[আমি লেখক হিসেবে তেমন সুবিধের নই। ছেলেবেলায় স্কুলের সাহিত্যপাতা, পরে কলেজ জীবনে ক্লাব, স্থানীয় পত্রিকা ও দেয়াল লিখনে কিছু লেখা দয়া-পরবেশ হয়ে ছাপিয়েছেন তদানীন্তন সম্পাদকবৃন্দ। ব্লগারদের ভালো লাগতে পেরে ভেবে জং ধরে যাবার দশায় উপনীত হাতে দু'চারটে গল্প লিখবার খায়েস হলো। মন্দ হলেও দয়া করে সাহস দেবেন। ধন্যবাদ ]
সেবার চাকুরি সুবাদে গিয়েছিলাম ঢাকার অদূরে নারায়ানগঞ্জে। আজ থেকে ৩/৪ বছর আগের কথা। প্রথমবার যাওয়া। গুলিস্তান থেকে বাসে চড়ে যাবার রুট বলে দিল অফিস থেকে। ধুলো-মাখা সড়কে তার চাইতেও বেশি ধুলোর আস্তরণে চাপা পড়ে ঘন্টা দুই পরে পৌছলাম নারায়নগঞ্জ। নারায়নগঞ্জের নাম শুনে বরাবরই কেমন যেন একটা নাক সিটকানো ভাব আমার মধ্যে কাজ করতো। কিন্তু সেবার গিয়ে বেশ ভালো লাগলো। অনেক হিজিবিজি কিন্তু আবার বেশ ছিমছামও। ছিলাম বেশ কয়েকদিন। কয়েকটি ব্যবসায়ী পরিবারের সাথে সাক্ষাতও হলো। বেশ দিলখোলা সব মানুষ। ভালো লাগলো সত্তোরোর্ধ এক বৃদ্ধের আন্তরিক আথিতেয়তা। আমার কলিগের বাবা। মুক্তিযোদ্ধা। দেশ স্বাধীনের পর পর থেকে পড়ে আছেন নারায়নগঞ্জ। অথচ এ বৃদ্ধ বেশ আধুনিক। বুঝলাম যখন আমাকেই ধরে বসলেন মার্কেটিংয়ের এক সমীকরণের উপাত্ত জিজ্ঞাসা করে। বুঝলাম বেশ খবর রাখেন দুনিয়ার। বাড়ির পাশের টিউবওয়েলের পানি পান করবার সময় কিছুটা জানালেন যুদ্ধের কথা। আত্মত্যাগের কথা। কলের ঠাণ্ডা জলের চাইতেও বেশি ঠাণ্ডা করে দিলো আমার মনের সব তন্ত্র, তার সেই হৃদয় নিংড়ানো যুদ্ধ-সময়কার কথাগুলো। আমাদের নতুন প্রজন্ম এখন যুদ্ধের খবর শুনতে চায় না। জানতে চায় না সেই সময়কার দিনগুলোর কথা। তেমনটি আক্ষেপ করে বললেন শ্রদ্ধেয় সেই বন্ধুর বাবা।
(চলবে)