স্বপ্নের কুয়াকাটা
অনেকদিন ধরে ইছছা কুয়াকাটা যাব।কিন্তু যাব বল্লেইত হয় না,সময় সুযগের একটা বেপার থাকে।পড়াশুনা করছি টু্রিয্যম এন্ড হসপিটালিটি নিয়ে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।৩য় বর্ষেরর প্রথম ক্লাসেই স্যার বললেন টুরে যেতে হবে। ৭ জনের গ্রুপ নিয়ে বের হয়ে পরি কুয়াকাটার উদ্দেসসে।
যেতে হবে লঞ্চে করে সদরঘাট থেকে পটুয়াখালি।এটি আমার জীবনের প্রথম লঞ্ছ জারনি।সারারাত আমরা লঞ্ছে,আকাশে পুর্নিমা চাদ আর ঝিরিঝিরি বাতাশ,অনুভুতিটা ভাষায় প্রকাশ করার মত না।খুব সকালে চলে আসলাম পটুয়াখালি।তারপর বাসে করে কুয়াকাটা।উঠলাম একটি অভিযাত হোটেলে নাম “নিলাঞ্জনা”,বিচ থেকে খুব কাছেই হোটেল টা।এক্টু বিস্রাম নিয়ে দউরে গেলাম বিচের দিকে।একদিকে উত্তাল সমুদ্রের গরজন,অন্য দিকে সবুজের সমারহে প্রান ভরে নিঃশাস নিতে ভালই লাগছিল।সারি সারি নারিকেল গাছ আর ঝাউ বনের অবিরাম সুন্দর্য আমাদের মুগ্ধ করল।তারপর অপেখখায় রইলয়াম সুর্যাস্ত দেখার জন্য।ধিরে ধিরে সব কিছু অন্ধকার করে ডূবে গেল সুর্য।কিছুক্ষন বিচে হাটাহাটি করে ফিরলাম হোটেলে।অপেখখা পরের দিন সুর্য উদয় দেখার।কুয়াকাটা বিচ প্রিথীবির একমাত্র বিচ,যে খান থেকে একি জায়গায় দারিয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়।
এখানে যাতায়াত এর এক মাত্র যান হল মোটর সাইকেল ।দুইটা মোটর সাইকেল ঠিক করে রাখলাম।খুব ভোরে চলে গেলাম গংগামতির চর।
কুয়াকাটার মূল ভূখন্ডের পূর্বদিকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পর্যাটক আকর্ষনের আর একটি লোভনীয় স্থান চর গঙ্গামতি। এখানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করা যায় ।
বাইকে করে ভরের হাওয়া গায়ে লাগাতে ভালই লাগছিল।এক্টু পরেই ধরনী আলকিত করে সুর্য মামা উকি মেরে উঠল।টক টকে লাল সুর্য এনে দিল প্রানের ছোয়া।
তারপর চলে গেলাম কাউয়ার চর,চর ভরতি লাল লাল কাকড়া আমাদের আওয়াজ পেয়ে গরতে লুকিয়ে পরল।শুরু করলাম কাকড়া ধরার অভিযান।অনেক চেস্টা করেও একটা কাকড়া ধরতে পারলাম না।চরের এক পাশে তরমুজের খেত।চল্লিশ টাকা দিয়ে এক টি তরমুজ কিনে বাগানের তাজা তরমুজ খাওয়ার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলাম।
কুয়াকাটার খুব নিকটেই অবস্থিত মিস্ত্রিপাড়া। এখানেই দেখতে পাবেন আপনি বৌদ্ধ মন্দির যেখানে রয়েছে প্রায় ৩০ ফুট উচ্চতার একটি বুদ্ধমূর্তি। আর পাশেই রয়েছে পবিত্র কুয়া। মন্দির আর পবিত্র কূয়া দেখে আপনার ভাল লাগবে এটা বলা যায় অবলিলায়। বৌদ্ধ মন্দিরের সাথে আপনার জন্য আর একটি জিনিস অপেক্ষা করবে, আর সেটা হলো রাখাইন পল্লী। রাখাইন উপজাতীদের আবাসস্থল এখানে।
তারপর ছুটে চল্লাম লেমুর বনের উদ্দেশে।প্রায় ১০ থেকে ১২ কিঃমিঃ পর আমারা চলে আসলাম লেমুর বনে।এক পাশে সমুদ্র,অন্ন পাশে লেবুর বন (বন লেবু,খাওয়া যায় না)চারিদিক টা অনেক নিরিবিলি।এখানে রয়ছে ফারুক ভাইএর দোকান,এখানে পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের মাছ আর কাকড়া।আমরা একটা ইলিশ মাছ,দুই টা কাকড়া আর এক টা বড় চিংরি মাছ কিনলাম। আমাদের সামনেই ভেজে দিল মাছ গুলো।গরম গরম পরাটা আর মাছ মন্দ না।সমুদ্র থেকে অনেক গুলো খাল ঢুকে গেছে বনের মদ্ধে।আমরা কিছুক্ষন খালের হাটু পানিতে হাটাহাটি করলাম,বনের ভিতর ঘুরে বেরালাম,সবুজের সমারহে মুগ্ধ হয়েই পুরো বিকেল টা পার করে দিলাম।
কুয়াকাটা সমুদ্রের বিস্তীর্ন বালিয়াড়ি ছেড়ে পশ্চিমদিকে গেলে চোখে পড়বে ঘোলাজলের ছোট্ট স্রোতস্বিনী একটি নদী ও বীচিমালাবিক্ষুব্দ সাগর মোহনার বুকে জেগে উঠা 'ফাতারার বন' নামক সংরক্ষিত ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল । এর আয়তন কমবেশি ৯৯৭৫০৭ একর । ইতিমধ্যে এটি ' দ্বিতীয় সুন্দরবন ' হিসেবে পরিচিতি ও খ্যাতি পেয়েছে।ঘুরে আসলাম ফাতরার বন থেকে ও।
এ ভাবেই পুরো দুটি দিন পার করলাম সপ্নের কুয়াকাটায়।পরদিন ফিরলাম ঢাকার উদ্দেশশে কিছু মনমুগ্ধকর অভিগ্যতা নিয়ে।