somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাগেরহাট সদর হাসপাতাল নানা সমস্যায় জর্জারিত | বাড়ছে মানুষের সীমাহীন দূর্ভোগ

৩০ শে মার্চ, ২০১২ সকাল ৯:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এস এম সামছুর রহমান, বাগেরহাট
প্রায় ২০ লক্ষ লোক অধ্যুষিত বাগেরহাট জেলার একমাত্র সদর হাসপাতালে নানা সমস্যায় জর্জারিত। দীর্ঘদিন যাবৎ নজির বিহীন চিকিৎসকের পদ শূন্যতায় প্রায় হাসপাতালটি অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বর্হির বিভাগে রুগীদের উপচে পড়া ভীড় থাকলেও চিকিৎসা সেবা দেবার লোকের অভাবের কারণে সেখানে রুগী ভর্তি করা যাচ্ছে না। পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে অন্যত্র। ফলে অসহায়, দরিদ্র-পিড়ীত, অসুস্থ মানুষদের সীমাহীন দূর্ভোগের পাশাপাশি অনাকাঙ্খিত মৃত্যু ও ভোগান্তির হার ক্রমেয় বেড়ে চলছে। জেলার প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্রের এই দুরাবস্থায় এখানে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছে।
নারী বান্ধব, শিশু বান্ধব, আধুনিক নানা উপাধিতে চিহ্নিত বাগেরহাট সদর হাসপাতালটি দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যায় জর্জরিত। এখানকার হরেক সংকটের কথা সংশি¬ষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে আলোচিত হলেও প্রতিকার মেলেনি। স¤প্রতি এই দুরাবস্থা আরও বেড়েছে। হাসপাতালটি এখন আর রুগী ধারণের অবস্থায় নেই। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা গুরুতর রুগীদের সদর হাসপাতাল থেকে খুলনা, বরিশালসহ অন্যান্য জেলার হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় রোগীরা না জেনে এখানে এসে পড়ায় তারা পড়ছে সীমাহীন ভোগান্তিতে। বাড়ছে তাদের ব্যয় । সময় ক্ষেপনের কারণে কখনও কখনও জীবনের ঝুঁকিও বাড়ছে। সব থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন দূর্ঘটনাসহ বিভিন্ন অপারেশনের জন্য আসা রুগীরা। ফলে অনাকাঙ্খিত মৃত্যু ও ভোগাšতীর হার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সংশি¬ষ্ট সূত্রে জানা গেছে,১৯৬৭ সালে বাগেরহাট সদর হাসপাতালের নির্মান কাজ শুরু হয়। ৩ বছরের মাথায় ১৯৭০ সালে ৫০ টি শয্যা নিয়ে হাসপাতালের যাত্রা শুরু করে। এরপর ১৯৯২ সালে আধুনিক হাসপাতাল হিসেবে ১০০ শয্যায় উন্নীত করার কথা থাকলেও ’৯৭ সালে ১০০ শয্যায় রূপান্তরিত হয়। আগের জনবল নিয়েই চলছে সদর হাসপাতালের কার্যক্রম।
জোট সরকারের আমলে বাগেরহাটের এই আধুনিক সদর হাসপাতালটি ২৫০ শয্যা হাসপাতাল হিসেবে ঘোষনা করা হলেও বাস্তবে তা এখনও রূপাšতরিত হয়নি। ৫০ শয্যা হাসপাতালের লোকবল নিয়ে ১০০ শয্যা হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে কোনমতে। দিন দিন দুরাবস্থায় পড়ছে চিকিৎসা সেবা।
সদর হাসপাতাল সুত্রে জানাগেছে, এখানে সাধারন চিকিৎসকের ২৯টি পদের ১৬টি শূন্য। কনসালট্যান্টের ৮ টি পদের মধ্যে ৫ টিই শূন্য। অর্থোপেডিক্স, গাইনী, সার্জারী, এ্যানেস্থেশিয়া, রেডিওলজি, ইউনানী,ডেন্টাল ও প্যাথলজির কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। জরুরী বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। চতুর্থ শ্রেণীর ৬৫ টি পদের ৪৪ টি খালি। অন্যান্য পদের প্রায় একই অবস্থা।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের কোন নিরাপত্তা রক্ষী নেই। প্রতিদিনই বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হয়। এখানে ছিনতাই, শ¬ীলতাহানীর ঘটনাও হামেশাই ঘটছে। চিকিৎসা নিতে আসা আফরোজা খাতুন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে নানা বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়। এদিকে ভর্তি রোগীদের সরকারী বরাদ্দকৃত খাবার পরিবেশনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে কতৃপক্ষ অপ্রতুল খবার সরবরাহ করার অভিযোগ করেছেন অনেক রোগিরা।এমনকি নিুমানের খাবার পরিবেশন করার অপকটে বললেন পুরুষ ওর্য়াডের ভর্তি রোগী জাহিদুল ইসলাম (৩৮)।
প্রায় একযুগ আগের গভীর নলকূপ বসাবার পরিকল্পনা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক ধরা পড়ার পর একমাত্র টিউবওয়েলটি বন্ধ রয়েছে বেশ কয়েক বছর। অর্ধকোটি টাকা মূল্যের জেনারেটরটি তেলের অভাবে বন্ধ রয়েছে। জ্বালানী তেলের বরাদ্ধ নেই। ৪ টি এ্যাম্বুলেন্সের ৩ টি নষ্ট।
এতোকিছুর পরেও দালাল তৎপরতা ব্যপক ভাবে লক্ষনীয়। তাদের খপ্পরে পড়ে সর্বসান্ত হচ্ছে অনেক সাধারন রোগী।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের দুরাবস্থা দ্রুত না কাটাতে পারলে বাগেরহাটের সাধারণ মানুষের মাঝে এর ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক দল, জনপ্রতিনিধি এমনকি খোদ সরকারী দলের ভুক্তভোগীরা হাসপাতালের এই দূরাবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ ব্যাপারে বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডাঃ তাপস কুমার তফাদার সদর হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটসহ নানা সমস্যার কথা উলে¬খ করে তিনি বলেন, এ কারনেই স্বাস্থ্য সেবা ব্যহত হচ্ছে। সংশি¬ষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সময়ে অবহিত করা হয়েছে বলে তিনি উলে¬খ করেন।


এস এম সামছুর রহমান
বাগেরহাট
০১৯১৭৭৬৩০৭৭
০১৭১৮৪৫৫০২৬

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শৈল্পিক চুরি

লিখেছেন শেরজা তপন, ০১ লা জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭


হুদিন ধরে ভেবেও বিষয়টা নিয়ে লিখব লিখব করে লিখা হচ্ছে না ভয়ে কিংবা সঙ্কোচে!
কিসের ভয়? নারীবাদী ব্লগারদের ভয়।
আর কিসের সঙ্কোচ? পাছে আমার এই রচনাটা গৃহিনী রমনীদের খাটো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কোথায় বেনজির ????????

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:০৫




গত ৪ মে সপরিবারে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ। সঙ্গে আছেন তার স্ত্রী ও তিন মেয়ে। গত ২৬ মে তার পরিবারের সকল স্থাবর সম্পদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

‘নির্ঝর ও একটি হলুদ গোলাপ’ এর রিভিউ বা পাঠ প্রতিক্রিয়া

লিখেছেন নীল আকাশ, ০১ লা জুন, ২০২৪ দুপুর ১:৫৭



বেশ কিছুদিন ধরে একটানা থ্রিলার, হরর এবং নন ফিকশন জনরার বেশ কিছু বই পড়ার পরে হুট করেই এই বইটা পড়তে বসলাম। আব্দুস সাত্তার সজীব ভাইয়ের 'BOOKAHOLICS TIMES' থেকে এই বইটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিতর্ক করার চেয়ে আড্ডা দেয়া উত্তম

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:২৬

আসলে ব্লগে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ইত্যাদি বিতর্কের চেয়ে স্রেফ আড্ডা দেয়া উত্তম। আড্ডার কারণে ব্লগারদের সাথে ব্লগারদের সৌহার্দ তৈরি হয়। সম্পর্ক সহজ না হলে আপনি আপনার মতবাদ কাউকে গেলাতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে প্রাণ ফিরে এসেছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:৩৪



ভেবেছিলাম রাজিবের অনুপস্হিতিতে সামু রক্তহীনতায় ভুগবে; যাক, ব্লগে অনেকের লেখা আসছে, ভালো ও ইন্টারেষ্টিং বিষয়ের উপর লেখা আসছে; পড়ে আনন্দ পাচ্ছি!

সবার আগে ব্লগার নীল আকাশকে ধন্যবাদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×