somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুসলমানেরা নিজেও মরে অন্যকেও মারে?

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শহরে পোড়া মাটির একটি স্থানে যে কারও নজর আটকে যাবে। এটি সেই স্থান, যেখানে একটি মাদ্রাসা থেকে কমপক্ষে ২০টি শিশুকে ধরে এনে ঝুলিয়ে ও পেট্রলে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা জুতা-স্যান্ডেলের মধ্যে এখনো ভেসে আসছে ভস্ম করে ফেলা দেহের গন্ধ।
উইন টেইন নামের সাবেক এক সেনা কর্মকর্তা ও নৃশংসতার প্রত্যক্ষদর্শী জানাচ্ছিলেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা, ‘সামরিক জান্তা আমলের অনেক সহিংস ঘটনারই সাক্ষী আমি। কিন্তু মিকতিলায় যা দেখেছি, তা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। সেখানে আমার সামনেই আটটি শিশুকে মেরে ফেলা হয়।’
জনাথন হেড বলেন, মুসলিমদের প্রতি এই নির্মমতার মূলে কাজ করছে তাদের প্রতি বৌদ্ধদের একধরনের অলীক ভীতি ও অসন্তোষ। গত বছর মুসলিমবিরোধী দাঙ্গার উসকানিদাতা ও প্রভাবশালী ভিক্ষু অশিন বিরাথুর ভাষ্যে ফুটে ওঠে সে কথাই।
অশিন বলেন, ‘আমরা বার্মার বৌদ্ধরা খুব কোমল প্রকৃতির। তবে আমাদের দেশপ্রেমের ঘাঁটতি রয়েছে। অপর দিকে মুসলমানরা ব্যবসায় ভালো। তারা দেশের যোগাযোগ ও নির্মাণ খাত নিয়ন্ত্রণ করে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের পরিণতি একদিন আফগানিস্তান বা ইন্দোনেশিয়ার বৌদ্ধদের মতোই পোহাতে হবে।

মিয়ানমারে বহু বছর ধরেই সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সহিংসতা চলছে। গত মাসে নতুন করে সৃষ্ট সহিংসতায় মধ্যাঞ্চলীয় শহর মিকতিলায় নিহত হয় ৪৩ জন। জ্বালিয়ে ও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ১৩ শতাধিক বাড়িঘর, দোকান ও মসজিদ। গৃহহীন হয় প্রায় ১২ হাজার মানুষ। গত বছর এ রকম আরেক সহিংসতায় নিহত হয়েছিল কমপক্ষে ১৮০ জন।
সহিংসতার সময় হত্যাকাণ্ড ও অগ্নিসংযোগ ঠেকাতে পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে বলে গত সোমবার অভিযোগ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সংগঠনটি পুলিশের এই ব্যর্থতা তদন্তেরও আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু এই সহিংসতার নেপথ্য কারণ কী, তা অনুসন্ধান করে দেখেছেন বিবিসির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক সংবাদদাতা জোনাথন হেড।
জোনাথন বলেন, প্রথমে দেখলে মনে হবে যে মিকতিলায় কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটেছে। শহরের গোটা এলাকাই মাটিতে মিশে গেছে। ধ্বংসস্তূপে একাকার হয়ে আছে দালানের সব ইট-পাথর ও সিমেন্ট। তবে ভালোভাবে খেয়াল করলে ভবনের দেয়ালগুলোতে থাকা বড় বড় গর্তের চিহ্ন স্পষ্ট দেখা যাবে। এসব মানুষেরই তৈরি।
গুঁড়িয়ে দেওয়া দালান ও দোকানমালিক পরিবারগুলোর সদস্যদের কোনো খোঁজ নেই। যাদের দেখা মিলছে, তারা মানুষ নয়, ভাগাড় অনুসন্ধানী কিছু পশু-পাখি। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে থাকা মূল্যবান কিছু বের করতেই তারা ব্যস্ত। এ দৃশ্য মিলবেই না বা কেন? শহরে বংশপরম্পরায় বসবাসকারী মুসলিম জনগোষ্ঠীকে যে একেবারে উৎখাত করা হয়েছে।
বিবিসি।


আমাদের পরিণতি একদিন আফগানিস্তান

লক্ষনীয় যে, এই ভয়টা এখন বাংলাদেশেও চালু করার চেষ্টা চলছে, সামুতে প্রায়শ:ই আফগানিস্তানের ভয় দেখানো হয়।
মজার ব্যপার, আফগানিস্তানে প্রথমে তান্ডব চালিয়েছিল, সেভিয়েতের আশ্রয়ে পালিত সেক্যুলার টাইপের লোকেরাই। মানুষজনকে দাড়ি রাখতে দিতনা, হাজার হাজার ইমাম তাদের হাতে নিহত হয়।

একবার একটি হোটেলের ছোট্ট একটি রূমে একটি হত্যাকান্ড সংঘটিত হল। ঐ সময় সেই রূমটিতে সর্বসাকুল্যে চার পাচজন মানুষ ছিল। একজন মুসলমান, একজন ইহূদি, একজন খ্রীষ্টান আর একজন হিন্দু ভদ্রলোক।
পশ্চিমা মিডিয়াতে এনিয়ে ব্যাপক আলাপ আলোচনার ঝড় উঠে। যদিও কেউ জানত না, কে মারা গেছে, কখন এবং কিভাবে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে।
এরি মধ্যে মিডিয়ার লোকেরা আয়োজন করে বিভিন্ন টক শোর।
বক্তাদের প্রায় সকলেই এই মত পোষন করেন যে এটি মুসলমানটির সন্ত্রাসীমুলক কর্মকান্ড। তারা বিভিন্ন ইতিহাস ঘেটে, ইসলামের বিভিন্ন গ্রন্হের পংক্তি উল্লেখ করে এই যুক্তি দেখান এটি কেবলমাত্র মুসলমানটির পক্ষেই করা সম্ভব। তাদের মতে মুসলমানরাই কেবল পারে অন্য ধর্মের লোককে নির্দ্বিধায় খুন করতে।
যাহোক কিছুক্ষন পরেই জানা গেল যে মুসলমান লোকটি নিজেই খুন হয়েছে।
এবার মিডিয়ার লোকজনেরা বিড়ম্বনায় পড়ল। কিন্তু মিডিয়া বলে কথা।
এবারও বক্তারা বিভিন্ন যুক্তি তর্ক উপাস্থন করে প্রমান করে দিতে চাইল কেবল মুসলমানের পক্ষেই এভাবে মানুষ মারা সম্ভব। এরিমধ্যে উপস্থাপক স্বরন করিয়ে দিলেন যে মুসলমান লোকটি নিজেই এই হত্যাকান্ডের ভিকটিম।
মোটেও দমে গেলেন না বক্তারা। তারা এবার এক সুরে জোরালে কন্ঠে বললেন তাহলে এটি ছিল একটি আত্মঘাতি হামলা।
এরপর তারা বিভিন্ন দলিল উপস্থাপন করে যুক্তি দেখিয়ে বোঝালেন কেবল একজন মুসলমানই পারে আত্মঘাতি হামলা চালিয়ে নিজেকে হত্যা করতে।

শেষপর্যন্ত শ্রোতারা কোনভাবেই জানতে পারল না কিভাবে কখন কি করে একজন মুসলমান মারা গেল। তারা শুধু জানল মুসলমানরা সহজেই অন্য ধর্মের লোকজনকে মেরে ফেলে আর তারা যদি নিজেরা মরে সেটা আত্মঘাতি হামলা অথবা অন্তর্দন্দ্ব কলহের কারনে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:১৭
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×