নারায়ণগঞ্জে পুলিশ-র্যাব-বিজিবির সঙ্গে হেফাজতকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় হত্যা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে আরো চারটি মামলা হয়েছে।
Published : 08 May 2013, 03:50 AM
পুলিশ ও র্যাবের দায়ের করা এসব মামলায় হেফাজতকর্মীদের পাশাপাশি জামায়াত ও বিএনপি কর্মীদেরও আসামি করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (ক অঞ্চল) মো. আহসান জানান, মঙ্গলবার গভীর রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়।
১৩২ জনের নাম উল্লেখ করে ১৪ হাজার মানুষকে আসামি করা হয়েছে এসব মামলায়। তবে বুধবার সকাল পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
সোমবার পুলিশের সঙ্গে হেফাজতের সংঘর্ষের সময় দুই পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো ২/৩ হাজারকে আসামি করে একটি মামলা করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এস আই আলমগীর হোসেন।
এ মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন জেলা হেফাজতের আহবায়ক শহরের রেলওয়ে জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল আউয়াল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা হেফাজতের আহবায়ক মুফতি বশির উল্লাহ, মাদানীনগর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি ফয়জুল্লাহ, মক্কী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল তৈয়ব, জেলা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, মহানগর শিবিরের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ, জেলা তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক আসলাম সানী প্রমুখ।
হেফাজতের ‘ভেতরে থাকা দুস্কৃতকারীদের’ হামলায় তিনজন নিহত হওয়ার অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে দ্বিতীয় মামলাটি করেন এস আই আতাউর রহমান।
এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এস আই ফরিদ আহম্মেদ ৭০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো ২/৩ হাজার আসামির বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছেন।
এ মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, মহানগর যুবদলের আহবায়ক মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সজল প্রমুখ।
আর র্যাব সদস্যদের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা ও গাড়িতে আগুন দেয়ার অভিযোগে র্যাব-১১ এর ডিএডি শ্রীকান্ত ত্রিপুরা ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরো ৭/৮ হাজার লোককে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এ মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই রাজু, নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক সাংসদ গিয়াসউদ্দিনের তিন ছেলে ফয়সাল, সাদরীল ও সানবীর, থানা শ্রমিকদের দলের সভাপতি আসলাম, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রোববার রাতে ঢাকার মতিঝিল থেকে হেফাজতকর্মীদের সরিয়ে দেয়ার পর তারা ফেরার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধ করে।
পুলিশ ও বিজিবি অবরোধ সরাতে গেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় হেফাজতকর্মীরা। এ সময় দুই বিজিবি ও দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১৯ জন নিহত হন, আহত হন শতাধিক।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষে বিজিবি ও র্যাবের গাড়িসহ দশটি যানবাহন পুড়িয়ে দেয়া হয়।
ওই ঘটনায় রোববার সোনারগাঁও থানায় আরো ৫টি মামলা দায়ের হয়।