somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ ক্রিকেট এবং তার অবস্থা । । ।

২৬ শে মার্চ, ২০১২ রাত ৯:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ । বিশ্বের মানচিত্রে খুব ছোট একটি দেশ। যে দেশের কথা বিশ্বের অনেক মানুষই জানেনা। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর স্বাধীন হয় এই বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে কিছু লিখার চেষ্টা করছি অনেকদিন থেকেই। ক্রিকেটারদের স্বল্প সাফল্যের কারণে পারি নাই। আজ মনে হচ্ছে ওদের সাফল্য এতো উচুতে পৌঁছে গেছে যে আমি লিখতে পারব।
১৯৭৭ সালের ২৬শে জুলাই বাংলাদেশ আইসিসি'র সহযোগী সদস্য পদ লাভ করে। তারপরেই এক ইংরেজ ভদ্রলোককে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়,তার নাম রবার্ট জোনস ।
এরপর থেকে সাউথ-ইষ্ট এশিয়া কাপ জিতল।
১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রপি জিতে এই দেশকে অন্যন্য উচ্চতায় নিয়ে গেল।
তারপর থেকে এই দেশের মানুষ ক্রিকেটের পাগল। ক্রিকেটপ্রেমীর সংখ্যা দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের সাফল্যে।
২০১২ সালে এসে ক্রিকেট বাংলাদেশের চৌদ্দ কোটি মানুষের রক্তে মিশে গেছে। ক্রিকেট শিরায় শিরায় রক্তের সাথে প্রবাহিত হচ্ছে।
কয়েকদিন আগে শেষ হওয়া এশিয়া কাপ বাংলাদেশের মানুষের পাগলামি আরো বাড়িয়ে দিল কারণ অন্য কিছু না,আমাদের ক্রিকেটারদের পারফর্ম্যান্স।
আমি এমনও দেখছি যে মানুষ দিনে আনে দিনে খায় মানে একদিন কাজ না করলে খেতে পারবে না সে পর্যন্ত কাজ না করে টিভির সামনে বসে ছিল বাংলাদেশের খেলা দেখবে বলে। তামিম কিভাবে ৪ মারে বা মাশরাফি লাইন-টু-লাইন বল করতে পারবে কিনা দেখতে।
চৌদ্দ কোটি মানুষের মধ্যে ৫ কোটি পিচ্চি বা মেয়ে বা ক্রিকেট বুঝে না,২ কোটি ক্রিকেট বুঝলেও খেলা দেখে না। আরো ৭ কোটি মানুষ কাজকর্ম বাদ দিয়ে টিভি সামনে বসে থাকে টাইগারদের খেলা দেখতে।
এক রিকশায়ালা সকাল ৫ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত কোনরকম রেষ্ট না নিয়ে রিকশা চালায় সারাদিনের রোজগার করবে,১ টার পর খেলা দেখবে।
এইরকম অনেক অনেক মানুষ আজ বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সমর্থন দিচ্ছে।
আমি এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলা দেখেছি গ্রামের বাড়িতে। ওখানে পৌঁছেছি প্রায় ২:৩০ । পৌঁছে দেখি এক বিশাল আয়োজন। খেলা দেখার জন্য মাঠে টিভি আনছে। দুপুরে রোদ না লাগার জন্য উপরে ছাউনির ব্যবস্থা সাথে বসার জন্য চেয়ারের ব্যবস্থা। আরো মজার ব্যাপার হল মাইক লাগানো হয়েছে চিৎকার আর স্কোর জানানোর জন্য। বাজি ও রঙ রাখা হয়েছে আনন্দ উৎসব করার জন্য। এইসব পাগলামি কারো স্বার্থ বা উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য নয়। শুধুমাত্র বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য।
এই ক্রিকেট পারে এদেশে মানুষকে এক করতে।সব ভেদাভেদ ভুলে আনন্দে ভাসাতে।
আপনারা কি মনে করেন আমাদের দেশের ক্রিকেটকে আরো বেশী উন্নত করা সম্ভব নয়??
আমি মনে করি সম্ভব। আমার এত লেখার মূল ব্যাপার কিন্তু কিভাবে আরো বেশী উন্নতি সম্ভব সেটা আলোচনা।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড একটি সরকারি প্রতিষ্টান। সরকারি প্রতিষ্টানের কর্মচারীরাও সরকারি। সমস্যাটাও এই জায়গায়।
আলুর ব্যাপারী বা ভোট ব্যাপারীকে যদি কিকেট বোর্ডের প্রধান করা হয় তাহলে সেখানে ক্রিকেটের উন্নতি কিভাবে হবে???
হ্যা একটি সরকারি প্রতিষ্টানে সরকারের লোকজন দরকার অন্তত বিল গুলো পাশ করানোর জন্য।আর্থিক ব্যাপারে সাহায্যের জন্য।তাই বলে প্রধান সরকারি দলের হতে হবে সেইরকম তো বিধান নেই।
আলুর ব্যাপারী বা ভোট ব্যাপারী দিয়ে ক্রিকেটের উন্নয়ন সম্ভব না সেটা আকরাম খান ও তামিম ইকবাল প্রমাণ করছে।
দুর্নীতি দমন করতে দুদক'কে যেমন নিরপেক্ষ প্রতিষ্টান হিসেবে ব্যবহার করছে,আমার মতে ক্রিকেটের উন্নয়নের স্বার্থে ক্রিকেট বোর্ডকেও সাতন্ত্র প্রতিষ্টান করা হউক যেখানে রাজনীতির কোন ছায়া পড়বে না। সাবেক অধিনায়ক বা সাবেক খেলেওয়াড়দেরকে দিয়ে ক্রিকেট বোর্ড সাজালে হয়ত আরো উন্নতি করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট।
মোট কথা, আমার মতে ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারা হবে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ।যাদের ক্রিকেটীয় জ্ঞান প্রচুর।
আমাদের দেশে ক্রিকেট লীগ গুলো দেখলে মনে হয় আইসিসি থেকে বাঁচার জন্য লীগ গুলো চালায়। এই লীগ গুলোর মান খুবই বাজে।
লীগ গুলোকে আরো বেশী উন্নত ও প্রসারিত করতে হবে।
আমাদের দেশে খেলেওয়াড় সংগ্রহ কিভাবে করে বা করার পদ্ধতিটা আমার জানা নেই। আমার ধারণা লীগ থেকে যাচাই বাছাই করা হয়।
সারা দেশের আনাচে কানাচে কি পরিমাণ ক্রিকেট খেলেওয়াড় পড়ে আছে সেটা আমি কয়েকদিন গ্রামে ক্রিকেট খেলে বুঝছি। ওরা একটু যত্ন পেলে হয়ত হয়ে উঠবে মাশরাফি বা সাকিব আল হাসান।
সারা দেশ থেকে খেলেওয়াড় সংগ্রহ,যাচাই বাছাই করে পর্যাপ্ত ও সঠিক পরিচর্যার ব্যবস্থা করলে বাংলাদেশ ক্রিকেট সামনে এগোবে।
অনেকে বলবেন আর্থিক সমস্যার কথা। বিসিবি গরীব। উনাদের উত্তর- আমি যে সমাধান গুলোর কথা বলছি সব গুলোই কিন্তু হচ্ছে। এখন দরকার উন্নয়ন ও প্রসার। আর এই উন্নয়ন ও প্রসারে হয়ত খুব অল্প কিছু বেশী খরচ হবে। আর আপনাকে তো কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হবেই।
দল গঠনে নির্বাচকদের সম্পুর্ন স্বাধীনতা দিতে হবে। যদিও আমার মতে এশিয়া কাপে ২ টা জায়গাতে স্বমন্বয় করলে দল আরো একটু ভাল করত। ১। ওপেনিংয়ে নাজিম উদ্দিন আহামরি কোন খেলেওয়াড় ছিল না। যার কোন ফুট ওয়ার্কই নাই। ওখানে ইমরুল কায়েস ভাল হত।
২। ব্যাটিংয়ে ৩ নাম্বার পজিশন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই জায়গায় জহুরুলের মত অনভিজ্ঞ খেলেওয়াড় ব্যবহার না করে আশরাফুল বা আফতাবের মত পরীক্ষীত খেলেওয়াড় ব্যবহার করা যেত।
নাজিম উদ্দিন বা জহুরুল এশিয়া কাপে আহামরি কিছু করে নাই। দুজন দু'ম্যাচ ভালো করছে।


আমার ক্রিকেটীয় জ্ঞান অল্প কিন্তু ক্রিকেটীয় পাগলামী মাত্রাতিরিক্ত। পাগলামী থেকেই এই লেখাটি লিখলাম। ভুল হয়ে শোধরাই দিবেন।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×