somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিনে স্বদেশী পণ্য, করছে অর্থনীতি বিপন্ন। আসুন কিনি স্বদেশীপণ্য, শুধু একবার নয়, প্রজন্ম প্রজন্ম।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ ভোর ৫:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোন দেশের প্রতি বিদ্বেষ থেকে নয় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে পূণর্গঠনের জন্যই এই দেশের মানুষকে স্বদেশী পণ্য ব্যবহারের আহবান জানাচ্ছি।
হোক সেটা ছোট কিংবা বড় কোন পণ্য। বিদেশি পণ্যগুলোর বিকল্প বা সম্পূরক যেসব পণ্য গুলো আমাদের দেশে পাওয়া যায় সে সব পণ্য ব্যবহার করুন।
আপনার ভেতরে যদি সামান্যতম স্বদেশপ্রেম থেকে থাকে তবে তা দেশের কাজে পরিণত করুন।
শকুনের ঠোকর আর খেতে ভালো লাগে না, তলোয়ার না থাকুক, ডালটা বাড়িয়ে দিন।
বিদ্বেষ ছড়ানো এই পোষ্টের উদ্দেশ্য নয়, তাই সুযোগ সন্ধানীরা হয় বুঝে পড়ে মন্তব্য করুন না হয় দূরে থাকুন।

আসলে কি থাকে এই চিপসের প্যাকেটে !! ৭০% ভারতীয় বাতাস, আর ৩০% পচা আলু !!
আমাদের দেশের কিছু মানুষ অতি আধুনিক হওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে,
তারা শিলা, মুন্নির কাপড় পড়া থেকে শুরু করে অবসরে বসে খাওয়া সামান্য একটা চিপসে পর্যন্ত বিদেশী ব্র্যান্ডের ব্যবহার করতে শুরু করেছে।

ছবিতে দেখানো চিপসগুলো এখন বাজারে সয়লাব। পথে, স্কুলে, মার্কেটের লবিতে বিভিন্ন বয়সের বাচ্চা সহ এক শ্রেণীর (৫-৫০) সকল বয়সের মানুষ একেবারে নির্লিপ্ত ভাবে প্বার্শবর্তী দেশের এই জাতীয় পণ্যগুলো হরদম ব্যবহার করতে শুরু করেছে।বাচ্চাদের কে এই চিপস গুলো খেতে দিয়ে তার মাম্মি-ড্যাডি যেন আধুনিকতার আরো বেশ কয়েকটা ধাপ পার করে ফেলছে !! এমনই তাদের অনুভূতি !! আর উঠতি বয়সের কিছু ১৮+ , এই নামের চিপসের প্যাকেট হাতে নিয়ে, চিপস মুখে পুরে এক ধরনের আভিজাত্য প্রকাশে মত্ত হয়ে উঠছে। তাদের দেখাদেখি মধ্যবিত্ত শ্রেণীর অনেকেও এগুলো কিনতে বাধ্য হচ্ছে, কারন বাংলাদেশের প্রায় অনেক মানুষের ভিতর যে রোগটা সহজেই বাসা বেধে আছে তা হল "হীনমন্যতা" ! এটা এইডস এর চেয়ে ভয়াবহ বলে মনে হয় আমার, এবং আদৌ এর চিকিৎসা আছে কিনা আমার জানা নেই। এভাবে বহির্বিশ্বের দেশের, বিশেষ করে প্বার্শবর্তী দেশের পণ্য ব্যবহারে আমাদের দেশের মানুষ যেভাবে অভ্যস্ত হয়ে পরছে তাতে আমাদের দেশের পণ্য ব্যাপক হারে ধ্বংস হচ্ছে। এমন কি আমাদের ব্যবসায়ীরা যে কয়েকটা পণ্য নিজেরা তৈরি করতো তাও তারা বন্ধ করে বাইরে থেকে পণ্য আমাদানি করতে শুরু করেছে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা "আমদানি বাংলাদেশ" হয়ে যাবো।

সামান্য একটা চিপস আমরা কেন অন্য দেশ থেকে আমদানি করে নিয়ে আসি !!?????? কেন বিক্রি করি !!!???? আর কেনইবা দোকান থেকে কিনে খায় !!!??? আমরা কি কোন জিনিসটা দেশের জন্য ভালো সেটা বুঝি না !!!??? নাকি বুঝলে আমাদের জিহবার লোভ সামলাতে পারি না !!!??

দুই একজনের সাথে এই ব্যাপারে কথা বলায় তারা আমাকে বললো এই চিপস গুলো মানে ,স্বাদে খুবই উন্নত। আমি মানছি যে এই চিপস গুলো ভালো কিন্তু তাই বলে কি আমাদের দেশীয় পণ্য গুলো কে আমরা পথে বসিয়ে দিবো, ওদের পণ্য ব্যবহার করে ওদের ঘরে ঘরে আম্বানি তৈরি করে দিবো।!!! তাহলে আমাদের দেশপ্রেম বলে কি কিছু আছে।!!??????
আপনার মা যদি কুৎসিত হয়ে থাকে তাহলে কি আপনি অন্যের মা কে মা ডেকে সে ঘাটতি পূরণ করতে পারবেন?? সেটা যেমন সম্ভব নয় তেমনি হরদম ভিন দেশের পণ্য ব্যবহার করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটানোও সম্ভব নয়।

আসলে কি থাকে এই চিপসের প্যাকেটে !! ৭০% ভারতীয় বাতাস, আর ৩০% পচা আলু !!! এইগুলো কিনার ফলে অবস্থা এমন হয়েছে যে বাইরের দেশের মানুষ বলতে পারবে----
"বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের অবসরেও বিদেশীদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়তা করে থাকে"

প্রায় ক্ষেত্রে যা হয়, দোকানদার সেকেন্ডারি ডিলারের কাছ থেকে এই চিপস গুলো নেয় কারন সে ২ টাকা লাভবান হচ্ছে, সেকেন্ডারি ডিলার এগুলো প্রাইমারী ডিলারের কাছ থেকে নেয় হয়তো পাঁচ টাকা লাভে, সে আবার আমদানিকারকের কাছ থেকে হয়তো ৬-৭ টাকা লাভবান হয়, আর আমদানিকারক হয়তো ৮-১০ টাকার প্রফিট পায়।কিন্তু এখানে এই চিপসের বাজার মুল্য ৩০ টাকা, ভারতে ১০ রুপি !!!

সামান্য লাভের আশায় গুটি কয়েক ব্যবসায়ীরা দেশীয় পণ্যের বাজার ধ্বংস করে দিচ্ছে।
লাভবান হচ্ছে গুটি কয়েক আমদানিকারক ব্যবসায়ী,
বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্বদেশী পণ্য,
পথে বসছে দেশীয় উদ্যোক্তা,
কমছে সাধারণের কর্ম সংস্থান,(দেশে চিপস তৈরি করলে কল-কারখানা থাকবে, দেশের মানুষ কাজ করতে পারবে)
বাড়ছে বেকার,অসহায়,অভাবী মানুষের সংখ্যা,
নষ্ট হচ্ছে জাতি, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ।

মজার ব্যপার হলো এই সব কিছু পরিবর্তনের ক্ষমতা কিন্তু আমাদের হাতে আছে , জনগনের হাতে, দেশের মানুষের হাতে, আর এই জন্যই বলা হয় "জনগন সকল ক্ষমতার উৎস"।

আমি, আপনি, আমরা যদি সত্যিই সচেতন হয়, মানুষকে সচেতন করতে শুরু করি অর্থাৎ সরাসরি এই বিদেশি পণ্য সামগ্রী বয়কট করি এবং অন্যদেরকেও কিনতে বারন করি তবে দোকানদার আর লেইস-ফিতা-লেইস বিক্রি করবে না, ডিলারও আর আমদানিকারকদের কাছ থেকে এগুলো আনবে না, আর আমদানিকারককে ভালো মত একটা ধাক্কা খাওয়াইতে পারলে সে এগুলো আমদানি বন্ধ করবে আশা করি।

আশা করি, এই সব পণ্যের সম্পূরক কিংবা বিকল্প পণ্য যেগুলো বাংলাদেশে উৎপাদিত হয় তারা তাদের পন্যগুলোর গুনগত মান উন্নয়নের দিকে নজর দিবে, নয়তো নতুন উদ্যোক্তা কিংবা নতুন দেশীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠুক। মানের সঠিকতা নিশ্চিত করা গেলে প্রয়োজনে সাধারণ মানুষকে এই পণ্য অর্থাৎ দেশীয় পণ্য কিনতে আমরা সাধারণ নাগরিকরাই উৎসাহিত করবো।

এই সম্পর্কে আমার বলার মত একটাই দাবি বাংলাদেশের তৈরিকৃত চিপস খাওয়ার অভ্যাস করুন, বাচ্চাদের কে ভারতীয় লেইস-ফিতা লেইস গুলা খাওয়ায়েন না প্লিজ, ওদের ভেতরে দেশকে ভালোবাসার প্রেম তৈরি হওয়ার সময় আপনি তার জাগরিত কুঁড়ি গুলো নষ্ট করে দিবেন না প্লিজ।

সোজা কথায়, আপনার চেষ্টা হোক দেশীয় পণ্য ব্যবহার করা, এখন না হয় চিপস দিয়েই শুরু করলেন ।। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছাড়া একটা দেশ অন্যের গোলাম হয়ে থাকে, কখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। দেশের মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে, স্বনির্ভর বাংলাদেশ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে।


মূলত আমাদের দেশের আসন্ন বিপদ কিংবা দূর্দশা গুলো সম্পর্কে শুধু মাত্র সচেতন হলেই চলবে না। সুপরিকল্পিত ভাবে আমাদেরকে একটা একটা বিষয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করে সম্মিলিত আন্দোলন এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহনের মাধ্যমে সমাধানে পৌছাতে হবে। জানি, এটা বলা যতটা সহজ কাজে পরিনত করা তার চেয়ে দুরূহ এবং কষ্টসাধ্য। তারপরও এখনতো আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকেই আছে দীর্ঘদিন যাবত। আমাদের এই খুঁড়া জীবন হয়তো টানতে টানতে শেষ হয়ে যাবে কোন একদিন। কিন্তু আমাদের পরের প্রজন্ম এসে যখন দেখবে আমরা গর্দভরা তাদের জন্য ময়লা ফেলার ভাঙ্গা ঝুড়িটাই রেখে গেছি তখন তারা আমাদেরকে ধীক্ষারতো দিবেই সাথে সাথে সবচেয়ে দুঃখের এবং অপমানের বিষয় হবে তারা এই দেশটাকে আর ভালবাসতে পারবে না।

দেশটাকে শুধু দেশ নয় নিজের ঘর বলে মনে করতে হবে, আমাদের নিজের ঘরের ক্ষতি হলে যেমন আমরা কিছু একটা করার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠি তেমনি এই দেশের জন্যও কিছু করার সময় বোধহয় হয়ে এসেছে।

মলমূত্র নিপাত যাক, বাংলাদেশ মুক্তি পাক
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ ভোর ৫:২৯
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×