somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মালদ্বীপে মুসলমানের ইতিহাস এবং ইসলামের দাওয়াত

১২ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১০:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

“মুসলমানের আমল আখলাখই সবচেয়ে বড় দাওয়াত, রসূল (সাঃ) এর দাওয়াত দেওয়ার পথ তো ছিল এটাই, বাইবেল, বেদ বা অন্যকোন ধর্ম গ্রন্থ নয় কোর’আন এবং সুন্নাহ্‌ ই হচ্ছে পরিপূর্ন দাওয়াত। মালদ্বীপের ইতিহাস তারই সাক্ষী।”

মালদ্বীপে কোন মুসলমান ছিল না। কাফেরের রাষ্ট্র ছিল। ইউসুফ বারবারী মাগরীবি নামে একজন আলেম ছিলেন। পর্যটক হিসেবে মালদ্বীপে এসেছিলেন। যাহাবী রহ. এর ইতিহাসগ্রন্থ তারীখে কাবীরে লেখা আছে এই ঘটনা। মালদ্বীপের নিজস্ব ইতিহাসেও আছে। তিনি যখন সেই দেশে প্রবেশ করলেন, এক জায়গায় দেখলেন, কিছু লোক কাঁদছে। মানুষ মারা গেলে যেমন কাঁদে এভাবে কাঁদছে। তিনি কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন। কী হয়েছে? তারা বললো, প্রতি মাসে এই দ্বীপের মাঝে এক বিশাল বড় ষ্টিমার বের হয়। এটার মধ্যে ভূত থাকে না জিন জানি না। তারা এসে আমাদের যুবতী মেয়েদেরকে যিনা করে অথবা তাদের সাথে নিয়ে যায়। কেউ বাধা দিলে তাকে মেরে ফেলে। একারণে এদেশের বাদশা নিয়ম করেছে যে, প্রতি মাসে এক এক পরিবারের মেয়েকে দিয়ে দিবে, তাহলে নাকি দেশে শান্তি হবে। সে মতে প্রতি মাসে লটারী দেয়া হয়। যার নাম আসে তার মেয়েকে শ্মশানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে ভূত এসে তাকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলে চলে যায়। আজ লটারিতে আমাদের নাম এসেছে। তাই আমরা কাঁদছি। পর্যটক এ কাহিনী শুনে ভীষণ আশ্চর্যান্বিত হলেন। তিনি আল্লাহ'ওয়ালা ছিলেন। এখনো মুখে দাড়ি ওঠেনি। আমার মনে হয় আগত ঘটনা ঘটানোর জন্যই বোধ হয় আল্লাহ মুখে এখনো দাড়ি দেননি। উনি বললেন ঠিক আছে, আমার তো দাড়ি নেই, তোমরা আমাকে মেয়ে সাজিয়ে শ্মশানে রেখে আসবে। পরে যা হবার তাই হবে। কথা মতো তাই করা হলো। তিনি শ্মশান থেকে রাতের আঁধারে দেখতে পেলেন বিরাট বড় জাহাজ আসছে। যখন প্রায় কাছাকাছি এসে গেলো তিনি তাড়াতাড়ি উঠে ওযু করে নিলেন এবং দুই রাকাত নামায পড়ে নিলেন। যখন একেবারে কাছে এসে গেলো তখন খুব জোরে কুরআন তেলাওয়াত শুরু করলেন। যখন আরো কাছে আসলো তখন আরো জোরে কুরআন পড়তে লাগলেন। পড়ছেন তো পড়ছেন। হঠাৎ দেখা গেলো জাহাজ আর সামনে আসতে পারছে না। শেষ পর্যন্ত জাহাজ ডুবে ধ্বংস হয়ে গেলো। সকালে লোকেরা গিয়ে দেখলো, তিনি তেলাওয়াত করছেন। কাছে গিয়ে তারা বিস্ময়ের সাথে জিজ্ঞেস করলো, কী ব্যাপার! কীভাবে আপনি এখনো বেঁচে আছেন? তিনি বললেন, আল্লাহর ফযলে সব কিছু হয়েছে। তোমাদের বিপদ দূর হয়ে গেছে, ষ্টিমার ডুবে ধ্বংস হয়ে গেছে।


অতঃপর দেশের বাদশার কাছে তার খবর পৌঁছে গেল। বাদশা তার প্রতি যারপরনাই খুশি হলেন। বাদশার নাম ছির সনুরাজা। এটা ১১৪০ সালের ঘটনা। ইউসুফ বারবারী সুযোগ বুঝে বাদশাকে কালিমার দাওয়াত দিলেন। বাদশার মনে ইসলাম গ্রহণের ইচ্ছা আগে থেকেই ছিলো। তিনি বললেন, ঠিক আছে, আমাকে একমাসের সময় দিন। এক মাস পর বাদশা মুসলমান হয়ে গেলেন। তার ইসলাম গ্রহণের কারণে পুরো মালদ্বীপবাসী ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয়ে গেলো। এরপর আটশত বছর পর্যন্ত মালদ্বীপ ইসলামী রাষ্ট্র ছিল। ঐ দেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল কাইয়্যুমের সাথে মক্কার হারাম শরীফে আমার সাক্ষাৎ হয়ছে। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ইবনে বতুতায় যে ঘটনা উলে্লখ আছে সেটা কি ঠিক? বললেন, হ্যাঁ ঠিক।
এই ঘটনা বলার উদ্দেশ্য হলো, একজন আলেমের অন্তরে কী পরিমাণ দ্বীনী জযবা থাকতে হবে তা স্মরণ করানো। একজন আলেমের উছিলায় লক্ষকোটি মানুষ হেদায়েতপ্রাপ্ত হতে পারে। তার নযীর এ ঘটনা।

মজলিসে দাওয়াতুল হকের ১৮তম বার্ষিক ইজতেমায় প্রদত্ত বয়ান
মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান (দাঃ বাঃ)
স্থান : যাত্রাবাড়ী মাদরাসা, বাদ মাগরিব, তারিখ : ২৩/১২/১২

পূর্বে প্রকাশিতঃ এই সাইটে

আমার পূর্ববর্তী পোস্টঃ মনে করিয়ে দিল সেই দিন আসবে!!! (পড়ে দেখুন অন্তর কাঁপে কিনা)
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১২:০৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×