রাসুল হামযাতভের অষ্টপদী
===============
দুনিয়া চষে জোগাড় করেছি কতো না বই
আমার ঘরের বুকসেলফ যেন গ্রন্থঢিবি
অথচ আমি তো এই ধারণায় বিশ্বাসী হই
আমাদের এই গ্রহটাই এক বিপুল পাণ্ডুলিপি
অধ্যায়গুলো খুব এলোমেলো এর
অদরকারী যত সব তথ্য-চাপা
শোধন করা কি যায় না একে ফের?
নতুন করে যায় না আবার ছাপা?
০২.
সকাল ও সন্ধ্যায়, দুপুরে ও রাত্রিতে,
আলোর ধীবর, আঁধারের মৎস-শিকারী,
পৃথিবী সমুদ্র এক: আর ভাবি, আমরা তো
গহীন সমুদ্রে ঘুরি, ধীর লয়ে, মাছেদেরই মতো।
এ বিশ্ব সাগর যেন: টোপের প্রস্তুতি নিয়ে,
বিছিয়ে সুদক্ষ জাল, ধীবরেরা অপেক্ষায় থাকে।
দ্রুততায়__ কত দ্রুততায় সময় আমাকে কেড়ে নেবে?
রাত্রির জালে ফেঁদে, দিবসের বড়শিতে গেঁথে?
০৩.
সারাদিন বরিষণে। গৃহকোণে বসে থাকি
জানালার শার্সিতে উৎসুক চোখ রাখি
দেখি বাড়িঘর, রাজপথ, দূর পাহাড়ের চূড়া
কুয়াশায় আর বৃষ্টিতে অপসৃত।
কোনখানে আজ স্বচ্ছ দিগন্তরেখা?
তমসায় ঢাকা আকাশের মুখখানি
ক্লান্ত দুচোখ বুঁজে ফেলে আমি দেখি
অতীত বিহনে যায় না কিছুই দেখা।
০৪.
মনোরম টুপিশোভিত মানুষটিও
প্রতিপন্ন হতে পারে বোকার হদ্দ
সোনার তরবারী ও চাবুক হাতে আসে যে মানুষ
সে-ও হতে পারে ভীরু, ঘৃণিত কাপুরুষ
বিপুল পশুপালের মালিক যারা
তারাও পেতে পারে অনুভূতিহীন, অনুল্লেখ্য জীবন
কিন্তু সহজ বাণীর সরল গানগুলো
হতে পারে মর্মার্থের ঐশ্বর্যবাহী।
০৫.
ঘরের দুয়ার ঘেঁষে নিরবধি ছুটে চলা নদী
বলো, আমাকে খুলে বলো,
এ জীবনে সবচেয়ে অপরূপ
কোন সে দৃশ্য দেখেছো তুমি?
মিষ্টি হেসে, ঐকান্তিক
জবাব ছিলো সে নদীর:
কালো আর কদাকার নূড়ি
যেখানে শিশুর মতো চপলতা নিয়ে লাফিয়ে উঠেছি আমি।