somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চীন দেশের শিক্ষনীয় গল্প

১০ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গরুর উদ্দেশ্যে সঙ্গীতযন্ত্র বাজানো-

প্রাচীনকালে কুং মিং ই নামে একজন সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন। তার বাজানো সঙ্গীত অনেক সুমধুর। অনেকেই তার বাজানো সঙ্গীত শুনতে পছন্দ করতেন।
এক দিন, কুং মিং ই গ্রামাঞ্চলে যান। তিনি দেখতে পান, হাল্কা বাতাসে গাছের পাতা নড়ছে। একটি গরু মাঠে ঘাস খাচ্ছে। তিনি এমন সুন্দর দৃশ্য দেখে তার মনে সঙ্গীতযন্ত্র বাজানোর ইচ্ছে জগে। তাই তিনি তার গরুটির উদ্দেশ্যে বাজানো শুরু করেন। কিন্তু এতে গরুর মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় নি। গরুটি শান্তিভাবে আপন মনেই খাস খেয়ে যাচ্ছিল। ঘাস খাছে। কুং মিং ই ভাবলেন, হয়তো তার এ সঙ্গীত গরুটির কাছে দুর্বোধ্য বা ভালো লাগে নি, তাই তিনি তার যন্ত্রে আরো কয়েকটি সহজ সঙ্গীতের সুর বাজাতে থাকেন। তবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যন্ত্র সঙ্গীতের সুরে গরুটির কোন প্রতিক্রিয়াই দেখা গেলো না। কুং মিং ই এতে অনেক হতাশ হয়ে পড়েন।

ঘটনাস্থলে একজন তাকে এ অবস্থায় দেখে বলেন, আপনি মন খারাপ করবেন না। আপনার বাজানো সঙ্গীত খুবই ভালো, তবে গরু কী মানুষের বাজানো সঙ্গীত বুঝতে পারে?

গরুর উদ্দেশ্যে সঙ্গীতযন্ত্র বাজানো: এর আসল অর্থ হল গরুকে সঙ্গীত শোনালে গরুর কোনো প্রতিক্রিয়া হবে না। মানে সঠিক জায়গায় সঠিক কাজ করতে হবে।


সাত পদক্ষেপের সময় কবিতা রচনার কাহিনী-

চীনের ইতিহাসে একটি বিখ্যাত পরিবার ছিলো । এই পরিবারে বাবা ছাও ছাও একজন সমরবিদ ও কবি ,তার দুটি ছেলে ছাও ফি ও ছাও জি সাহিত্যিক , ইতিহাসে তাদের তিনজনকে তিন ছাও বলা হয় । এদের মধ্যে ছাও ছাওয়ের মেজো ছেলে ছাও জির সাহিত্য রচনার দক্ষতা সবচেয়ে বেশী ।
  ছাও ছাও হলেন খৃষ্ট দ্বিতিয় শতাব্দীর তিন রাজ্য আমলে উই রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা । তিনি একজন বিখ্যাত সমরবিদ , অবসর সময় তিনি প্রচুর কবিতাও লিয়েছিলেন । তার মৃত্যুর পর তার বড় ছেলে ছাও ফি রাজা হলেন । ছাও ফি একজন বিখ্যাত সাহিত্য সমালোচক ছিলেন , তার লেখা ‘ তিয়েন লুন—লুন ওয়েন ‘ চীনের সাহিত্য সমালোচনার ইতিহাসের এক যুগান্তরকারী রচনা । ছাও ছাওয়ের মেজো ছেলে ছাও জি একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তি , তিনি তখনকার সবচেয়ে বিখ্যাত কবি ছিলেন ।

  ছাও ফি রাজা হওয়ার পর ছোট ভাই ছাও জির ধী শক্তির ঈর্ষা করেন । একবার একটি ছোট ঘটনার জন্য ছাও ফি ছোট ভাই ছাও জিকে শাস্তি দিতে চেয়েছিলেন । তবে তিনি এ কথাও বলেছেন যে ছাও জি যদি সাত পদক্ষেপ হাটার সময়ে একটি ভালো কবিতা রচনা করতে পারেন , তাহলে তিনি শাস্তি থেকে মুক্তি পাবেন । ছাও জি জানেন বড় ভাই ইচ্ছা করে তাকে কষ্ট দিচ্ছেন , কিন্তু বড় ভাই হচ্ছেন রাজা , তার কথা অমান্য করা যায় না । নিজের আপন ভাইয়ের দেয়া কষ্ট ভোগ করার কথা ভেবে চাও জির মন খুব খারাপ হলো । তিনি সঙ্গে সঙ্গেই একটি কবিতা আবৃত্তি করলেন । তিনি তার কবিতায় এই বলে নিজের মনের কথা প্রকাশ করেছেন , আমরা আপন ভাই , বতর্মান সম্পর্কের জন্য কষ্ট বোধ করি । ভাই-ভাই সংঘাত অত্যন্ত দুঃখের ব্যাপার । রাজা ছাও ফি ভাইয়ের আবৃত্তিশুনে সংকোচ বোধ করেন ।তিনি নিজের ভাইয়ের উপর কষ্ট দেয়া বন্ধ করলেন ।

গাছ মুড়ার কাছে খরগোশের অপেক্ষা করা-
চীনের বসন্ত ও শরত্ রাজবংশে সুং রাজ্যে একজন কৃষকের কৃষিভূমিতে একটি গাছের মুড়া আছে । এক দিন যখন তিনি কৃষিভূমিতে কাজ করছে , তখন একটি খরগোশ দৌড়ে দৌড়ে গাছের মুড়ার সঙ্গে ধাক্কা হয়ে মারা গেছে । এ কৃষক অনেক খুশি এবং ভাবছে , যদি প্রতিদিন একটি খরগোশ এভাই মারা যায় , তাহলে আমি খরগোশের মাংশ বিক্রি করতে পারবো এবং কৃষকের কাজ আর করতে হবে না । তাই তিনি কৃষিভূমির কাজ বন্ধ করে প্রতিদিন গাছের মুড়ার কাছে বসে এবং খরগোশের অপেক্ষা করেন । তবে সময় পার হয় , তবে আর কোনো খরগোশ তার আশার মত মারা যায় নি । কৃষক তখন আবার তার কৃষিভূমি দেখে আবিস্কার করেছেন যে , তার সব চাষ করা সব খাদ্যশস্যও মারা গেছে ।

এই প্রতিবাদ্য থেকে আমরা জানতে পারি , শুধু আগের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কাজ করলে হবে না । এ ছাড়া শুধু শুভাগ্যের ওপর নির্ভর করা এবং নিজেই চেষ্টা না করা চলবে না ।

১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×