারে কাছে নেই।আমরা অনেকেই বলতে পারবোনা বাংলা এখন কত সাল?আমাদের শুধু মনে আছে পহেলা বৈশাখ।আমদের ঘরে ঘরে দিনপুঞ্জিকা ঠাই পাই ইংরেজী সালের। খুব কম বাসায়ই দেখা যায় বাংলা দিনপুঞ্জিকা। আমাদের চলমান জীবনধারাকে ঘিরে রেখেছে ইংরেজী সাল,দিন,মাস। বাংলা সংস্কৃতি আর পহেলা বৈশাখ যেন এক সুত্রে গাথা। আমাদের সংস্কৃতির একটা বিরাট জায়গা দখল করে আছে এই পহেলা বৈশাখ। বৈশাখী মেলা নিয়ে আমাদের আগ্রহের কমতি ছিলনা।সেই ছোট বেলায় প্রহর গুনতাম কবে পহেলা বৈশাখ আসবে,মেলায় যাবো।আগ থেকেই মাকে বলতাম বাবার সাথে মেলায় যাব। বাবাকে
বলো যেন আমাদের মেলায় নিয়ে যায়। তারপর যখন একটু বড় হলাম নিজে নিজে বের হতে পারতাম,তখন বায়না ছিল টাকা লাগবে বন্ধুদের সাথে মেলায় যাব। মায়ের সাথে কয়েকদফা হয়ে যেত টাকা নিয়ে,টাকা আরো লাগবে। পানি ঘোলা করে অবশেষে মেলায় যাওয়া। সবাই মিলে একসাথে মেলায় যেতাম,কত মজা করতাম মেলায় গিয়ে।আজ সবই স্মৃতি।এসব মনে পড়লে বড় ভালো লাগে। সময়ের পরিক্রমায় কত পহেলা বইশাখ এল। কত মেলা
হয়ে গেল।একেক পহেলা বৈশাখ কেটেছে একেক ভাবে।দিন দিনই কেন জানি সেই উতসবের আমেজ মন থেকে
সরে যাচ্ছে।এখন পহেলা বৈশাখ এলেই অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি।ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা কত মজা করছে,দল বেধে মেলায় আসছে কত কিছু কিনছে,আবার দল বেধে বাড়ি ফিরছে,আমি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি আর মুগ্ধ হচ্ছি।মন ভরে উঠে।বড় ভালো লাগে। সেই ছোট বেলায় আবার ফিরে যেতে ইচ্ছে করে কিনা জানিনা,তবে মনে মনে দিনটির বহুবার আগমনের কথা চিন্তা করি।এমন প্রানের উৎসব
যদি বছরে একবার না এসে বারবার আসত!আধুনিক যুগের খাচায় বাধা কোমলময়ী ছেলেমেয়ে গুলো আরেকবারের জন্য পরিত্রান পেত।প্রানের উৎসবে মেতে উঠত। বাংলা সংস্কৃতির প্রতি আরেকটু মায়া জন্মাতো।পুরাতন
বছরের সব জঞ্জাল মুছে নতুন দিনের শুভকামনায় সবাই মেতে উঠে।দোকানি গুলো পুরাতন বছরের সব হিসাব চুকে ফেলতে হালখাতা বের করে। ক্রেতাদের মিষ্টিমুখ করায়,আর ক্রেতারা পুরাতন বকেয়া শোধ করে দেয়।বোশেখের আকাশ ছেয়ে যায় লাল নীল হরেক রঙ্গের,হরেক রকমের ঘুড়ি দিয়ে।………।।



এসো সবে মিলি
গাহি নবদিনের গান,বোশেখের রঙ্গে রাঙ্গাই নিজেকে………………।

বৈশাখি সাজে সাজবে
পুরো বাংলার আকাশ। দল বেধে সবাই মেলায় যাবে। রাস্তা দেখা যাবে শুধু মুখোশ আর মানুষের স্রোত। ছোট ছেলে মেয়ে গুলো মেতে উঠবে আপন খেলায়। জিলাপী আর বাতাসার স্বাদে ভরে উঠবে মেলার প্রাঙ্গন। গায়ের বধু বাহারি কলসি কাখে নিয়ে বাড়ি ফিরবে অনেক খাবার সাথে করে।আমি বহুদিন ধরে হারিয়ে যাওয়া উচ্ছাস ফিরে পাওয়ার জন্য লড়াই করে
করে যাচ্ছি,প্রান ভরে দেখব মঙ্গল শোভাযাত্রা,দেখব বৈশাখি সাজে রমনীদের পথচলা(মেলায় যাওয়া),দেখব ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের শিকল ভেঙ্গে আনন্দ ছোটাছুটি,সবার মুখে মুখে বর্ষবরনের গান ‘এসো হে বৈশাখ,এসো এসো’। শুভ নববর্ষ ১৪১৯,শুভ নববর্ষ। প্রাথর্না সৃষ্টিকর্তার কাছে
বাংলার আকাশে সম্প্রীতির বাধন যেন থাকে চিরকাল।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×